জন্মদিনের অনুষ্ঠানে মতি মিয়া
লিখেছেন লিখেছেন এলিট ২৯ মার্চ, ২০২১, ০১:৩৪:০৬ রাত
হাসান সাহেব, এলাকার একজন পরিচিত মুখ। আশেপাশের লোকজন যাকে ভালোভাবে চিনে। তিনি হাসিখুশি এবং সবসময় মানুষের সাথে ভালো ব্যবহার করেন। শোনা যায়, হাসান সাহেবের অনেক অবৈধ ব্যবসা আছে। এসব অবৈধ ব্যবসা করতে গিয়ে তিনি নাকি অনেক মারাত্মক অপরাধও করেছেন। কেউ তো এটাও বলে হাসান সাহেবের নির্দেশে বেশ কিছু খুনও হয়েছে। এগুলো সবই শোনা কথা। এসবের কোন প্রমান মেলেনি।
আজকাল বিশ্বস্ত মানুষ পাওয়া কষ্ট। হাসান সাহেবের গ্রাম থেকে মফিজ নামের একটি ছেলেকে এনেছেন। ছেলেটি খুব বিশ্বস্ত। খুব মনোযোগ দিয়ে কাজ করে। মাঝে মাঝে রাত জেগে বড়ি পাহারা দেয়। হাসান সাহেব ও অনেকবার বলেছে, পাহারা দেবার জন্য দারোয়ান আছে, মফিজকে পাহারা দিতে হবে না। মফিজ খুব বিশ্বস্ত ও কর্তব্য পরায়ন। সে হাসান সাহেবের প্রতি কৃতজ্ঞ। এই বাড়ীটির প্রতি তার মায়া আছে। সে বাড়িটি যত্ন নিয়ে দেখাশোনা করে। মাঝে মাঝে রাত জেগে পাহারা দেয়। মফিজ সব সময়
এই সপ্তাহে হাসান সাহেবের ছেলের জন্মদিন। হাসান সবের টাকার অভাব নেই। খুব ধুমধাম করে জন্মদিন পালন করা হবে। অন্য কর্মচারীদের সাথে মিলে, মফিজ দুইদিন ধরে বাড়িটি সাজিয়েছে। এমনিতেই অনেক বড় বাড়ী, তার উপরে ফুল ও লাইট লাগিয়ে একেবারে রাজপ্রাসাদের মতন লাগছে বাড়িটিকে। সন্ধ্যের সময় কেক কাটা হবে। বিকেল থেকেই একে একে অতিথীরা আসতে শুরু করল। হাসান সাহেব কর্মচারীদেরকে বলে দিলেন - খেয়াল রাখবে, আজেবাজে লোক যেন না ঢোকে। অন্যান্য কর্মচারীরা সেটা শুনে কি বুঝলো, কে জানে। তবে মফিজ প্রতিজ্ঞা করল, যেভাবেই হোক, কোন আজেবাজে লোককে ঢুকতে দিবে না।
একে একে অতিথী আসছে, মফিজ গেটে দাঁড়িয়ে সবার হাতে একটি একটি ফুল দিয়ে স্বাগত জানাচ্ছে। খুব সুন্দর কেটে গেল আধা ঘন্টা। তখনই গেটের সামনে একটি কালো রঙের গাড়ী দাড়ালো। সেই গাড়ী থেকে ভুড়িওয়ালা একটি লোক নামলো। তাকে দেখে সবাই চিনেছে। কেউ কেউ তাকে সালাম দিলো। মফিজ তাকে দেখে চেনেনি, তবে নাম শুনে চিনতে পারলো। এটা হল মতি মিয়া, ক্ষমতাসীন দলের নেতা। তার নামে কয়েকটি হত্যা মামলা আছে, কয়েবার জেল খেটেছে, আর দুর্নীতি তো তার কাছে কোন ব্যাপারই না।
মফিজের মাথায় চিন্তা আসলো, এমন একটি বাজে লোক এখানে কেন? আজকের এই খুশির দিনে, এই লোকটিকে বাড়ীতে ঢুকতে দেওয়া যাবে না। সাহেব তো বলেই দিয়েছেন, আজেবাজে লোক যেন না ঢোকে। মফিজ এসব চিন্তা করছে, ঠিক তখনই দেখতে পেলো গেটের ভেতর দিয়ে মতি মিয়া ঢুকছে। দেরী না করে, দৌড়ে গিয়ে সামনে দাড়ালো মফিজ। মতি মিয়া জিজ্ঞেস করলো - এই ছোকড়া, কি হয়েছে? মফিজ বলল - আপনি ভেতরে ঢুকতে পারবেন না। মতি মিয়া এনেকদিন এমন আবাক হয়নি। সামান্য এক চাকর, তাকে এভাবে অপমান করবে, সেটা তিনি কখনো কল্পনাও করেননি। বাড়ির দারোয়ান ও অন্য করমচারীরা মতি মিয়াকে ভেতরে পাঠাতে চায়, কিন্তু এই এক মফিজ ভ্যাজাল করছে। শুরু হয়ে গেল হট্টগোল, ও চেচেমেচি। এসব শুনে ভেতর থেকে হাসান সাহেব দৌড়ে বেড়িয়ে এলেন।
মতি মিয়াকে দেখে হাসান সাহেব বললেন - আসুন, ভেতরে আসুন। কর্মচারীদের জিজ্ঞেস করলেন - কিরে চেচামেচি কেন? ঘটনা শুনে, হাসান সাহেব প্রচন্ড রেগে গেলেন। বললেন - মফিজকে মারতে মারতে এই বাড়ী থেকে বের করে দাও। হারামজাদার কত বড় সাহস, ও মতি ভাইকে আসতে বাধা দেয়। মতি ভাই, আপনি কিছু মনে করবেন না। হতচ্ছাড়া গ্রামের থেকে এসেছে, এখনো ঘটনা বোঝে নি।
এই কথাটা শেষ হতে না হতেই, মফিজের উপরে হামলা শুরু হয়ে গেল। ডানে-বায়ে, সামনে-পিছে শুধু কিল ঘুষি আর লাথি। চোখে মুখে অন্ধকার দেখে, মাটিতে পড়ে গেল। যখন জ্ঞান ফিরলো, তখন দেখতে পেলো, বাড়িটির সামনের ফুটপাতে শুয়ে আছে। তাকে জ্ঞান ফিরতে দেখে দারোয়ান তাকে বলল - এই যে তোরে ব্যাগ এখানে। আর সাহব তোরে বেতনের টাকাও দিছে। ব্যাগটা নিয়ে গ্রামে চলে যা। কোন কথা না বলে, মফিজ সেই ব্যাগ ও টাকা নিয়ে ওখান থেকে চলে গেল।
এসব ঘটনার নীরব দর্শক ছিল রাস্তার এক পাগল। পাগলটি মফিজকে বলল - কিরে, গ্রামে ফিরে যাবি? মফিজ কাদো-কাদো স্বরে বলল - হ্যা। কেন, কি হয়েছে, এমন দু-একটি কথা বলতে বলতে, পাগলটির সাথে অনেক কথা বলল মফিজ। বোঝা গেল, লোকটি পাগল হলেও, কঠিন কথা বলে। সাহস করে পাগলকে জিজ্ঞেস করেই ফেলল - আচ্ছা, মতি মিয়াকে বাধা দেবার অপরাধে, আমার চাকরী চলে যেতে পারে, আমাকে বের করে দিতে পারে, বড়োজোর, সাহেব আমাকে একটি চড় মারতে পারেি। কিন্তু ওরা আমাকে এমন নির্দয়ভাবে মারলো কেন?
পাগল বলল - মতি মিয়া হলেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা। হাসান সাহেব বিভিন্ন আবৈধ ব্যাবসা করতে পারেন এই মতি মিয়ার ছত্রছায়ায়। শুধু তাই নয়, এই বাড়ির আসল মালিক হাসান সাহেব নয়। মতি মিয়ার সহায়তায়, হাসান সাহেব অন্য একজনের বাড়ি দখল করে বসে আছেন। সেই বাডিতে মতি মিয়াকে ঢুকতে না দিলে তোমাকে তো পেটাবেই।
এসব কথা শোনার পরে, মফিজ বিদায় নিয়ে গ্রামের পথে রওনা দিল। মনে মনে বলল - এসব পাগলের কথা শুনে কি লাভ। পাগলের কথার কোন মুল্য নেই।
দ্রস্টব্যঃ গল্পের সকল চরিত্র ও ঘটনা সম্পূর্ণ কাল্পনিক। আপনি যদি, এই গল্পের সাথে কোন জীবিত বা মৃত ব্যাক্তির ঘটনার মিল খুজে পান, তাহলে সেটা শুধুমাত্র আপনার বিকৃত চিন্তার ফসল।হাসান সাহেব, এলাকার একজন পরিচিত মুখ। আশেপাশের লোকজন যাকে ভালোভাবে চিনে। তিনি হাসিখুশি এবং সবসময় মানুষের সাথে ভালো ব্যবহার করেন। শোনা যায়, হাসান সাহেবের অনেক অবৈধ ব্যবসা আছে। এসব অবৈধ ব্যবসা করতে গিয়ে তিনি নাকি অনেক মারাত্মক অপরাধও করেছেন। কেউ তো এটাও বলে হাসান সাহেবের নির্দেশে বেশ কিছু খুনও হয়েছে। এগুলো সবই শোনা কথা। এসবের কোন প্রমান মেলেনি।
আজকাল বিশ্বস্ত মানুষ পাওয়া কষ্ট। হাসান সাহেবের গ্রাম থেকে মফিজ নামের একটি ছেলেকে এনেছেন। ছেলেটি খুব বিশ্বস্ত। খুব মনোযোগ দিয়ে কাজ করে। মাঝে মাঝে রাত জেগে বড়ি পাহারা দেয়। হাসান সাহেব ও অনেকবার বলেছে, পাহারা দেবার জন্য দারোয়ান আছে, মফিজকে পাহারা দিতে হবে না। মফিজ খুব বিশ্বস্ত ও কর্তব্য পরায়ন। সে হাসান সাহেবের প্রতি কৃতজ্ঞ। এই বাড়ীটির প্রতি তার মায়া আছে। সে বাড়িটি যত্ন নিয়ে দেখাশোনা করে। মাঝে মাঝে রাত জেগে পাহারা দেয়। মফিজ সব সময়
এই সপ্তাহে হাসান সাহেবের ছেলের জন্মদিন। হাসান সবের টাকার অভাব নেই। খুব ধুমধাম করে জন্মদিন পালন করা হবে। অন্য কর্মচারীদের সাথে মিলে, মফিজ দুইদিন ধরে বাড়িটি সাজিয়েছে। এমনিতেই অনেক বড় বাড়ী, তার উপরে ফুল ও লাইট লাগিয়ে একেবারে রাজপ্রাসাদের মতন লাগছে বাড়িটিকে। সন্ধ্যের সময় কেক কাটা হবে। বিকেল থেকেই একে একে অতিথীরা আসতে শুরু করল। হাসান সাহেব কর্মচারীদেরকে বলে দিলেন - খেয়াল রাখবে, আজেবাজে লোক যেন না ঢোকে। অন্যান্য কর্মচারীরা সেটা শুনে কি বুঝলো, কে জানে। তবে মফিজ প্রতিজ্ঞা করল, যেভাবেই হোক, কোন আজেবাজে লোককে ঢুকতে দিবে না।
একে একে অতিথী আসছে, মফিজ গেটে দাঁড়িয়ে সবার হাতে একটি একটি ফুল দিয়ে স্বাগত জানাচ্ছে। খুব সুন্দর কেটে গেল আধা ঘন্টা। তখনই গেটের সামনে একটি কালো রঙের গাড়ী দাড়ালো। সেই গাড়ী থেকে ভুড়িওয়ালা একটি লোক নামলো। তাকে দেখে সবাই চিনেছে। কেউ কেউ তাকে সালাম দিলো। মফিজ তাকে দেখে চেনেনি, তবে নাম শুনে চিনতে পারলো। এটা হল মতি মিয়া, ক্ষমতাসীন দলের নেতা। তার নামে কয়েকটি হত্যা মামলা আছে, কয়েবার জেল খেটেছে, আর দুর্নীতি তো তার কাছে কোন ব্যাপারই না।
মফিজের মাথায় চিন্তা আসলো, এমন একটি বাজে লোক এখানে কেন? আজকের এই খুশির দিনে, এই লোকটিকে বাড়ীতে ঢুকতে দেওয়া যাবে না। সাহেব তো বলেই দিয়েছেন, আজেবাজে লোক যেন না ঢোকে। মফিজ এসব চিন্তা করছে, ঠিক তখনই দেখতে পেলো গেটের ভেতর দিয়ে মতি মিয়া ঢুকছে। দেরী না করে, দৌড়ে গিয়ে সামনে দাড়ালো মফিজ। মতি মিয়া জিজ্ঞেস করলো - এই ছোকড়া, কি হয়েছে? মফিজ বলল - আপনি ভেতরে ঢুকতে পারবেন না। মতি মিয়া এনেকদিন এমন আবাক হয়নি। সামান্য এক চাকর, তাকে এভাবে অপমান করবে, সেটা তিনি কখনো কল্পনাও করেননি। বাড়ির দারোয়ান ও অন্য করমচারীরা মতি মিয়াকে ভেতরে পাঠাতে চায়, কিন্তু এই এক মফিজ ভ্যাজাল করছে। শুরু হয়ে গেল হট্টগোল, ও চেচেমেচি। এসব শুনে ভেতর থেকে হাসান সাহেব দৌড়ে বেড়িয়ে এলেন।
মতি মিয়াকে দেখে হাসান সাহেব বললেন - আসুন, ভেতরে আসুন। কর্মচারীদের জিজ্ঞেস করলেন - কিরে চেচামেচি কেন? ঘটনা শুনে, হাসান সাহেব প্রচন্ড রেগে গেলেন। বললেন - মফিজকে মারতে মারতে এই বাড়ী থেকে বের করে দাও। হারামজাদার কত বড় সাহস, ও মতি ভাইকে আসতে বাধা দেয়। মতি ভাই, আপনি কিছু মনে করবেন না। হতচ্ছাড়া গ্রামের থেকে এসেছে, এখনো ঘটনা বোঝে নি।
এই কথাটা শেষ হতে না হতেই, মফিজের উপরে হামলা শুরু হয়ে গেল। ডানে-বায়ে, সামনে-পিছে শুধু কিল ঘুষি আর লাথি। চোখে মুখে অন্ধকার দেখে, মাটিতে পড়ে গেল। যখন জ্ঞান ফিরলো, তখন দেখতে পেলো, বাড়িটির সামনের ফুটপাতে শুয়ে আছে। তাকে জ্ঞান ফিরতে দেখে দারোয়ান তাকে বলল - এই যে তোরে ব্যাগ এখানে। আর সাহব তোরে বেতনের টাকাও দিছে। ব্যাগটা নিয়ে গ্রামে চলে যা। কোন কথা না বলে, মফিজ সেই ব্যাগ ও টাকা নিয়ে ওখান থেকে চলে গেল।
এসব ঘটনার নীরব দর্শক ছিল রাস্তার এক পাগল। পাগলটি মফিজকে বলল - কিরে, গ্রামে ফিরে যাবি? মফিজ কাদো-কাদো স্বরে বলল - হ্যা। কেন, কি হয়েছে, এমন দু-একটি কথা বলতে বলতে, পাগলটির সাথে অনেক কথা বলল মফিজ। বোঝা গেল, লোকটি পাগল হলেও, কঠিন কথা বলে। সাহস করে পাগলকে জিজ্ঞেস করেই ফেলল - আচ্ছা, মতি মিয়াকে বাধা দেবার অপরাধে, আমার চাকরী চলে যেতে পারে, আমাকে বের করে দিতে পারে, বড়োজোর, সাহেব আমাকে একটি চড় মারতে পারেি। কিন্তু ওরা আমাকে এমন নির্দয়ভাবে মারলো কেন?
পাগল বলল - মতি মিয়া হলেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা। হাসান সাহেব বিভিন্ন আবৈধ ব্যাবসা করতে পারেন এই মতি মিয়ার ছত্রছায়ায়। শুধু তাই নয়, এই বাড়ির আসল মালিক হাসান সাহেব নয়। মতি মিয়ার সহায়তায়, হাসান সাহেব অন্য একজনের বাড়ি দখল করে বসে আছেন। সেই বাডিতে মতি মিয়াকে ঢুকতে না দিলে তোমাকে তো পেটাবেই।
এসব কথা শোনার পরে, মফিজ বিদায় নিয়ে গ্রামের পথে রওনা দিল। মনে মনে বলল - এসব পাগলের কথা শুনে কি লাভ। পাগলের কথার কোন মুল্য নেই।
দ্রস্টব্যঃ গল্পের সকল চরিত্র ও ঘটনা সম্পূর্ণ কাল্পনিক। আপনি যদি, এই গল্পের সাথে কোন জীবিত বা মৃত ব্যাক্তির ঘটনার মিল খুজে পান, তাহলে সেটা শুধুমাত্র আপনার বিকৃত চিন্তার ফসল।
বিষয়: বিবিধ
৯৩৪ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন