আমাদের ঈদ

লিখেছেন লিখেছেন ইহসান আব্দুল্লাহ ২০ অক্টোবর, ২০১৩, ০২:৫৯:০৩ দুপুর



ঈদটা নাকি অনেক আনন্দের! অনেকের কাছ থেকে শুনি। সত্যি আনন্দের বোধহয়। তবে বাবা-মা পরিবার ছেড়ে তা কতটুকু উপভোগের? পত্রিকার কল্যাণে এবার আমরা জেনে গেছি, দেশের প্রত্যেকটা প্রান্তের ইসলামী আন্দোলনের কর্মী ভাইদের ঈদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এটা আমরা জানি। কিন্তু অজানাটা হচ্ছে, প্রকৃত পক্ষে কোন ঈদেই ছুটি দেয়া হয়না। খুব বেশি জরুরী হলে ছুটি নিতে হয়, সর্বাধিক ৪-৫ দিনের জন্য। আমি আমার কথা বলতে পারি। গত ঈদ-উল-ফিতরে ছুটি নেয়ার কোন ইচ্ছা ছিল না। কিন্তু তাঁর আগের দুইটা ঈদ ঢাকায় করতে হয়েছে বলে না চাইলেও ছুটি নিতে হল। তবে ছুটিটা এমন যে, ঈদের দিন সকালে গিয়ে বাসায় পৌছেছি, দিবাগত রাতটি বাসায় কাটিয়ে পরের দিন আবার প্রত্যাবর্তন। একজন সাধারন মানুষের ক্ষেত্রে এটা মানা খুব কষ্টকর। কিন্তু আশ্চর্য ব্যপার হচ্ছে বাবা মা মেনে নিয়েছে। আর তাই আমার মানতেও কষ্ট হচ্ছে না।

আপনারা জেনে থাকবেন আমাদের কাজ হচ্ছে ছাত্র(অমুসলিমসহ), শিক্ষক, কর্মচারী-কর্মকর্তা ও সাধারন মানুষদের মাঝে। আর ঈদের পুর্বে তাদের কাছে উপহার পৌঁছানো একটা আবশ্যক কাজে পরিণত হয়েছে। তাদের অনেকে হয়তোবা ইসলাম সম্পর্কে খুব বেশী ধারণা রাখে না কিন্ত এই ইসলাম প্রিয় ভাইদের সাথে কিছু সময় কাটানোর আশায় মুখিয়ে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও বাদ যায় না। যদিও তারা অনেকে বাম কিংবা স্যাকুলার পন্থি। শুনে খুব বেশী হতবাক হবেন যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু হিন্দু শিক্ষক আছে যারা নিয়মিত ইয়ানত প্রদান করে। এবং ইসলামী আন্দোলনের কর্মপন্থা নিয়ে তাদের চিন্তা ভাগাভাগি করে। আর স্বয়ং ভিসি স্যার সংগঠনের ভাইদের পাইলে ঘণ্টা খানেক সময় দিতেও দ্বিধা করেন না। কারণ এই সংগঠনের ভাইদের সাথে তর্ক করার মাঝেও মজা আছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে ভদ্র ছেলে এরা যারা আধুনিক জ্ঞানের সাথে কোরআনে হাদিসের জ্ঞানও রাখে।

এখন দাওয়াতি কাজের পরিধি আরও বেড়েছে। পেয়েছে নতুন মাত্রা। যুক্ত হয়েছে পুলিশ ভাইয়েরা। ঈদে এই ভাইদের কাছেও আমাদের পৌঁছাতে হয়। কিন্তু আরও মজার ব্যাপার হচ্ছে কারা রক্ষীরা সব মুসলমান হয়ে যাচ্ছে। হবে না কেন? স্বয়ং অধ্যাপক গোলাম আযম স্যার যদি আপনাকে দাওয়াত দেন তাহলে সেই দাওয়াত কি বিফলে যাইতে পারে? স্বয়ং আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাইদি সাহেব যদি আপনার সাথে এক বেলা খাওয়ার পর পরের বেলার দাওয়াত দেন আপনি কি ফেলতে পারবেন? কখনো না। যেমন পারেনি সত্যের সৈনিক মাহমুদুর রাহমান, পারেনি এমপি গোলাম মাওলা রনি। আর ফায়েসা কথার ভাণ্ডার সাকা চৌধুরী নিজেও। “এটা বড়ই সৌভাগ্য যে আমি সাইদি সাহেবের সাথে মরতে পারব”কথাটা সাকা চৌধুরীর। উল্লেখ্য যে জেল খানায় তিনটি জিনিসের খুব ব্যবহার, গাইল(গালিগালাজ), ফাইল আর ডাইল(খাবার ডাল)। আর সাকা চৌধুরী একা যে গালিগালাজ করে তা আসামি, কয়েদি ও বন্দিদের সর্বমোট গাইলের সমান।

যাই হোক আমরা সবরের রাজনীতি করি। আল্লাহতায়ালা জাহেলিয়াতের আচরণ থেকে আমাদের দূরে রাখুক। বলছিলাম সবে ইদ-উল-ফিতরের কথা। ঈদ-উল-আযহাতে করতে হয় এর চেয়ে দ্বিগুন কাজ। সকালে নামাজ পড়ার পর সেই যে শুরু মধ্যরাত অবধি। গরু জবাহ, মাংস কাটা, প্যাকেট করা এবং তা বিলি করা। আবার গরু কিন্তু একটা নয়। এইবার ছিল বারটা (মতান্তরে তেরটি) আর গতবার বিশ। অবশ্য গতবারের চেয়ে এইবারের গুলো বেশ ধুষ্টপুষ্ট।

আলহামদুলিল্লাহ্‌, এত সবের মাঝেও আমরা ভালো আছি। বাবা-মা, ভাই-বোন কে ছেড়ে ঈদ করেছি, করছি হয়তোবা আরও করতে হবে। এ এক অন্য জগত, অন্য রকম আনন্দ। ভাইদের মুখের হাসি, মিষ্টি চাহুনি শুধুমাত্র পরিবার নয়, দুনিয়া ভুলিয়ে দেয়। তাঁরপরেও মাকে বলে রাখছি “মা আসব, জানুয়ারীর পর। এসে টানা একমাস থাকবো” কিন্তু বোন বলেছে মা অভিমান করেছে।

বিষয়: রাজনীতি

১৭৭২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File