শিরোনামহীন গল্প (২)

লিখেছেন লিখেছেন সাফারাবি ২৬ জানুয়ারি, ২০১৪, ০৫:৫৩:৩৫ বিকাল

-আসসালামু আলাইকুম।

-ওয়া আলাইকুমুস সালাম।

- ম্যাডাম, ক্যামন আছেন?

- জ্বি ম্যাডাম, ভালো আছি। আপনি ভালো আছেন?

-আলহামদুলিল্লাহ, আমিও ভালো আছি। কী করেন?

-কী আর করবো, টুকটাক কাজ করছিলাম। ক্যায়া বাত হ্যায়?

-ক্যায়া বাত হ্যায়। নাজমীর বিয়ের খবরটা শুনেছিস নিশ্চয়।

-হ্যাঁ, আব্বার কাছে শুনলাম ওকে নাকি শুক্রবার দেখতে আসবে।

-হ্যাঁ, আমিও তাই জানি। আর আন্টির সাথে কথা বলেছি, আমাদের যেতে বললেন।

-আমাদের নাকি তোকে?

-এ আবার ক্যামন প্রশ্ন হলো - আমাদের না তোকে, আমাদের দু’জনকেই ডেকেছেন।

-না মানে এমনও তো হতে পারে শুধু তোকেই ডেকেছে।

-রিজা- , আন্টি আমাদের দু’জনকেই ডেকেছেন। বলেছেন, তোমাকে বললাম, রিজাকে বলে দিও। আর অবশ্য অবশ্যই দু’জনে আসবে যত ব্যস্ততাই থাকুক না কেন।

-ও আচ্ছা, আমি ভাবলাম তোকেই মনে হয় একলা যেতে বলেছে।

-জ্বি না ম্যাডাম, আপনাকেও ডেকেছে। আর তুই এটা একটা কথা বললি-? নাজমী আমাদের দু’জনেরই কাজিন তাও আবার আমরা সমবয়সী। সেখানে আমাকে ডাকবে আর তোকে ডাকবে না

- না, না, তোর এ ধারণা ক্যামন যেন হয়ে গেল।

-আচ্ছা বাবা, যা ‍Sorry.

-ওকে, কিন্তু এ কাজ আর কখনো করবি না, মনে থাকবে?

-জ্বি থাকবে। বাহ্ দারুণ তো, তুই দেখি বড় বোনের মতো কথা বলিস।

-মানতেই হবে আমি তোর বড়।

-জ্বি, জ্বি, মানছি। আচ্ছা, তুই কি সত্যিই যাচ্ছিস?

-যাচ্ছি মানে, আমি যাওয়ার জন্যে দু’পায়ে খাড়া।

-দু’পায়ে খাড়া। হি হি হি। তা ম্যাডাম, কবে যাচ্ছেন?

-কবে যাচ্ছেন আবার কীরে, বল কবে যাব।

-ওহ্ আবার ভুল। যা, কবে যাব বল্।

-শুক্রবার দেখতে আসবে, বুধবার গেলে ক্যামন হয়?

-ফিরবি কবে?

-তাড়াতাড়িই ফিরতে হবে। জুহাজের পরীক্ষা, বুঝতেই পারছিস।

-তাও কবে ফিরতে চাস? আমি ভাবছি ক’দিন থাকলে মন্দ হয় না।

-আমার থাকা যাবে না। তুই পরে আসিস, হবে না?

-আরে না, তোর সাথেই আসবো।

-তোর যে বেড়ানো হবে না।

-না হলে না হবে। কবে ফিরবি সেইটা বল।

-উম্ ম্ , শনিবার বা রবিবার?

-রবিবার আয়। তাহলে আমারও থাকা হবে আবার তোর সাথেও আসা হবে।

-ঠিক আছে, রবিবার। পরীক্ষা শেষ করে সেই কবে থেকে বাসায় বসে আছিস, কয়েকদিন থাকলে তোর ভালো লাগতো।

-তা ঠিক, বাসায় থাকতে থাকতে বোর হয়ে গেছিরে। কিন্তু একা একা আসতে যে একটুও ভালো লাগবে না, আমি তোর সাথেই আসবো।

-As your wish. তাহলে বুধবার গিয়ে রবিবার ব্যাক করছি?

-শোন, বুধবার না গিয়ে বৃহস্পতিবার চল। যদিও বাসায় তবুও প্রিপারেশন বলে একটা কথা আছে না। আর তুই অত আগে গিয়ে কী করবি।?

-কেন, গোছগাছ করতে হবে না?

-বাড়ি গোছগাছ করবি, তুই? এই দীর্ঘ জার্নি করে আবার গোছগাছের চিন্তা!

-হ্যাঁ-, এতে আশ্চর্য হওয়ার কী আছে?

-আজব তো। তুই কেন করতে যাবি, ওর বোনেরা আছে না?

-আছে, কিন্তু ওরা ছোট। এত কিছু কি আর বুঝবে। তাছাড়া আমরা একসাথে বড় হলাম, আমাদেরও তো একটা দায়িত্ব আছে, তাই না?

-তা- ঠিক, আচ্ছা শোন, তুই যে এসব কাজ করবি ওরা আবার মাইন্ড করবে না তো?

-আমার বিশ্বাস করবে না। আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করবো, এতে বরং ওরা খুশীই হবে।

-কী জানি ওদের সাথে সবার যে- সম্পর্ক।

-আপুরে, শোন, চিন্তা করে দ্যাখ, আমরা একসাথে বড় হলাম, কত মজাই না করেছি, মনে পড়ে? আমাদের উচিত ছিল যোগাযোগ ঠিক রাখা। আমরা যেমন তা পারিনি তার

চেয়ে বড় কথা আমরা তা করিনি। তাই আমি চাচ্ছি, এই সময়গুলোতে কোনো দূরত্ব, দায়িত্বে অবহেলা, পর পর মনোভাব কিছুই রাখবো না। পূর্ণ আন্তরিকতা আর

ভালোবাসা নিয়ে সব কিছু করবো যেন এটাই হতে পারে আমাদের সম্পর্কের একটা টার্নিং পয়েন্ট।

-দা-রুণ বলেছিস। সত্যিই দ্যাখ, আমাদের সম্পর্কটা ক্যামন হয়ে গেছে। আমরা ঠিকই একজন আরেকজনকে মিস করি কিন্তু পারিবারিক দ্বন্দ্বগুলো আমাদের সম্পর্কে দূরত্ব সৃষ্টি করেছে, না বরং ফাটল ধরিয়েছে বলাই ভালো। হায়রে, আমরাই না একসময় বলতাম, শত কিছুর বিনিময়ে হলেও আমাদের সম্পর্ক টিকিয়ে রাখবো। আর আজ কী অবস্থা। এত পড়ে কী করলাম, মানতেই যদি না পারলাম। জানার দাবীই তো মানা, তাই না? না আমাদের অভিভাবকরা পারল আর না আমরা পারলাম। যা হোক, তুই একটা ভালো কথা বলেছিস। দোয়া করি এটাই যেন টার্নিং পয়েন্ট হয়। আল্লাহ, আমাদের ভুলগুলো মাফ করে দাও।

-আমীন। হাসান একটা ভালো কাজ করেছে, আমার খুব ভালো লেগেছে।

-কোনটা?

-এই যে এফবিতে একটা গ্রুপ তৈরী করেছে রিলেটিভদের নিয়ে।

-হ্যাঁ, এটা ও ভালো কাজ করেছে। আসলে আমরা এখন নেটে এত টাইম দেই অথচ আত্মীয়-স্বজনদের সাথে দু’মিনিট কথা বলার টাইম হয় না।

-এজন্যেই তো বললাম ও ভলো কাজ করেছে। আমরা সবাই নেট ইউজ করি, অতএব আমাদের নিজেদের আর পরিবারের তথ্য আপডেট দিলেই সবাই জানতে পারবে, কিন্তু বাইরের কেউ জানতে পারছে না, গোপনীয়তাও থাকছে।

-ঠিক বলেছিস। আরেকটা বিষয় দ্যাখ, আমাদের ভেতরের মানে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমরা ডিসকাস করতে পারছি। অন্যদিকে বড়রা আমাদের ডিসকাসন, স্ট্যাটাস দেখে আমাদের মনোভাব, চিন্তা-চেতনা বুঝতে পারছে। এতে করে আমাদের গাইড করতে তাদেরও সুবিধা হচ্ছে।

-আরে দুনিয়ার সব কিছুই তো এখন নেট ভিত্তিক হয়ে গেছে, এখন সম্পর্কটাও নেটেই হালনাগাদ করা যাবে।

-তা যা বলেছিস। হি,,,হি,,,,,হি,,,,।

-হি,,,,,হি,,,,হি,,,,,,,।

-তাহলে আমরা বুধবার গিয়ে রবিবার ব্যাক করছি?

-ইনশাআল্লাহ।

-ইনশাআল্লাহ।

-বাসার সবাই ভালো আছে?

-হ্যাঁ, সবাই ভালো। তোর বাসায়?

-আমার বাসায়ও সবাই ভালো। ভালো থাক তাহলে।

-আচ্ছা, দোয়া কর। আসসলামু আলাইকুম।

-ফি-আমানিল্লাহ।ওয়া আলাইকুমুস সালাম।

বিষয়: বিবিধ

১২৪০ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

168004
২৬ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:০৮
নূর আল আমিন লিখেছেন : || জবাব নেই ||
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০৩:৪৪
126102
সাফারাবি লিখেছেন : Love Struck
168020
২৬ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৩৩
শিশির ভেজা ভোর লিখেছেন : আরে দুনিয়ার সব কিছুই তো এখন নেট ভিত্তিক হয়ে গেছে, এখন সম্পর্কটাও নেটেই হালনাগাদ করা যাবে।

সুন্দর সুন্দর Big Grin
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০৩:৪৪
126103
সাফারাবি লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ
168040
২৬ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:০৭
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : ভালো লাগলো গল্প ধন্যবাদ
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০৩:৪৫
126105
সাফারাবি লিখেছেন : মন্তব্যের জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ
168096
২৬ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৮:২৫
এম এম ওবায়দুর রহমান লিখেছেন : ভালো লাগল। আরো লিখুন
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০৩:৪৫
126106
সাফারাবি লিখেছেন : কেমন আছেন?
168168
২৬ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ১০:৪২
জবলুল হক লিখেছেন : ভালো লাগলো Rose Rose
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০৩:৪৬
126107
সাফারাবি লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File