অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে সিরামিকের কাপ এলো কোথা থেকে?
লিখেছেন লিখেছেন এলিট ১৯ আগস্ট, ২০১৪, ১২:০৩:১৩ রাত
হ্যা, ওদেরকে আমরাই বিখ্যাত বানাই। এই তিনজনের ভিডিও দেখে সবাই মুখস্ত করে ফেলেছে। তাদের ওই আলাপের ছবিতে ছেয়ে গেছে ফেসবুক। নিয়মিত অনলাইনে উপস্থিত এমন কোন বাংলাদেশী নেই যে এই ছবি দেখেনি। তাছাড়া তাদের এই বৈঠকের ছবি নিয়ে জল্পনা কল্পনা করার জন্য, আমার মতন স্বল্পবিদ্ধুর লোকের তো অভাব নেই। এগুলো করে কিন্তু আমরা ওদের উপকার করছি। ওদেরকে বিখ্যাত বানাচ্ছি।
যাই হোক, এত কিছু বুঝেও, সেই একই ভাঙ্গা রেকর্ড বাজাচ্ছি কারন হল, এই বিষয়টির অনেক কিছু বিশ্লেষন হলেও একটা জিনিস এখনো আলোচনায় আসেনি। দুটি কোরআনের উপরে চা/কফির কাপ রাখার ব্যাপারটি নিয়ে অনেকে কথা বলেছেন। কোরআনের অবমাননা হয়েছে। বাইবেল এর উপরে এমন করতে পারত কিনা বা করলে কি হোত। গীতার উপর এমন কাপ রাখলে কি তসলিমা নাসরীন ভারতে থাকতে পারতেন কি না এমন আলোচনাও হয়েছে। তাছাড়া এটাও একেবারে স্পস্ট যে, কোরআন এর উপর কাপ রাখার ব্যাপারটি হটাত করে ঘটে যায়নি। ইচ্ছে করে এমন করা হয়েছে, এবং এর ভিডিও করা হয়েছে । তারা আশা করেছে, এভাবে আলোচনায় আসতে পারবে, এবং এসেছেও।
এবার আসি অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির কফির কাপে । ছবিতে লেখা আছে সেটি অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি। এই ইউনিভার্সিটি তো বিশ্ব বিখ্যাত। এখনো সেরা ৫ টির মধ্যে এর অবস্থান। এই ইউনিভার্সিটি তো অনেক দুরের কথা, ইংল্যান্ডের যে কোন ইউনিভার্সিটিতে কি অমন সিরামিক এর কাপ পাওয়া যায় ? তাও আবার তিনিটি, তিন রকমের কাপ। তাছাড়া আসিফের কাপে তো কোন ভারতীয় রেস্টুরেন্ট এর লোগর একটা মোনোগ্রাম দেখা যাচ্ছে। সারা দেশে চলে কাগজের বা প্লাস্টিকের কাপ, তাতে আবার কোন দোকান বা কোম্পানীর মোনোগ্রাম থাকে। সিরামিকের কাপ কোথা থেকে এলো? ইউনিভার্সিটির ভেতরেই রেস্টুরেন্ট থেকে। সেখান থেকে আসলে তিনিটি কাপ একই রকমের দেখতে হতো। কাপের উপরে ওই রেস্টুরেন্ট এর মোনোগ্রাম থাকত। এখানে তিনটি ভিন্ন কাপ দেখে বোঝাই যাচ্ছে এগলো এলোমেলোভাবে সংরহ করা।
এই ব্লগের অনেকেই ইংল্যান্ডে থাকেন। তারা আমার কথাটি যাচাই করে দেখবেন। কোন বিশ্ববদ্যালয়ে এভাবে তিনজন তিনটি আলাদা চেহারার কাপে চা/কফি খাওয়া যায় কিনা। তাছাড়া এভাবে কোরআন তো দুরের কথা, যে কোন বই এর উপরে কাপ রাখা যায় কিনা। সর্বোপরি, মোবাইলের ক্যামেরাতে নয়, হাই ডেফিনেশন ক্যামেরাতে ১৬ মিনিটের একটি ভিডিও করা যায় কিনা। সিনেমার প্রফেশনাল টিমেরও ১৬ মিনিটের ভিডিও করতে এক ঘন্টারও বেশী সময় লাগে। অবশ্য ইউনিভার্সিটির হোস্টেলে এমন করাটা সম্ভব, কিন্তু তার জন্য হোস্টেলের ছাত্রদের সাহায্য লাগবে। কতজন বাংলাদেশী ওই অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে পড়ে, তাদের কতজন হোস্টেলে থাকে, তাদের কতজন এমন ইসলাম বিদ্বেষিদের সাহায্য করবে সেটাও একটা চিন্তার বিষয়। তাছাড়া ভীনদেশী ভাষায় অমন ভিডিও করে যাচ্ছে আর আসে পাশের অন্য ছাত্ররা কিছু বলছে না এটাও চিন্তার বিষয়। ওই অঞ্চলে কি মুসলিম একজনও ছিল না যে বলতে পারত, কাপ অন্য কোথাও রাখ। সিরিয়া বা লেবাননের সাধারন কেউ এই জিনিস চোখের সামনে দেখলে, প্রথমে ভালোবাভে বলবে। এর পরে না শুনলে , কোন কথা ছাড়াই নাকের উপরে ঘুষি দিবে।
ইংল্যান্ডের যে কোন যায়গায়, জনগনের সামনে, টেবিলে কোরআন রেখে, ইংরেজী ছাড়া অন্য ভাষায় কথা বলে সেটা ভিডিও করলে, মানুষ মনে করবে এরা অবশ্যই মুসলিম জঙ্গী। যেহেতু বাংলা ভাষা তারা বোঝে না, তারা মনে করবে, এই তিনজন কোন একটা সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা করছে। অনেকেই হয়ত পুলিশে খবর দিবে। আর অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি হলে তো কথাই নেই। এমন ভিডিও করা সম্ভব ব্যাক্তিগত কোন অফিসে। সম্ভবত কোন ভারতীয় বা বাঙ্গালী আইনজীবির অফিস। এমন অফিসে বিভিন্ন রকমের ডিজাইনে সিরামিকের কাপও থাকে। সেখানে মন ভরে ভিডিও করা যায়।
তসলিমা নাসরীন ইসলাম বিরোধী হলেও সে একজন লেখিকার কাতারে দাড়াতে পারে। সে লিখতে জানে। ওদিকে আমাদের নতুন প্রজন্মের ইসলাম বিরোধীরা লিখতে জানে না, লেখকের কাতারেও দাড়াতে পারে না। তারা শুধু পারে গালি দিতে আর বাজে কথা বলতে। এরা তসলিমা নাসরিনের পাশে দাঁড়িয়ে কিছুটা জাতে উঠতে চায়। কোরআন সামনে নিয়ে, তার উপরে চায়ের কাপ রেখে, ভিডিও করার উদ্দেশ্য হল - সেই ভিডিও দেখে মানুষ গালি দিবে, মারতে চাইবে, হাজার বাজে মন্তব্য করবে। এসব দেখাতে পারলে অন্য দেশে রাজণৈতিক/ধর্মীয় আশ্রয়ে থেকে যাওয়াটা সহজ হয়। আর অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির নাম ব্যাবহার করার কারন হল – এটা বোঝানো যে , তাদের হাত কত লম্বা যে, তারা অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে বসে কোরআনের উপরে চা রেখে ভিডিও করতে পারে। আসলে কোথায় বসে সেই ভিডিও বানিয়েছে সেটা তারাই জানে।
বিষয়: বিবিধ
১৫৮৯ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ওগুলী যে কোরান তা কীভাবে বুঝল? অন্য পুস্তক ও তো হতে পারে।
যাই হোক বই দুটির উপরে ইংরেজীতে কোরআন লেখা আছে। আপনি কি বলতে চাচ্ছেন, ওরা ডিকশনারীর উপরে কোরআনের মলাটা লাগিয়েছে?
তবে আপনার বিশ্লেষন টা যথোপযুক্ত।
হাহাহা,
আমি এই লেখা দেখবার জন্য আপনাদের পাড়ায় আসি নাই।
এখানে আমার নিয়মিত কাজ থাকে। এসেই দেখতে পেলাম আপনাকে। তাই একটু আপনার সংগে সাক্ষাত হয়ে ভালই লাগল।
এখানে দুইটা পোষ্ট দিতে এসেছিলাম।
১) আপনি নিমন্ত্রিত........... (হাসান মাহমুদের)
২)হৃদপিন্ড কী? (আমার)
আপনি একটু পড়ে দেখবেন।
এই ব্লগটায় একটা অসুবিধা, কেহ মন্তব্য করলে ইমেইল যায়না।যার জন্য পোষ্টে কী ঘটতেছে তা টের পাওয়া যায়না।
বিদায়,
আমাদের পাড়ায় আসুন, সাক্ষাতে কথা হবে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন