চাঁদের গায়ে সায়ীদি - সাবধান, এটি একটি ষড়যন্ত্র

লিখেছেন লিখেছেন এলিট ০২ মার্চ, ২০১৩, ১১:৪১:২৪ রাত

ফেসবুক ও বিভিন্ন ব্লগে এ নিয়ে লেখা লেখি হচ্ছে। কেউ কেউ এডিট করা ছবিও পোস্ট করেছেন। চাদের গায়ে নাকি দেলওয়ার হসেন সায়ীদির ছবি দেখা গেছে। বাংলাদেশ সহ মধ্যপ্রাচ্য থেকেও অনেকে দাবী করেছেন যে তারা এটি দেখেছেন। অনেকে বলছেন যে শক্তিশালী লেজার ব্যাবহার করে এটি করা হয়েছে। আরো কত কথা শোনা যাচ্ছে।

আসলে এটি একটি ষড়যন্ত্র মুলক গুজব। মানুষ সত্য ঘটনার চেয়ে গুজবে বেশি বিস্বাশ করে। আর একবার যদি গুজব ছড়িয়ে দেওয়া যায়, তবে আরো অনেকে আলোচনায় আসার জন্য সেই গুজবের সত্যতা বর্ননায় সামিল হয়। প্রথম কথা, চাঁদের গায়ে কারো ছবি দেখা যাওয়া অসম্ভব। দ্বিতীয়ত, চাঁদে ছবি দেখানোর মতন শক্তিশালী কোন লেজার নেই। অনেকে সিনেমা প্রজেক্টরের উদাহরন দিয়েছেন। মনে রাখতে হবে প্রজেক্টর দিয়ে ছবি দেখানো যায় অন্ধকার কোন বস্তুর উপর। চাদের মতন উজ্জল বস্তুতে নয়। তাছাড়া চাঁদ প্রায় সাড়ে ৪ লক্ষ কিলোমিটার দূরে। এত শক্তিশালী প্রজেক্টর কখনোই বানানো সম্ভব নয়।

তাহলে বিষয়টা কি ঘটেছে? এটি একটি গুজব। কেউ যদি দেখেও থাকে সেটি হয়েছে হেলুসিনেশন (ইন্দ্রিয়ভ্রম)। এর উদাহরন বাংলাদেশেই রয়েছে। প্রায় ২০-২৫ বছর আগে দেশে একবার গুজব উঠল যে ঢোল কলমী গাছের পাতায় এক ধরনের পোকা থাকে যার কামড়ে মানুষ মারা যায়। এমনকি সেই পোকা স্পর্শ করলেও মৃত্যু ঘটতে পারে। বেশ কিছুদিন ধরে দেশের সব জাতীয় পত্রিকায় প্রায় প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে এই পোকার কারনে মৃত্যুর খবর আসতো। আর অসুস্থ হয়েছে অনেক মানুষ। অবশেষে একদিন টিভিতে এক ডাক্তারকে দেখা গেল, উনি অনেকগূলো পোকা ধরে নিজের হাতের উপর রেখে, ঘসে প্রমান করছেন যে এই পোকা মোটেও ক্ষতিকর নয়। মানুষের মৃত্যুর ব্যাপারে তিনি বললেন, কিছু মৃত্যুর কথা গুজব। কিন্তু যারা সত্যিই মারা গেছেন তাদের মৃত্যুর অন্য কোন কারন রয়েছে। আর কিছু মানুষ মারা গেছেন এই পোকার ভয়ে। পোকার গুজবে বিশ্বাস করে যদি মানুষ মারা যেতে পারে তবে চাঁদের গুজবে বিশ্বাস করে ভুল দেখা মোটেও বিচিত্র নয়।

এ ধরনের বিভিন্ন গুজব (ইসলাম নিয়ে) সারা বিশ্বে প্রচলিত আছে। এর বেশিরভাগ গুজব ছড়ায় (ইসলাম) বিরোধীরা। যেমন, কেউ গুজব ছড়ালো, মেঘের গায়ে আল্লাহর নাম দেখা গেছে। এই গুজব শুনে মানুষ বার বার সুবহানাল্লাহ বলে। ইসলামের প্রতি তাদের বিশ্বাস বেড়ে যায়। পরে একসময় বের হয় যে, ব্যাপারটা গুজব ছিল। তখন ওই সুবাহানাল্লাহ বলা মুসলমানদের বিশ্বাস কমতে থাকে। তারা ইসলামের অন্য বিষয় নিয়েও সন্দেহে পড়ে যায়। আর এই সন্দেহ তৈরির জন্যই ইসলাম বিরোধীরা এত কস্ট করে এই সব গুজব বানায়।

সাঈদীর ভক্তদের মাঝেও চাঁদের এই গুজব ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে অনেকে সাঈদীকে অতিমানব বা অনেক বড় বুজুর্গ মনে করছে। এর পরে একদিন বের হবে যে এটা একটা গুজব ছিল। তখন এই সাঈদী ভক্তরাও সাঈদীর অন্যান্য বিষয় নিয়ে সন্দেহে পড়ে যাবে। এটাই গুজব প্রচারকারীদের উদ্দেশ্য। সাঈদীর এত বড় জন সমর্থন ভেঙ্গে দেওয়ার এটা একটা ষড়যন্ত্র।

বিষয়: বিবিধ

১৩৩৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File