হজ্জে এত বেশী দুর্ঘটনা কেন হয় ?
লিখেছেন লিখেছেন এলিট ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৬:০১:০৫ সকাল
দুর্ঘটনা কখনো বলে কয়ে আসে না। যে কোন সময়, যে কোন যায়গায় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আর যেখানে বেশী মানুষের সমাগম হয় সেখানে তো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তবে হজ্জের দুর্ঘটনাগুলো প্রায় একই ধরনের। আল্লহর প্রিয় বান্দারা এমন একটি পবিত্র নগরীতে গিয়ে কেন এমন দুর্ঘটনার শিকার হয় সেটাই এখন একটা প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। আসুন দেখে নেই হজ্জের দুর্ঘটনার রকমফের।
হজ্জের দুর্ঘটনাগুলো
১৯৭৫ সালেঃ অগ্নিকান্ড - নিহত ২০০
১৯৮৭ সালেঃ সহিংসতা - নিহত ৪০০, আহত ১০০০
১৯৯০ সালেঃ পদদলিত - নিহত ১৪২৬
১৯৯৪ সালেঃ পদদলিত - নিহত ২৭০
১৯৯৭ সালেঃ অগ্নিকান্ড - নিহত ৩৪৩, আহত ১৫০০
১৯৯৮ সালেঃ চাপা পড়ে - নিহত ১১৮, আহত ১৮০
২০০১ সালেঃ পদদলিত - নিহত ৩৫,
২০০৩ সালেঃ পদদলিত - নিহত ১৪
২০০৪ সালেঃ পদদলিত - নিহত ২৫১, আহত ২৪
২০০৬ সালেঃ বিল্ডিং ভেঙ্গে - নিহত ৭৬, আহত ৬৪
২০০৬ সালেঃ পদদলিত - নিহত ৩৪৬, আহত ২৮৯
২০১৫ সালেঃ ক্রেন ভেঙ্গে - নিহত ১১১, আহত ৩৯৪
২০১৫ সালেঃ পদদলিত - নিহত ৭১৭, আহত ৮০০
সব যোগ করলে, গত ৪০ বছরে বিভিন্ন দুর্ঘটনাতে মৃতের সংখা দাঁড়ায় ৪৩০৭ জন। ১৯৭৫ সালের আগের কোন দুর্ঘটনার তথ্যা পাওয় যাচ্ছে না। একটা জিনিস লক্ষ্যনীয় যে বেশীর ভাগ দুর্ঘটনাতে কিন্তু ভীড়ের কারনে মানুষের পদতলে পিস্ট হয়েই মানুষ মারা গেছে। আরেকটি লক্ষ্যনীয় বিষয় হল ২০০৬ এর পর থেকে দীর্ধ ৯ বছর কোন দুর্ঘটনা হয়নি। এই ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনায় আসার আগে, হজ্জে কত লোকের সমাগম হয় সেটা বলে নিচ্ছি।
যোগাযোগ ব্যাবস্থার উন্নতি হওয়াতে হজ যাত্রীর সংখা ক্রমে বেড়েই চলেছে। প্রায় একশ বছর আগে, ১৯২০ সালে হজ্জ করেছেন প্রায় ৬০ হাজার মানুষ। ১৯৯৬ সালে সেটি হয় ১৮ লক্ষ মানুষ। ২০০৫ এ ২৫ লক্ষ মানুষ। এভাবে বাড়তেই থাকে। ইতিহাসে সবচেয়ে বেশী মানূষ হজ্জ করে ২০১২ সালে, ৩১ লক্ষ। এর পরে, সৌদি আরব সরকার কাবা ঘরের আশে পাশের নির্মান কাজের জন্য হাজির সংখা সীমিত করে দেয়। যার ফলে এখন প্রতি বছরে হাজির সংখা ২০ লক্ষ।
আমরা যদি ১৯৭৫ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত এই ৪০ বছরের একটা খসড়া হিসাব করি তাহলে মোট হাজীর সংখা দাঁড়াবে প্রায় ৬ কোটি। এই ৬ কোটি লোকের মধ্যে ৪ হাজার লোক মানে হচ্ছে, প্রতি এক লক্ষে মাত্র ৬ জন। এই অল্প সংখ্যক লোক দুর্ঘটনায় মারা যাওয়াটা খুব বেশী নয়। আমার ধারনা, এই ৬ কোটি লোক হজ্জে না গিয়ে বাড়ি বসে থাকলেও ৪০ বছরে ৪ হাজার লোক বিভিন্ন দুর্ঘটনাতে এমনিতেই মারা যেত। অর্থাৎ, হজে যে খুব বেশী দুর্ঘটনা হয় বা দুর্ঘটনাতে অনেক লোক মারা যায়, এটা ঠিক নয়। প্রতি বছর এত লোক হাজির হবার পরেও হজ্জ একটি নিরাপদ ধর্মীয় সমাবেশ।
বারবার পাথর নিক্ষেপ করতে গিয়ে মানুষ পদদলিত হবার কারনে ২০০৬ সালে সৌদি সরকার ওই পাথর মারার স্থানটি পুনঃগঠন করে। যার ফলে আরো বেশী নিরাপদে পাথর মারা যায়। আল্লাহর রহমতে এজন্য গত ৯ বছর কোন দুর্ঘটনাও ঘটেনি। কিন্তু এই বছর দুটো দুর্ঘটনা ঘটেছে। ক্রেন ভেঙ্গে পড়েছে, মানুষ পদদলিতও হয়েছে। আবারো বলছি দুর্ঘটনাতে কারোই হাত নেই। তবে সৌদী আরবের ব্যাবস্থাপনার ত্রুটিকে বহুলাংশে দায়ী করা যায়।
আমি এমন বেশ কিছু জাতি দেখেছি। তারা সকল ধরনের উন্নত প্রযুক্তি ও সুযোগ সুবিধা হাতে নিয়েও সহজ কাজকে কঠিন বানিয়ে ফেলে। কিভাবে যেন হজবরল করে অব্যবাস্থাপনার নজির সৃস্টি করে। এই ব্যাপারে সেরা হল মধ্যপ্রাচ্যের লোকেরা। এই লেখা যারা পড়ছেন তাদের অনেকেই মধ্যপ্রাচ্যে থাকেন। অনেকে হয়ত আমার কথা মানতে পারবেন না। কিন্তু আপনার যদি কোন পশ্চিমী দলের সঙ্গে কাজ করে অভ্যাস থাকে তাহলে বুঝবেন আরবের লোকেরা সহজ কাজটাকে বেশী লোক আর যন্ত্রপাতি লাগিয়ে কিভাবে কঠিন করে তোলে। যার যেটা ভালো তাকে সেটা ভালো বলতে হবে। পশ্চিমা লোকেরা, ইহুদী, নাসারা, এরা খুব গুছিয়ে, কায়দা করে কাজ করতে পারে।
যাই হোক, হজ্জে ১৯২০ সালে কতজন গিয়েছে সেই তথ্য পাওয়া গেলেও ১৯৭৫ সালের আগে হজ্জের দুর্ঘটনার কোন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা ধরে নিতে পারি, ১৯৭৫ এর আগে বড় কোন দুর্ঘটনা ঘটেনি। মধ্যপ্রাচ্যের লোকদের জন্য এটা অত্যান্ত স্বাভাবিক। কারন ৭০ এর দশক থেকেই তাদের হাতে প্রযুক্তি আসতে শুরু করেছে। আর তখন থেকেই হযবরল শুরু। আবার দেখুন, সেই ২০১২ সালে শুরু করেছে কাবা ঘরের পাশে মসজিদ ও ওভার ব্রিজ বানানোর কাজ। তিন বছরেও শেষ করতে পারেনি। কবে পারবে তা কে জানে। অথচ পশ্চিমা দেশগুলিতে ১০০ তলা বিল্ডিং বানাতে এক বছরেরও কম সময় লাগে। এর কারন হল সঠিক ব্যাবস্থাপনা। কাজ শেষ করেনি, ভালো কথা। ক্রেন সরিয়ে নিয়ে যাক। না, সেটা করবে না। ওই বড় বড় ক্রেন সেখানেই রাখবে যেখানে ২০ লক্ষ লোক চলাফেরা করবে। তাছাড়া বাতাসে ক্রেন ভেঙ্গে পড়ে এমন কোন নজির আছে বলে আমার জানা নেই। ভাঙলেও উপরের অংশ ভেঙ্গে পড়বে। কিন্তু এই ক্রেন তো মুল সহ উপড়ে গেছে। কিভাবে ক্রেনটিকে মাটিতে আটকে রেখেছিল সেটা আল্লাহই জানেন। বাংলাদেশীরা ব্যাবস্থাপনায় ওদের চেয়ে অনেক ভালো। তাবলিগ জামায়াতের সবচেয়ে বড় সমাবেশ বিশ্ব ইজতেমাতে ১০-১৫ লক্ষ লোক ঢাকার টঙ্গীতে জমা হয়। মাঝে মাঝে বিশেষ কোন আন্দোলনেও এমন লোক জড় হয়। আল্লাহর রহমতে তেমন কোন দুর্ঘটনা হয় না। আমাদের দেশে মানুষ পদদলিত হয়ে মারা যায় জাকাতের কাপড় নিতে গিয়ে। সেটা ওই একই কারনে - ব্যাবস্থাপনার অভাব। সঠিক ব্যাবস্থা না নিয়েই হাজার লোককে ডেকে বসে রয়েছে, দুর্ঘটনা তো হবেই। হজ্জের বিভিন্ন দুর্ঘটনার পেছনে কিছুটা হলেও ব্যবস্থাপনার বা দক্ষতার অভাব রয়েছে।
কত দেশকে কত রকমের কায়দা করতে হয় পর্যটককে আকৃস্ট করার জন্য। ওদিকে ভাগ্যক্রমে কাবাঘর দেশটির ভেতরে হওয়াতে সৌদি আরব এমনিতেই প্রতি বছর ২০ লক্ষ ধর্মীয় পর্যটিক (হাজি) পাচ্ছে। এই হাজীরা ওদের সরকারে আয়ের একটা বড় অংশ। তাছাড়া ওদের তো তেল বিক্রি করা পয়সার অভাব নেই। আমি বিশ্বাস করি সৌদি সরকার হাজিদের সেবা ও নিরাপত্তার ব্যাপারে সচেতন। কিন্তু এই সেবা ও নিরাপত্তার কাজ কাদের দিয়ে করাচ্ছে সেটা একটু সচেতনতার সাথে দেখলে এমন দুর্ঘটানা হয়ত ৫০ বছরে একবার হবে।
তবে সব কিছুর পরেও এটা ঠিক যে হজ্জে গিয়ে মৃত্যু বরন করাটা আসলে সৌভাগ্যের ব্যাপার। আল্লহ তাদেরকে জান্নাত দান করুন। সেই সাথে আহত হাজীদের দ্রুত সুস্থতা দান করুন। সকল হাজির হজ্জ কবুল করুন। যারা হজ্জের ব্যাবস্থাপনার দায়িত্বে আছেন, আল্লাহ তাদের তৌফিক দান করুন যেন তারা আরো দক্ষতার সাথে কাজ করতে পারেন।
আমার ফেসবুক ---------- এখানে
বিষয়: বিবিধ
২১০৭ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সৌদি রাজার ছেলের হজ্জ কনভয় এর কারনে এই ভাগ দৌড় আর তার ফলে ১০০০ এর অধিক হাজিদের মর্মান্তিক মৃত্যু।
অতঃপর সৌদি হাজিদের কে যে ভাবে জড় করছে যে তারা আবর্জনা।
ক্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে । মক্কায় সারা বছরই নির্মাণকাজ চলে।আপনারা বলছিলেন ক্রেন সরানোর সুযোগ ছিল না। তাদের কথা শুনে হয়েছিল তারা সৌদির চেয়েও বেশি ওয়াহাবী। কারণ দুর্ঘটনার পর সৌদি কর্তৃপক্ষ ক্রেন সরিয়েছে । হজের সময় নির্মাণকাজও বন্ধ রেখেছে। ক্রেন দুর্ঘটনার পর হাজীদের হোটেলে আগুন এবং সবশেষ মীনার ঘটনা অবশ্যই সৌদি আরবের ওহাবীদের উদাসীনতার কারণে।
আপনি লিখেছেন : "এই ৬ কোটি লোকের মধ্যে ৪ হাজার লোক মানে হচ্ছে, প্রতি এক লক্ষে মাত্র ৬ জন। এই অল্প সংখ্যক লোক দুর্ঘটনায় মারা যাওয়াটা খুব বেশী নয়। আমার ধারনা, এই ৬ কোটি লোক হজ্জে না গিয়ে বাড়ি বসে থাকলেও ৪০ বছরে ৪ হাজার লোক বিভিন্ন দুর্ঘটনাতে এমনিতেই মারা যেত। “................ এসব তথ্য দেওয়ার জন্য কত করে দেন সৌদি বাদশাহ ।
জেনে রাখুন :
১। পৃথিবীতে মাত্র দুটি রাস্ট্র মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের প্রত্যক্ষ সমর্থনে বিশ্ব মানচিত্রে টিকে আছে। একটি ইসরায়েল ও অন্যটি সৌদি আরব। আমেরিকা আজকেই এই দুই দেশের উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করলে আগামীকালকেই বিশ্ব মানচিত্র থেকে এরা হারিয়ে যাবে ! এবার সেই কথাটিই সৌদি আরবের বেলায় প্রকাশ্যে বলেছেন মার্কিন রিপাবলিকান অন্যতম প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ! তিনি বলেছেন, আমাদের সমর্থনের কারণেই সৌদি আরব টিকে আছে। আমাদের সমর্থন ছাড়া সৌদি আরবের কোনো অস্তিত্ব থাকবে না । সৌদি আরবে সামান্য কিছু হলেই আমরা সৌদি আরবকে রক্ষার জন্য যুদ্ধ জাহাজ পাঠাই, জঙ্গী বিমান পাঠাই। আমাদের সমর্থনের কারণে সৌদি আরব প্রতিদিন বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার আয় করতেছে । বিনিময়ে আমরা কি পাচ্ছি ? কিছুই পাচ্ছি না । তিনি বলেছেন তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে সমর্থনের জন্য সৌদি আরবের কাছ থেকে সৌদি অর্থের উপর ভাগ বসাবেন। একই ভাবে তিনি মার্কিন সমর্থনপুষ্ট অন্যান্য আরব রাস্ট্রগুলোর কাছ থেকেও সমর্থনের বিনিময়ে অর্থ দাবি করেণ ! প্রসঙ্গত যে অর্তীতে ট্রাম্প সৌদি আরবকে বিশ্ব জঙ্গীবাদের প্রধান অর্থ দাতা হিসাবে উল্লেখ করেছিলেন।
২। ইসরাইল সৌদীদের কত ভালবাসে । দেখেন সৌদী আরবে শতাধিক হাজী সৌদীদের গাফিলতির কারনে ইন্তেকাল করে। সারা বিশ্বের মুসলমান অত্যন্ত ক্ষুদ্ধ। এবং মুসলমান জবাবব চায় ও এটা সৌদী সরকার বিরোধী আন্দোলন হতেও পারত। সৌদী সরকার যাতে বিপাকে না পড়ে সৌদীদের চাচাত ভাই সাহায্যে এগিয়ে আসে। এখন মিডিয়া যাতে এটা নিয়ে বেশি আলোচনা না করতে পারে মুসলমানদের ক্ষোভ ও দষ্টি অন্যদিকে নিতে ইসরাইল আল আকসায় আবার গন্ডগোল শুরু করে এখন মিডিয়া ক্যামেরা সব সেখানে। সৌদীরা বেঁচে গেল বা সাময়িক বাঁচানোর চেষ্টা করা হলো। তবে কর্মফল ভোগ করতেই হবে।
পরিশেষে বলিছি :
উপরের নিবন্ধ অনুযায়ী ইসরাইলী ইহুদীরাও বলবে, আমরা মুসলিম হত্যা করি না । করলেও যা করেছি, তা প্রতি ১০ লাখ মুসলিমের মধ্যে মাত্র ১ জন মুসলিমকে হত্যা করি ।
ওহাবীদের কাছে মানুষের জান-মাল এবং সম্মানের কোন মূল্য নেই । এজন্য চাঁদে সাইদীকে দেখিয়ে এদেশী ওহাবী জামায়াত-শিবিররা জান-মালের ক্ষতি করে ও বাংলা ভাইকে দিয়ে বোমাবাজি করে থাকে ।
কেয়ামতে আলামত সম্পর্কে একটি সহিহ হাদিস আছে।
"যখন উটের নগণ্য রাখালেরা যখন বড় বড় অট্টালিকা নির্মাণে প্রতিযোগিতা করবে।"
"When the shepherds of black camels start boasting and competing with others in the construction of higher buildings."
