রাজনীতির লোলুপ হুংকারে কাঁপছে দেশ থরথর- ১
লিখেছেন লিখেছেন বইঘর ০৫ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০১:৩২:২০ রাত
পত্রিকায় সংবাদ বেরিয়েছে- খোকাকে খুঁজছে পুলিশ। বাসায় দু'দফা অভিযান।
খোকা মানে খোকন নয়। সাদেক হোসেন খোকা। বিরোধীদলের লড়াকু নেতা। সুতরাং এই সংবাদ স্বাভাকি। এও স্বাভাবিক- নিজ বাসায় ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়ের সময় আত্মঘাতী বোমা হামলায় পাকিস্তানের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের আইনমন্ত্রী ইসরারুল্লাহসহ অন্তত সাতজন নিহত হয়েছে। এও কোনো আশ্চর্য কথা নয়- 'সিরিয়ার শীর্ষস্থানীয় এক গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে হত্যা করেছে বিদ্রোহীরা। [সমকাল : ১৯.১০.১৩]
স্বাভাবিক এই কারণে- যে মরিচ খাবে তার ঝাল তো লাগবেই। তাছাড়া যে খেলতে নেমেছে সে হারতেও পারে। হারবার শক্তি যার নেই খেলতে নামা তার পক্ষে সাজে না। সচেতন প্রতিটি মানুষই জানে- এখন রাজনীতি মানে শুধু ক্ষমতার খেলাই নয়- কাঁচা টাকার জুয়া খেলাও। আজ খোকাকে ধরেছে। কপাল ভালো হলে এই ধরাধরির তালিকায় আগামীকাল মহান দুই নেত্রীকেও একসাথে দেখার সৌভাগ্য হতে পারে এই হতভাগা দেশের। মইন উ আর ফখরুদ্দীনরা তো সময়ের সৃষ্টি! সুতরাং রাজনীতির খেলোয়াররা খেলবে, হারবে, হারাবে- এতো খুবই স্বাভাবিক ঘটনা!
বহুকাল আগে বাঙলাসাহিত্যের প্রবাদপুরুষ শরৎচন্দ্র তার কিংবদন্তী উপন্যাস শ্রীকান্তে লিখে গেছেন- 'স্কুলের মাঠে বাঙালি ও মুসলমান ছাত্রদের 'ফুটবল ম্যাচ', সন্ধা হয় হয়। মগ্ন হইয়া দেখিতেছি। আনন্দের সীমা নাই, হঠাৎ ওরে বাবা এ কি রে! চটাচট শব্দ এবং 'মারো শালাকে, ধরো শালাকে।' শরৎ বাবু বলেছেন- কোলকাতার খেলার মাঠের কথা। আর এখানে মাঠ বলতে পুরো বাংলাদেশ। খেলোয়ারদের একদল এখানে স্বঘোষিত বাঙালি। সুতরাং ডিজিটাল ফর্মুলায় অন্যদল 'মুসলমান।' খেলা শেষে 'ধরো মারো' দুই মাঠেই সমান সমারোহে কম্পমান। সুতরাং চৌদ্দদল আর আঠারোদলের 'রক্তম্যাচ' দর্শক হিসেবে এই জাতিকে দেখতেই হবে। এটা এখন অলিখিত বিধান।
রক্তম্যাচের প্রস্তুতিও চলছে ভয়ঙ্কররূপে। পত্রিকার ভাষায় 'সরকারের শেষ সময়ে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নেওয়ার হিড়িক পড়েছে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে। জেলা প্রশাসনের আগ্নেয়াস্ত্র শাখা থেকে শুরু করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়, সর্বত্রই লাইসেন্স প্রত্যাশী, বিশেষ করে ক্ষমতাসীনদের চাপ বেড়ে গেছে। এক্ষেত্রে তাদের লক্ষ্য ২৪ অক্টোবরের মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স হাতে পাওয়া্ সবচে বেশি দৌড়ঝাঁপ হচ্ছে পিস্তল রিভলবারের লাইসেন্স নিতে। তারা সরকারের মন্ত্রী এমপিদের সুপারিশসহ ধরনা দিচ্ছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রমতে- মহাজোট আমলে কয়েক হাজার আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে যার অধিকাংশই রাজনৈতিক বিবেচনায়। যারা নিজেদের নিরাপত্তার জন্য আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নিয়েছেন তাদের বড় অংশই আওয়ামীলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তাছাড়া গত পাঁচ বছরে বিএনপি ঘরনার কোনো রাজনীতিককে ব্যক্তি নিরাপত্তার আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে এমন নজির নেই। হালে ঢাকার এমপি সানজিদা খানমের পরিবারের পক্ষ থেকে চারটি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স এর জন্য আবেদন করা হয়ছে ঢাকা জেলা প্রশাসনে। [আমাদের সময় : ২১.১০. ১৩]
অত:পর এই আগ্নেয়াস্ত্রের দ্বারা কিভাবে নিরাপত্তা বিধান করে, গত পাঁচ বছরের দৈনিক পত্রিকায় তার অসংখ্য সচিত্র নমুনা আমরা দেখেছ।সেইসব বীরকাহিনী স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্য এখন একটি উদ্ধৃতি দিই। জেল থেকে জামিনে বের হওয়ার এক মাস যেতে না যেতেই যুবলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সদস্য হেলাল আকবর বাবরের বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষের বাসায় ও প্রতিষ্ঠানে গিয়ে আবারও গুলি করার অভিযোগ ওঠেছে।
পাঠক! জামিনে মানে তিনি কারাগার থেকে এসেছেন। কারাগারে গেলেন কেন? পত্রিকার ভাষায় 'জানা গেছে গত ২৪ জুন রেলওয়ে সিআরবি এলাকায় দরপত্র নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের দু'পক্ষের বন্ধুকযুদ্ধে এক শিশুসহ দু'জন নিহত হন। এই ঘটনায় পুলিশ হেলাল আকবরসহ ৫২জনকে গ্রেফতার করে। [আমাদের সময় : ২১.১০.১৩]
এই হলো ফাইনালের আগে সম্পাদিত শত সহস্র রক্তম্যাচের একটি। একজন নিষ্পাপ শিশুর রক্তে যেখানে এক পক্ষের বিজয় লেখা হয়েছে। অন্যদিকে ফাইনালম্যাচের আগে শামীম ওসমান ২৫ আক্টোবর ঢাকা-চট্রগ্রাম ও ঢাকা সিলেট মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট কাঁচপুর সেতু দললে নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলেছেন- সেদিন বিএনপি জামায়াত হেফাজত আইভি রাব্বিদের যাকে পাওয়া যাবে তাকেই পিটিয়ে হাত পা ভেঙে দিতে হবে। [প্রথম আলো : ২২.১০.১৩]পত্রিকায় সংবাদ বেরিয়েছে- খোকাকে খুঁজছে পুলিশ। বাসায় দু'দফা অভিযান।
খোকা মানে খোকন নয়। সাদেক হোসেন খোকা। বিরোধীদলের লড়াকু নেতা। সুতরাং এই সংবাদ স্বাভাকি। এও স্বাভাবিক- নিজ বাসায় ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়ের সময় আত্মঘাতী বোমা হামলায় পাকিস্তানের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের আইনমন্ত্রী ইসরারুল্লাহসহ অন্তত সাতজন নিহত হয়েছে। এও কোনো আশ্চর্য কথা নয়- 'সিরিয়ার শীর্ষস্থানীয় এক গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে হত্যা করেছে বিদ্রোহীরা। [সমকাল : ১৯.১০.১৩]
স্বাভাবিক এই কারণে- যে মরিচ খাবে তার ঝাল তো লাগবেই। তাছাড়া যে খেলতে নেমেছে সে হারতেও পারে। হারবার শক্তি যার নেই খেলতে নামা তার পক্ষে সাজে না। সচেতন প্রতিটি মানুষই জানে- এখন রাজনীতি মানে শুধু ক্ষমতার খেলাই নয়- কাঁচা টাকার জুয়া খেলাও। আজ খোকাকে ধরেছে। কপাল ভালো হলে এই ধরাধরির তালিকায় আগামীকাল মহান দুই নেত্রীকেও একসাথে দেখার সৌভাগ্য হতে পারে এই হতভাগা দেশের। মইন উ আর ফখরুদ্দীনরা তো সময়ের সৃষ্টি! সুতরাং রাজনীতির খেলোয়াররা খেলবে, হারবে, হারাবে- এতো খুবই স্বাভাবিক ঘটনা!
বহুকাল আগে বাঙলাসাহিত্যের প্রবাদপুরুষ শরৎচন্দ্র তার কিংবদন্তী উপন্যাস শ্রীকান্তে লিখে গেছেন- 'স্কুলের মাঠে বাঙালি ও মুসলমান ছাত্রদের 'ফুটবল ম্যাচ', সন্ধা হয় হয়। মগ্ন হইয়া দেখিতেছি। আনন্দের সীমা নাই, হঠাৎ ওরে বাবা এ কি রে! চটাচট শব্দ এবং 'মারো শালাকে, ধরো শালাকে।' শরৎ বাবু বলেছেন- কোলকাতার খেলার মাঠের কথা। আর এখানে মাঠ বলতে পুরো বাংলাদেশ। খেলোয়ারদের একদল এখানে স্বঘোষিত বাঙালি। সুতরাং ডিজিটাল ফর্মুলায় অন্যদল 'মুসলমান।' খেলা শেষে 'ধরো মারো' দুই মাঠেই সমান সমারোহে কম্পমান। সুতরাং চৌদ্দদল আর আঠারোদলের 'রক্তম্যাচ' দর্শক হিসেবে এই জাতিকে দেখতেই হবে। এটা এখন অলিখিত বিধান।
রক্তম্যাচের প্রস্তুতিও চলছে ভয়ঙ্কররূপে। পত্রিকার ভাষায় 'সরকারের শেষ সময়ে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নেওয়ার হিড়িক পড়েছে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে। জেলা প্রশাসনের আগ্নেয়াস্ত্র শাখা থেকে শুরু করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়, সর্বত্রই লাইসেন্স প্রত্যাশী, বিশেষ করে ক্ষমতাসীনদের চাপ বেড়ে গেছে। এক্ষেত্রে তাদের লক্ষ্য ২৪ অক্টোবরের মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স হাতে পাওয়া্ সবচে বেশি দৌড়ঝাঁপ হচ্ছে পিস্তল রিভলবারের লাইসেন্স নিতে। তারা সরকারের মন্ত্রী এমপিদের সুপারিশসহ ধরনা দিচ্ছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রমতে- মহাজোট আমলে কয়েক হাজার আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে যার অধিকাংশই রাজনৈতিক বিবেচনায়। যারা নিজেদের নিরাপত্তার জন্য আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নিয়েছেন তাদের বড় অংশই আওয়ামীলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তাছাড়া গত পাঁচ বছরে বিএনপি ঘরনার কোনো রাজনীতিককে ব্যক্তি নিরাপত্তার আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে এমন নজির নেই। হালে ঢাকার এমপি সানজিদা খানমের পরিবারের পক্ষ থেকে চারটি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স এর জন্য আবেদন করা হয়ছে ঢাকা জেলা প্রশাসনে। [আমাদের সময় : ২১.১০. ১৩]
অত:পর এই আগ্নেয়াস্ত্রের দ্বারা কিভাবে নিরাপত্তা বিধান করে, গত পাঁচ বছরের দৈনিক পত্রিকায় তার অসংখ্য সচিত্র নমুনা আমরা দেখেছ।সেইসব বীরকাহিনী স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্য এখন একটি উদ্ধৃতি দিই। জেল থেকে জামিনে বের হওয়ার এক মাস যেতে না যেতেই যুবলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সদস্য হেলাল আকবর বাবরের বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষের বাসায় ও প্রতিষ্ঠানে গিয়ে আবারও গুলি করার অভিযোগ ওঠেছে।
পাঠক! জামিনে মানে তিনি কারাগার থেকে এসেছেন। কারাগারে গেলেন কেন? পত্রিকার ভাষায় 'জানা গেছে গত ২৪ জুন রেলওয়ে সিআরবি এলাকায় দরপত্র নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের দু'পক্ষের বন্ধুকযুদ্ধে এক শিশুসহ দু'জন নিহত হন। এই ঘটনায় পুলিশ হেলাল আকবরসহ ৫২জনকে গ্রেফতার করে। [আমাদের সময় : ২১.১০.১৩]
এই হলো ফাইনালের আগে সম্পাদিত শত সহস্র রক্তম্যাচের একটি। একজন নিষ্পাপ শিশুর রক্তে যেখানে এক পক্ষের বিজয় লেখা হয়েছে। অন্যদিকে ফাইনালম্যাচের আগে শামীম ওসমান ২৫ আক্টোবর ঢাকা-চট্রগ্রাম ও ঢাকা সিলেট মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট কাঁচপুর সেতু দললে নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলেছেন- সেদিন বিএনপি জামায়াত হেফাজত আইভি রাব্বিদের যাকে পাওয়া যাবে তাকেই পিটিয়ে হাত পা ভেঙে দিতে হবে। [প্রথম আলো : ২২.১০.১৩]
বিষয়: বিবিধ
১২১৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন