বিজ্ঞানে অন্ধ বিশ্বাস
লিখেছেন লিখেছেন এলিট ০১ এপ্রিল, ২০১৫, ০৭:৪৫:২৬ সকাল
একজন লোক ধর্ম অবিশ্বাস করে, অপছন্দ করে এতে কোন সমস্যা নেই। সমস্যাটা হয় তখন, যখন তারা ধর্মকে কটুক্তি করে। ব্যাপারটাকে যতই বাক স্বাধীনতা, মুক্তমন, বিজ্ঞান মনস্ক ইত্যাদি নাম দেওয়া হোক না কেন এটা আসলে শ্রেফ একটা নোংরামি ও অসভ্যাতা ছাড়া আর কিছুই নয়। অন্যকে গালি দেওয়া কখনোই স্বাধীনতা হতে পারে না, কখনোই মুক্তমনের পরিচয় হতে পারে না। তবে, আমি স্যালুট দেই সেই সব নাস্তিককে যারা ধর্মের বিভিন্ন জিনিস (যেটা তাদের কাছে অসঙ্গতি মনে হয়) সামনে নিয়ে আসে। এরা সবাই বিজ্ঞান বিশাসী ও ধর্ম অবিশ্বাসী। যে কোন ছুতোয় বিজ্ঞান দিয়ে প্রমান করতে চান যে ঈশ্বরের অস্তিত্ব নেই। ধর্ম বিলুপ্ত হোক, বিজ্ঞানের জয় হোক এরা সেটা চায়। এরাই প্রকৃত বিজ্ঞান মনস্ক।
ওদের ভাষাতেই ধর্মের সঙ্গে বিজ্ঞানের মুল সঙ্ঘাত হল বিশ্বাস ও প্রমানে। দ্বিতীয় সঙ্ঘাত হল আধুনিকরনে। ধর্মের কোন প্রমান হয় না। এটা সম্পুর্ন বিশ্বাসের ব্যাপার। কিন্তু বিজ্ঞানে বিশ্বাসের কোন স্থান নেই। বিজ্ঞানে সবই প্রমানের ব্যাপার। মজার ব্যাপার, বিজ্ঞান মনস্ক এই মহান ব্যাক্তিরা ধর্মকে মোটামুটি ঠিক চিনেছে কিন্তু বিজ্ঞানকে চিনেছে সম্পুর্ন ভুল।
যে কোন ধর্ম বিশ্বাস করা না করা সম্পুর্ন ব্যাক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু সমস্যা হয় তখন যখন তারা বিজ্ঞানকে ঢাল হিসাবে, মাঝে মাঝে তলোয়ার হিসাবেও ব্যাবহার করে। ভাবখানা এমন যে বিজ্ঞান যেন মানুষকে নাস্তিক হতে শেখায়। বিজ্ঞান দিয়ে "ইশ্বর আছেন" প্রমান করা যায় না। আবার "ইশ্বর নেই" এটাও প্রমান করা যায় না। বিজ্ঞান আসলে ইশ্বর নিয়ে কিছুই বলেনি। কিন্তু বিজ্ঞান মনস্করা নিজেরাই সেই বিজ্ঞানকে ব্যাবহার করছে ইশ্বরের বিরুদ্ধে।
এবার আসি বিশ্বাস ও প্রমান এর ব্যাপারে। হ্যা, ধর্ম সম্পুর্ন বিশ্বাসের ব্যাপার। এর কোন কিছু প্রমান হয় না। আপনি চাইলে এটাকে অন্ধ বিশ্বাসও বলতে পারেন। কিন্তু সেই সাথে বিজ্ঞানের ব্যাপারটাও আপনাকে বুঝতে হবে। গাছের প্রান আছে, এটা বিজ্ঞান। আপনি নিজে এর কোন প্রমান দেখেননি। স্বর্নের পরমাণুতে ৭৯টি ইলেক্ট্রন আছে, সেটা জীবনে কোনদিন গুনে দেখেননি। পানির অনুতে দুইটা হাইড্রোজেন ও একটা অক্সিজেন এর পরমানু থাকে, সেটা জীবনে চোখ দেখেননি। ডি এন এ তে মানুষের বংশ, স্বভাব, আকৃতি ইত্যাদির তথ্য লিপিবদ্ধ করা থাকে, এটা শুধু শুনেছেন, কোনদিন দেখেননি। পৃথিবী সুর্যের চারদিকে ঘোরে এটা নিজের চোখে দেখেননি। চাঁদ পৃথিবীর চেয়ে ৫০ গুন ছোট, এটা কখনো মেপে দেখেননি। সুর্যের তাপমাত্র ৫ হাজার ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড, থার্মোমিটার দিয়ে কখনো মেপে দেখেননি। পৃথিবীর বয়স সাড়ে চার বিলিয়ন বছর নিজে গুনে দেখেননি। সুর্যের থেকে পৃথিবীর দুরত্ব ১৫ কোটি কিলোমিটার ফিতা দিয়ে মেপে দেখেননি।
উপরে যা বললাম এগুলোর কোন কিছুই আপনি দেখেননি, কোন কিছুরই প্রমান পাননি। আপনি বইতে পড়েছেন, কোন মানুষের কাছ থেকে শুনে শিখেছেন - এবং সেগুলো অন্ধভাবে বিশ্বাস করে বসে আছেন। হ্যা আপনি বিজ্ঞানের অন্ধ বিশ্বাসী। বিজ্ঞানকে অন্ধ বিশ্বাস করে আপনি বিজ্ঞানান্ধ হননি, হয়েছেন আধুনিক ও বিজ্ঞান মনস্ক। ওদিকে ধর্মকে অন্ধভাবে বিশ্বাস করে মানুষ হয় ধর্মান্ধ। কি চমৎকার বিচার আপনাদের
কৃতজ্ঞতাঃ ব্লগার লজিকাল ভাইছা (স্বর্নের পরমানুর সঠিক সংখাটা জানিয়ে দেবার জন্য)
---------- আমার ফেসবুক এখানে
বিষয়: বিবিধ
১৮২৪ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
বোরাকে করে রাসূল (সাঃ)কে খুব স্বল্প সময়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সপ্তম আকাশ পর্যন্ত যেখানে বিজ্ঞান এখনও কোন মানুষকে ২য় বার চাঁদে পাঠাতে পারে নি ।
আপনার বিশ্লেষনপদ্ধতি সত্যি খুব আকর্ষনীয় এবং সহজে বোধগম্য! পড়ে খুব ভালো লাগলো!
শুকরিয়া!
মন্তব্য করতে লগইন করুন