মুতা বিয়ে (অস্থায়ী বিয়ে) কি ইসলামে হালাল ?

লিখেছেন লিখেছেন এলিট ০৯ আগস্ট, ২০১৪, ০৩:৪২:২০ রাত



ইসলামের মুতা বিয়ে (অস্থায়ী বিয়ে) এবং এর অমানবিকতা তুলে ধরে বিভিন্ন বুদ্ধিজীবির লেখা রয়েছে। তাও আবার কোরআন হাদিস এর রেফারেন্স দিয়ে। এর সাথে প্রাসঙ্গিক অনেক কথাই আছে তাদের। যেমন কোন দেশে হালাল পতিতালয় চালু করেছে যেখানে খদ্দেরকে পতিতার সাথে মুতা বিয়ে দিয়ে পতিতাবৃত্তি হালাল করা হয়। ইরানে তো সরকারী নিয়মেই মুতা বিয়ে চালু আছে। মহানবী (সা) এর আমলে যুদ্ধবন্দি নারীদেরকে মুতা বিয়ে করে হালাল (!) ধর্ষন করা হোত। বিষয়টা সত্যই অমানবিক। যুদ্ধবন্দী মহিলার স্বামীকে যে লোকটি দুপুরে হত্যা করল, সেই লোকটিই মুতা বিয়ে করে রাত্রে ওই মহিলার সাথে রঙ্গলীলায় মত্ত। যদিও এত যোদ্ধা ও এত যুদ্ধবন্দী নারীর ভেতরে বেছে বেছে স্বামীর হত্যাকারীটিই কিভাবে ওই মহিলার শয্যাসঙ্গী হোত সেটা তারা বলেননা। সবকিছু মিলিয়ে, উনাদের মুল কথা হল – মুতা বিয়ে হল, নারীকে ভোগের বস্তু বানানোর আর পুরুষের মজ মাস্তি করার মাধ্যম। এই ব্যাবস্থা যেই ধর্মে আছে, সেই ধর্মে নারীর সন্মানের কথা বলেনা।

হ্যা, উনাদের এই কথার সাথে আমি সম্পুর্ন একমত। এমন ব্যাবস্থা আসলেই নারীকে ভোগের বস্তু বানায়। এমন ব্যাবস্থা যে ধর্মে আছে সেই ধর্ম নারীর সন্মান দেয় না। তবে আমার আমার মতবিরোধ ছোট একটি যায়গায়। সেটা হল – এমন ধর্ম ইসলাম নয়।

কথাটি হল, “মুতাহ নিকাহ” যার অর্থ “প্রমোদ বিয়ে”। খাস বাংলায়, মৌজ মাস্তি করার জন্য বিয়ে । কথাটি সত্য, অস্থায়ী বিয়ে মাস্তি করা ছাড়া আর কি? তবে, এই কথাটা জেনে রাখুন – এই মুতাহ বিয়ের আবিস্কারক ইসলাম নয়। ইসলাম আসার অনেক আগে থেকেই আরবে এই মুতাহ বিয়ে প্রচলিত ছিল। হ্যা, আরবের যেই সমাজে মেয়ে শিশুকে জ্যান্ত কবর দেওয়া হোত, সেই সমাজেরই পদ্ধতি এই মুতা বিয়ে। এই মুতা বিয়ের জন্য ইসলামকে দায়ী করা যাবে তখন যখন কোরআন বা হাদিসে কোথাও এর সমর্থনে কিছু লেখা থাকবে।

ইসলামে মুতা বিয়ে হারাম, নিষিদ্ধ। ধর্মকারীর মতন ধর্ম বিদ্বেষী ওয়েব সাইট নয়, নিরপেক্ষ তথ্যভিত্তিক যে কোন ওয়েব সাইট দেখুন। যে কোন বিশ্বকোষ (Encyclopedia) দেখুন। মুসলমানদের নয়, ইহুদী খিস্টানদের লেখা নিরপেক্ষ ওয়েব সাইট দেখুন। কোথাও এই কথা লেখা নেই যে মুতা বিয়ে ইসলামে হালাল। এটা অস্বীকার করছি না যে এই মুতা বিয়ে এখনো অনেক মুসলমান সমাজে প্রচলিত আছে। কিন্তু এজন্য তারা ইসলাম দায়ী নয়। যেমন, ইসলাম ধর্মে - কবর, মাজার পুজা হারাম, সুদ হারাম, বিবাহ বহির্ভুত সেক্স হারাম, মদ হারাম। এর পরেও তো মুসলমানেরা সমানে এসব করছে। এজন্য সেই লোকগুলো দায়ী, ইসলাম নয়। ঠিক তেমনি, মুতা বিয়ে ইসলামে নিষিদ্ধ হবার পরেও অনেক মুসলমান এটাকে পালন করছে। এজন্য ইসলামকে দায়ী না করে ওই লোকগুলোকে দায়ী করতে হবে।

মুতা বিয়ের পক্ষে একটী হাদিস তারা উপস্থাপন করেন

আমরা চুক্তি করে (মুতা) বিয়ে করতাম কয়েক মুঠো আটার বিনিময়ে। ঐ সময় আল্লাহর রসুল আমাদের মাঝে জীবিত ছিলেন। এই ব্যবস্থা চলতে থাকে আবু বকরের সময় পর্যন্ত। কিন্তু হারিসের ঘটনা শোনার পর উমর এই ধরণের বিবাহ নিষিদ্ধ করে দেন।

লক্ষ্য করুন, এখানে কিন্তু বলা নেই যে রাসুল (সাঃ) মুতা বিয়ে করতে বলেছেন। বলা আছে যে তিনি বেচে থাকাকালীন সময় লোকেরা মুতা বিয়ে করত। লোকেরা আবু বকরের সময় পর্যন্ত মুতা বিয়ে করত। উমর এই ব্যাবস্থা নিষিদ্ধ করেন। তাছাড়া তখন মানুষ বিয়ের মোহরানা ছোট ধার্য্য করত। সেমন একটি টুপ, যায়নামাজ, গম ইত্যাদি।

এখানে তিনটি প্রশ্ন থেকে যায়। ইসলামে যদি মুতা বিয়ে নিষিদ্ধই হবে তাহলে

- মুতা বিয়ে চোখের সামনে হওয়াতেও রাসুল (সাঃ) চুপ ছিলেন কেন?

- আবু বকরের আমল পর্যন্ত এই মুতা বিয়ে কিভাব চলেছে?

- ইসলামে কোন কিছু নিষিদ্ধ করারা উমর কে? (সে তো নবী নয়)

বিষয়টিকে আমরা মদ খাওয়ার সাথে তুলনা করতে পারি। ইসলামে প্রথম যুগে মদ হারাম করা হয়নি। প্রচুর সাহাবী পাওয়া যাবে যারা এক সময় নিয়মিত মদ খেতেন। হয়ত রাসুল (সা) এর সামনে বসেই খেয়েছেন। কোন সাহাবী যদি এমন বর্ননা করতেন “আমি অমুক দিনে রাসুল (সাঃ) এর সামনে বসে মদ খেয়েছি” তখন তো সেটা একটা হাদিস হয়ে যেত। সেই কথাতে কি মদ হালাল হয়ে যেত? না হোত না। কারন পরবর্তীতে মদকে স্পস্ট ভাবে নিষেধ করা হয়েছে। হাজার বছরের প্রচলিত মদকে রাসুল (সাঃ) প্রথম দিনেই যেমন বন্ধ করে দিতে পারেননি তেমনি হাজার বছরের মুতা বিয়েও প্রথম দিনেই বন্ধ করতে পারেননি। প্রথম দিকে রাসুল (সাঃ) মুতা বিয়েকে সম্মতি দিলেও পরবর্তীতে নিষেধ করেছেন। কাজেই মুতা বিয়ের পক্ষে কিছু হাদিস পাওয়া যাবে। ঠিক তেমনি পরবর্তীতে নিষেধ করার হাদিসও পাওয়া যাবে।

রাসুল (সা) মুতা বিয়ে নিষেধ করার পরে সেটা ওই আমলে ফেসবুক বা টুইটারে ছড়িয়ে দেওয়া যায়নি। কোন টিভি চ্যানেলেও দেখানো যায়নি। অনেক সাহাবী তখন নিষেধের ব্যাপারটি জানতই না। রাসুল (সাঃ) এর প্রত্যেকটি কথা একজন সাহাবীর পক্ষে জানা সম্ভবও নয়। অনেকেই আবু বকরের আমল পর্যন্ত মুতা বিয়ের প্রাচীন পদ্ধতিকে হালাল মনে করে চালিয়ে গেছে। শুধু আবু বকর এর আমল কেন, এখনো চালিয়ে যাচ্ছে। উমর খালিফা হবার পরে যখন মুতা বিয়ের ব্যাপারে রাসুল (সাঃ) এর নিষেধের ব্যাপারে নিশ্চিত হলেন তখন তিনি এটা বন্ধ করার ঘোষনা দিলেন। উমর ইসলামে চালু কোন জিনিস বন্ধ করেননি। মুতা বিয়ে ইসলামে নিষেধ, তাই এটা বন্ধ করেছিলেন।

এতক্ষন তো অনেকবার বললাম যে, ইসলামে মুতা বিয়ে নিষেধ আছে। কোথায় নিষেধ আছে? হাদিসে প্রায় ২০-২৫ বার অস্থায়ী বিয়ে নিষেধের কথা এসেছে। এক কথা বার বার এসেছে। এর কয়েকটি নিচে দেওয়া হল।

১। আলী আবু তালিব থেকে বর্নীত – খাইবরের যুদ্ধের দিন আল্লাহর রাসুল মুতা বিয়ে ও গাধার মাংশ খাওয়া নিষেধ করেন Bukhari, Volume 5, Book 59, Number 527:

২। আলী আবু তালিব বলেছেন – খাইবর এর দিন আল্লাহর রাসুল অস্থায়ী বিয়ে ও গৃহ পালিত গাধার মাংশ খাওয়া হারাম করেন। Muslim, Book 21, Number 4763:

৩। সাবুরা ইবনে মাবাদ থেকে বর্নীত – আল্লাহর রাসুল মহিলাদের সাথে অস্থায়ী বিয়ে হারাম করেন। Abu Dawood, Book 11, Number 2068:

৪। সাবরা আল জাহানী বর্ননা করেন – আল্লাহর রাসুল বলেছেন – হে মানব সম্প্রদায়, আমি অস্থায়ী বিয়ের অনুমতি দিয়েছিলাম কিন্তু আল্লাহ সেটা (এখন) কেয়ামত পর্যন্ত নিষেধ করেছেন। অতএব যাদের কাছে এখন এমন অস্থায়ী স্ত্রী আছে তারা তাদেরকে মুক্ত কর, এবং তাদেরকে যে মোহরানা দিয়েছ সেটা ফেরত নিও না। Muslim, Book 008, Number 3255:

৫। আবদুল আল মালিক বর্ননা করেছেন – আল্লাহর রাসুল রাসুল অস্থায়ী বিয়ের অনুমতি দিয়েছিলেন কিন্তু মক্কা বিজয়ের দিন সেটা নিষেধ করে দেন। Muslim, Book 008, Number 3257:

৬। রাবী সাবরা বর্ননা করেছেন – আল্লাহর রাসুল চুক্তি (অস্থায়ী) করে বিয়ে করা বাতিল করেছিলেন। Muslim, Book 008, Number 3259:

৭। রাবী সাবরা বর্ননা করেছেন – আল্লাহর রাসুল মক্কা বিজয়ের দিন অস্থায়ী বিয়ে নিষেধ করেন। Muslim, Book 008, Number 3260:

৮। সাবরা আল জাহানী বর্ননা করেছেন – আল্লাহর রাসুল চুক্তি করে অস্থায়ী বিয়ে বাতিল করেছিলেন এবং বলেছিলেন – শোন, আজ থেকে কেয়ামত পর্যন্ত তোমাদের জন্য অস্থায়ী বিয়ে বাতিল হল, যারা মোহরানা দিয়েছ তা ফেরত নিও না। Muslim, Book 008, Number 3262:

এতবার নিষেধ করার পরে মুতা বিয়ে ইসলামে হালাল থাকে না। মুতা বিয়ে স্পস্ট হারাম। যারা মুতা বিয়ে করে তারা তাদের মতন করে করে। এটা তাদের পদ্ধতি। ইসলামে এটা নিষিদ্ধ।

এস এম এলিট - www.eliteweb.tk

-

বিষয়: বিবিধ

৩৪১০ বার পঠিত, ১১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

252431
০৯ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৪:১১
শেখের পোলা লিখেছেন : সুন্দর বিশ্লেষণ৷ যা হারাম তা হারামই, হাজার লোকে না মানলেও তা হারাম৷ আমরা হাারাম বলেই জানবো৷ ধন্যবাদ৷
252434
০৯ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৪:২৬
সুজা মানুস লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
252437
০৯ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৫:০১
বাজলবী লিখেছেন : হারাম
252447
০৯ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৬:০২
বৃত্তের বাইরে লিখেছেন : ভাল বলেছেন। এই বিয়ের পক্ষে বিপক্ষে হাদিস রয়েছে। কিন্তু যারা এ নিয়ে হৈ চৈ করে তারা নিষেধ করার পরের হাদিসগুলো নিয়ে আলোচনা করেনা। এজন্যই না জেনে অহেতুক বিতর্ক হয়। বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
252452
০৯ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৭:১৮
ইবনে হাসেম লিখেছেন : মূতা বিয়ে নিয়ে সুন্দর বিশ্লেষণ সহ, বিস্তারিত এ পোস্টটির জন্য আল্লাহ আপনাকে জাযায়ে খায়ের দিন। আশা করি এতে আমার মতো অনেকেই এই বিষয়টি নিয়ে চলে আসা অনেক ভূল ধারণা বা অস্পষ্টতা থেকে মুক্ত হবেন।
252457
০৯ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৭:৪৭
কাহাফ লিখেছেন : সময়োপযোগী যুক্তিক বিশ্লষণের জন্য মোবারাক বাদ ভাই................।
252461
০৯ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৭:৫৯
হতভাগা লিখেছেন : সৌদি শেখরা ভারত বর্ষে দিন পনেরো বেড়াতে এসে এরকম কাজ করে যায় । ফলে মেয়ের পরিবারও মাসান্তে বিশাল অর্থ পেয়ে আর্থিক লাভবান হয় ।

252470
০৯ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৮:৩২
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : মুতা বিয়ে রাসুল (সাঃ) এর সময় ই হারাম করা হয়েছে। হযরত উমর (রাঃ) এর সময় তৎকালিন পারস্য ও রোমান সাম্রাজ্য বিজয় হয়। হতে পারেন নবদিক্ষিত মুসলিমদের জন্য তিনি নতুন করে হুকুম দিয়েছিলেন। আর শিয়াদের মধ্যেও অনুমোদিত নয়। সৈয়দ আমির আলি লিখেছেন যে সকল শিয়া আলেম মুতা বিবাহের পক্ষে ফতোয়া দিয়েছেন তারা সুন্নাহ নয় বরং সমকালিন বাদশাহদের ইচ্ছা পুরুন করেছেন।
252515
০৯ আগস্ট ২০১৪ সকাল ১১:১৬
শাহ আলম বাদশা লিখেছেন : চমৎকার লেখা, সরাসরি প্রিয়তে আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
১০
252517
০৯ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ১২:২৪
গ্রামের পথে পথে লিখেছেন : @ জনাব এলিট , আপনি বলেছেন : এখন এই আয়াতের কোথায় লেখা আছে যে “তোমরা অস্থায়ী বিয়ে কর” ? বরং এখানে বলা হয়েছে নারীদেরকে বিবাহের জন্য তলব কর, ব্যাভিচারের জন্য নয়। অস্থায়ী বিয়ের কথা কোথায় আছে?

কোরান সূরা আন নিসা, আয়াত ৪:২৪
এবং নারীদের মধ্যে তাদের ছাড়া সকল সধবা স্ত্রীলোক তোমাদের জন্যে নিষিদ্ধ; তোমাদের দক্ষিণ হস্ত যাদের মালিক হয়ে যায়—এটা তোমাদের জন্য আল্লাহ্‌র হুকুম। এদেরকে ছাড়া তোমাদের জন্যে সব নারী হালাল করা হয়েছে, শর্ত এই যে, তাদের স্বীয় অর্থের বিনিময়ে তলব করবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করার জন্য—ব্যভিচারের জন্যে নয়। অনন্তর তাদের মধ্যে যাকে তোমরা ভোগ করবে, তাকে তার নির্ধারিত হক দান কর। তোমাদের কোন গোনাহ্‌ হবে না। যদি নির্ধারণের পর তোমরা পরস্পরে সম্মত হও। নিশ্চয় আল্লাহ্‌ সু-বিজ্ঞ, রহস্য-বিদ।


কোরাণের এই আয়াত থেকে দুটি বিষয় পরিস্কার হয়ে যায়।

১। (তোমাদের দক্ষিন হস্ত যাদের মালিক হয়ে যায়) অর্থাত যুদ্ধলব্ধ গনিমত নারীদের সাথে মুমিনের অবাধ যৌনতা করা আল্লাহর হুকুম। তার মানে গাজায় হামাস জেহাদীরা যুদ্ধলব্ধ বন্ধি ইহুদী নারীদের সাথে অবাধ যৌনতা করতে পারবে। এটা আপনার আল্লার হুকুম। ঠিক কিনা?

২। চক বাজারের হাজী চাঁন মিয়ার টাকার অভাব নেই। তিনি কামরাঙ্গি চর বস্তির উঠতি বয়সের মেয়েদের ভোগ করতে চান। তো তিনি ঐ মেয়ে গুলোকে ভোগ করার জন্য মাঝে মাঝে তলব করেন, বিয়ে করেন এবং যারযার পাওনা বুঝিয়ে দেন। আর এভাবে হাজী সাহেব অনন্তর নারী ভোগ করেন।

এটাই তা হলে ইসলামের বিয়ে?
১৭ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ০১:৪৩
198939
তায়িফ লিখেছেন : একের অধিক স্ত্রী রাখা আধুনিক সভ্যতা সমর্থন করে না। আপনার কয়টা গালফ্রেন্ড

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File