উনি তো দুধভাত

লিখেছেন লিখেছেন এলিট ০৪ নভেম্বর, ২০১৫, ০২:৪০:৪৬ রাত



এখনকার ছেলেমেয়েরা তো মাথার উপরে আকাশ দেখার সুযোগ পায় না। সারাটা জীবন কেটে যায় ওই ফ্লাটের চার দেওয়ালের ভেতরে। আমরাও শহরের ইট পাথরের মধ্যে বড় হয়ছি। কিন্তু আমাদের সময় কম বেশী খেলাধুলা করার যায়গা ছিল। তখনকার দিনের খেলাগুলিও ছিল একটু অন্য ধরনের। লাটিম, ঘুড়ি ওড়ানো, মার্বেল ছাড়াও এমন কিছু খেলা ছিল যাতে কোন ধরনের উপকরন লাগে না। এই খেলাগুলোর একেক অঞ্চলে একেক নামে পরিচিত। কানামাছি, ছোঁয়াছুঁয়ি, পলা-পলি ইত্যাদি। একটি খেলায় সবাইকে পালিয়ে থাকতে হোত, আর একজন সবাইকে খুজে বের করত। কিছু খেলায় একজন সবাইকে দৌড়ে ছোয়ার চেস্টা করতো। যাকে ছুতে পারপবে, সে আউট। এমন অনেক ধরনের খেলা প্রচলিত ছিল।

এমন খেলার খেলোয়াড়েরা সাধারনত ৮ থেকে ১২ বছর বয়সী। মাঝে মাঝে ৩-৪ বছরের শিশু এসে বায়না ধরত, সেও খেলবে। সে তো আসলে খেলতে পারে না। তার পরেও তার কান্নাকাটি ও বড়দের অনুরোধে তাকে বাধ্য হয়ে খেলায় নিতে হোত। আর স্বাভাবিক ভাবেই, সেই শিশুটি কিছুক্ষনের মধ্যেই আউট হয়ে যেতো। কিন্তু এর পরেও, শিশু তো আরো খেলতে চায়। সে খেলার নিয়ম বোঝে না, আউট বোঝে না। সে শুধু বোঝে আরো খেলবে। এই ধরনের পরিস্থিতিতে এই “দুধভাত” নিয়মটি কাজে লাগানো হয়। অন্য অঞ্চলে এই জিনিসের অন্য নাম থাকতে পারে। “দুধভাত” হল এমন একজন খেলোয়াড়, যাকে খেলায় রাখা হয়েছে ঠিকই কিন্তু সে আসলে খেলছে না। অন্যান্য খেলোয়াড়েরা তাকে বাদ দিয়ে খেলছে। এই “দুধভাত” খেলোয়াড় কখনো আউট হয় না, কখনো কোন পয়েন্ট পায় না। সে সব খেলোয়াড়দের সাথে অযথা দৌড়ায়, আর সেই আনন্দেই তালি বাজায়।

মোটা অঙ্কের টাকা দুর্নীতি করার জন্য প্রাত্তন রেলমন্ত্রী, সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত অভিযুক্ত হলেন। সারা দেশে বিভিন্ন মিডিয়াতে নিউজ হল। সারা দেশের মানুষ জানলো তার চরিত্রের কথা। জনগন তার নামটাই বদলে দিলো। এমন পরিস্থিতিতে আদর্শবান কোন নেতা আত্মহত্যা করতেন। বিদেশী কোন মন্ত্রী পদত্যাগ করতেন। এমন পরিস্থিতিতে, আমাদের দেশের অনেক নেতাই হয়ত লজ্জায় মুখ লুকাতেন। কিন্তু সুরিঞ্জিত বাবু কোনটাই করেন নি। তাকে কখনো লজ্জিত মনে হয়নি। আওয়ামী লীগ দলটিও তার এই কর্মকান্ডে বেশ বেকায়দায় পড়েছিল। পরিস্থিতি সামলাতে, তাকে রেলমন্ত্রী পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি তো মন্ত্রী থাকবেনই। কি আর করা যায়, তাকে দপ্তর বিহীন মন্ত্রী বানানো হল। জিনিসটা ঠিক ওই “দুধভাত” খেলোয়াড়ের মতন। তার দুর্নীতির খবর সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ার পরও, তাকে মন্ত্রীত্ব থেকে অপসারন করার পরও তিনি নিলজ্জভাবে মন্ত্রীত্ব ধরে রেখেছেন। এমন একজন ব্যাক্তি কি বলে, না বলে, সেই কথার কি কোন মুল্যে আছে?

উনি নিজে হিন্দু হয়ে, ৯০% মুসলিম দেশের মানুষকে বলেন – বাংলাদেশের মাটিতে ধার্মিকের স্থান নেই। তিনি বলেন মসজিদ ও মাদ্রাসা বন্ধ করতে হবে। এসব কথা নিয়ে মাথা ঘামিয়ে আমরা অযথাই আমাদের মুল্যবান সময় নস্ট করি। চিন্তা করে দেখুন, তিনি একজন দপ্তরবিহীন মন্ত্রী। দপ্তরই যদি না থাকে, তাহলে কি তার কোন কাজ থাকে? আর কাজ না থাকলে মানুষ কি করে, সেটা সবাই জানে। যখন সুযোগ পেয়েছেন তখন নির্লজ্জতার প্রমান কাজের মাধ্যমে দেখিয়েছেন। এখন কাজ নেই, তাই কথার মাধ্যমে নির্লজ্জতার প্রমান দিচ্ছেন।

আমার ফেসবুক ---------- এখানে



বিষয়: বিবিধ

১৭৬৩ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

348409
০৪ নভেম্বর ২০১৫ রাত ০৩:৫২
শেখের পোলা লিখেছেন : এই দুধভাত খেলোয়াড়ই ৯০% মুসলীমের দেশের আইনের সংষ্কার করেছে৷ ধরা খেলেই দুধভাত নয়ত পাকা ঝানু খেলোয়াড়৷ এই দুধভাতের সাহস দেখে অবাক হই৷ এ মেড়া লাফায় শুধুই খোঁটার জোরে৷ খোঁটা একদিন ভাংবেই৷
348412
০৪ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ০৮:২১
ছালসাবিল লিখেছেন : ওনার চেহার দেখে Smug মোনেহোচ্ছে ওনার টাইম খুব Wave বেশশশশি দিন নেইইই Wave Big Grin At Wits' End
348416
০৪ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ০৮:৩৭
হতভাগা লিখেছেন : ইসলামের বিরুদ্ধে লতিফ সিদ্দিকীও গত বছর বলেছিল , তার কি ফলাফল হয়েছে আমরা তা দেখেছি । উনি দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলেন ।

সুরন্জিতও তাই ।

সুরন্জিতের ব্যাপারে কেন পদক্ষেপ নেওয়া হয় না ?
348429
০৪ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ১১:২২
আবু জান্নাত লিখেছেন : আস্ত বেহায়ার বদনখানি। লাজ শরম কি জিনিস মনে হয় ওদের চৌদ্দ গোষ্ঠীও জানে না। কুনো ব্যঙের মত গর্তের মধ্যে দশপাই জমা থাকায় হাতির সাথে খেলার সাহস দেখাচ্ছে।

এদের দশপাই হল রেন্ডিয়ার অনুগত অবৈধ ক্ষমতাদস্যুরা।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File