বেচতে জানলে সবই বেচা যায় (চরম নোংরা বিষয়–ওয়াক থু)

লিখেছেন লিখেছেন এলিট ২০ এপ্রিল, ২০১৬, ০২:৫৬:৫৭ রাত



ভালো জিনিস ভালো দামে কেনার একটা মানষিকতা সবারই আছে । কিন্তু যে কোন জিনিস শুধুমাত্র জাকজমকপুর্নভাবে বিক্রি করতে পারলেই যে মানুষ সেটা উচ্চমুল্যে কিনে নেয় এরও উদাহরন আছে বিশ্বজুড়ে। যেমন দুর্বোধ্য কিছু চিত্রকর্ম উচ্চমুল্যে বিক্রি হওয়াটা নতুন কিছু নয়। বিশ্বের সবচেয়ে দামী চিত্রকর্মটি হিজিবিজি ছাড়া আর কিছুই নয়। নোংরা জিনিসও উচ্চমুল্যে বিক্রি হয়। যেমন হলিউডের তারকাদের অর্ধেক খাওয়া রুটি, ব্যাবহার করা টিস্যু এমনকি অন্তবাসও উচ্চমুল্যে বিক্রি হয়েছে। কিন্তু আজকে যে নোংরা জিনিসের কথা বলব তা আপনি কোনদিন শোনেননি। কোনদিন কল্পনাও করেননি যে এমন বেচাকেনা হতে পারে, তাও আবার উচ্চমুল্যে।



গল্পের নায়কের কথা বলার আগে এমন উচ্চমুল্যের ফালতু শিল্পের একটা ননুনা দিয়ে নেই। ১৯৯৯ সালে জার্মানীর আলোকচিত্র শিল্পী Andreas Gursky একটি নদীর ছবি তোলেন যার নাম দেন Rhein II, হ্যা, ছবিটা নিঃসন্দেহে খুব ভালো হয়েছে। তবে বিক্রি হয়েছে অবিশ্বাস্য মুল্যে, ৪.৩ মিলিয়ন ডলার (৩৩ কোটি টাকা)।



এই আলোকচিত্র শিল্পীকে অনেকদুর পেছনে ফেলে, দশগুন বেশী দামে শতগুন ফালতু জিনিস বিক্রি করেছেন আমেরিকান চিত্রশিল্পী Barnett Newman। তিনি Onement Vi নামক একটি ছবি আকেন ১৯৫৩ সালে। সম্প্রতি ২০১৩ সালে ওই ছবিটি ৪৩ মিলিয়ন ডলারে (৩৩০ কোটি টাকা) বিক্রি হয়। আপনি নিজেই দেখুন, নীল রং ছাড়া ওই ছবিতে আর কিছুই নেই।

দামে অনেক পিছিয়ে থাকলেও ফালতু জিনিস বানানো ও বিক্রি করাতে আরো বেশী পারদর্শিতা দেখিয়েছেন জার্মানীর ভিজুয়াল আর্টিস্ট Gerhard Richter। তিনি একটি সাধারন আয়নার উপরে লাল রং করে সেটিকে সাড়ে সাত লাখ ডলারে ( ৬ কোটি টাকা) বিক্রি করেছেন।



যদিও বিষয়ের সাথে সম্পুর্ন প্রাসঙ্গিক নয় তবুও আরেকটি ছবির কথা বলতে হচ্ছে। সেটি হল হল্যান্ডের চিত্রশিল্পি Willem de Kooning এর আঁকা ১৯৫৫ সালের একটি ছবি নাম - Interchange । অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়ে, গত বছর ছবিটি ৩০০ মিলিয়ন ডলারে (প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা) ) বিক্রি হয়। উপরে ছবিটি দেখতে পাচ্ছেন।

যাই হোক এমন পারদর্শি আরো অনেক আছেন। তাদের সবার কথা বললে দিন চলে যাবে। তাই এবার মুল নায়কের গল্প বলছি। তেনার নাম Piero Manzoni বাড়ি ইটালীতে। তিনি ১৯৯৩৩ সালে জন্মগ্রহন করেন এবং মাত্র ৩০ বছর বয়সে এক ধরনের হৃদরোগে মারা যান। এই অল্প জীবনেই তিনি এমন কিছু করেন, কিংবা বলব এমন কিছু করার সাহস করেন যে আমি এত বছর পরে তার কথা আলোচনা করছি।



নিজে মুখ দিয়ে বেলুন ফুলিয়ে সেটিকেও একটি চিত্র কর্ম নাম দিয়েছেন তিনি। নাম হল সেই চিত্র কর্মের Artist's Breath (শিল্পীর নিশ্বাস)। যাই হোক , পাগলামী এই পর্যন্ত ঠিক ছিল। কিন্তু তিনি অমর হয়ে গেলেন তার অনুরুপ পরবর্তী চিত্রকর্মে যার নাম Artist's Shit (শিল্পীর বিষ্ঠা)। ১৯৬১ সালে, তার মৃত্যুর মাত্র দুই বছর আগে ৯০ টি টিনের কৌটা বানিয়েছিলেন তিনি প্রতিটি কৌটার উপরে লেখা ছিল

