ডঃ ইউনুসের নেতৃত্বেই কি পরবর্তী সরকার ?
লিখেছেন লিখেছেন ছাত্র ২৬ আগস্ট, ২০১৩, ১১:২৯:১০ রাত
বিশ্বে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় আইডেন্টিটি ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস অবশেষে বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিষয়ে মুখ খুললেন। তিনি সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। এর এক দিন আগেই তিনি সবার কাছে প্রশ্ন রেখেছিলেন, ‘যারা গ্রামীণ ব্যাংক ভাঙতে বা ধ্বংস করতে চায়, দেশের মানুষ ও গরিবের প্রতি তাদের মমত্ববোধ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তাদের হাতে কি দেশ তুলে দেয়া যায়?’
একদিনের ব্যবধানে ডঃ ইউনুসের এই মন্তব্য রাজনৈতিক মহলে ঝড় উঠলেও সরকার বিরোধীরা ইউনুসের মত মহীরুহ সাথে পেয়ে সত্যিই খুশি। কারন ডঃ ইউনুসের মত আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত ক্ষমতাবানকে পেয়ে বিরোধীরা অনেকটাই স্বস্তির নিশ্বাঃস ছেড়েছেন। শেখ হাসিনা ও তার পৃষ্ঠপোষক রাষ্ট্রের গণবিরোধী ভুমিকার বিপরীতে ডঃ ইউনুসের অবস্থানকে কাজে লাগাতে পারলে যে রাজনৈতিক পরিবর্তন আসবে, তাতে আমাদের দুর্নীতিগ্রস্থ রাজনীতিকে নতুন এক ডাইমেনশন এনে দিবে যা আপামর জনগনের জন্য কল্যাণকর হওয়ার সম্ভাবনাকে উজ্জল করছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারনা।
ইউনূস সেন্টারে কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ইউনূস বলেন, “রাজনৈতিক কারণে দেশে অশান্তির কালো মেঘ ঘনিয়ে আসছে। কারো ইচ্ছার কারণে এ অশান্তি ঘনিয়ে আসলে দেশের মানুষ তাদের ক্ষমা করবে না।”
যদিও দীর্ঘ বছর ভারতের ছত্র ছায়ায় লালিত কাদের সিদ্দিকির হঠাৎ পাল্টে যাওয়াকে এখনও অনেকেই সন্দেহের চোখে দেখে থাকেন। কাদের সিদ্দিকি আদৌ ভারতের কাছে তার জিবনের ঋণ পরিশোধের জন্য সম্ভাব্য রাষ্ট্র ক্ষমটার অংশিদারিত্বকে কাজে লাগাবেন কিনা সেই সন্দেহ থেকেই যায়।
মানুষ অশান্তি চায় না মন্তব্য করে তিনি বলেন, “তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন হতে হবে।”
একদিন পূর্বের ডঃ ইউনুসের মন্তব্যের দিকে তাকালে তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান এখন পরিস্কার। এই নোবেল বিজয়ী আক্ষেপ করে বলেছিলেন, ‘আজ প্রতিটি কাজ ঘুষ দিয়ে করতে হয়। আমরা কি এ রকম একটি দেশ চেয়েছিলাম? যারা দুর্নীতি করতে চায়, আমরা তাদের নিবৃত্ত করব। আমাদের পরিবর্তন করতেই হবে। ইনশাল্লাহ আমরা পরিবর্তন করব। পরিবর্তন হবে।’ মাওলানা ভাসানীর স্মৃতিচারণ করে ড. ইউনূস বলেন, ‘১৯৭৬ সালে আমি একটি চ্যালেঞ্জ নিয়ে চট্টগ্রামের জোবরা গ্রাম থেকে টাঙ্গাইল গিয়েছিলাম। অনেকে আমার সফলতার ব্যাপারে সংশয় প্রকাশ করেছিল। আমি বলেছিলাম, সফল হলে সফল, না হলে দোষ স্বীকার করে নেব। আমি দুই বছর ছুটি নিয়ে টাঙ্গাইল থেকেছি। সেখানে আমি মওলানা ভাসানীর অনুসারীদের দেখেছি, বুঝেছি। মওলানা ভাসানী গরিব মানুষের মনে যেভাবে স্থান করে নিয়েছেন, অন্য নেতাদের পক্ষে সেখানে স্থান পাওয়া কষ্টকর হবে।’
ডঃ ইউনুসের এই ব্যক্তিত্বকেই বাংলাদেশের দুর্নীতিগ্রস্থ রাজনীতিকদের ভয়। এর সাথে যোগ হয়েছে তাঁর আন্তর্জাতিক সক্ষমতা যা স্পর্শ করার যোগ্যতা এখনও বাংলাদেশে কারো নেই এমনকি হয়ও নাই। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের এই অনিশ্চিত রাজনীতির কারনে দেশের ভবিষ্যৎ বাধাগ্রস্থ হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পেতে হলে ডঃ ইউনুসের মত মানুষের হাতেই রাষ্ট্র ক্ষমতা চলে গেলে রাজনীতিবিদেরা ক্ষুব্ধ হলেও জনগণের তরফে কোন বাঁধা থাকবে না বলেই সকল মহলের ধারনা। বরং রাষ্ট্রের উন্নয়নের জন্য একটি নতুন দিগন্ত খুলে যেতে পারে।
জনগণ এখন জানে যে একমাত্র ডঃ ইউনুসের পক্ষে সম্ভব বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কারো রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করা এবং বিশ্বে সম্মানের আসন স্থায়ী করা। তবে এক পর্যায়ে বঞ্চিত দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ ও আমলারা যৌথ ভাবে ডঃ ইউনুসের আগমনের বিরুদ্ধে এখনই ষড়যন্ত্র শুরু করতে পারে বলেও অনেকেরই আশংকা প্রকাশ করেছেন।
Click this link
বিষয়: বিবিধ
১৯৫২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন