রাজনীতির মঞ্চে নতুন নায়কের আবির্ভাব

লিখেছেন লিখেছেন তীরন্দাজ ১৫ মার্চ, ২০১৩, ০৩:৫৭:৫৩ দুপুর

বেশ ভালোয় ভালোয় ক্ষমতার চার বছর পার করেছে আওয়ামীলীগ সরকার। বিরোধী শিবির কার্যকর আন্দোলন থাক দুরের কথা রাস্তায় দাঁড়াতেই পারেনি কখনো। সরকারের নিরঙ্কুশ ক্ষমতা চর্চায় মাঝে মাঝে জামায়াত-শিবির কিছুটা বিরক্তির কারন ঘটিয়েছে। এই আন্দোলনে বিএনপি অনেকটাই নিরব দর্শকের ভূমিকায় থেকেছে। মাওলানা সাঈদীর বিচারের নামে প্রহসনের রায় ঘোষনার পর পরই দৃশ্যপট পাল্টে যায়। চরম প্রতিবাদী হিসেবে আবির্ভূত জামায়াত-শিবির। এ জন্য অবশ্য তাদের অনেক মূল্য দিতে হয়েছে। ১৫০ টি তাজা প্রাণ ঝরার পরও আওয়ামীলীগ সরকারের হর্তা-কর্তাদের হৃদয়ে কাঁপন ধরেনি এই হত্যাযজ্ঞে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়- কয়েক হাজার লাশের উপর পা মাড়িয়ে হলেও আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করবে। যদিও ইতিহাস তাদের চিন্তা-চেতনার সম্পূর্ন উল্টো কথা বলে। স্বাধীনতা পূর্ব মহানায়ক শেখ মুজিব তার ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতে বাকশাল কায়েম করার পরিনতিতেই ৭৫ এর ১৫ই আগষ্ট ঘটেছিল। অবশ্য সেই বাকশাল আর হাসিনার ডিজিটাল বাকশাল এক নয়। তবে আমরা মনে করি- সেই ৭৫ আর এই ২০১৩ সালও এক নয়। ডিজিটাল বাকশালের সাথে পাল্লা দিতে এদেশের জনগণও অনেকটা ডিজিটাল হয়ে গেছে, যা আমরা নাস্তিক ব্লগারদের ষড়যন্ত্র রূখে দেয়ার পদ্ধতি থেকে বুঝতে পেরেছি, আশা করি সরকার ও বুঝতে পেরেছে। নইলে- যে সকল হুজুরের হাতে তসবিহ থাকার কথা, তারা কেন ল্যাপটপ হাতে নিয়ে নাস্তিকদের জারিজুরি ফাঁস করে দেবে?

সরকার বিরোধী আন্দোলনে বর্তমানে দেশের প্রধান বিরোধীদল হিসেবে আবির্ভুত হয়েছে জামায়াতে ইসলামী। দেশী-বিদেশী রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতামত ও মিডিয়ার কল্যাণে দেশের মানুষের কাছে এটা স্পষ্টই প্রতীয়মান হচ্ছে। যুদ্ধাপরাধ ইস্যুতে বিরোধী প্রচারণার কারনে জামায়াত অনেকটাই কোনঠাসা থেকেও যে কার্যকর প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে-বিএনপির জন্য এটা শিক্ষনীয় হতে পারে। তবে প্রত্যেকটি পদক্ষেপ অত্যন্ত সতর্কতার সাথেই ফেলতে হচ্ছে জামায়াতকে। বিপরীতে সাফল্য এসেছে সামান্যই।

গত কিছুদিন থেকে আমরা হেফাজতে ইসলাম নামের একটি সংগঠনের নাম শুনছি। এর নেতৃত্বে আছে বিশেষত: ক্বাওমীপন্থী ওলামারা। নাস্তিক ব্লগারদের প্রতিরোধে তারা বৃহত্তর চট্টগ্রামে হরতাল এবং গনজাগরণ মঞ্চের সভাস্থলে পাল্টা সমাবেশ আহবান করেছে। ঘাদানিক নাস্তিকদের ৭১ সদস্যের মৃত্যুঞ্জয়ী ষ্কোয়ার্ডের বিপরীতে হেফাজতে ইসলামও বদর যুদ্ধের আদলে ৩১৩ জনের শাহাদাত স্কোয়ার্ড গঠন করে। এই চরম উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে আইন শৃংখলা বাহিনী চট্টগ্রাম মহানগরীতে ১৪৪ ধারা জারি করে। অবশেষে শাহবাগীরা তাদের কর্মসূচী স্থগিত ঘোষনা করে পিছু হটে।

হেফাজতে ইসলামের এই বিজয়ে সরকারে বিরোধী মহলে অনেকটাই চাঙ্গাভাব দেখা দেয়। যদিও হেফাজতে ইসলামের কর্তারা বলেছেন- সরকার বিরোধী আন্দোলন ও জামায়াতের রাজনীতির সাথে তাদের কোন সম্পর্ক নেই। ১৮ দলীয় জোটের নানান নিষ্ফল কর্মসূচীর বিপরীতে হেফাজতে ইসলামের একমাত্র সফল কর্মসূচীকে সাধারণ জনগণ রাজনীতিতে নতুন নায়কের আবির্ভাব হিসেবেই দেখছে। তবে তাদের বিরূদ্ধে ইতোমধ্যেই নানা অপপ্রচার শুরু হয়েছে। এখন দেখার বিষয় রাজনীতির এই পিচ্ছিল পথে হেফাজতে ইসলাম কতক্ষন টিকতে পারে না।

বিষয়: রাজনীতি

১৪০৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File