Artist's Shit

Contents 30 gr net

Freshly preserved

Produced and tinned

in May 1961

অর্থাৎ, প্রতিটি কৌটায় ৩০ গ্রাম নিজের বিষ্ঠা আছে। শুধু তাই নয়, Piero Manzoni নিজেই ৩০ গ্রামের এই কৌটাগুলির প্রতিটির মুল্য নির্ধারন করেছিলেন ৩০ গ্রাম স্বর্নের সমপরিমানে। পরবর্তীতে এই কৌটাগুলির কিছু হারিয়ে গেছে। কয়েকটি আবার বিভিন্ন সময়ে উচ্চমুল্যে (লক্ষ ডলারে) বিক্রি হয়েছে। এভাবে শেষ পর্যন্ত দেখা গেছে, গড়ে “শিল্পীর বিষ্ঠা” আসলেই স্বর্নের দামে বিক্রি হয়েছে। Piero Manzoni প্রমান করেছেন, দুনিয়াতে বেচতে পারলে সবই বেচা সম্ভব, তাও আবার উচ্চমুল্যে।

আমার ফেসবুক---------- এখানে



সুত্রঃ

https://en.wikipedia.org/wiki/Piero_Manzoni

https://en.wikipedia.org/wiki/Rhein_II

https://en.wikipedia.org/wiki/Interchange_(de_Kooning

বিষয়: বিবিধ

১৫৪১ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

366391
২০ এপ্রিল ২০১৬ সকাল ০৯:৪২
ঘুম ভাঙাতে চাই লিখেছেন : মানুষ যে কত বড় গাধা এটা তারই প্রমাণ।
২১ এপ্রিল ২০১৬ রাত ১২:২৪
304074
ক্রুসেড বিজেতা লিখেছেন : ওভারস্মার্ট রা তো গাধা হয় ভাই, সব মানুষ নয়।
366393
২০ এপ্রিল ২০১৬ সকাল ১০:০৬
হতভাগা লিখেছেন : মাথানষ্ট লোক দুনিয়াতে নেহায়েৎ কম নয়
366423
২০ এপ্রিল ২০১৬ দুপুর ০১:৪৬
জ্ঞানের কথা লিখেছেন : এই বুদ্ধি চরমোনাই পীরসাহেব আগে যানলে অনেক উপকার হত। pir's Shit বানালে মুরীদ/মুরীদনী গন অনেক উপকৃত হত।

ধন্যবাদ আপনাকে।
২০ এপ্রিল ২০১৬ দুপুর ০৩:৫৩
304001
মুসলমান লিখেছেন : পীর'স ইউরিন এন্ড ব্যবহার্য টিস্যু অনলি ফর অর্জিনাল মুরিদদের জন্য। আসলে পীরসাপকে নিয়ে এভাবে লেখা ঠিক না। এর মাঝে কোন একটা মারেফত থাকতে পারে।
366428
২০ এপ্রিল ২০১৬ দুপুর ০১:৫৫
প্রবাসী আশরাফ লিখেছেন : ইন্টারেস্টিং তো...
366454
২০ এপ্রিল ২০১৬ দুপুর ০৩:২০
আবু জান্নাত লিখেছেন : অবশ্যই মানুষকে আল্লাহ তায়ারা উত্তম কোয়ালিটিতে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর নিঃকৃষ্ট স্তরে পৌছে দিয়েছেন, এসব মানুষ হলো নিঃকৃষ্ট স্তরের মানুষ।

আমাদের দেশেও এমন মানুষের অভাব নেই, নায়ক নায়িকারা যা কিছুই করে, সবগুলোকে আদর্শ ও উচ্চ হিসেবে মেনে নেয়। যেমন পোষাক, লাইফষ্টাইল সহ যাবতীয় কাজকর্ম।

আসলে এগুলো মস্তিষ্ক হীনতার পরিচয়। আপনার পোষ্ট পড়লে অনেক কিছু জানাযায়। ধন্যবাদ
366528
২০ এপ্রিল ২০১৬ রাত ১১:০২
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : টাকা থাকলে আর কি!!!
366546
২১ এপ্রিল ২০১৬ রাত ১২:২৫
ক্রুসেড বিজেতা লিখেছেন : বিনোদন পেলুম। ধন্যবাদ।
368554
০৯ মে ২০১৬ রাত ০৯:৪৯
পললব লিখেছেন : ওয়াক থু!!!

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File