নিষিদ্ধ নয় জামায়াত-শিবিরকে উত্তম আদর্শ দিয়ে মোকাবেলা

লিখেছেন লিখেছেন ইহসান আব্দুল্লাহ ৩১ মে, ২০১৩, ০৮:৪৭:২৪ সকাল

বাংলাদেশের রাজনীতি কলুষিত হয়েছে এমন কথা বলাটা ভুল হবে। যারা উপমহাদেশের রাজনীতি সম্পর্কে ভাল জ্ঞান রাখেন তারা এই নব্য বাংলার রাজনীতিকে কলুষিত না বলে অবৈধ, সহজ বাংলা ভাষায় জারজ বলতে পারেন। এদেশের রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্বদের গায়ে চোরের সীলমোহর লাগানো, একটু বাড়িয়ে বললে শুধু মাত্র চোররাই এদেশে রাজনীতি করে। আর তাতে নিজের কুকর্মকে সাদা ঘরের বিধান বলে চালিয়ে দেয়া যায়। এই রাজনীতিতে যোগ্যতা হচ্ছে হাত ও লেজটাকে প্রসারিত করার ক্ষমতা। যার হাতটা যত বড়, দলের নেতাদের সাথে যোগাযোগটাও তার গভীর। কিন্তু লেজের ক্ষমতা অর্থাৎ পেছনে জন সমর্থনের নামে সন্ত্রাসী না পুষলে ক্ষমতার হাতটা খুব বেশী দূর প্রসারিত হতে পারে না। এটা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ঐতিহ্য। এখানে পহেলা বৈশাখে রঙ মেখে পান্তা ইলিশ না খাওয়া অসম্মানজনক, আর এই রাজনৈতিক ঐতিহ্যকে লালন না করা বোকার স্বর্গে নিজেকে বুদ্ধিজীবী বলে দাবি করে পাগল উপাধি পাওয়ার মত।

বাংলাদেশের জনসংখ্যা শত কোটি হলে, আর এই আবাল,বৃদ্ধ,বনিতা সবাই প্রত্যেহ সকালে উঠে রাজনৈতিক ব্যাক্তিদের বদনে বাসি মুখে এক গাল থুথু নিক্ষেপ করে শত বার ছিঃ......হ কথাটা উচ্চারণ করলেও ঘৃণার সবটুকু বহিঃপ্রকাশ অসম্ভব। পাড়া মহল্লা থেকে শুরু করে এই ঢাকা শহরের অলিতে গলিতে গজিয়ে উঠা প্রত্যেকটা রাজনিতিক এক একটা পচা নর্দমা। ইচ্ছা, অনিচ্ছাই এসব নর্দমাদের কাছে যেতেই হয়। কারন বিধান প্রনয়ন থেকে শুরু করে তা বাস্তবায়নে এই নর্দমার কীটদের আছে সক্রিয় হস্তক্ষেপ।

বাংলাদেশের সরকারী দলসহ আরও কিছু রাজনৈতিক দল আজ এর জীবন্ত সাক্ষী। যারা আজ ভুলতে বসেছে সমাজের এখনও কিছু মুসলমান আছে, যারা বিশ্বাস করে সমাজ জীবনে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য ইসলামী হুকুমাত কায়েমের আন্দলনের মাধ্যমেই আখেরাতের নাজাত নিহিত।কিন্তু জালেম সম্প্রদায় এক ফুঁৎকারে এই সংবদ্ধ আদর্শিক দলকে বাংলাদেশ থেকে নিশ্চিহ্ন করতে চায়। তারা নিজেরা সংবিধান রচনা করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরকে নিষিদ্ধের মাধ্যমে সকল ইসলামী আন্দলনে দল গুলোর গলা টিপে ধুরতে চায়। আল্লাহতায়ার বানীত তারা ভুলে গেছেই, তারা এটাও ভুলে গেছে তাদের রচিত সংবিধানের অধিনেই জামাত-শিবির নিবন্ধিত দল। আর এই সংবিধান মেনেই তারা এদেশে রাজনীতি করছে। তবে শিবিরের ব্যাপারে অভিযোগ থাকতে পারে কিন্তু তা ছাত্রলীগের অভিযোগ নামার চেয়ে খুবুই খর্ব। কোন আদর্শিক দলের সাংবিধানিক অধিকার হরণ করে তাদেরকে মিছিল সমাবেশ করতে না দিয়ে উপরন্ত পেটোয়া লীগ আর পুলিশ দিয়ে নির্যাতন চালানো হচ্ছে, সেখানে তারা এখন পর্যন্ত শুধু প্রতিরক্ষা করে যাচ্ছে। তবে আক্রমণের মাধ্যমে জবাব দিতে গেলে আরব বসন্তের মত কিছু একটা ঘটার সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেয়া যায় না। সাদা ঘরের চোর গুলোর মাথা ব্যাথা শুরু হয়েছে। এক মাথা কেটে ফেলে এর সমাধান খুজতে গেলে যদি হাজার মাথা গজিয়ে যায় তাহলে অবস্থা আরও ভয়ঙ্কর হতে পারে এমন চিন্তায় তারা দিশেহারা হয়ে পরেছে।

সারাবিশ্বে বর্তমানে বাংলাদেশ একটি আলোচনার বস্তুতে পরিণত হয়েছে। জামাত-শিবির, হেফাজত, বিএনপি আর লীগ সম্পর্কে তারা এখন বিস্তর জ্ঞান রাখেন। তারা জানেন নিজের অনুগত বাহিনী কেন পচাত্তরে এমন ঘটনা ঘটিয়েছিল, আর অনেকে আফসোস ও করেন সেই দিনটাতে শান্তির মডেলের অনুপস্থিতি জন্য।

বাংলাদেশ এখন বিশাল এক গিরিখাদের কিনারে, পাশের বাড়ির মহাসেনরা কৌশলে ধাক্কা দিয়ে পরে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে পারে। আর তাতে ফারাক্কা চুক্তির মত আরও কিছু চুক্তি করে পা কাঁটা পোশাক শ্রমিকদের মত পঙ্গু করে রাখবে এই বাংলাদেশ নামক একটি উর্বর ভুমির মুসলমান সম্প্রদায়কে। আর এসব মহাসেনদের মীরজাফররূপী বন্ধুদের আনাগোনা বাংলার আকাশে বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে।
বিএনপি আজ আওয়ামীপন্থী হয়ে গেছে। অন্যদিকে মক্তব মাদ্রাসার হুজুররাও রাজনীতি বুঝতে শুরু করেছে। এতে অদুর ভবিষ্যতে নর্দমার নাস্তিক্যবাদী রাজনীতির সাথে ইসলামী রাজনীতির বিরোধ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। আর তা সত্য হলে এখনকার ডিফেন্সিভ জামাত শিবিরকে অফেন্সিভ ভূমিকাতে দেখে অনেকের চোখ ছানাবড়া হয়ে পরবে। বিশেষ করে যারা এর জন্ম থেকেই শীতল রক্তের জিহাদ কিংবা ঢাল নাই তলোয়ার নাই নিধিরাম সর্দার বলে অপবাদ দিয়ে আসছেন। আল্লাহর রাসুলের আদর্শ উত্তম আদর্শ, ইসলামের আদর্শ উত্তম আদর্শ আর বাংলাদেশে জামাত শিবির সেই আদর্শকে এখনও বহন করছে। সুতারাং নিষিদ্ধ নয়, আদর্শ দিয়ে মোকাবেলা করুন। আল্লাহতায়ালা সবাইকে ইসলাম জেনে আমল করার তৌফিক দান করুক।-আমিন

বিষয়: রাজনীতি

১৬৫২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File