হোয়াটস অ্যাপ থেকে হাইক

লিখেছেন লিখেছেন এলিট ০৮ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০৩:২০:২৩ রাত



শোনা যাচ্ছে, মোবাইলে ফেসবুক বা হোয়াটস অ্যাপ ইত্যাদি বিকল্প পথে চালানোর জন্য মানুষ গ্রেফতার ও লক্ষ টাকা জরিমানা পর্যন্ত হচ্ছে। কিন্তু যতদুর জানি, এই সব ওয়েব সাইট বাংলাদেশে কখনো নিষিদ্ধ হয়নি। বিকল্প পথে চালানোর ওয়েব সাইট, যাকে প্রক্সি সার্ভার বলে, সেটাও কোনদিন নিষিদ্ধ হয়েছে বলে শুনিনি। এমন কোন ঘোষনা হয়নি – আজ থেকে অমুক ওয়েবসাইট চালানো নিষিদ্ধ। বন্ধ করা আর নিষিদ্ধ করা এক জিনিস নয়। তাছাড়া, ইন্টারনেটে এমন যোগাযোগ করার বা মেসেজ পাঠানোর জন্য বিশ্ব বিখ্যাত অন্তত ৫০টি ওয়েব সাইট আছে। সেগুলো তো সবই খোলা। নিরাপত্তার প্রশ্ন যদি তোলা হয়, তাহলে যে দুঃস্কৃতিকারী আগে ফেসবুক ব্যাবহার করত তারা এখন টুইটার বা গুগল প্লাস ব্যাবহার করবে। ঠেকাবে কিভাবে ?

আসলে নিরাপত্তা জিনিসটা একটা অজুহাত মাত্র। এমনভাবে জোর করে দেশের মানুষকে ওই কয়েকটি ওয়েব সাইট থেকে বিরত রাখার বহুবিধ কারন আছে। এর অনেক কারন নিয়ে সমাজে আলোচনাও হয়। তবে যে কারনটি এর আগে কেউ খেয়াল করেনি সেটাই আজকে বলছি।

বিশ্বে সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হল আফ্রিকার কোঙ্গো। এই দেশটির পাচ ভাগের এক ভাগ মানুষ অনাহারে মারা যায়। দেশটির দারিদ্রতার জন্য যে জিনিসটা সবচেয়ে বেশি দায়ী সেটা হল উদাসীনভাবে দেশ পরিচালনা করা । কোঙ্গোর আয়তন বাংলাদেশের দ্বিগুনেরও বেশি আর লোকসংখা মাত্র ৪৬ লক্ষ। আমাদের দেশে এমন ঘনবসতি হলে জনসংখা হতো মাত্র ২৩ লক্ষ। এত কম জনসংখা হলে আমরা উন্নতির শিখরে অবস্থান করতাম। ৪৪ বছর পুরাতন আমাদের দেশে আজ পর্যন্ত কতজন নেতা বা নেত্রী জন্মেছেন যারা সত্যই দেশের উন্নতি চেয়েছেন? অন্যায় অবিচার আর অনিয়মের অভাব কোন কালেই আমাদের ছিল না। দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হবার গৌরবও আছে আমাদের।

এত কিছুর পরেও কিন্তু আমরা যে পাকিস্থান থেকে বিচ্ছিন হয়েছি, তাদের থেকে অনেক ভালো আছি। পাকিস্থান বিশ্বের সবচেয়ে বিপদজ্বনক দেশের একটা। এছাড়া আমাদের দেশে সবচেয়ে বেশী অগ্রসর হয়েছিল গার্মেন্টস শিল্পে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ছিল বিশ্বে এক নম্বর। এই জিনিসটাই আমাদের প্রতিবেশী দাদাদের সহ্য হয়নি। তারা ঠিকই রাজনীতি করে আমদের দেশের গার্মেন্টসকে পিছিয়ে দিয়েছে। প্রতিভাবান বাঙ্গালীরা কিন্তু এর পরেও দমবার পাত্র নয়। তারা আরেকটি শিল্প চালু করেছে, সেটা হল, ফ্রি-ল্যান্সিং। যারাএই ফ্রি-ল্যান্সিং জিনিসটা জানেন না, তাদের জন্য সহজে বলছি। ইন্টারনেটে বসে বিদেশ থেকে এমন কোন একটা কাজ নেওয়া হয় যে কাজটি শুধুমাত্র কম্পিউটারে বসেই করা যায়। কত ঘন্টা ধরে সেই কাজটা করল এই হিসাব রাখে একটি বিশেষ সফটওয়ার। এর পরে সেই ঘন্টা অনুযায় চুক্তিকৃত টাকা বিদেশ থেকে ওই কর্মীর কাছে পাঠানো হয়। এই ফ্রী-ল্যান্সিং বাংলাদেশে এমন জনপ্রিয় হয়েছে যে অনেকে চাকরী ছেড়ে দিয়ে ঘরে বসে এই কাজ করে একই পরিমানের টাকা আয় করছে। ফ্রিল্যান্সিং এ এখনও ভারত শীর্ষে রয়েছে । কিন্তু যেভাবে বাংলাদেশ অগ্রসর হচ্ছে তাতে খুব দ্রুতই ভারতকে ছাড়িয়ে যাবে।

