আরবী ভাষার সাথে মুসলিমদের সম্পর্ক
লিখেছেন লিখেছেন অক্টোপাশ ২৬ জানুয়ারি, ২০১৫, ০৯:১৬:০৩ সকাল
মুসলিম, ইসলাম ইত্যাদি আরবী ভাষার শব্দ। ইসলামের সাথে আরবী ভাষার সম্পর্ক খুবই গভীর। ইসলামের প্রতিটি ইবাদতের সাথে জড়িত এই আরবী ভাষা। পৃথিবীর যেকোন দেশের যেকোন মুসলিমকে আরবী ভাষায় ইবাদত করতে হয়, কুরআন পড়তে হয়ে, খুতবা শুনতে হয়, দোয়া করতে হয়, জানাজা পড়তে হয়, হজ্ব করতে হয়।
সন্তানের নাম রাখার সময় আমরা আরবী অর্থপূর্ণ নাম রাখার চেষ্টা করি। হুজুরদের দিয়ে নাম খুঁজি কোন নামটার মধ্যে কল্যাণ রয়েছে। কোন নামটা রাখা ঠিক হবে না ইত্যাদি।
আপনার সন্তানরা প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আরবীতে পড়বে। এক্ষেত্রে আরবী শব্দগুলোর অর্থ না বুঝলে নামাজে মনোযোগ কম হবে। নামাজের মধ্যে মহান রবের সাথে তার কি ওয়াদা, কি প্রতিজ্ঞা কিছুই সে বুঝতে পারবে না। নামাজ পড়ার আগ্রহও ক্রমান্বয়ে হারিয়ে ফেলবে।
বিপরীত পক্ষে যখন ইমাম নামাজের মধ্যে বিভিন্ন সুরা তেলাওয়াত করবে আর মুসল্লিরা পঠিত শব্দ সমূহের কিছু অর্থ বুঝতে পারবে তাদের কাজে নামাজটা হয়ে উঠবে জীবন্ত।
তাই সন্তানদের শিক্ষিত করার সময় আরবী ভাষা শিক্ষাটা আমাদের প্রথম থেকেই ভালভাবে নজর দেয়া উচিত।
ইসরাইল আরবী ভাষাকে শত্রুদের ভাষা মনে করলেও তাদের স্কুল সমূহে আরবী শিখাটা বাধ্যতামূলক। কারণ শত্রুর ভাষা না বুঝলে তাদের সাথে বিজয়ী হবে কিভাবে? আমরা নিজেদের জীবন ব্যবস্থা যদি কুরআন মনে করি। যদি ধরে নিই কুরআনের আদর্শ আমাদের সন্তানদের আদর্শ হউক তাহলে আরবী শিক্ষা আমাদের অপরিহার্য মনে করতে হবে।
প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থা কতটুকু আরবী শেখায়?
আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় বেশ কয়েকটি ধারা বিদ্যমান। সাধারণ শিক্ষা, মাদ্রাসা শিক্ষা, কউমি শিক্ষা, ইংলিশ মিডিয়াম। যেখানে সাধারণ শিক্ষায় ছাত্রছাত্রীর পরিমান অনেক বেশি। এখানে সর্বোচ্চ ডিগ্রী অর্জন করার পরও একজন ছাত্র কোরআন বুঝার মত এমনকি নামাজের মধ্যে পঠিত কয়েকটি সুরা বুঝার মত আরবী শিক্ষাও পায় না।
আমাদের ছাত্ররা যদি গণিতের কঠিন কঠিন সূত্র সমূহের সমাধান করতে পারে। জঠিল সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারে তাহলে আরবী শিক্ষাটা তাদের জন্য মোটেই কঠিন নয়। আমরা তাদেরকে সে সুযোগ বা পরিবেশ না দেওয়ার কারনেই তারা আজ আরবীর জ্ঞান থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
আরবী শিক্ষা প্রসারের ক্ষেত্রে করনীয় কী?
আরবী শিক্ষা প্রসারের ক্ষেত্রে দায়ীত্ব শুধু মাদ্রাসার হুজুরদের নয়। এ দায়ীত্ব নিতে হবে সকল মুসলমানকে।
আপনি যদি একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান হন:
আপনার প্রতিষ্টানে যারা চাকুরীপ্রার্থী তাদেরকে চাকুরিতে পরীক্ষার সময় দু’একটি সহজ আরবী শব্দার্থ দিতে পারেন। এতে করে বিপুল সংখ্যক ছাত্রছাত্রী ভবিষ্যতে যারা পরীক্ষা দিবে তারা প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য প্রচুর আরবী শব্দ শিখার দিকে মনোযোগ দিবে। যারা চাকুরীর পরীক্ষার জন্য বই লিখছে তারাও তাদের বইয়ে আরবী শব্দকে গুরুত্ব দিবে।
আপনার প্রতিষ্ঠানে চাকুরিরত কর্মকর্তা কর্মচারীদের যদি প্রমোশন পরীক্ষা, ভাইবা ইত্যাদির ব্যবস্থা থাকে সেখানেও আপনি এ পদ্ধতিটি অনুসরণ করে আরবী শিক্ষায় অবদান রাখতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনি প্রতি বছরের জন্য টার্গেট নির্ধারণ করে ২০০, ৫০০ শব্দ সহজে শিখাতে পারেন।
আপনি যদি মসজিদের ইমাম হন:
মসজিদের ইমামরা প্রতিদিন পাঁচ বার নামাজ জামাতে পড়াচ্ছেন। নামাজের পর জামাতে পড়ানো সূরা সমূহের মধ্যে ব্যবহৃত শব্দ সমূহ নিয়ে আলাপ করা যেতে পারে। প্রতিদিন ৫ থেকে ১০ শব্দ শিখানো হলে বছর শেষে যারা নিয়মিত নামাজ পড়ে তারা কোরআনে অধিকাংশ শব্দের অর্থ বুঝতে পারবে।
ছোট বাচ্চাদের তালিমুন কোরআন শেখানোর পাশাপাশি বড়দেরও ও আরবী শব্দ শেখানোর প্রচেষ্টা নেয়া যেতে পারে।
লাইব্রেরী গুলোতে প্রচুর পরিমানে ইংরেজী ওয়ার্ড বুক পাওয়া যায়। কিন্তু ৯৫% মুসলমানের দেশে আরবী শব্দভাণ্ডারের বই পাওয়া খুবইক কষ্টকর। মসজিদের ইমামরা এক্ষেত্রে দু’একজন মুসল্লীকে আগ্রহি করে তুলতে পারে যারা এসব বই প্রকাশ করতে সহায়তা করবে।
আপনি যদি স্কুলের প্রধান হন:
স্কুলগুলোতে সরকারি বইগুলোর বাইরে অনেকগুলো অতিরিক্ত বই পড়ানো হয়। তার মধ্যে একটি আরবী বই রাখা যেতে পারে। আরবী শিখার গুরুত্ব তুলে ধরা যেতে পারে। বাচ্চাদের নিয়ে আরবী শব্দ প্রতিযোগীতার করা যেতে পারে।
এভাবে ছাত্র, শিক্ষক, পেশাজীবী, সাংবাদিক, কলামিস্ট, ব্লগার, ব্যবসায়ী প্রত্যেকে নিজ নিজ পেশার পাশাপাশি আরবী শিক্ষা প্রসারে অবদান রাখতে পারে।
বিষয়: বিবিধ
২৩৩০ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তথাকথিত আধুনিক হওয়ার জন্য ইংরেজিকে যতটা গুরুত্ব দিচ্ছি ততটুক গুরুত্ব আর কোন কিছুকেই দিচ্ছিনা। আার দুঃখ জনক ব্যাপার হচ্ছে মাদ্রাসা শিক্ষিত রাও যতটা উর্দু শিখেন ততটা ভাল আরবি শিখেন না। প্রাইমারি তে একসময় বাংলা,ইংরেজি ছাড়াও সংস্কৃত এবং আরবি/ফার্সি বাধ্যতামূলক ছিল। এখন অন্য কিছু মোটামুটি অপ্রয়োজনিয় বিষয় ঢুকিয়ে এটি বাদ দেওয়া হয়েছে। কয়েকদিন আগে আরেকজন ব্লগার তার অভিজ্ঞতা নিয়ে পোষ্ট দিয়েছেন যে পৃথিবির প্রায় দেশের মানুষ ই একাধিক ভাষা জানে। অবশ্য এটি কেবর উচ্চ শিক্ষায় প্রয়োজ্য। আমরা শুধু ইংরেজি উচ্চারন শিখার জন্য যা সময় নষ্ট করি অভিজ্ঞতায় দেখেছি খাঁটি ইংরেজ বা আমেরিকান রাও এত ভাল ইংরেজি বলেননা।
A PHP Error was encountered
Severity: Notice
Message: Undefined offset: 10348
Filename: views/blogdetailpage.php
Line Number: 917
"> মুক্তিযুদ্ধের কন্যা লিখেছেন : আরবী শিখে কি হবে!! আরব দেশের মুস্লিমরা পৃথিবীর অন্যতম গন্ডমূর্খ জাতি হিসেবে পরিচিত। সন্দেহ আছে???A PHP Error was encountered
Severity: Notice
Message: Undefined offset: 10348
Filename: views/blogdetailpage.php
Line Number: 764
ধন্যবাদ।
উপরের ওয়েব সাইটটি আরবী শিখতে সহায়তা করবে! ধন্যবাদ ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন