ওরা মারুক, আর তোমরা মার খেয়ে যাও
লিখেছেন লিখেছেন এলিট ২৩ এপ্রিল, ২০১৫, ০৪:০৪:১৩ রাত
গত কয়েক বছর ধরে বিএনপি দলটির কার্যকলাপে এর সমর্থক তো বটেই, সাধারন নিরপেক্ষ মানুষও বিরক্ত। ওদেরকে কি যে বলব সেই ভাষাই হারিয়ে ফেলেছি। এখানে প্রশ্ন থাকতে পারে, আওয়ামী লীগের উপরেও তো মানুষ বিরক্ত, এটা কেন আমি বলছি না? হ্যাঁ, আওয়ামী লীগের উপরে মানুষ বিরক্ত তবে তারা নিরপেক্ষ মানুষ, আওয়ামী ভক্তরা মোটেও বিরক্ত নয়। ওদিকে বিএনপি এর উপরে এর সমর্থকেরাও বিরক্ত। এতক্ষন যা বললাম সেটা আমার ধারনা মাত্র। এ ব্যাপারে আমি কোন সমীক্ষা করিনি। তবে এই দুই দলেই প্রতি আমি নিজে সত্যই খুব বিরক্ত।
এই দুটি বিরক্তি আবার দুই ধরনের। ধরুন, আপনি একেবারে সাদা, পরিস্কার নতুন জামা পড়ে কোন একটা শুভ কাজে যাচ্ছেন। পাশ দিয়ে একটা গাড়ী আপনার গায়ে কাদা ছিটিয়ে দিয়ে গেল। তখন আপনার যেমন বিরক্তি লাগবে ঠিক তেমন বিরক্ত লাগে আওয়ামী লীগের কার্যকলাপ দেখলে। ওদিকে ক্রিকেট খেলায় একজন সেরা ব্যাটসম্যান একশত রান করবে আশা করে বসে আছেন, সে দুই রান করে আউট হল। তখন যেমন বিরক্ত হবেন ঠিক তেমন বিরক্তি লাগে বিএনপি এর কার্যকলাপ দেখলে। তবে ইদানিং বিএনপির উপরে বেশী রাগ লাগছে। আওয়ামী লীগ যাই করুক না কেন, তার অবস্থানে সে স্পস্ট - "আমরা কিছুতেই ক্ষমতা ছাড়ব না, পারলে ঠেকা"। বিএনপি এর তেমন কোন স্পস্ট অবস্থান নেই।
যাই হোক, এবার মুল কথায় আসি। হেফাজতে ইসলামের লক্ষ লোক যখন ঢাকায় অবস্থান করছিল তখন বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়া, ঘর থেকে বেরুতেই পারেন নি। গেটের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন। বের হতে দিচ্ছে না, এমন অভিযোগও ছিল তার। সেই সাথে দেশের প্রায় ৮০% জন সমর্থন নিয়ে দলের নেতা কর্মীরা "ম্যাডামকে বের হতে দিচ্ছে না" এই বলে হায় হায় করেছে। গত প্রায় তিন মাস ধরে আন্দোলন হয়েছে। এবার ম্যাডাম আটকা পড়েছিলেন বালির ট্রাকে। প্রায় তিন মাস এক প্রকারের বন্দী ছিলেন খালেদা জিয়া। অন্য কিছু তো দুরের কথা, মাঝে মাঝে খাবারও ঢুকতে দেয়নি। এ নিয়েও বিএনপি এর নেতা কর্মীদের হাহাকার শোনা গেছে।
আচ্ছা, বিএনপির নেতা কর্মীদের আসলে কি ধারনা ছিল? উনারা কি মনে করেছিলেন যে ম্যাডাম বের হবেন, জনগন নিয়ে ঝাপিয়ে পড়বেন, আর আওয়ামী লীগ সেটা হা করে তাকিয়ে দেখবে? আওয়ামী লীগ অবশ্যই বাঁধা দিবে। এইসব বাঁধা বিপত্তি ডিঙ্গিয়েই তো আন্দোলন করতে হবে, তাহলেই তো আসবে সফলতা। তা না করে - "আমি আন্দোলন করব আমাকে বাঁধা দেয় কেন" এই বলে বিলাপ করছে। ধরুন, কেউ যদি ফুটবল খেলতে নেমে বলে "আমার পায়ে বল রাখতে দিচ্ছে না কেন? এমন করলে খেলব কিভাবে?" - তখন তো তাকে নিয়ে সবাই হাসাহাসি করবে। ফুটবল হল আরেকজনের পায়ের থেকে বল কেড়ে নিয়ে গোল দেওয়ার খেলা। রাজনীতিও তেমনি এক ধরনের ছল, বল ও কৌশলের খেলা। এখানে প্রতিপক্ষ আপনাকে নির্বিঘ্নে কাজ করতে দিবে কেন? আপনাকে পাল্টা কৌশল করে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে হবে।
তবে সম্প্রতি নির্বাচনী প্রচারনার সময়, খালেদা জিয়ার গাড়ীর বহরে একাধিকবার আক্রমন আমাকে সত্যই খুব বিরক্ত করেছে। না, এব্যাপারে আমি আওয়ামী লীগের উপরে মোটেও বিরক্ত নই। তারা এখনও তাদের অবস্থানে অটল আছে - "ক্ষমতা ছাড়ব না, পারলে ঠেকা"। আমার বিরক্তি হল বিএনপি এর উপরে। সবচেয়ে বড় সমস্যা "একাধিকবার" হামলা। অর্থাৎ বার বার হামলা। প্রথম যখন হামলা হয়েছে তখন আওয়ামী লিগের নেতারা এটাকে জনগনের আক্রমন নাম দিতে চেস্টা করেছে। পরে অবশ্য জানা গেছে এগুলো আওয়ামী লীগের সোনার ছেলেদের কাজ। দেখুন, এটা হল রাজনৈতিকের মতন কাজ ও কথা। বিপক্ষ দলের প্রচারনাতে নিজস্ব বাহিনী লাগিয়ে দেওয়াটা রাজনৈতিকের মতন কাজ। আবার সেই হামলার দোষ জনগনের উপরে চাপানোটাও রাজনৈতিকের মতন কথা।
বিএনপির যদি সামান্য বুকে সাহস থাকত ও রাজনীতি বুঝত ও তাহলে তারাও এমন রাজনৈতিকের মতন কথা ও কাজ করে দেখাতে পারতো। হামলাকারীদের দু-একজনকে আহত করে হাসপাতালে পাঠিয়ে কাজ দেখাতো। এর পরে কথা বলত (প্রচার করত) "নির্বাচনী প্রচারনাতে বাঁধা দেওয়ার জন্য জনগন তাদেরকে গনপুটুনি দিয়ে আহত করেছে।" এমন করলে সেটা হতো রাজনৈতিকের মতন কথা ও কাজ। তা না করে বারবার মার খাচ্ছে আর রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে।
আচ্ছা মানছি, প্রথমবার হামলার সময় তারা প্রস্তুত ছিল না। কিন্তু এর পরে তো তাদের শক্ত অবস্থান নেওয়ার দরকার ছিল। একটি এলাকার সামান্য এক কমিশনার, নির্বাচনী প্রচারনায় বেশ বড় একটি দল সাথে রাখে। সেখানে বিএনপি নেত্রী এত অল্প লোক কেন সাথে রেখেছেন, তাও আবার একবার হামলা হবার পরে। কেন অমন হামলার জবাব দেওয়ার জন্য তৈরি হয়ে মাঠে নামছেন না? আমি সত্যই বুঝতে পারছি না বিএনপি কেন এমন করছে। তাদের কি কোমরে জোর নেই নাকি তারা এভাবে মার খেয়ে জনগনের সহানুভুতি আদায় করতে চাচ্ছে? কোমরে জোর না থাকলে এসব বাদ দিয়ে আপনারা ঘরে গিয়ে বসে থাকুন। নিজেও ভালো থাকুন, অন্যকেও ভাল রাখুন। কিন্ত যদি সহানুভুতি চান সেটা দুস্কর। কারন এটা ২০১৫ সাল। এখন মানুষ ন্যায়-অন্যায় বোঝে না, বুঝতে চায় না। মানুষ বোঝে শক্তি। যার শক্তি বেশী তাকেই মানুষ সমর্থন করে। নির্বাচনী প্রচারনাতেই এই অবস্থা। এরপরে নির্বাচন, ভোট চুরি, ব্যালট বক্স নিখোজ, জাল ভোট ইত্যাদি তো সামনে পড়েই আছে। এমনভাবে মার খেলে জনগন বিএনপি এর উপরে হয়ত সহানুভুতিশীল হবে কিন্তু তাদের হাতে নেতৃত্ব দিতে ভরসা পাবে না।
ছবিঃ বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার গাড়ীর বহরে হামলা। এসময় নেত্রীর নিরাপত্তা কর্মী সাবেক সেনা কর্মকর্তাকে এভাবে পেটানো হয়।
---------- আমার ফেসবুক এখানে
বিষয়: বিবিধ
১২৪১ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
A PHP Error was encountered
Severity: Notice
Message: Undefined offset: 7228
Filename: views/blogdetailpage.php
Line Number: 764
সামনে পুরো ফিল্ম আসছে মহা সমারোহে যখন জনগন এদেরকে মারতে মারতে কাশিমবাজারের খোয়াড়ে নিয়ে ঠোকাবে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন