তাবলীগি জামায়াতের ভেতরে বাইরে
লিখেছেন লিখেছেন এলিট ০৮ জানুয়ারি, ২০১৫, ০৫:৫১:৫৩ সকাল
তাবলীগ নয়, নামটা আসলে তাবলীগি জামায়াত। নামটি উর্দু ভাষায়। এর অর্থ হল Society for spreading faith অর্থাৎ বিশ্বাস (ঈমান) ছড়িয়ে দেবার দল বা সংগঠন। এটাকে এক প্রকার ইসলামিক আন্দোলন (Islamic movement) বলা যায়। আন্দোলন জিনিসটা সব সময় মারমারি ও হানাহানি নয়। যেমন, নেশার কুফল সম্পুর্কে জনসচেতনতা তৈরি করাটা একটা সামাজিক আন্দোলন। একদল লোক, কোন একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্যে চলতে থাকাটাই আন্দোলন। তাবলীগি জামায়াত একটা ধর্মীয় আন্দোলন যার লক্ষ্য হল ইসলাম প্রচার।
১৯২৭ সালে মুহাম্মদ ইলিয়াস খন্ডলভী, এই দলের কার্যক্রম শুরু করেন ভারতের দিল্লির অদুরে, মেওয়াত নামক স্থান থেকে। তার নামের শেষ অংশ "খন্ডলভী" এসেছে খান্ডালা থেকে। খান্ডালা হচ্ছে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি স্থানের নাম যেটা উনার জন্মস্থান। আগেকার দিনে নামের শেষে যায়গার নাম যুক্ত করার প্রচলন ছিল। তিনি এই দলটি শুরু করার প্রেরনা পান তার গুরু রশিদ আহমেদ গাঙ্গহী এর কাছ থেকে, যিনি এমন একটি দলের স্বপ্ন দেখেছিলেন। প্রাথমিকভাবে তাবলীগি জামায়াত তৃনমূল পর্যায়ে তাদের কার্যক্রম শুরু করে যাতে সাধারন লোক ইসলাম বুঝতে পারে, ইসলামের ছায়াতলে আসতে পারে। এভাবেই ধীরে ধীরে তাবলীগি জামায়াত ছড়িয়ে পরে সারা বিশ্বে। এদের কল্যানেই অমুসলিম দেশে যেখানে মসজিদ খুজতে অনেকদুর যেতে হয়, সেখানে বেশ কয়েকটি "মুসলা" বা নামাজের স্থান পাওয়া যায়। তাদের দাবি অনুযায়ী বিশ্বে প্রতিটি দেশের তাবলীগি জামায়াত এর সদস্য বা অনুসারী রয়েছে যার মোট সংখা আনুমানিক দুই কোটি। যে সব দেশে এদের কার্যক্রম সবচেয়ে বেশী তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল - বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মালয়শিয়া, ইন্দোনেশীয়া, দক্ষিন আফ্রিকা, ইয়মেন ইত্যাদি। এছাড়াও ব্রিটেন, কানাডা ও ফ্রান্সেও তাদের উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম রয়েছে। সারা বিশ্বে এভাবে ছড়িয়ে থাকার পরেও, দলটি তাদের প্রচারের জন্য, কোন আধুনিক যোগাযোগ ব্যাবস্থা যেমন রেডিও, টিভি, ইন্টারনেট ইত্যাদি ব্যাবহার করেনা বললেই চলে। তাদের প্রচারে পদ্ধতি হল, জনে জনে ও মুখে মুখে।
তাবলীগি জামায়াত এর সবচেয়ে বড় কার্যক্রম ও সবচেয়ে বেশী সদস্য যেই দেশে আছে সেটা হল বাংলাদেশ। প্রতি বছর, তাদের সবচেয়ে বড় সম্মেলন এই বাংলাদেশেই হয়, যেটা ইজতেমা নামে পরিচিত। লোকমুখে শোনা যায়, এটা নাকি সবচেয়ে বড় মুসলিম সমাবেশ, এমনকি হজ্জের চেয়েও বড়। হজ্জে সাধারনত প্রতি বছরই আগের বছরের চেয়ে বেশী লোক সমাগম হয়। হজ্জের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশী লোক হাজির হয় ২০১২ সালে, ৩১ লক্ষ। এর পরে মসজিদুল হারামের বর্ধিত অংশের সংস্কারের জন্য সৌদি সরকার হাজীর সংখা নির্দিস্ট করে দিয়েছে। যার ফলে ২০১৩ ও ২০১৪ এই দুই বছরে, প্রতি হজ্জে, হাজীর সংখা হয়েছিল ২০ লক্ষ। বিশ্ব ইজতেমায় কতজন লোক যায় এর সঠিক হিসাব পাওয়া দুস্কর। তবে অসমর্থিত সুত্রে এই সংখা ৩০ থেকে ৫০ লক্ষ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অনেকে এসে লাখো বাংলীর সাথে ইজতেমায় যোগ দেয়। ইজতেমাকে সমাবেশ বা সম্মেলন বলাটা অনেকে আবার অপছন্দ করতে পারেন। কিন্তু উপায় নেই, ইজতেমা শব্দটির অর্থ - সমাবেশ। আর হ্যা, এই সমাবেশ শুধু বাংলাদেশেই হয় না। অন্যান্য অনেক দেশেই এমন ইজতেমা হয়। বাংলাদেশেরটা সবচেয়ে বড়। উপরের ছবিটা মালয়েশিয়ার ইজতেমা।
ইসলাম প্রচার করা, তাও আবার জনে জনে। এটা নিঃসন্দেহে ভালো কাজ। তাছাড়া এমনভাবে লাখো লোককে ইসলামের ছায়ার তলে নিয়ে আসতে পারাটা অবশ্যই প্রশংশনীয়। কিন্তু আসলে তাবলীগি জামায়াত এই কাজটি কতটুকু করে বা কিভাবে করে - মোট কথা, তারা কি করে সেটা অবশ্যই বিবেচনায় আনতে হবে। এছাড়া এই কাজটিতে ইসলামের কতখানি লাভ হয়, কতখানি ইসলাম প্রচার হয় সেটাও ভাববার বিষয়। সর্বপরি এটাও চিন্তার বিষয়, এমন ইসলাম প্রচার করাটা, ইসলামিক কিনা।
আমি এমন দাবি করছি না যে আমি নিজে একেবারে আল্লাহর ওলী বা কোন মহামানব বা কোন মহাজ্ঞানী। এমনও দাবি করছি না যে আমি তাবলীগ জামায়াত একেবারে সবটুকু চিনে ফেলেছি। কিন্তু যেটুকু দেখেছি, পড়েছি ও বুঝেছি সেটুকুই বলব।
নাম সর্বস্ব মুসলমান, যাদের একমাত্র নাম ছাড়া আর কিছুই ইসলামিক না - তাদের জন্য খুব ভালো চিকিৎসা এই তাবলীগি জামায়াত। এই দলটির গঠন প্রনালী, এর কায়দা, এর পদ্ধতি সবই আসলে মানুষকে ইসলামে উতসাহিত করার জন্য। বেশী পড়ার দরকার নেই, বেশী বোঝা একেবারে নিষেধ। দলের নিয়ম অনুযায়ী, সবাই যা করে, সেটা করে যাও। এভাবেই ইসলামিক পথে চলার অভ্যাস তৈরি হবে। হ্যা, এই পর্যন্ত ঠিক আছে । কিন্তু এরপরে যে সমস্যাটা হয়, তা হল - আর অগ্রসর হবার যায়গা থাকে না।
বুঝিয়ে বলছি। একজন ছাত্র যখন ২য় শ্রেনীতে পড়ে তখন তার অংক, বিজ্ঞান, ইংরেজি ইত্যাদি সবই পড়ানো হয়। এই একই বিষয়গুলো সে পড়ে ৮ম শ্রেনীতেও। এসবের যে কোন একটি বিষয় আরো বিস্তারিত পড়ে ইউনিভার্সিটিতে। ২য় শ্রেনীর বইতে ইচ্ছে করেই অনেক অসম্পুর্ন তথ্য ও ক্ষেত্র বিশেষে ভুল তথ্য দেওয়া থাকে, কারন ওটা শিশুদের জন্য লেখা হয়েছে। উদাহরন - ২য় শ্রেনীর বিজ্ঞান অনুযায়ী সুর্য স্থির আর পৃথিবী তার চারিদিকে ঘোরে। এটি ভুল তথ্য। সুর্য স্থির নয়। সে নিজেও পৃথিবীকে সাথে নিয়ে ঘোরে। এই তথ্যটি জানা যায় ৮ম শ্রেনীর বইতে। ইউনিভার্সিটিতে গিয়ে তো আরো বিস্তারিত জানা যায়। শুধু বিজ্ঞান কেন, ইসলাম ধর্ম শিক্ষার ২য় ও ৮ম শ্রেনীর বই পাশাপাশি রেখে দেখুন।এমন ঘটনা আপনি নিজেই খুজে পাবেন। ওই ২য় শ্রেনীটি বানানো হয়েছে কেবল এক বছরের জন্য। বছর শেষে ৩য় শ্রেনীতে ঢুকতে হবে। ওদিকে একঝাক নতুন মুখ আসবে ২য় শ্রেনীতে। সেটা না করে, যদি একটি ছাত্রকে সারা জীবন ২য় শ্রেনীতে রেখে দেই, তাহলে তার কি অবস্থা হবে? সারা জীবন ওই ২য় শ্রেনীর বই পড়, ওই একই হোম ওয়ার্ক কর, একই প্রশ্নের উত্তর দাও। সে ওখানেই পড়ে থাকবে।
তাবলীগি জামায়াত এর প্রতিষ্ঠাতার উদ্দেশ্য কি ছিল তা আমি জানি না। তবে এর গঠন ও কার্জকলাপ দেখে এটাই বোঝা যায় যে এটা বানানো হয়েছে মানুষকে ইসলামের ছায়তলে এনে, প্রাথমিক শিক্ষা দেওয়ার জন্য। অনেকটা ২য় শ্রেনীর মতন। সারা জীবন পড়ে থাকার জন্য নয়। তাবলীগি জামায়াত হল এমন একটি স্কুল যেখানে ছেলে-বুড়ো সবাই ২য় শ্রেনীর ছাত্র। সামনে অগ্রসর হবার সুযোগ নেই। অগ্রসর হতে হলে দলটিই ছাড়তে হবে। কারন এই স্কুলে তো ২য় শ্রেনী ছাড়া আর কোন শ্রেনী নেই। মোট কথা তাবলীগি জামায়াত হল - ইসলামের এক প্রাথমিক স্কুল।
বিভিন্ন ইসলামিক পন্ডিত তাবলীগি জামায়াতের ভুল ধরেন। এ ব্যাপারে কোরআন ও হাদিস সহকারে অনেক সাক্ষ্য প্রমানও আছে। কিন্তু ইসলামিক পন্ডিতেরা এটা বুঝতে ভুল করেন যে তাবলীগি জামায়াত ইসলামের ইউনিভার্সিটি নয়, এটা প্রাথমিক বিদ্যালয়। এখানে ওসব ভুল ত্রুটি ও অসম্পুর্নতা তো থাকবেই। পন্ডিতেরা তাবলীগি জামায়াতকে প্রাথমিক স্কুল হিসাবে গন্য করলে ঠিকই বাহবা দিতেন, যেমন আমরা কোন একটা ছোট ছেলেকে ভুল লিখলেও বাহবা দেই।
