ইসলামী ব্যাংক আমার ব্যাংক এর কোন ক্ষতি আমি সহ্য করব না।

লিখেছেন লিখেছেন অক্টোপাশ ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ১১:২৮:২৬ রাত



রাজাকারের ফাঁসির দাবিতে শাহবাগের আন্দোলন শুরু হলেও সম্প্রতি এর সীমানা শুধু রাজাকারে সীমাবদ্ধ নেই। এর সাথে যোগ হয়েছে জামাত শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধকরণ। জামাত শিবিরের প্রতিষ্টানসমূহ বন্ধ করা ইত্যাদি।

শাহবাগের আন্দোলনের একটি বৈশিষ্ঠ্য দেখা যাচ্ছে তারা শুধু বিরোধী রাজাকারদের দিকে দৃষ্টি দিচ্ছে। রাজাকারের এই শ্রেণীকরণ শাহবাগ আন্দোলনকারীদের অনেকটা এক চোখা করে রেখেছে। তারা সরকারী রাজাকারদের বিরুদ্ধে কখনো সোচ্চার হয়নি।

সরকারের মধ্যে অনেক রাজাকার বা যুদ্ধাপরাধীর রয়েছে। সেদিকে একবারও না দেখে শুধুমাত্র বিরোধীদের দিকে আঙ্গুল দেখানোতে অনেকের মনেই একটি প্রশ্ন, ‘এটা সরকারী জাগরণ’।

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী সম্প্রতি স্বরাস্ট্রমন্ত্রী ম. খা আলমগিরকে রাজাকার উল্লেখ করে তার বিচার দাবী করেন। এবং সাক্ষী হিসাবে তিনি নিজে উপস্থিত থাকবেন ঘোষনা করেন। কিন্তু শাহবাগীদের এ বিষয়ে একেবারে চুপ থাকতে দেখা গেছে।

ফাঁসি চাওয়ার সাথে সাথে তারা একটি রাজনীতিক দলের কর্মীদের ধরে ধরে জবাই করার শ্লোগানও দিচ্ছেন যা খুবই উস্কানিমূলক এবং সংঘাতসৃষ্টিকারী শ্লোগান।

পাশাপাশি দেখা যাচ্ছে ইসলামী ব্যাংকের মত একটি প্রথম শ্রেণীর ব্যাংকের উপর তারা হামলা করার জন্যেও নির্দেশ দিচ্ছে এবং আন্দোলনকারীর পক্ষে কিছু বিপথগামী লোক দেশের এই প্রধান আর্থিক প্রতিষ্টানটির উপর হামলা করছে।

ইসলামী ব্যাংক এমন একটি আর্থিক প্রতিষ্টান যার সাথে জড়িত রয়েছে দেশের প্রচুর ব্যবসায়িক ও আর্থিক প্রতিষ্টান। বিভিন্ন দল ও মতের লোকজন নানাভাবে এ প্রতিষ্টানটির সাথে জড়িত।ইসলামী ব্যাংক এখন জনগনের ব্যাংক। ইসলামী ব্যাংক জামাত শিবিরের কোন ব্যাংক নয়। এই ব্যাংকে জামাত শিবিরের বাইরে অনেকের একাউন্ট আছে। আর দেশের অর্থনীতিতে ইসলামী ব্যাংকে অবদান ব্যাপক।

নির্বোধ কিছু এ প্রতিষ্টানে হামলা করতে বলছে আর সরকার এটা দেখেও না দেখার ভান করছে।এতে দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের একটি প্রভাব পরতে পারে। পাশাপাশি বিভিন্ন সুযোগ সন্ধানি কূচক্রি মহল তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য সংঘাত সৃষ্টি করতে পারে।

তাই এ বিষয়টা শাহবাগ আন্দোলনকারীদের মনে রাখতে হবে, যে কোন সংঘাত সবার জন্যে ক্ষতির কারণ হতে পারে। একবার বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে এর পরিনতি অনেকদূর পৌঁছতে পারে।

সরকারের লেজুড়বৃত্তি করে আর যাই হউক জাগরণ হয়না। পৃথিবীর কোথাও সরকারি জাগরণ হয়নি। যত জাগরণ হয়েছে সব স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে। চীনের তিয়েনম্যান স্কোয়ার, মিশরের তাহরির স্কোয়ারে জাগরণে শাসক চক্রের নির্বিচার গুলি হয়েছে। হাজার হাজার লোক নিহত হয়েছে। কিন্তু শাহবাগের জাগরণ এর পুরোপুরি বিপরীত। এখানে জাগরণকারীরা সরকারের পূর্ণ পৃষ্ঠপোষকতা পায়। জাগরণকারী আর সরকারের কথায় দাঁড়ি কমা সহ মিলে যায়। সরকার যা চায়, জাগরণকারী তা চায়। আবার জাগরণকারী যা চায়, সরকার তাড়াতাড়ি আইন করে সেটা পাশ করে। সাথে সাথে জাগরণকারী সরকারকে স্যালুট জানায়। এতেই প্রমাণিত হয় এটা জনগনের জাগরণ না।

বিভিন্ন স্কুল কলেজ প্রতিষ্ঠান থেকে বাধ্যতামূলকভাবে লোক এনে জড়ো করা হচ্ছে শাহবাগে। প্রতিষ্টানগুলোকে বাধ্য করা হচ্ছে খাবার সাপ্লাই দিতে। সরকারি খাবার, সরকারি টয়লেট, সরকারি সিকুরিটি নিয়ে সরকারের ভিতর ঘাপটি মেরে থাকা রাজাকারের বিরুদ্ধে শ্লোগান দেওয়ার মত সৎ সাহস শাহবাগিদের কোনদিনও হবে না। আর রাস্তাঘাট বন্ধ করে শাহবাগের মোড়ে ডুগডুগি বাজালেও এর চেয়ে বেশি লোক হবে।

বিষয়: বিবিধ

১৬৫৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File