আমার ব্যলকনি: এক বালতি মাটি ও একটি অবহেলিত লতা
লিখেছেন লিখেছেন সালমা ১৬ এপ্রিল, ২০১৪, ০১:৫৮:৩২ দুপুর
প্রবাস জীবনে ছেলেকে দেশের মাটি ও কৃষি বিজ্ঞানের অংশ বিশেষ পড়াতে গিয়ে, নিজেই মাটির সাথে জড়িয়ে গেলাম। মানুষের সামান্য প্রচেষ্টায় যে কেমন সফলতা আসতে পারে তা আমি লিখে বুঝাতে পারব না। মরুভূমির দেশে ছয় তলার একটি বাসায় বসবাস করছি, বাহিরে একটি লম্বা ব্যালকনি আছে। পুরানা ভবন হলেও এখনও দেখতে দারুণ। বর্তমান সময়ে ব্যালকনি যুক্ত ভবন তেমন একটা তৈরি হয় না। আমার আজকের কাহিনী এই ব্যালকনিকে ঘিরেই।
বাজার থেকে স্বামী তিতা করল্লা এনেছিল। কেটে দেখি করলা বাহিরে সবুজ দেখালেও, ভিতরে সব বিচিই লাল হয়ে আছে। মরুভূমির দেশে এমনিতেই সবজির আকাল, তার উপর তিতা করলা গুলো ভেতরে পেকে যাওয়াতে খারাপ লাগল। হঠাৎ চিন্তা করলাম বাহিরে কে জানি মাটি সহ একটি মৃত ফুলের টব রেখে গেছে। ভাবলাম সেই মাটিতেই লাগিয়ে দিই বিচি গুলো। টবটি ব্যালকনিতে রাখলাম এবং সযত্নে বিচিগুলো পুতে দিলাম।
সপ্তাহ খানেক পরেই দেখি বিচি থেকে চারা বের হচ্ছে! সাহেব কে বললাম কয়েকটি টব জোগাড় করে দিতে। তিনি তথ্য নিতে এক বন্ধুর কাছে ফোন করলেন। বন্ধুটি তারপর দিনই এক বস্তা মাটি ও কয়েকটি টব নিয়ে হাজির হলেন। আমিও অতি আনন্দে কাজে লেগে গেলাম। করলার লতা বাইতে থাকল একটি ছোট্ট পরিসরে।
এবার বেগুনের বিচি লাগালাম তাও উঠতে রইল। অতিরিক্ত টবে রসুনের কোয়া ঢুকিয়ে রাখলাম কয়েকদিন পরে সেটাও মাথা গজাল! পিঁয়াজ দিলাম সেটাও কথা বলল। এভাবে একে একে বাজার থেকে আনা বিভিন্ন সবজির অংশ বিশেষ ঢুকিয়ে রাখলাম কোনটাই ব্যর্থ হলনা। পুঁই শাকের একটি পরিত্যক্ত দণ্ড মাটিতে গেঁথে দিলাম, কয়েকদিনের মাথায় সেটাও তর তর করে সতেজ হয়ে উঠল। অবস্থা এমন হল পুঁই শাকের জন্য আর বাজারে যেতে হলনা। ঘরের প্রয়োজনীয় শাক ব্যালকনি থেকেই আসা শুরু হল!
ব্যালকনিতে করলার লতা ছড়িয়ে দেবার সুযোগ নাই। আমি প্রত্যেকটি গাছকে নিবিড় পরিচর্যা শুরু করলাম। কয়েকদিন পর থেকে অনুভব করতে লাগলাম এগুলো যেন সন্তানের মত। এগুলোকে ছেড়ে কোথাও বেড়াতে যেতেও খারাপ লাগে। গভীর রাত্রে উঠেও কতবার যত্ন করেছি পানি দিয়েছি তার ইয়ত্তা নাই। পানি দিলে মনে হয়, সেগুলো আমার সাথে আনন্দ প্রকাশ করছে। প্রতিটি গাছ সুন্দর ভাবে সাবলীল গতিতে একটি ব্যাল-কনিকে ঘিরে বেয়ে উঠতে রইল।
পুরো ব্যালকনি টি সবুজে ভরপুর হয়ে গেল। আবুধাবি শহরের জনবহুল ও গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক থেকেই ব্যলকনির গাছ গুলো নজরে আসে। কৌতূহলী ব্যক্তিরা খুঁটিয়ে দেখতে চেষ্টা করে, সেগুলো প্লাস্টিকের নাকি সত্যিকারের লতা। ওদিকে বেগুন গাছে বেগুন আসল, টম্যাটো, পুই শাক চলতে রইল। করলার লতা বাড়তে রইল। আমি লতাগুলো স্কচ টেপ দিয়ে দেওয়ালে আটকাতে থাকলাম। সপ্তাহ খানেক পড়েই ফুল আসা শুরু করল। না জানার কারণে প্রথম দিকের কিছু ফল নষ্ট হল। এবার সকালে উঠেই সদ্য ফোটা বেবি ফুল গুলোকে নিজ হাতে পরাগায়ন ঘটাতে থাকলাম। আশ্চর্য হলাম একটি ফুলও ব্যর্থ হচ্ছেনা। দেখলাম শতভাগ সফলতার সহিত প্রতিটি কন্যা বেবি বাড়ন্ত করলা হিসেবে বেড়ে উঠল।
এতে আমার সাহেবের কৌতূহল বাড়ল, তিনি আরো উৎসাহী হলেন। বস্তুত কৃষির প্রতি তার ভয়ানক আকর্ষণ আগে থেকেই ছিল। আমরা শহরে বড় হয়েছি, কোনদিন গ্রামের কৃষি জীবন দেখিনি, হাতে কোনদিন মাটি লাগাই নি, প্রয়োজন পড়েনি। সাহেব দূরের নার্সারি থেকে আরো কিছু মাটি, সার, ন’টা ফুল (সকাল নয়টায় ফুটে), গন্ধরাজ ও অর্কিডের চারা কিনে আনলেন। এবার তিনিও সার্বিক সহযোগিতা করতে লাগলেন।
দেওয়াল বেয়ে উঠা তিতা করল্লার লতা থেকে অনেক করলা খেয়েছি। সাহেবের বন্ধুরা দেখতে আসে, আমার বান্ধবীরাও দেখতে আসে। অনেকে ব্যালকনিতে বসে একটু সময় কাটাতে চায়, চা পান পর্ব চলে, কেউ কেউ নিজের ফটো তুলে। পাশের ভবন থেকেও কৌতূহলীরা ফটো তুলে। ইতিমধ্যে বাজার থেকে আনা আলুর চোখ থেকে নতুন চারা উঁকি দিচ্ছিল, চোখ গুলো তুলে পানির বোতলে মাটি ঢুকিয়ে বসিয়ে দিলাম। সেখানেও আলু জন্মাচ্ছে! দেরী করে ফেলেছি, বিশেষজ্ঞ একজন বলল যদি একটি বস্তায় তিনটি করে চোখ লাগাতাম তাহলে কয়েক কেজি করে আলু জন্মাত।
আমার ব্যালকনিতে ঘণ্টা দুয়েক সূর্যের আলো আসে। যদি অর্ধ বেলা আলো পাওয়া যেত তাহলে ফলন অনেক বেশী হত। একটি কথা বলাই হয়নি, অনেক করলা খেয়েছি! সত্যি বলতে কি মাত্র ১ বালতি মাটিই ছিল এই সাফল্যের পুঁজি!