তাবলীগি জামায়াত দলটি সবচেয়ে বেশী সফল, বাংলাদেশে।প্রত্যেক জাতিরই একটা সাধারন স্বভাব দোষ থাকে। বাঙ্গালী জাতীর দোষ হল - যে কোন কায়দা করে কোন নিয়ম বা পদ্ধতি ভাঙ্গার প্রবনতা। যে কোন উপায়ে সহজ পথে সফলকাম হওয়ার চেস্টা। এই সহজ পথে সফল হতেই আমরা - মুল বই বাদ দিয়ে গাইড বই পড়ি। এই সহজ পথে সফল হতেই মানুষ কোরআন ও হাদিস বাদ দিয়ে পীর সাহেবের বই পড়ে ইসলাম চিনে। সহজ পথে জান্নাতে যেতে, পীর সাহেবের মুরীদ হয়। এমনভাবে সহজ পথে জান্নাতে যেতেই মানুষ তাবলীগি জামায়াত এর সাথে লেগে থাকে।
তাবলীগি জামায়াত একটি সহজ ও প্রাথমিক ইসলামিক পদ্ধতি। প্রথমত, এতে রয়েছে "ফাজায়েলে আমল"। এই যে একটি বই - গত প্রায় ১০০ বছর ধরে তাবলীগি জামায়াত এই বইটির বাইরে যেতে পারল না। এই বইয়ের ভুলগুলি শোধরানোর কোন ব্যাবস্থাও নেই। এটা যেন এক আসমানী কিতাব হয়ে গেছে (নাউজুবিল্লাহ)। ফাজায়ালে আমল, অর্থাৎ কাজের ফায়দা। কোন কোন কাজ করলে বেশী বেশী নেকী পাওয়া যাবে। নেকী জমা করে একেবারে একাউন্ট পরিপুর্ন। ওদিকে কোথাও বলা নেই, কোন কাজ করলে নেকী কাটা যাবে। নেকী কামানোটাই শেখালো। কিন্তু এই কামানো নেকী যে নিজের অজান্তেই এক নিমেষে কিভাবে বরবাদ হয়ে যাচ্ছে সেটা ফাজায়ালে আমলে নেই। পজেটিভ আছে, নেগেটিভ নেই। তাবলীগি জামায়াত এর ডিকশনারীতে "না" জিনিসটা নেই। অমুক কাজ বেশী করে করবে, এটা আছে। কিন্তু তমুক কাজ করবে "না", সেটা নেই। এটা একেবারেই অসম্পুর্ন ইসলাম।
এ তো বললাম দলটির অবকাঠামোর কথা। এবার এর অনুসারীর কায়দা দেখুন। অনুসারীরা মনে করেন, কোরআন এর অর্থ উপলব্ধি করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। একমাত্র উপযুক্ত শিক্ষিত ব্যাক্তিরাই (মুফতি) এটা পারেন। তাদের মতে মুফতিরাও কোন কথার কি দোষ সেটা চিন্তা করে নাকি বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই কোরআনের ব্যাপারে কথাই বলেন না। অনেকে এও বলেন যে, আমরা অজ্ঞতা বসত ভুল বুঝতে পারি, তাই ইসলামে কোরআন পড়ে বুঝতে নিষেধ করা আছে। ওরে বাবা, কোরআন হল আল্লাহর কথা, এটা আমাদের মতন লোকের বোঝার ক্ষমতাই নেই। এছাড়া এত বুঝে কি লাভ? সাহাবীরা কেউ বুঝতে চাননি। তারা না বুঝেই ইসলাম গ্রহন করেছেন। তারা না বুঝে রাসুল (সা) কে অনুসরন করেছেন। ইসলামে বোঝার কিছু নেই। তাবলীগি জামায়াত এর একটি স্লোগান - জানার নাম ইসলাম নয়, মানার নাম ইসলাম। এমন আরো স্লোগান আছে, যেমন - একই প্লেটে একাধিক লোক খাওয়ার ব্যাওয়ারটা সমর্থন করার স্লোগান - একজনের ঝুটা, আরেক জনের শেফা
উপরের প্যারাতে যে কথাগুলো লিখেছি সেটা বেশীরভাগ তাবলিগি জামায়াত অনুসারীর কথা। এর অর্থ হল, তারা অসম্পুর্ন ইসলাম চিনে বসে আছে। কোন সাহাবী না বুঝে ইসলাম গ্রহন করেনি। কাফের হলে দুনিয়াতে নগদ সুবিধা ছিল। ওদিকে মুসলমান হলে ভবিশ্যতে সুবিধা, অর্থাৎ মরার পরে সুবিধা। মরার পরে কি হবে সেটা কেউ দেখেনি। এর পরেও সাহাবীরা দুনিয়ার নগদ সুবিধা পায়ে ঠেলে ইসলাম গ্রহন করেছে। এটা কেউই না বুঝে করেনি। তারা এটা বুঝেছে যে দুনিয়ার জীবন ক্ষণস্থায়ী। তারা এটা বুঝেছে যে আল্লাহ সর্বশক্তিমান। তারা এটা বুঝেছে যে আমরা সবাই পরকালে আল্লাহর সামনে বিচারে সম্মুখিন হব। না বুঝে কেউই ইসলাম গ্রহন করেনি। হ্যা, কোরআন আল্লাহর কথা - কিন্তু এই কথা উনি আমাদের জন্য লিখেছেন। তিনি তো আমাদের বোঝার মতন করেই দিয়েছেন। ওটা আমাদের জন্য। আমারা না বুঝলে আর কে বুঝবে? তাছাড়া , কোরআনে আল্লাহ বলেছেন যে, তিনি কোরআনকে মানুষের বোঝার জন্য সহজ করে দিয়েছেন। আল্লাহ নিজেই বলছেন, কোরআন বোঝা সহজ।
এবার জানা ও মানার ব্যাপারে আসি। জানতে হবে না, মানলেই চলবে, এটাই নাকি ইসলাম। আপনি মদ খান না, অর্থাৎ, ইসলাম মানেন বা পালন করেন। কেন মদ খান না? কারন আপনি "জানেন" ইসলামে মদ হারাম। এই তো আপনি জানছেন। প্রথম জানছেন এর পরে মানছেন। কি মানবেন সেটা তো আগে জানতে হবে নইলে মানবেন কিভাবে? না জেনে মানাটা, না স্পর্শ করে খাওয়ার মতন। যেটা অসম্ভব।
আপনি যদি হাসরের ময়দানে,শেষ বিচারের সময়, প্রমান করতে পারেন যে আপনি কোরআন পড়ে বোঝেন না তাহলে ন্যায় বিচারের স্বার্থেই আপনাকে বিনা বিচারে জান্নাত দিতে হবে। বিষয়টি খটকা লাগছে? আচ্ছা, খুলে বলছি। মুসলমানের জীবন যাত্রা কিভাবে হবে তার নিয়ম কানুন হল কোরআন। এই বই অনুযায়ী চলতে পারলে জান্নাত পাওয়া যাবে। সেটা প্রাক্টিকালি করে দেখিয়েছেন আমাদের রাসুল (সা)। এখন এই বই যদি আপনি পড়ে না বুঝতে পারেন তাহলে সেই অনুযায়ী চলবেন কিভাবে? আপনি কোরআন পরে কিছু বোঝেন না, কাজেই পালনও করতে পারেননি। আপনার কোন দোষ নেই। এই অবস্থায়, আপনাকে জান্নাত না দিলে আপনার প্রতি অবিচার করা হবে। আপনি যাতে সেই সুযোগ না পান, সেজন্যই কোরআন সহজ করাটা খুব জরুরী। আল্লাহ কোরআনকে সহজ করেছেন। কোরআন পড়ে বুঝব না- এই কথাটা ঠিক নয়। হ্যা, প্রতিটি কথার মর্মার্থ বুঝবেন না। কিন্তু আপানাকে যা বলা হয়েছে সেটা ঠিকই বুঝবেন। কিছু কথা পড়ে তো এমনও মনে হবে যেন আপনাকেই বলা হয়েছে।
একেবারে ইসলামের নাম গন্ধ নেই এমন মুসলমানের জন্য তাবলীগি জামায়ত অত্যান্ত কার্যকর। কিন্তু এটা একটা ভীত্তি, একটা প্রাথমিক জ্ঞান মাত্র। এটা একটা ইসলামিক অভ্যাস তৈরির সুন্দর ব্যাবস্থা। সারা জীবন এখানে পড়ে থাকা যায়না। ফাজায়ালে আমল দিয়ে পড়ার অভ্যাস শুরু করা যেতে পারে। কিন্তু এর পরে কোরআন ও হাদিসই পড়তে হবে। সারা জীবন ফাজায়ালে আমলে সীমাবদ্ধ থাকলে ইসলাম অসম্পুর্ন ও ত্রুটিপুর্ন থেকে যাবে। তাবলীগি জামায়াত মানেই পরিপুর্ন ইসলাম নয়। এটা জান্নাতে যাওয়ার কোন উপায়ও নয়। এটা একটি ইসলামিক দল যা আপনাকে ইসলামিক প্রাথমিক জ্ঞান ও অভ্যাস তৈরি করে - শুরুটা করে দেয়।
বিষয়: বিবিধ
১৭৩৮ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এরা নিজেই কিছু জানেনা অন্যকে কি শিখাইবে। একজন আন্ধা মানুষ যেইভাবে আরেব আন্ধা মানুষেরে রাস্তা দেকাইতে পারেনা, এরাও হইল সেই ধরনের। তাবলীগ যত বাড়ে আওয়ামীলীগ ও কমিউনিষ্টেরা তত খুশী হয়। তারা চায় তবলীগের মাধ্যমে মুসলমানদের মাঝে বিপ্লবী চেতনা হারাইয়া প্যারালাইজড মুসলমান তৈরী হউক। তাইলে তারা তাদের মত দেশ শাসন করিতে পারিবে।
এরা এমন এক বোবা সম্প্রদায় তাদের সামনে মাইয়াদের ধর্ষন করিলে এরা প্রতিবাদ না কইরা আল্লাহর জিকিরে মশগুল হইব। কেনুনা মাইয়ারে বাচানোর কাম পুলিশের, তারা যেহেতু রাজনীতি করেনা তাইলে মাইয়াডারে শোয়াইয়া কে কি করিল তাহা দেখা ওনাদের কাম না। এই হইল তাদের বুঝার নিয়ম।
বিভিন্ন ইসলামিক পন্ডিত তাবলীগি জামায়াতের ভুল ধরেন। এ ব্যাপারে কোরআন ও হাদিস সহকারে অনেক সাক্ষ্য প্রমানও আছে। কিন্তু ইসলামিক পন্ডিতেরা এটা বুঝতে ভুল করেন যে তাবলীগি জামায়াত ইসলামের ইউনিভার্সিটি নয়, এটা প্রাথমিক বিদ্যালয়।- তাবলীগিরা তো তা স্বীকার করেন না, তারাতো এটাক উইনিভিার্সিটি দাবী করেন।
ঠিকই বলেছেন যে তাবলীগ জামায়াত প্রাথমিক শিক্ষাটা দেয় । এই প্রাথমিক শিক্ষাতেই যদি কেউ বসে থাকে তাহলে সে এগুতে পারবে না ।
তাবলীগের ফলে একজন ডিরেইড লোক লাইনে আসতে পারে বা একজন অমুসলিম মুসলিম হতে পারে ( এবং তা অবশ্যই আল্লাহর ইচ্ছাতেই হয় )। এটা অনেক বিরাট রহমত আল্লাহর তরফ থেকে ।
আর ইসলাম বৈরাগ্যকে সমর্থন করে না । ইসলামকে পরিপূর্ণ ভাবে ব্যক্তিগত , পারিবারিক , সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করাটাই হচ্ছে আসল শিক্ষা যাতে দুনিয়াতে আসবে শান্তি এবং পরকালেও সফলতা ও আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা যাবে।
খুব সুন্দর আলোচনা-
জাযাকাল্লাহ..
তবে একজন মুসলিমের "অন্যায়ের প্রতিবাদের স্পৃহা" এবং "চিন্তাশক্তিকে পিঞ্জিরাবদ্ধ" করে ফেলার জন্য তাবলীগ জামায়াত খুবই কার্যকর- এটা প্রমানিত সত্য
মন্তব্য করতে লগইন করুন