যাই হোক, যারা ফ্রি-ল্যন্সিং করে তারা যেসব মাধ্যমের সাহায্যে কর্মদাতার সাথে যোগাযোগ করে তার সব কটিই বাংলাদেশে এখন বন্ধ। এর ভোগান্তি একমাত্র ভুক্তভুগিরাই জানেন। ইন্টারনেট জগতে এক মাস খুব বড় একটা সময়। যোগাযোগের প্রচলিত ওয়েবসাইটগুলি যদি বন্ধ থাকে এবং সেগুলো ব্যাবহারে জন্য জন্য যদি এমন জেল জরিমানা হয় তাহলে বাংলাদেশের মানুষ বাধ্য হয়েই এগুলো ব্যাবহার করা ছেড়ে দিবে। এই সময়ে ফ্রিল্যান্সিং এর লাগামটি আবার ভারতের হাতে চলে যাবে। শুধু কি তাই, হোয়াটস অ্যাপ এর বিকল্প হিসাবে বাংলাদেশের মানুষকে এত কিছু রেখে হাইক HIKE ব্যাবহার করতে শেখাচ্ছে। হাইক, ভারতীয় একটি পন্য। তার মানে, এয়ার টেলের মতন আরেকটি ভারতীয় পন্য জোর করে বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দিচ্ছে। তাছাড়া, বাংলাদেশের মানুষ এই হাইক ব্যাবহার করলে এদের সাথে যোগাযোগ করতে বিদেশেও সবাইকে হাইক ব্যাবহার করতে হবে। আর এভাবেই হাইক বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিবে। আর এগুলো সবই সম্ভব হচ্ছে আমাদের চেতনাধারী নেতাদের জন্য। তারা সর্বক্ষেত্রে ভারতকে সুবিধা দিবে এমন এক ডিজিটাল দেশের স্বপ্ন দেখেছিল। এখন সেটার বাস্তবায়ন তারা করছে। জ্বলে ওঠো আপন চেতনায়।

বিদ্র: যারা ভারতের এই নোংরা রাজনীতিকে ঘৃনা করেন তারা হাইক বাদ দিয়ে অন্য কোন সফটওয়ার ব্যাবহার করুন। আপনার মোবাইলে সফটওয়ার ডাউনলোড করার সময় messenger লিখে সার্চ দিন। হোয়াটস অ্যাপ বিকল্প অন্তত ২৫ টি সফটওয়ার (হাইক সহ) পাবেন। সেগুলো সবই বিশ্ব বিখ্যাত।

আমার ফেসবুক ---------- এখানে



বিষয়: বিবিধ

১৬৬২ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

353146
০৮ ডিসেম্বর ২০১৫ রাত ০৪:২৭
কাহাফ লিখেছেন : ধন্যবাদ অজস্র!
কয়েকটা সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ হওয়ায় নানাবিধ বিশ্লেষণ চলছে!
বিশ্লেষণের এই নতুন দিক টি চোখে পড়েনি!
চেতনাময়ীদের কুটকৌশল সাধারণ জনতা আসলেই বুঝতে পারছে না!
রেন্ডিয়ানদের পণ্য যথা সম্ভব এড়িয়ে চলার চেষ্টা থাকবে!
353148
০৮ ডিসেম্বর ২০১৫ রাত ০৪:৪২
বৃত্তের বাইরে লিখেছেন : দেশে কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেম থেকে শুরু করে ব্যবহৃত প্রায় সব ধরনের সফটওয়্যারই
পাইরেটেড। অনেক ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীরা নিজেরাও জানেনা। নিরাপত্তা বলতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কে কী মন্তব্য করল তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া বোঝানো হচ্ছে, এ কারনে ফেসবুকও বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এর সাথে জড়িত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। দেশের মানুষ এসব বুঝার আগে গার্মেন্টসের মত লাভের অংশ ভারতের হাতে চলে যাবে। সচেতন করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
353155
০৮ ডিসেম্বর ২০১৫ সকাল ০৫:২০
সন্ধাতারা লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ । ভালো লাগলো ।
353180
০৮ ডিসেম্বর ২০১৫ দুপুর ০১:৪৫
আবু জান্নাত লিখেছেন : বিশ্লেষণ দারুন লেগেছে। ভারতের দাদাগিরীই প্রধান্য পাচ্ছে বর্তমান সরকারের প্রতিটি কাজে। সুন্দর পোষ্টটির জন্য শুকরিয়া।
353212
০৮ ডিসেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:০১
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
353319
০৯ ডিসেম্বর ২০১৫ দুপুর ১২:১৪
ঝিঙেফুল লিখেছেন : চমৎকার পোস্টের জন্য অনেক ধন্যবাদ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File