জীবন যেখানে যেমন
লিখেছেন লিখেছেন অক্টোপাশ ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১০:০৯:৩১ রাত
পড়ন্ত বিকালে কাজের অবসরে একটু কফিতে চুমুক বসানোর লোভ সামলানো খুবই কঠিন। সাথে হালকা অাড্ডা হলে তো অার কথাই নেই।
তিন কলিগ একসাতে কফি বিলাস শেষ করে ফুরফুরে মেজাজে পুনরায় কাজে ফিরছিল। পাশ থেকে কে যেন কিছু বলল। সুমন পিছনে ফিরে দেখল একটা ফকির তাকেই ইশারা করে কি যেন বলছে। ততক্ষণে দুই কলিগ বেশ কিছু পথ এগিয়েছে। সুমন অত শত না ভেবে পকেট থেকে দশ টাকা বের করে দিল। লোকটা অাবার ইশারা করল আর কি যেন বলল।
ওহ, বুজতে পেরেছি। দশ টাকা তোমার চলবে না। মনে মনে বলল, ব্যাটা তুই তো দেখি বহুত দামী ফকির। অাবার পকেটে হাত দিয়ে বিশ টাকার একটা নোট বের করল। যা বাবা এবার মাফ কর।
অপর দুজন ততক্ষণে নিজের কাজে পৌঁছে গেছে নি:শ্চয়।
সুমনকে অবাক করে দিয়ে লোকটি অাবার কি যেন বলল। এবার সে প্রথম বারের মত লোকটির দিকে ভালো করে তাকালো। লোকটি অাসলে ইশারা করে বুজাচ্ছে সে টাকা নিবে না পাশের হোটেলটাতে ভাত খাবে।
তার চেহারায় ক্ষুধার চিহ্নটা পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছে সে। কখন থেকে না খেয়ে আছে তা জিজ্ঞাসা করতেও তার লজ্জা লাগছিল। নিজেকে বড় অপরাধি মনে হচ্ছে এখন তার।
হোটেলে গিয়ে বলল লোকটাকে ভাত দিতে। হোটেল বয় এমন ভাবে তাকালো যেন তাকেই কোন অপরাধের কাজ করে বলা হয়েছে।
এখন তো কিচ্ছু নেই। আবার লোকটাকে দিকে বিরক্তির দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল। কি খাবি?
মুরগির মাংস।
কত বিল? সুমন জিজ্ঞাসা করল।
নব্বই টাকা দেন।
সুমন বিলটা দিয়ে লোকটার দিকে এক নজর দেখল। আজ তার মনে হল জীবনের সব সুখ এক করলেও মনে হয় এত সুখ হবে না।
নিজের অজান্তেই তার চোখ বেয়ে দু ফোটা আনন্দাশ্রু ঝরে পড়ল।
জীবন অাবার চলতে লাগলো জীবনের গতিতে।
বিষয়: বিবিধ
১২৫৪ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন