জনতার পছন্দ - গোলামী
লিখেছেন লিখেছেন এলিট ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ০৫:৩৭:০০ সকাল
আগে অনেকবার লিখেছি। গনতন্ত্র হল এমন এক শাশন ব্যাবস্থা যেখানে, দেশের মালিক জনগন। যারা গদিতে বসে, তারা হল দেশের ম্যনেজার। জনগন ভোটের মাধ্যমে এই ম্যানেজার নির্বাচিত করে। এজন্য জনগনের কাছে নেতাদের জবাবদিহিতা থাকে। তাছাড়া ম্যানেজারের (নেতাদের) কাজ পছন্দ না হলে ভোটের মাধ্যমে সেই তাকে হটিয়ে দিয়ে নতুন কাউকে বসানোর অধিকার জনগনের থাকে। জনগন মাঝে মাঝে নতুন কাউকে ক্ষমতায় বসিয়ে দেখে সে কেমন কাজ করে। এটাই গনতন্ত্র।
ছবিতে বাম পাশে যে মহিলাটিকে দেখা যাচ্ছে উনি জুলিয়া গিলার্ড। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম এবং একমাত্র নারী প্রধানমন্ত্রী। এক সময় তিনি পররাস্ট্র মন্ত্রী ছিলেন। অস্ট্রেলিয়াতে এত পুরুষ নেতার মাঝে হটাত করে একজন নারী প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেলেন। জনগন একটু পরিবর্তন করে দেখে। নতুন কোন মানুষ কিংবা দলকে সুযোগ দেয়। ছবিতে পাশের লোকটির নাম টনি আবাট। উনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী। বছর দশের আগে তিনি ছিলেন একেবারে পেছনের সারিতে। তাছাড়া তার কথাবার্তাও এলোমেলো ছিল। আজকে এক কথা বলল, কালকে আরেক কথা। সেই সময় টিভিতে এক সাক্ষাতকারে তাকে জিজ্ঞেস করা হল – আপনি এমনভাবে কথা বদলান কেন? উত্তরে তিনি বলেছিলেন – “আমি লিখে তার উপরে সই না করা পর্যন্ত আমার কোন কথা চুড়ান্ত নয়। অর্থাৎ তিনি পরোক্ষভাবে স্বীকার করেই নিলেন, তিনি মুখে যা ইচ্ছে তাই বলেন, কোনটাই সত্য নয়। টিভিতে ওই দৃশ্যটি আমি নিজে দেখেছি। এমন যা খুশি তাই বলা লোকটি এখন প্রধানমন্ত্রী। কারন, জনগন তাকে পছন্দ করেছে। জনগন একে বদলে ওকে, এভাবে পালাক্রমে সবাইকে সুযোগ দিয়ে দেখছে, কার কাছে দেশ ভালো চলে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও একজন ছকের বাইরের নেতা যিনি প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। বাঘা বাঘা সব নেতাদের পেছনে ফেলে মোদী হলেন প্রধান মন্ত্রী। এখানেও কারন একটাই, জনগনের পছন্দ। আমেরিকার আসন্ন ভোটে হয়ত হিলারী ক্লিনটন জয়ী হয়ে নতুন ইতিহাস গড়বেন। এটাও কিন্তু হবে জনগনের পছন্দ। এক স্বাদ সব সময় ভালো লাগে না। তাই মাঝে মাঝে স্বাদ বদলে দেখতে হয়।
ওদিকে বাংলাদেশে, আমাদের স্বাদ পরিবর্তনের দরকার হয় না। আমারা ওই দুই দল নিয়ে খুশি আছি। যদি সুস্ট ভোটের সূযোগ দেওয়া হয়, তাহলে ঘুরে ফিরে ওই দুই দলের একটি জিতবে। বাংলাদেশে কয়েক শত রাজনৈতিক দল আছে। বিএনপি ও আওয়ামী লীগের দলছুট বড় নেতারা নিজের নতুন দল প্রতিস্টা করেছেন। সেগুলো কেউ চিনেও না। তাদেরকে কেউ ভোট দেয় না। কে যোগ্য, কে অযোগ্য এসব বাদ দিয়ে আমরা দেখি কার গায়ে এই দুই দলের মার্কা আছে। এর বাইরে আমরা কিছু চিনি না, চিনতে চাইও না। এটাও মেনে নেওয়া যেত, যদি দল দুটো গনতান্ত্রিক দল হোত। বিএনপি ও আওয়ামী লীগ এ দুটি দলই পরিবার তান্ত্রিক, গনতান্ত্রিক নয়।
মানুষ চীরকাল বেচে থাকে না। শেখ হাসিনার ও খালেদা জিয়া যেদিন দুনিয়াতে থাকবেন না, সেদিন এই দুই দলের সর্বোচ্চ নেতা হবে কারা? অবশ্যই তাদের সন্তানেরা। অন্য যে কোন বড়, জ্ঞানী, যোগ্যতা সম্পন্ন নেতার সাধ্য নেই দলের প্রধান হওয়া। কেউ সেটা মেনেও নিবে না। এই দুই দলের প্রধান হতে হলে অবশ্যই ওই দুই পরিবারের হতে হবে। অর্থাৎ সেই প্রাচীন আমলের রাজাদের মতন। রাজবংশীয় লোক না হলে রাজা হওয়া যায় না। বাকীরা সব প্রজা। রাজার গোলাম। আমরা এই দুই দল পছন্দ করি এবং এই দুই দলের প্রধান বংশীয় লোক চাই, সর্বপরি গদিতে বংশীয় লোক চাই। আমরা আসলে রাজতন্ত্রে বিশ্বাসী। রাজপরিবারের লোককে গদিতে বসিয়ে স্বস্তি পাই। নতুন কোন নেতা খুজিও না, চাইও না। আর এজন্যই আমাদের মধ্য থেকে কোন নেতা জন্মে না। আমাদের পছন্দ গোলামী। গনতন্ত্র আমাদের জন্য নয়।
বিষয়: বিবিধ
১২১২ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
হিলারী বা ডোনাল্ড - এদের মধ্যে যে ইহুদী লবীকে বেশী তুষ্ট করতে পারবে সেই যাবে গদিতে । তবে যতই নারীবাদের কথা বলুক না কেন আমেরিকানরা সবচেয়ে বেশী কনজারভেটিভ , বিশেষ করে নারীদের চুড়ান্ত ক্ষমতায়নের ব্যাপারে । এজন্য রমনি নাম নিয়েও রিপাবলিকান পুরুষপ্রার্থী ওবামার কাছে হেরে গেছেন ।
আর আমরা বাংলাদেশী মানুষদের জন্য ভিন্ন ধরনের গনতন্ত্র প্রয়োজন । রাজতান্ত্রিক গনতন্ত্র । যেটা মইন ইউ এর আমলেই দেখা গেছে ।
হাসিনা - খালেদা চলে গেলে দলগুলো ভেঙ্গে যাবে । কেউ কাউকে মানবে না । ফলে ভেতর বা বাইরের থেকে হস্তক্ষেপ আসা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না ।
আমাদের দেশের জনগন এর আর কোনো অপশন নেই এই দুই দল ছাড়া, চাইলেও অন্য কোনো দলকে ক্ষমতায় আসতে দেয়া হয় কি না তাতে যথেস্ট সন্দেহ আছে।
যাদের যোগ্যতা নেই তারা কোনো তন্ত্রেই সাফল্য পায়না এবং শুধুই অভিযোগ করে।
আপনার যোগ্যতা দিয়ে সবার নেতা হয়ে বাকি সব কিছু ভূল প্রমাণ করে দিন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন