মামলা- শাস্তি- রিমান্ড.
লিখেছেন লিখেছেন প্যরাপিন ২৫ আগস্ট, ২০১৪, ০৪:১১:৪৫ বিকাল
ছোটবেলায় একটি কৌতুক শুনেছিলাম ,
বিচারক আসামিকে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি আসামি?,আর আসামি জবাব না –আমি আসামি (আসামের অধিবাসী) না,আমি বাংলাদেশী। আসামির বুদ্ধিটায় আমরা খুশী, দেশ-প্রেমে বিচারক মুগ্ধ। তাকে ক্ষমা করে দিলেন।
১
নীলফামারীতে নুর সাহেবের গাড়ীবহরে হামলা হল, আসাদুজ্জামান নুর, একসময় উনার খুব ভক্ত ছিলাম । আমারা তাকে “বাকের ভাই” হিসাবে বেশী ছিনতাম তারপর কখন ও মির্জা কিংবা হাসান নামে ডাকতাম তার অভিনয়ের সূত্রে। দেখুন, নাটকে তার বিনা-অপরাধে শাস্তি হল , দেশের মানুষ প্রতিবাদী হল, পরিচালকের বাড়ীতে ইটমারা হল। ছোট ছিলাম বলে তখন নাটক দেখার সুযোগ হয়নি, যখন ২য় দফায় বিটিভি প্রচার হল, তখন দেখলাম। সে সময়ের আরে একটা ইংলিশ সিরিজ চলতে চিল Dark -Justice . আমাদের কলেজের ইংলিশ স্যার মিঃ মনিরুজ্জমান । দুটোর বিষয় বস্তু নিয়ে ক্লাসে আলোচনা করলেন। আমাদের প্রশ্ন করলেন “ কোথাও কেউ নেই” মানে কি আমরা ৮০-৯০ জন সবাই চুপ করে রইলাম। অবশেষে নীরবতা ভেঙ্গে সার বললেন, “ দেশে পুলিশ , আইন –আদালত সবাই আছে অথচ একটা নিরপরাধ লোকের শাস্তি হল , থাকা আর না-থাকার পার্থক্য কি”? মনে মনে তার প্রতি সমবেদনা জানিয়ে ছিলাম, আমারা কিছু করতে পারিনি বলে।
গাড়ীবহরে হামলা শুনে খুব খারাপ লাগলো , এই ধরনের সব কিছুকে মনথেকে ধিক্কার জানাই। কিন্তু আচার্য হলাম পরে যখন দেখলাম গড়ী বহরে হামলার ... নং আসামির লাশ উদ্ধার , একে একে ৪-৫টা লাশ উদ্ধার হল, টিভি চ্যানেল গুলোতে আসামি হিসাবে প্রচার হল । যে মানুষটা কাল এক জন মানুষ , কারো ভাই , কারো স্বামী, কারো পিতা কিং বা দলীয় নেতা ছিল। তাকে আসামি হিসাবে প্রচার করা হল। আসামি হিসাবে তার মৃত্যু অনেকটা গ্রহণ যোগ্য করা হল, অথচ পুলিশ গ্রেফতার করলোনা, আদালত অপরাধী সাব্যস্তও করলোনা। আসলে আবার মনে হল ,”কোথাও কেউ নেই”
২
আমার-দেশ সম্পাদক , গ্রেফতার হলেন , মামলা হল , “ পুলিশের কাজে বাধা দেওয়া”। উনি অফিসের উপরে ছিলেন, নিচে পাবলিক , উনি উপর থেকে বাধা দিলেন কিভাবে? এটা করে থাকলে অবশ্য তার শাস্তি হওয়া উচিত। নারায়ণ গঞ্জে সাতটা খুন হল। আমাদের স্বাধীন দেশে এত বড় ঘটনা আর ঘটেছে কিনা আমি জানিনা । পুলিশের খাতায় ১ নম্বর আসামি যার জন্য পুলিশ -RAB হন্য হয়ে গুরিতেছে তাকে একজন কোন দেশের ভিসা লাগানো আছে কিনা জানতে চাইলেন, আবার দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিলেন, এবং স্বগর্বে মিডিয়াতে প্রচার ও করলেন, আমি জানিনা এতে পুলিশের কাজে বাধা হয়েছে কিনা, পুলিশ জানে।
৩
২০০৭ এর আগে আমি ব্যক্তিগত ভাবে রিমান্ড শব্দটির সাথে পরিচিত ছিলাম না। “তারেক জিয়ার রিমান্ড“ দিয়ে আমি প্রথম এই শব্দের সাথে পরিচিত হই। পরে বড় দু দলের বাঘা - বাঘা নেতার নামের পাশে বসে ছিল শব্দটা । আমি এর সঠিক আইনি ব্যাখ্যা জানিনা, কেউ জানলে , জানাবেন । তবে ঐ সময়ে কোন একাটা পত্রিকাতে পড়েছিলাম, অনেকটা এই “ কেউ যদি ফোজাদারী কোন মামলায় ১ বছর সাজা খাটেন এবং জেল থেকে বেরিয়ে সেই অপরাধ আবার করেন তাকে এবং যার কোন স্থায়ী ঠিকানা নেই কিংবা অনবগত তাকে রিমান্ড নেওয়া যেতে পারে।
আমাদের গ্রামের এক দাদা , তিনি বলেন , তোমাদের আমলের ডাক্তার / পুলিশ কেউ দক্ষ না । কেন জানতে চাইলে উনি বলেন, আমাদের আমলে ডাক্তারের কাছে যেতাম , ডাক্তার দেখে এবং মুখের কথা শুনে ওষুধ দিতেন , আমরা ভালো হয়ে যেতাম, আর এখনকার ডাক্তার বড় বড় গুলো ডিগ্রী থাকলে অনেকগুলো টেস্ট ছাড়া ওষুধ দিতে পারেনা, আরা পুলিশ রিমান্ড চাড়া তথ্য আদায় করতে পারেনা”।
দাদার কাছ থেকে চুপ হয়ে চলে এলাম, আসলে কি বলবো, আদালতে আসামি নাকের রক্তে জামা ভিজে যাচ্ছে তাকে , রিমান্ডের অনুমতিদে, আবার একই ঘটনা বিভিন্ন থানায় মামলা , এবং সিরিজ রিমান্ড আবেদন, অনুমতি ও পাওয়া গেল, হয়তো দিন সংখ্যা আবেদনের ছেয়ে কিছুটা কম, সুস্থ মানুষ টা সোজা হয়ে দাড়াতে পারছেনা, হয়তো এত দিনে তার অবস্থান হুইল চেয়ার , তারপরে আবারো রিমান্ড, আমি বুঝিনা, মাঝে – মাঝে মনে , রিমান্ড ই শাস্তি , আইন- আদালতের প্রয়োজন ওদের কাছে নেই।
বিষয়: বিবিধ
১২১১ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
যখন রিমান্ডে নেয়া হবে আর ফেরেস্তারা সাইজ করবে তখন বুঝবে- ইনশাআল্লাহ
মন্তব্য করতে লগইন করুন