সাহেবের কুমড়ার শাক ও কুমড়া ফুল খুবই পছন্দ, ছেলের পছন্দ মিষ্ট কুমড়া, আমার সবটাই। আমিরাতে কুমড়া শাক ও ফুল খুবই দুর্লভ সবজি। বাজারে ‘তারা’ আকৃতির একপ্রকার কুমড়া পাওয়া যায়। কাটা কুমড়া থেকে কয়েকটি খসিয়ে মাটিতে লাগালাম, সপ্তাহ খানেক পরে বড় বড় পাতা সহ সেগুলো গজানো শুরু করল। আমার খুবই খুশী লাগল, কেননা সাহেবের মনের মত ডিশ তৈরি করেত পারব। মাসের মাথায় ফুল আসা শুরু করল, বড় বড় রসালো পাতা তো আছেই। এটা এক অন্য ধরনের আনন্দ। ইদানীং দেখলাম কন্যা কুমড়ার ফুল ফুটছে। মানুষের ঘরে কন্যা সন্তান আসলে অনেকেই মন বেজার করে কিন্তু সবজি লতার ক্ষুদ্র কন্যাটিও বেজায় আনন্দ দেয়। কুমড়ার লতাগুলো করল্লার মত লটকানো যাবেনা, তাই ভেবে পাচ্ছিনা কি করা যায়।
টম্যাটোর ফুলে এতদিন ভরপুর ছিল, এখন গাছ ভরা সতেজ কাঁচা টম্যাটোয় ভরপুর। এসব দেখে সাহেবের এক বন্ধু রাত্রে ফোন করে জানালেন তাড়াতাড়ি নিচে নাম, তোমার জন্য বড় একটি উপহার এনেছি! সাহেব বাসায় ঢুকার পর তো মনে হল কেয়ামত চলছে। ভয়ানক দুর্গন্ধযুক্ত এক মাটির বস্তা নিয়ে বন্ধুবর হাজির! জৈব সারের বস্তাগুলো সাহেবের প্রকৌশলী বন্ধু বহু দূর থেকেই তার গাড়িতে বহন করে এনেছেন। এদেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে মানুষের পায়খানা গুলো পাইপের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়। সেগুলো দিয়েই জৈব সার তৈরি হয়। এদেশের বাগানগুলোতে রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হয়না। আগ্রহী যে কেউ এই সার সংগ্রহ করতে পারে। সাহেবের বন্ধুটির কাছে আমাদের এই কাজে আনন্দ লেগেছে বলে শহরের বাহিরে অনেক দূরে গিয়ে নিজের গাড়ীর পরিবেশ বরবাদ করে এগুলো বহন করে এনেছেন!
ব্যালকনির এই বাগান ময় পরিবেশ দেখে সর্বদা পাখিদের আনাগোনা ছিল। সকালে ময়না, ঘুঘু, চড়ুই, বুলবুলি ও টুনটুনি বেড়াতে আসে। একদিন দেখলাম এক জোড়া ময়না আর ঘুঘুর মাঝে ঝগড়া বিতণ্ডা চলেছ। ব্যালকনিতে সর্বদা তাদের জন্য খাদ্যের ব্যবস্থা থাকে, তবে এরা খানা নিয়ে ঝগড়া করছে না তা বুঝতে পারলাম। কয়েকদিন পর ঝগড়া থিতিয়ে গেল। ঘর পরিষ্কার করার জন্য ঘরের কার্পেট টি গোল করে খাড়া করে রেখেছিলাম, গোলাকার বান্ডিলের কার্পেটের মাথাটি বাটির মত গোলাকার বৃত্ত তৈরি করেছ। এক সকালে দেখলাম একটি ঘুঘু কার্পেটের উপর বসে আছে, পরে বুঝলাম, কার্পেটের মাথার গোলাকার স্থানের দখলদারিত্ব নিয়েই ময়না আর ঘুঘুর ঝগড়া চলছিল। ঘুঘু জোড়া কার্পেটের মাথায় বাসা বেধেছে। ঝগড়ার কারণে সময় নিয়ে বাসা বানাতে পারেনি, তাই খড়ি-কাটিও প্রয়োজন মত জোগাড় করতে পারেনি। চার পাঁচটি খড়ির উপর বসেই ডিম পেরেছে। পুরুষ পাখিটি সাধ্য মত দুই একটি কাটি যোগাড় করছে আর নারী পাখিটি সংগৃহীত কাটি সাজিয়ে ডিমে তা দিচ্ছে। আমিরাতে ঘুঘু পাখি মানুষকে একদম ভয় পায়না, পায়ের সামনেই হাটা হাটি করে। আত্মীয়তার সেই সূত্রে আমি কয়েকটি কাটি যোগাড় করে, তার সামনে রাখলাম। আশ্চর্য হয়ে দেখলাম সে আমাকে বিন্দুমাত্র ভয় না পেয়ে আমার কাটি গুলো ঠোট দিয়ে নিয়ে বাসা বানানোর কাজে মন দিচ্ছে। এই দম্পতি বাচ্চা জোড়া ফুটাতে না ফুটাতেই আরেক জোড়া এসে জায়গাটি পছন্দ করে গেল এবং তারাও তাদের সংসার পাতার কাজ শুরু করে দিল। ততদিনে আমার দামী কার্পেট তাদের মলের বাহারি বর্ণে রঙ্গিন হয়ে উঠল।
এত খুশীর সংবাদের মাঝে সমস্যাও কম ছিল না। প্রতিনিয়ত চোরের উপদ্রব ছিলই! রোপণ করা বিচি চুরি থেকে শুরু করে আলু গাছের চারা উল্টিয়ে আলু নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত কোনটাই বাকি থাকত না। ছয় তলার উপরেও যে চোরের উৎপাত হতে পারে আগে জানা ছিল না। চোর শুধুমাত্র চুরি করেই ক্ষান্ত হত না, আমাদের জন্য কিছু নিয়েও আসত। মুরগীর গোশত বিহীন হাড়, মাছের কাঁটা, চড়ুই পাখির পচা লাশ, ডিমের খোসা সহ নানাবিধ বিরক্তিকর জিনিষ। হ্যাঁ, আপনারা ঠিকই ধরেছেন, আমি ইঁদুরের কথাই বলছি। ডিশ এন্টেনার তার বেয়ে সড় সড় করে উপরে উঠে আসে। নিজের সংগৃহীত বাজে খাদ্য নিয়ে ছয় তলায় উঠে আমার বাগানের সবজি দিয়ে মিলিয়ে খায়। ডিশের তারের সাইজ আর ইঁদুরের হাতের পাতা একই সমান, তাই তার বেয়ে উঠাটা খুবই সহজ। গৃহস্বামী আবার ইঁদুর ধরায় ওস্তাদ! শোল মাছের মত খালি হাতে খপ্পর করে ইঁদুর ধরে মূহুর্তে আছাড় মেরে হত্যা করার দক্ষতা বেশ মজবুত। ইঁদুর ধরা কিংবা ছোঁয়া আমার কাছে খুবই অপছন্দনীয়, অন্যদিকে ছেলেটি ইঁদুরকে ভয় পায় ভয়ানক ভাবে। তাই তার পিতাকে এইভাবে ইঁদুর ধরতে বারণ করে। আমার পিড়াপিড়িতে অবশেষে ইরানী দোকান থেকে ইঁদুর ধরার খাঁচা জোগাড় হল, এভাবে প্রতি দুই দিন অন্তর অন্তর মোটা সোটা ইঁদুর নিহত হয়ে এক পর্যায়ে উপদ্রব নিয়ন্ত্রণে আসে।
আমার ব্যালকনিটি বড় হলেও, সেটা কোন উঠান তো নয়। গ্রামের বাড়ীর একটি ছোট্ট উঠানের চেয়েও ছোট। তারপরও এই সামান্য পরিসরে যে পরিমাণ ফলন ও ফসল পেয়েছি, খোলা জায়গা হলে আরো বেশী পরিমাণ অর্জন সম্ভব হত। সর্বোপরি, আমাদের দেশ পচা মাটির উর্বর দেশ। আমাদের দেশে যেভাবে মাটির অভাব নেই সেভাবে আলো পানির ও অভাব নেই। অভাব শুধু ইচ্ছা ও আগ্রহের। বর্তমানে দেশে যেভাবে বেকারের অভাব নাই, অবহেলিত স্থানেরও অভাব নাই। আমার বিশ্বাস প্রতিটি গৃহিনী যদি তার আশ পাশের সামান্য জায়গাগুলোতে এভাবে হাত লাগায় তাহলে সংসারে কিছুটা অভাব দূর হবে। মনের মাঝে পরিতৃপ্তি আনন্দ ফিরে আসবে আর আন্তরিক গৃহবধূ পেয়ে স্বামী-শাশুড়িও সুখী হবে।
বিষয়: বিবিধ
৪৪৯৬ বার পঠিত, ৮১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
যদি নিয়মিত না লিখেন, ডিশের ক্যবলের মাধ্যমে বড় সাইজের মেঘা-ইঁদুর পার্সেল করবো বাসায়, যাতে ইঁদুরের বিরক্তির বিষয়হলেও লিখেন।
গত সপ্তাহে ওমরা থেকে ফিরে দেখলাম পুরো বাগান ইদুরে শেষ করে দিয়েছে। অনেক ক্ষতি করেছে। এই পোষ্টটি ওমরায় যাবার আগে লিখেছিলাম, তখনও আমি ব্লগে লিখা পোষ্ট করার অনুমতি পাইনি। কয়েকদিন আগে পেয়েছি, তাই আজ পোষ্ট করেছি।
আমার সাহেব আপনার সাহেবের সাথে যোগাযোগ করতে বহুবার ফোন দিয়েছিল কিন্তু ওনার ফোনটি আউট অব সারভিস জানাচ্ছিল। তিনি সৌদি আরবে অবস্থিত অনেক ব্লগারের সাথে কথা বলেছেন। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
ব্যতীক্রম ধর্মী সাফল্য গাঁথা এই পোষ্ট টি ষ্টিকি করা হউক।
জাযাকুমুল্লাহ!!!
আমার আবেদন এত তাড়াতাড়ি মজ্ঞুর হবে কল্পনাও করিনি-
>- >-
আপনার কলমের শক্তি জানা আছে-
যা লিখবেন তা-ই অনন্য হবে নিশ্চিত...
তাই পোস্ট নিয়ে কথা বললাম না
কিন্তু এতদিন না লেখার জন্য অবশ্যই ....
নাহ, থাক, অভিযোগ স-ব বাদ
কলম (কীবার্ড) যখন হাতে উঠেছে,
এখন নিত্য-নতুন লেখা পেলেই খুশী
অনুমতি পেতে এত্তো দেরীী..
যা-ই হোক, আমি দাবী করতেই পেয়ে গেছি- এতেই আমার বড্ড আনন্দে লাগছে
(ঝড়ে বক... হোক না, ক্ষতি কী)
দোয়া করি, চাই-ও
আপ্নার লিখার স্টাইল অসাধারন। আমি একটু অলস টাইপের, লেখা লম্বা দেখলে তেমন একটা পড়িনা কিন্তু আপনার লেখাটা পুরোপুরি না পড়ে পার্লাম না
আল্লাহ্ রাব্বুল আলমীন আপনার লেখায় যেন বারাকাহ দান করেন, আমীন। নিয়মীত লেখার সবিনয় অনুরোধ রইলো।
প্রতিটি গৃহিনী যদি তার আশ পাশের সামান্য জায়গাগুলোতে এভাবে হাত লাগায় তাহলে সংসারে (কিছুটা নয় -- আমার মনেহয় অনেকটা) অভাব দূর হবে।
শ্রদ্ধেয় গৃহকর্তাকেও ধন্যবাদ, উনার রিকুয়েস্টের কারনেইতো আমরা আপ্নার এত্ত সুন্দর উপহারটি পেয়েছি। যাজাকুমুল্লাহু খাইর।
অবাক হবার মত বিষয়। আপনার জন্য ফুলটা
আপনার ক্রিয়েটিভ আ্ইডিয়াটা এত ভাল লেগেছে যে ফেসবুকে পোষ্ট করে দিয়েছি। খুব ভাল লাগল। অতিরিক্ত ভাল। গাছগাছালী জড়িয়ে বাস করার মাঝে দারুণ আনন্দ। আর এসব দেখে পাখিদের বাসা বাধাটা যেন প্রকৃতির সাথে আত্মীয়তার বন্ধনে জড়ালেন।
আহ এত সুন্দর সব্জি দিয়ে আপনার বাসায় দাওয়াত খেতে মন চাচ্ছে।
অনেক সুন্দর লিখেছেন, আশা করি নিয়মিত পাবো। ব্যলকনির বাগানটাও বেশ ভালো লেগেছে।
সুন্দর এবং প্রাঞ্জল বর্ননার সাথে আকর্ষিনয় ছবি!
সবগুলি মিলে প্রথম পোষ্টেই আপনি দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন। আশা করি আপনার লিখা বন্ধ হবেনা।
আসলে আমাদের বাড়িটা এক সময় গাছপালা ভর্তি ছিল। আমার গৃহশিক্ষক নজরুল ইসলাম টিপু ভাইকে জিজ্ঞেস করলেই জানতে পারবেন কেমন ছিল আমাদের ঘর। এখন সেখানে শুধুই বিল্ডিং। বারান্দা কিংবা ছাদেও বিভিন্ন কারনে বাগান করা যাচ্ছেনা।
আপনার পোস্টটি দেখে আমার ছোটবেলার কিছু স্মৃতি মনে পড়ে গেল। আমি বাগান করুয়া নই, বাগান দেখুয়া বলতে পারেন। তবে আমার বাবামা দু'জনেরই বাগানের শখ। আমার ছোটবেলা কেটেছে আবুধাবীতে। দু'জনেই দিনরাত লেগে থাকত ঘরের ভেতর এবং বারান্দার বাগান জিইয়ে রাখতে। আপনার মতই আমাদের বারান্দায় সব্জী ফলিয়েছিল মা, দু'টাকার সব্জীর জন্য চল্লিশ টাকার সার দিয়ে, পানি দিয়ে, নিজেরা খেয়ে, অন্যদের বিলিয়ে, ফটো তুলে এক এলাহি কান্ড! আমরা চলে আসার সময় ষোলশ দিরহামের গাছ বিক্রি করেছিল মা, লোকজনকে উপহার দেয়ার পরেও! তখন অবশ্য আবুধাবীর আবহাওয়া আরো বেশি চরমভাবাপন্ন ছিল। এখন ব্যাপকভাবে গাছ লাগানোর কারণে কিছু পরিবর্তন এসেছে। একনাগাড়ে তিন বছর এক ফোঁটা বৃষ্টিও হয়নি, মসজিদে মসজিদে বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়া, দু'আ করা খুব মনে পড়ে।
আর হ্যাঁ, ওখানকার ইঁদুরগুলো ভয়ানক, বিল্ডিং বেয়ে ঘরে ঢোকে! এমন টম অ্যান্ড জেরী খেলা আমাদেরও খেলতে হয়েছিল একটি বিল্ডিংয়ে থাকাকালীন।
আপনাকে আবারও ধন্যবাদ এমন সজীব এবং স্মৃতিজাগানিয়া একটি পোস্ট উপহার দেয়ার জন্য।
ভাবছি খুব জলদি একটু যায়গার বাবস্থা করব, খ্যাত খামার করার জন্য।
আপনার ভাবীর রিকোয়েস্ট দিলাম । স্কাইপ এ আসুন এবং কথা বলুন। মিষ্টির স্কাইপ নম্বর হলো nussyj
add করে কথা বলুন তাড়াতাড়ি। উনি লিখতে পারেন না, তাই কথা বলতে আগ্রহী
মাশা'আল্লাহ আপুর বাগানটা যেন দুনিয়ার জান্নাত। পূর্ণতা পেত যদি একটা বেবি গার্ল থাকত। অবশ্য এখনও মনে হয় সময় ফুরিয়ে যায়নি দুয়া করি আল্লাহ তাঁর কুদরতে আপনার দুনিয়াটাকেও জান্নাতে পরিণত করুন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন