ইসলামে জন্ম নিয়োন্ত্রন – পর্যালোচনা

লিখেছেন লিখেছেন এলিট ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০২:১৬:১১ রাত



আগের লেখাটি খুব অল্প সময়ের মধ্যেই অনেকবার পড়া হয়েছে। অনেকে মুল্যবান মন্তব্য করেছেন। সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ়ানাই। লেখাটিতে, জন্ম নিয়োন্ত্রন বিষয়ে স্পস্টভাবে সব কিছু লেখার পরেও বেশ কিছু প্রশ্নের সম্মুখিন হয়েছি। প্রশ্নের উত্তর মন্তব্যে সবাইকে আলাদা করে দিতে গিয়ে দেখলাম যে একই কথা বারবার লিখতে হচ্ছে। তাছাড়া উত্তরগুলোও অনেক বড় হয়ে যাচ্ছে। তাই আলাদা এই পোস্টে উত্তর দেওয়ার চেস্টা করেছি। এভাবে উত্তর দেওয়াটা অনেকটা ঝগড়া বা বিতর্কে জড়ানোর মতন মনে হচ্ছে। আশা করি সবাই ক্ষমা সুন্দর দৃস্টিতে দেখবেন। মন্তব্যে না দিয়ে আলাদা লেখাতে উত্তর দেওয়ার আরেকটি বড় কারন হল – মন্তব্যের চেয়ে এই লেখাটি আরো বেশী লোকের নজরে পড়বে ।

আমার কথা খুব স্পস্ট

১। জন্ম নিয়োন্ত্রোন আল্লাহর কাজ। এটা মানুষ করতে পারে না। মানুষ চেস্টা করে মাত্র এবং অনেক ক্ষেত্রে স্বাভাবিক ভাবেই ব্যার্থ হয়।

২। জন্ম নিয়োন্ত্রন ইসলামে হারাম । কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে এটা জায়েজ। এই ক্ষেত্রগুলো বেশিরভাগই শারিরীক সমস্যা।

৩। দারিদ্রতা, সামাজিক অবস্থান , বড় পরিবার চালানোর ব্যার্থতা, ইত্যাদি কারনে জন্ম নিয়োন্ত্রন জায়েজ হয় না।

৪। “আমাদের দেশের পরিস্থিতিতে জন্ম নিয়োন্ত্রন যায়েজ” এই কথা আমি বলিনি। তবে এটা বলেছি – আমাদের দেশের পরিস্থিতির কারনেই আমাদেরকে বাধ্য হয়ে এই নাজায়েজ জন্ম নিয়োন্ত্রন করতে হচ্ছে। (বাধ্য হয়ে করা আর জায়েজ হওয়া এক জিনিস নয়।)

উপরের এই চারই ছিল আমার মুল কথা। সবাই প্রথম তিনটি বিষয়ে একমত। সবার প্রশ্ন, খটকা বা বিরোধীতা হল ৪ (চার) নম্বর বিষয়টি নিয়ে। এখানে যে প্রশ্নগুলো উঠে আসছে সেগুলো হল –

ইয়াফিঃ জন্ম নিয়োন্ত্রন এর চেস্টায় আসলেই কি কাজ হয়? (জন্মানো বন্ধ হয়)

আফরাঃ এই নাজায়েজ জন্ম নিয়োন্ত্রন করার কারনে আমার অন্য আমল নস্ট হচ্ছে নাতো? আল্লহ কি এই পাপ ক্ষমা করবেন?

গাজী সালাউদ্দিনঃ পরিস্থিতির কারনে বাধ্য হয়ে এই নাজায়েজ জন্ম নিয়োন্ত্রন করতে হচ্ছে। - এই কথা বলে আল্লাহর কাছে ক্ষমা পাওয়া যাবে কি?

লেখাটি যায় জন্য উতসর্গ করেছিলাম (আবু সাইফ)তিনি কোন প্রশ্ন করেন নি। তিনি আমার এই কথাটা মানতে পারেন নি - আমাদের দেশের পরিস্থিতির কারনেই আমাদেরকে বাধ্য হয়ে এই নাজায়েজ জন্ম নিয়োন্ত্রন করতে হচ্ছে। তিনি অত্যান্ত দক্ষতার সাথে কোরআন ও হাদিস সহ তার স্বপক্ষে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। মুলত তার ব্যাখ্যাটা দেখেই এই লেখাটা শুরু করি।

তিনটি প্রশ্নের উত্তর দিয়ে, এর পরে আবু সাইফ ভাইয়ের ব্যাখ্যায় মনোনিবেশ করব।

ইয়াফি – হ্য, জন্ম নিয়োন্ত্রন পদ্ধতিতে কাজ হয়। কিন্তু এই কাজ তখনই হয়, যখন আল্লাহ ইচ্ছা করেন।

আফরা ও গাজী সালাউদ্দিনঃ আপনাদের প্রশ্ন মুলত একই। আল্লাহ তার ইচ্ছে মতন ক্ষমা করবেন। জন্ম নিয়োন্ত্রন নাজায়েজ। আমরা এই কাজটি কোন পরিস্থিতিতে পড়ে করি এবং কেন করি সেটা আল্লাহ ভালোভাবেই জানেন। তিনিই ন্যায় বিচার করবেন। উত্তরটি অসম্পুর্ন মনে হলেও আশা করি পুরো লেখাটি পড়লে উত্তর খুজে পাবেন।

এবার আসছি আবু সাইফ ভাইয়ের কাছে। ভাই, আপনি তো কোরআনের আয়াত তুলে দিয়ে ব্যাখ্যা করছেন। আমার কোন সাধ্য নেই সেগুলো অস্বীকার করার। আপনার মুল কথা হল দারিদ্রতা জন্ম নিয়োন্ত্রনের কোন ওজর নয়। মানুষ শুধু মুখ নয়, কাজ করার জন্য হাত পা নিয়েও জন্মায়। রিজিকের মালিক আল্লাহ, তিনি কোথা থেকে রিজিক দিবেন সেটা আমরা কল্পনাও করতে পারপব না। হ্যা, আপনার কথাগুলো সম্পুর্ন সঠিক। খটকাটা হল আপনার বা আপনার মতন অনেকেরই বোঝার ভুল। আমাদের দেশে আমরা বাধ্য হয়ে জন্ম নিয়োন্ত্রন করছি দারিদ্রতার ভয়ে নয়, কি খাব এর ভয়ে নয়। এটা করছি ছোট এক দেশে ১৫ কোটি লোকের যায়গায় ৫০ কোটি লোক আটকা পড়ে যাবার ভয়ে। আটকা না পড়লে এত বড় আল্লাহর দুনিয়াতে খাবারে অভাব নেই।

রিজকের মালিক তো আল্লাহ। এখন যদি আপনাকে একটি ঘরে ৭ দিন আটকে রাখা হয় তখন আল্লাহর দেওয়া রিজিক আপনার কাছে পৌছাবে না। ওদিকে আল্লাহ ঠিকই আপনার রিজিক দিয়ে রেখেছেন, কিন্তু আপনি অনাহারে থাকবেন। আপনাকে দেওয়া রিজিক আছে অন্য কোথাও, ওই ঘরে নয়। আপনাকে বা অন্য কাউকে গিয়ে সেটা খুজে আনতে হবে।

একই বিষয়, আর একটু বড় করে দেখতে পারি। একটি গ্রামে ৫০০ জন বসবাস করে। তারা নিজেরাই ফসল ফলায়। নিজেরাই খেয়ে পড়ে বেশ সুখে আছে। ওই গ্রামের চারিদিকে আছে উচু তারকাটার বেড়া। আছে প্রহরী। গ্রামবাসীকে গ্রামের বাইরে যাতে দেওয়া হয় না। গ্রামের বাইরে থেকেও কাউকে আসতে দেওয়া হয়না। তবে বিশেষ প্রয়োজনে, অনুমতি নিয়ে, দু একজন যাওয়া আসা করতে পারেন। যদিও সেটা খুব কম ঘটে। মোট কথা গ্রামটি বাংলাদেশ থেকে একেবারে আলাদা করে রাখা। এই গ্রামের লোকেরা জনসংখা বাড়াতে থাকল। ১০ বছরের মধ্যেই জনসংখা হয়ে গেল ৩০০০ । এভাবে ২০ বছর পরে জনসংখা হল ১৫,০০০। যেই গ্রামে ৫০০ জন ভালোভাবে বাস করত সেই গ্রামে ওখন ১৫,০০০ লোক। এরা কিন্তু এখন খাদ্যের অভাবে থাকে। আল্লাহ কিন্তু তাদের রিজিক ঠিকই দিয়ে রেখেছেন। কিন্তু ওই গ্রামে থেকে তারা বাইরে যেতে পারেনা। রিজিকটাও তার কাছে পৌছায় না। হ্যা, গ্রামের সব লোকের কিন্তু হাত পা আছে। তারা কিন্তু কর্মক্ষম। এর পরেও অনাহারে আছে। এর কারন তারা ওই গ্রামে আটকা পড়ে আছে। বাংলাদেশের পরিস্থিতিটা ঠিক এমন। আমরা ১৫ কোটি লোক ছোট এক দেশে আটকা পড়ে আছি। আমারা কর্মক্ষম, আল্লাহ আমাদের রিজিক দিয়ে রেখেছেন এর পরেও সেই রিজিক আমাদের কাছে পৌছাচ্ছে না। অবশ্য এর আরো একটি বড় কারন আছে সেটা হল একজন মানুষ অন্য হাজার মানুষের সম্পদ লুট করে বসে আছে। এই সমস্যা দুনিয়ার সব দেশেই আছে। বিশ্বব্যাঙ্কের সমীক্ষায় এসেছে - বিশ্বের অর্ধেক সম্পদের মালিক মাত্র ৮৫ জন !!

কারো যদি মনে হয়ঃ ১৫ কোটি লোক বাংলাদেশের জন্য বেশি হলেও এত বেশী নয় যাকে আটকা পড়া বলতে হবে। কেউ যদি মনে করেন যে বাংলাদেশে সততা, সুনীতি, সুশিক্ষা ইত্যাদি প্রতিস্টা করা গেলে এই জনসংখা বোঝা নয়, বরং সম্পদ হবে। কেউ যদি এই ব্যাপারে চীন দেশটিকে উদাহরন দেখাতে চান তবে তার জন্যই নীচের প্যারা।

চীনের লোকসংখা ১৩৫ কোটি । ওদিকে বাংলাদেশের জনসংখা ১৫ কোটি। বোঝা গেল, জনসংখায় চীন আমাদের ৯ গুন। এবার সাইজটা দেখুন। চীনের আয়োতন ৯৫ লক্ষ বর্গকিলোমটার যা কিনা বাংলাদেশের ৬৫ গুনেরও বেশী। অর্থাৎ, চীন আমাদের চেয়ে সাইজে ৬৫ গুন বড়, কিন্তু জনসংখা মাত্র ৯ গুন বেশী। বাংলাদেশের ঘনবসতি চীনের সমান বানাতে হলে বাংলাদেশে লোক থাকতে হবে মাত্র ২৩ লক্ষ । ওদিকে চীনকে বাংলাদেশের মতন ঘনবসতি বানাতে হলে সেখানে লোক থাকতে হবে ৯৭৫ কোটি। যারা দুনিয়াতে এত লোকই নেই। দুনিয়ার জনসংখা হল ৭০০ কোটি। সহজ কথায়, সারা বাংলাদেশের জনসংখা যদি মাত্র ২৩ লক্ষ হয় তাহলে আমাদের জনসংখা চীনের মতন হবে। ওদিকে সারা দুনিয়ার লোক সবাই যদি চীনে গিয়ে থাকে তাহলেও তাদের ঘনবসতি বাংলাদেশের সমান হবে না। বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতির দেশ। আয়তনের তুলনায় এই দেশের জনসংখা যে কত বেশী সেটা ধারনা করাটাও কস্টকর। দু বেড রুমের একটি ফ্লাটে ২০০ জন বসবাস করালে কেমন অবস্থা হবে? কেমন অনিয়ম হবে? মানুষ কোথায় শোবে, কোথায় বসবে, কোথায় রান্না করবে, কোথায় খাবে? অবশ্যই অনিয়ম হবে। ঠিক তেমনই হয়েছে বাংলাদেশের। সব অনিয়মের মুলেই আছে এই অল্প যায়গাতে বেশী লোক।

আমরা সহজে সারা দুনিয়াতে ছড়িয়ে যেতে পারলে কোন সমস্যা ছিল না। কিন্তু এই আটকা পড়ার কারনে আমরা কিন্তু আল্লাহর দেওয়া রিজিক খুজে আনতে পারছি না। ভুল ভুঝবেন না, সব রিজিক দেশের বাইরে নয়। দুনিয়ার সবখানেই রজিক ছড়ানো থাকে। স্বাভাবিক ভাবেই, ছোট যায়গাতে অল্প লোকের রিজিক থাকে। বড় যায়গাতে বেশী লোকের রিজিক থাকে। আমাদের যায়গাটা অল্প ওদিকে লোক বেশী।

উপসংহারঃ (বেশ চিন্তা করে লিখতে হচ্ছে Happy ) - ইসলামের নিয়মে, জন্ম নিয়োন্ত্রন যায়েজ হবার যে কারনগুলি আছে তার মধ্যে - এতক্ষন যা বললাম তার কোনটিই পড়ে না। ছোট দেশ, বেশী লোক, দারিদ্রতা , রিজিক খুজে না পাওয়া ইত্যাদি জন্ম নিয়োন্ত্রন যায়েজ হবার কোন কারন নয়। এই কারনগুলো ইসলামে থাকার কথাও না। ইসলাম তো কোন দেশের জন্য আসেনি, এসেছে দুনিয়ার জন্য। সারা দুনিয়া এক । বংশবিস্তার কর আর আল্লাহর দুনিয়াতে ছড়িয়ে যাও, আল্লাহর দেওয়া রিজিক লাভ কর। বিষয়টি এমন হলে তো খুব সোজা হোত । জন্ম নিয়োন্ত্রন জিনিসটাই মানুষের লাগত না। কিন্তু যখনই আমাদেরকে একটি ছোট দেশে সীমানা বেধে দিয়ে আটকে রাখা হয় তখন আমরা নিরুপায়। বংশবিস্তার করতে পারলেও আল্লাহর দুনিয়াতে ছড়াতে পাড়ছি না। এমন পরিস্থিতিতে আমরা বংশ বিস্তার করতেই থাকব কিনা, এ ব্যাপারে ইসলামে পরোক্ষভাবেও কিছু বলা নেই। বাংলাদেশের জনসংখার ঘনত্ব বিশ্বের সবচেয়ে বেশী। একারনে আমরা সবচেয়ে বেশী নিরূপায়। বাধ্য হয়েই পরিবার পরিকল্পনা করতে হয়। আল্লাহ সবই জানেন। আমরা কতখানি নিরুপায়, কতখানি অসহায়, কিংবা আদৌ অসহায় কিনা - সেটা বিবেচনা করেই তিনি সঠিক বিচার করবেন। তিনি সর্বাপেক্ষা ন্যায় বিচারক। ।

বিষয়: বিবিধ

১৬৫১ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

269710
২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ০৫:১১
কাহাফ লিখেছেন :
ধন্যবাদ ব্লগার এলিট ২৯.....
একটি প্রয়োজনীয় দ্বীনি বিষয়ে দু'পর্বে বিশ্লেষণ মুলক যৌক্তিক পোস্টের জন্যে,জাযাকুমুল্লাহু খাইরান সাথে সাথে।
"প্রয়োজনে নিষিদ্ধতা রহিত হয়।" এর সীমা-রেখা নির্ধারিত হবে শরীয়ত কর্তৃক।
বর্তমান বাংলাদেশের সামগ্রিক দিক বিবেচনায়(শারীরিক-ধর্মীয়-আর্থিক) জন্মনিয়ন্ত্রণের কিছু পদ্ধতি অবলম্বন সাময়িক ভাবে গ্রহনযোগ্য।
269725
২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ০৭:৪২
মনসুর আহামেদ লিখেছেন : প্রাকৃতিক ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। তারপরও জানি না, শরীয়ত সম্মত কিনা। আল্লাহ তো মনের
খবর জানেন।
269935
২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৮:৪৫
আবু সাইফ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..
বলেছেন-
খটকাটা হল আপনার বা আপনার মতন অনেকেরই বোঝার ভুল। আমাদের দেশে আমরা বাধ্য হয়ে জন্ম নিয়োন্ত্রন করছি দারিদ্রতার ভয়ে নয়, কি খাব এর ভয়ে নয়। এটা করছি ছোট এক দেশে ১৫ কোটি লোকের যায়গায় ৫০ কোটি লোক আটকা পড়ে যাবার ভয়ে। আটকা না পড়লে এত বড় আল্লাহর দুনিয়াতে খাবারে অভাব নেই।



>>মূল বিবেচ্য : জনসংখ্যা কি সম্পদ, নাকি সমস্যা??

এ প্রশ্নের সমাধান আগে খুঁজতে/বুঝতে হবে, তবেই বাকি বিষয় বুঝতে সহজ হবে!


বাংলাদেশের জনসংখার ঘনত্ব বিশ্বের সবচেয়ে বেশী।

>>একথা ঠিক নয়! জনসংখার ঘনত্বে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩ নম্বরে
Country Comparison > Population density
Rank Country Population density (N০ of people per sq.km)
1.Macau-20,497.34
2.Monaco-15,255.00
3.Singapore-7,680.77
4.Hong Kong-6,479.64
5.Gaza Strip-4,750.71
6.Gibraltar-4,466.77
7.Holy See(Vatican City)-1,900.00
8.Bahrain-1,642.56
9.Maldives-1,323.66
10.Malta-1,296.95
11.Bermuda-1,279.26
12.Sint Maarten-1,149.65
13.Bangladesh-1,118.65
14.Guernsey-837.76
15.Jersey-818.53

আপনি কেন শুধু জনসংখ্যা ঘণত্ব ও জমির দিকে দেখছেন?

দেশের অর্থনীতিতে কৃষির অবদান: জাপান ১%, চায়না ১০%, বাংলাদেশ ১৭%, ভারত ১৮%, সিংগাপুর ??

বাংলাদেশের ৩টি রপ্তানী পণ্য- জনশক্তি, গার্মেন্টস, আইটিসেবা এখন সকালের সূর্যের অবস্থানে- অসীম ভবিষ্যত সামনে!
এছাড়াও আমাদের মেধাবীরা বিশ্বময় দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছে- আর যার যার অবস্থান থেকে ছোট ছোট বাংলাদেশ গড়ে তুলছে বিশ্বময়!

এই আটকা পড়ার কারনে আমরা কিন্তু আল্লাহর দেওয়া রিজিক খুজে আনতে পারছি না।
এ কথার জবাব এখানে বিস্তারিত পাবেন মনে করি-


আরো কিছু এখানে পাবেন



বংশবিস্তার করতে পারলেও আল্লাহর দুনিয়াতে ছড়াতে পাড়ছি না। এমন পরিস্থিতিতে আমরা বংশ বিস্তার করতেই থাকব কিনা, এ ব্যাপারে ইসলামে পরোক্ষভাবেও কিছু বলা নেই।

>> আল্লাহর দুনিয়াতে ছড়িয়ে পড়তে পারছি না- এ কথা যে ঠিক নয় তা তো উপরেই দেখানো হলো!

আর ইসলামের নির্দেশনাঃ রসুলুল্লাহﷺ জোর তাগিদ করেছেন পাত্র/পাত্রী নির্বাচনে এমন বংশ খুঁজতে যাদের অধিক সন্তান

তিনি উম্মাতের সংখ্যা নিয়ে হাশরের দিনে গর্ব করবেন- এমন কথাও বলেছেন!

বিশ্বজয়ে মুসলিম জনসংখ্যাই একটি শক্তিশালী হাতিয়ার হতে পারে!

বাংলাদেশে এখন যে বিপূল পরিমান রেমিট্যান্স আসে প্রবাসীদের কাছ থেকে, তার অধিকাংশই সাধারণ শ্রমিক বা স্বল্পশিক্ষিত অদক্ষ শ্রমিকদের থেকে! এদের বহির্গমনে সরকারী অবদান সামান্যই!

যদি এরা দক্ষ ও শিক্ষিত হতো তবে আরো বেশী আসতো!


ভুল ভুঝবেন না, সব রিজিক দেশের বাইরে নয়। দুনিয়ার সবখানেই রজিক ছড়ানো থাকে। স্বাভাবিক ভাবেই, ছোট যায়গাতে অল্প লোকের রিজিক থাকে।

>>রিজক কোথাও আবদ্ধ থাকেনা- যারা এটা পাবার যোগ্যতা অর্জনের জন্য চেষ্টা করে তাদের কাছে তা পৌঁছে দেয়া হয়!


এ ব্যাপারে আল্লাহতায়ালা গ্যারান্টী দিয়েছেন- সেটা ও কি আমরা যুক্তি দিয়ে উপেক্ষা করতে পারি?
বড় যায়গাতে বেশী লোকের রিজিক থাকে। আমাদের যায়গাটা অল্প ওদিকে লোক বেশী।
>>জাপান হংকং সিংগাপুরের কথা আমরা বিবেচনায় আনবো না কেন??

যাহোক,
আল্লাহতায়ালা ও রসুলুল্লাহﷺ জোর তাগিদ থাকার কারণে, "শরয়ী ওজর" ছাড়া জন্মনিয়ন্ত্রনের পক্ষে আর কোন কিছুই বিবেচ্য হতে পারেনা!
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ১২:০১
213990
এলিট লিখেছেন : ওয়ালাইকুম আস সালাম। অনেক বিতর্ক করেছি , আর করব না। এবার আপনার কথা বলুন। বোঝাই যাচ্ছে, আপনি জন্ম নিয়ন্ত্রনের থেকে অনেক দূরে আছেন। আল্লাহ আপনার মঙ্গল করুন।
আপনি বিবাহিত হলে - আপনার কি ৮-১০ জন ছেলে মেয়ে আছে, অথবা আপনি কি সেই লাইনেই এগুচ্ছেন ?
আপনি অবাহিত হলে - আপনি কি বিবাহের পরে অন্তত ডজন খানেক ছেলে মেয়ে আশা করেন?
উপরের যে কোন প্রশ্নের উত্তর যদি "হ্যা" হয়, তাহলে বলব - আল্লাহ আপনার সহায় হউন। অনেকের কাছেই যা অসম্ভব তা আপনি করে দেখাচ্ছেন বা দেখাবেন। উত্তর "না" হলে - আমার কিছু বলার নেই।
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ১২:৪৪
214006
আবু সাইফ লিখেছেন : আমার ইচ্ছা ছিল যেন আমরা ভাইবোনদের (মোট-১১,বর্তমান-৮) সংখ্যার চেয়ে সন্তানসংখ্যা বেশী হয়!

আমরা ভাইবোনেরা একটা সময় পার করেছি যে, রাতে জানতামনা সকালে স্কুল/কলেজ যাবার সময় সামান্য কিছু খাবার জুটবে কিনা কিম্বা স্কুল/কলেজ থেকে বাসায় ফিরে কিছু মিলবে কিনা! সে অবস্থাটাই আমাদের প্রকৃত শিক্ষক ছিল!

আলহামদুলিল্লাহ, এখন সবাই শিক্ষিত, সংসারী ও স্বাবলম্বী, (বোনেরাও)!

ভাই-বোনদের যারা ওজরমুক্ত তারা আমার মতেই চলছে! যাদের সংসারে সন্তান বেশী তাদের জন্য আমার/অন্যদের স্পেশ্যাল কেয়ার ও গিফট থাকে নিয়মিত!


কিন্তু আমার লক্ষ্য অর্জিত হয়নি- মোটে চার! এমনকি বেগমকে সারাবছর বিছানায় রেখেও এর বেশী সম্ভব হয়নি- জন্ম নিয়ন্ত্রনের কোন ব্যাপার ছিলনা, যদিও শরয়ী কারণ বিদ্যমান! যদি বেগমের অক্ষমতার কারণ না ঘটতো তবে লক্ষ্য অর্জনে সচেষ্ট থাকতাম নিশ্চিত!

অধিক সন্তানের পথে বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বড় তিনটি বাধা হলো-
(১)শারীরিক অক্ষমতা - মেয়েরা এখন এতটা আদরযত্নে বড় হচ্ছে যে তাদের শারীরিক সক্ষমতা আমার মা-চাচী-খালা-ফুফুদের তূলনায় ৩০-৪০%এর বেশী নয়!
(২)দেরীতে বিয়ে হওয়া! যে সময়ে এখন মেয়েদের বিয়ে হচ্ছে সে সময়ে আমার আমার মা-চাচী-খালা-ফুফুদের এক-দেড়হালি সন্তান ছিল!
(৩)ডাক্তারদের অভয়বানীর পরিবর্তে ভীতিপ্রদর্শন! আমার বেগমের অন্ততঃ দু'বার সিজার হতে দেইনি আমার একক গোঁয়ার্তুমির কারণে- এতে আত্মীয়স্বজনরাও নাখোশ! যদি তা হতে দিতাম তবে চারটি সন্তান পাওয়া দুঃস্বপ্ন হয়ে যেতো!
প্রসবের তারিখ নির্ধারণের ডাক্তারী যে হিসাব প্রচলিত আছে তাতে ১০দিনের একটা ভুল আছে, যে কারণে এমনটা হয়! আমি ডাক্তার ন্ই, বায়োলজির ছাত্র; যেকোন গর্ভধারিনীর সাথে কথা বলে প্রসবের যে তারিখ হিসাব করে দেই সেটাই ঠিক হয়, অথচ ডাক্তাররা ১০দিন আগের তারিখ বলেন এবং ঐদিন পার হলেই সিজার করতে পীড়াপিড়ি করেন! তবে ব্যতিক্রমও আছেন, অল্প!


আমার বয়স: আল্লাহ কবুল করলে আগামী বছর নাতি-নাতনীর নেয়ামত লাভ করবো, ইনশাআল্লাহ! দোয়া চাই...
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০২:৩১
214029
এলিট লিখেছেন : ধন্যবাদ আপনাকে। আপনার কাছ থেকে অনেক কিছু জানা গেল। নিজের সম্পর্কে এভাবে খুটিনাটি বিষয়ে যেভাবে একজন অচেনা মানুষকে বলছেন এবং ব্লগে উন্মুক্ত করে দিচ্ছেন - সেটা সত্যই অবাক করার মতন। ব্লগে বিভিন্ন বয়সের মানুষ পাওয়া যায়। স্কুলের ছাত্র থেকে শুরু করে দাদু পর্যন্ত। স্কুলের ছাত্ররা আজকাল যেভাবে জ্ঞানের কথা লিখছে তাতে - লেখা পড়ে কারো বয়স আন্দাজ করা অসম্ভব হয়ে দাড়িয়েছে।
আপনার লেখা তিনটি পয়েন্টই সঠিক। ডাক্তারেরা কিভাবে প্রসবের তারীখ নির্ধারন করেন সেটা জানিনা। তবে অনেক অসাধু ডাক্তার ভুল তারিখ দিয়ে এরপরে জটিলতার দোহাই দিয়ে সিজার করে বাড়তি কামাই করতে চায়।
খুব ভালো লাগল আপনাকে জানতে পেরে। দোয়া করি আগামী বছরে নাতী -নাতনীর মুখ দেখুন।
বয়সে আপনার চেয়ে ছোট হলেও, আমি একেবারে কিশোর নই। তবে দেরীতে সংসার শুরু করার দলে পড়ে পিছিয়ে পড়েছি। আমার একটি দেড় বছরের ছেলে আছে। দোয়া করবেন ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File