[সহিহ বুখারী, কিতাব-২, হাদিস-৪৩] [১]
'উটের নগণ্য রাখালেরা' বলতে এখানে কাদের বোঝানো হয়েছে তা বলা অপেক্ষা রাখে না।
ভেবে দেখুন সৌদি আরবের বর্তমান অবস্থা! আজ যাদের রাজা দেখছেন, দেখছেন মক্কা-মদিনার জিম্মাদার হিসেবে, তারা মাত্র ১'শ বছর আগেও আক্ষরিক অর্থে উটের নগন্য রাখালই ছিল। তেলের টাকায় বড়লোক হয়ে এখন মক্কার যাবতীয় ধর্মীয় প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনকে ধ্বংশ করে বিশাল অট্টালিকা আর হিলটনের চেইন হোটেল নির্মানের প্রতিযোগিতায় নেমেছে, ইয়েমেনের মুসলমানদের হত্যা করছে।
আল্লাহ সবাইকে এই উটের রাখালদের কাছ থেকে হেফাজত করুন, এইবার হজ্ব পালন করতে গিয়ে যারা এই সাবেক উটের রাখালদের অব্যবস্থাপনার কারণে জীবন হারালেন তাঁদের বেহেশত নসীব করুন, আহতদের দ্রুত আরোগ্য করুন। আমীন।
পোস্টে নাজাদ হতে এসে মক্কা দখলকারীদের অনেক সমর্থক দেখা যাচ্ছে। এদের জন্য আরেকটি সহিহ হাদিস- "There (in Najd) is the place of earthquakes and afflictions and from there comes out the side of the head of Satan."
১/ http://sunnah.com/bukhari/2/43
২/ http://sunnah.com/bukhari/92/45
দয়া করে কি বলবেন, মক্কা শহরে মুসলিমদের স্মৃতি বিজরীত স্হান ধ্বংস করে হিলটন হোটেলের মতো বিলাস বহুল অসংখ্য হোটেল বানানোর কারণগুলো কি কি ?
দয়া করে কি বলবেন, মক্কায় প্যারিস হিল্টনের মতো পতিতাকে প্রবেশ করার কারণগুলো ?
যদি সত্যিকারের মুসলিম হোন, তাহলে আমার প্রশ্নের উত্তর দিবেন ।
-----------------------------------------------------------------------
এর জবাব আমার কাছে নেই। নানাজন নানা মন্তব্য করেন, বিষয়টি স্পর্শকাতর, তাই মন্তব্য করা কঠিন।
কিন্তু কিছু বিষয় আমাকে চরম ভাবায়;
১. সেলফিরোগ।
আমি বুঝি না, সামনে কা'বা, রাব্বে কারীমের দরবার, বিভিন্ন স্টাইলে চলছে ফটোসেশন, কাকে খুশি করতে?
রাব্বে কারীমের সামনেই তাঁকে অবজ্ঞা?
নাহ, আমি আতঙ্কিত, ভিত ও সন্ত্রস্ত!
২. ইব্রাহীম (আ দু'আ করেছিলেন:
واجنبي وبني أن نعبد الأصنام
মা'বূদ হে, আমাকে এবং আমার সন্তানদেরকে মুর্তিপূজা থেকে বাঁচিয়ে রাখো।
পুরোপুরিভাবে দোয়া বাস্তবায়ন হলো মক্কা বিজয়ের পর, মুর্তিমুক্ত হলো কা'বা!
কিন্তু আফসোস, কা'বার আশপাশ আবার মুর্তিতে ভরে যাচ্ছে। সব মার্কেটগুলোতে খেলনা বিক্রির নামে চলছে মুর্তি আমদানী!
মুসলিমরাই কিনছে এগুলো।
৩. ইয়াহুদী আর মুশরিকদেরকে কুরআন নির্ধারণ করে দিয়েছে মুসলমানদের চরম শত্রু হিসেবে, এরশাদ হয়েছে:
ولتجدن اشدالناس عداوة للذين آمنوا اليهود والذين اشركوا الآية
সেই ইয়াহুদী মুশরিকদের স্বার্থ রক্ষায় চলছে আমাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা।
কিন্তু প্রচণ্ডভাবে আঘাত পাই, যখন দেখি কা'বার কোল ঘেষেই চলছে তাদের স্বার্থরক্ষা।
হজ্বের সফরে ওসব দেখতাম আর ভাবতাম।
ইয়াহুদী মালিকানাধীন হিলটন হোটেলটি সবসময় আমার কা'বাকে দেখে দেখে বিদ্রুপের হাসি হাসে।
তার নীচেই K F C আল্লাহর মেহমানদের খাবারের যোগান দিচ্ছে, সেটাও ইয়াহুদীদের!
মদীনাতুর রাসূল (সা আমাদের ভালোবাসা। কতো কবি কবিতা সাজিয়েছেন তাকে নিয়ে।
কতো আশেকে রাসূল দিওয়ানা, মাতোয়ারা সে নামে।
সেই মসজিদে নববীর দেয়াল ঘেষেই হোটেল স্টারবক্স। কেবল ইয়াহুদী মালিকানাধীন নয়, স্টারকে যেই ইসরাঈল তাদের পতাকায় এঁটেছে সেই স্টার, মানে বুঝেন বন্ধু?
স্টারকে বাঁচাতে এই বক্সে ফেলুন আপনার অর্থ, স্টার+বক্স=স্টারবক্স।
মুসলিম শিশুদের রক্ত ঝরাতে অস্ত্র লাগবে না? সে অর্থ কি তারা দেবে?
আমরা মুসলিমরাই দেবো এর যোগান!
না ভাই দুর্ঘটনার কারণ এগুলোকে ধার্য করে ফেলবেন না!
৪. জাযীরাতুল আরব থেকে মুশরিকদের বের করার নির্দেশ রাসূলের (সা!
জাযীরাতুল আরব থাক দূরের কথা, মক্কার খুব কাছের সহরগুলোই ভরে উঠেছে মুশরিকদের দিয়ে।
আমার রবের রহম, পুরো জনপদকে দাবিয়ে দিচ্ছেন না, কারণ সেখানে যে আছে পবিত্র কা'বা!
৫. আমি আতঙ্কিত, সেই জাযিরাতুল আরবের এক টুকরোতে সেদিন মোদি সাহেব মন্দির উদ্বোধন করে আসলেন, মুর্তিপূজার চূড়ান্ত স্বীকৃতি!!
৬. সিরিয়ার শিশুদের লাশ আপনার চোখে পড়েছে? সাগরপাড়ের সেই আইলানের কথা কি ভুলে গেছেন?
সাগরে ঢেউয়ের তালে তালে সন্তানকে আগলে ধরে বাঁচিয়ে রাখার সে প্রাণান্তকর যুদ্ধের কথা কি ভুলা যায়?
ইউরোপিয়ান লেডি সাংবাদিকের আচমকা কিকটা যে আজও আমাকে কাঁদায়!
কতো নিষ্ঠুর হলে মানুষ সবহারানো শিশুকে এভাবে আঘাত করতে পারে?
উফ তুরস্কের রাস্তায় রোমাল বিক্রি করতে থাকা সিরিয়ান শিশুটি যখন পুলিশ দেখে আতঙ্কিত হয়ে পথচারির পা ধরে আশ্রয় চাচ্ছিলো, কেমন লেগেছিলো আপনার?
যতবার দেখেছি কেঁদেছি........!!!
কিছু উদ্বাস্তকে আশ্রয় দিয়েই আপনাদের দায়িত্ব শেষ?
আরো অনেক কিছুই বলার ছিলো, চোখ বুঝলাম, যবান বন্দ!
সৌদি প্রিন্স ভাব নিয়ে চলার কারণে এটা হয়ে থাকার সম্ভাবনাই বেশী ।
এসব রাজ রাজরাদের ভাব বছরের অন্য সময় দেখালে হয় না ? সৌদিদের উচিত এদেরকে জুতা দিয়ে পিটানো।
মন্তব্য করতে লগইন করুন