আরবী কথা হলেই সেটা ইসলামিক নয়

লিখেছেন লিখেছেন এলিট ২২ মে, ২০১৪, ০১:৫২:৫৯ রাত



বেশ আগে এই ব্লগেই একজন ব্লগার আমাদের কিছু প্রচলিত (ইসলামিক) ভুল নিয়ে একটি লেখা পোস্ট করেছিলেন। ওই লেখাতে ভুল ধরতে গিয়ে উনি নিজেই সেই একই ভুল করে বসেছেন। বিষয়টি ছিল যে - অনেকেই অতিভক্তি করে রাসুল (সাঃ) কে দোজাহানের বাদশা উল্লেখ করে। অনেকে এও বলে "আল্লাহ রাসুলের নাম নিয়ে কাজ শুরু কর"। এগুলো শিরক। লেখকের এই কথা শতভাগ সত্য। কিন্তু তিনি রাসুল (সাঃ) এর পরিচয় দিতে গিয়ে নিজেই একই ভুল করে বসলেন। লেখক সাধারনত ইসলাম সমর্থনে লেখালেখি করেন। তাছাড়া আমার উদ্দেশ্য ভুল শোধরানো, উনার সমালোচনা নয়। তাই উনার নাম উল্লেখ করে উনাকে বিব্রত করতে চাচ্ছি না।

উনার বক্তব্য - নবী মুহাম্মদের আসল পরিচয় হল তিনি আল্লাহর নবী, আল্লাহর রসুল , নাজির, বাশির , দায়িয়ান ইলাল্লাহ, সিরাজাম মুনির , রহমাতুল্লিল আলামিন এবং আল্লাহর বান্দা ইত্যাদি।

আরবী শব্দগুলি বেশ ভালো শোনালো। এবার আসুন এর অর্থ জেনে নেই।

১। নাজির - এর অর্থ "যিনি দেখছেন" Observer

২। বাশির - এর অর্থ "যিনি সবকিছু দেখেন" বা "যিনি সবকিছু জ্ঞাত"। এটি আল্লাহর ৯৯ টি নামের একটি।

৩। দায়িয়ান ইলাল্লাহ - "দায়িয়ান" একটি হিব্রু (ইসরাইল) শব্দ। এর অর্থ "বিচারক"। "ইলাল্লাহ" এর অর্থ "আল্লাহ ছাড়া"। সব মিলিয়ে এর অর্থ দাঁড়ায় "যিনি আল্লাহর অবর্তমানে বিচারক"। - নাউযুবিল্লাহ।

৪। সিরাজাম মুনির - "সিরাজ" অর্থ "আলো" আর "মুনির" অর্থ "উজ্জ্বল"। সব মিলিয়ে অর্থ দাঁড়ায় - উজ্জ্বল আলো।

৫। রাহমতুল্লিল আলামিন - এর অর্থ "বিশ্বাসীদের জন্য রহমত"।

রাসুল (সাঃ) প্রথমে আল্লাহর বান্দা, আমাদের মতন মানুষ। এর পরে তার পরিচয় হল, তিনি আল্লাহর মনোনিত নবী ও রাসুল। "রহমাতাল্লিল আলামিন" কথাটি ঠিক আছে। তবে এই রহমত আল্লাহ আমাদেরকে দিয়েছেন । আল্লাহ আআদেরকে রহমত করে রাসুল (সাঃ) কে দিয়েছেন। রাসুল (সা) নূরের তৈরী নন। উনি কোন আলো নন। তার পরেও জ্ঞান বা রহমতের আলো বলে রূপক অর্থে "উজ্জ্বল আলো" নামটিও না হয় মেনে নিওয়া গেল। কিন্তু বাকী নামগুলো যে সরাসরি শিরক হচ্ছে, ইসলাম বহির্ভুত হচ্ছে, সেটা বুঝতে কারো অসুবিধা হবার কথা নয়।

কয়েকটি ভালো আরবী কথার সাথে কিছু শিরকী কথা যোগ করে মুসলিমদেরকে প্রতারনা করা হয়। আমারা না বুঝেই অতিভক্তি সহকারে ওই আরবী শব্দগুলি মুখস্ত করি। এ ব্যাপারে আমাদের সাবধান হওয়া উচিত। যত বড় পীর সাহেব বা হুজুরের মুখে কোন আরবী কথা শোনেন না কেন। আরবী কথাটির অর্থ যাচাই করে দেখবেন।

বিষয়: বিবিধ

২৫৯০ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

224463
২২ মে ২০১৪ রাত ০২:০৮
মাটিরলাঠি লিখেছেন : অনেক অনেক ধন্যবাদ বিষয়গুলো তুলে ধরে ব্যাখ্যা করবার জন্য।

জাজাকাল্লাহু খাইরান।

224464
২২ মে ২০১৪ রাত ০২:১৩
কথার_খই লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ
224471
২২ মে ২০১৪ রাত ০৪:০৮
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : শুকরিয়া।
224491
২২ মে ২০১৪ সকাল ০৭:৪৭
নামের কী দরকার লিখেছেন : আপনার বুঝতে ভুল হচ্ছে। "নাজির, বাশির , দায়িয়ান ইলাল্লাহ, সিরাজাম মুনির" - রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্য এই ৪টি নামই সঠিক। এগুলোর প্রত্যেকটির উৎস পবিত্র কোরআনের আয়াত।

#নাজির- সতর্ককারী অর্থে এবং
#বাশির- সুসংবাদদাতা অর্থে
#দায়িয়ান ইলাল্লাহ- আল্লাহর দিকে আহ্বানকারী অর্থে
#সিরাজাম মুনির-উজ্জ্বল প্রদীপ অর্থে। কারণ- তিনি আল্লাহর হুকুমে অন্ধকারাচ্ছন্ন পৃথিবীকে হেদায়েতের আলো দেখিয়েছেন।

সূরা বাকারা, আয়াত ১৯



সূরা আহযাব, আয়াত ৪৫,৫৬



224495
২২ মে ২০১৪ সকাল ০৮:৩৪
শাহ আলম বাদশা লিখেছেন : আমার মনের কথাই লিখেছেন! ভালো লাগলো
০৭ জুন ২০১৪ সকাল ১১:২১
178458
গ্যাঞ্জাম খানের খোলা চিঠি লিখেছেন : অনেক লম্বা এক্কান কমেন্ট লিখলাম, মাগার ভদ্রলোকটি অহনো পর্যন্ত কুনো উত্তর দিল না।
224529
২২ মে ২০১৪ সকাল ১০:০৩
গ্যাঞ্জাম খানের খোলা চিঠি লিখেছেন : আমার যদি ধারণাটি ভুল না হয়ে থাকে তবে আপনি সত্যবাদি ব্লগার নামের লোকটির কথাই উল্লেখ করেছেন।
লেখক সাধারনত ইসলাম সমর্থনে লেখালেখি করেন।

কোটেশনবন্ধী বাক্যটি আপনি তার সম্পর্কে লিখেছেন। আমি উক্ত ব্লগারের পোস্টকৃত প্রায় লেখাই পাঠ করেছি। তার লেখার শব্দ চয়ন, ভাব প্রকাশের ধরণ, লেখার মাধ্যমে পাঠকদের মনে কি ধরনের মেসেজ দেয়া তার লক্ষ্য বা সরলমনা পাঠককে কৌশলে মিস গাইড করার সুক্ষ্মু কৌশল তা যদি গভীরভাবে মনোযোগ সহকারে পাঠ করা হয় তবে ইসলাম সম্পর্কে ধারণা রাখেন এমন লোকদের কাছে তার পরিচয় গোপন রাখা সম্ভব না। সে যে একজন ছদ্মবেশী ইয়াহুদীবাদের সমর্থক তা তার লেখার স্টাইলের মাধ্যমেই নিহিত রয়েছে। ব্লগার জনাব সালাম আজাদী সাহেব তার দু'য়েকটি বিভ্রান্তিকর তথ্যের অসারতা তুলে ধরে মন্তব্য করেছেন। জবাবে সে ইসলামের আলোকে কোন উত্তর দিতে সাহস করেননি।
কিছু কিছু নাস্তিক পতিক্রিয়াশীল বেকুব আছে যারা নিজের জেহালতকে আড়াল করার জন্য ধার্মিক সাজার চেষ্টার মাধ্যমে অতি সেনসেটিভ কিছু ধর্মীয় বোধ বিশ্বাসের প্রসংগ টেনে আলোচনা করার ব্যর্থ প্রয়াস চালান। কিন্তু তাদের অন্তরে জেহালত বদ্ধমূল থাকার কারণে নিজেদের লেখার মাধ্যমেই প্রকাশ করে দেন তার আসল পরিচয়। উল্লেখিত লোকটির পোস্টকৃত প্রতিটি ব্লগ একবার গভীরভাবে পাঠ করার জন্য অনুরোধ রইল।
২২ মে ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:২০
171989
আফরা লিখেছেন : আপনি তো অনেক ভাল আর জানেন ও অনেক ভাইয়া ।গ্যাঞ্জাম খানের খোলা চিঠি ভাইয়া অনেক ধন্যবাদ আজকে আপনাকে আমি চিনতে পারলাম ।এতদিন আপনাকে আমি শুধু গ্যাঞ্জামই মনে করতাম ভাইয়া ।গ্যাঞ্জাম খানের খোলা চিঠি ভাইয়া@
১০ জুন ২০১৪ রাত ০২:২৩
179752
এলিট লিখেছেন : আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। হ্যা, আপনার কথা ঠিক আছে। আমার বদভ্যাস বসত একমত হলে চুপ থাকি। নিরবতাই সম্মতির লক্ষন। আসলে সকল মন্তব্যের উত্তর দেওয়া উচিত।
231772
০৭ জুন ২০১৪ দুপুর ০১:২২
শাহ আলম বাদশা লিখেছেন : ''দায়িয়ান ইলাল্লাহ'' এর ক্ষেত্রে পোস্টদাতা সত্যি ভুল লিখেছেন যা আমিও খেয়াল করিনি।

ইল্লাল্লাহ আর ইলাল্লাহ কি একই উচ্চারণের? প্রথমটার উচ্চারণ আলাদা এবং মানে আল্লাহ ছাড়া যা কলেমা তাইয়েবার একটি অংশ। কিন্তু দ্বিতীয়টির উচ্চারণ সম্পূর্ণ ভিন্ন যার অর্থ আল্লাহর দিকে ইলা মানে আরবীতে দিকে যেমন ইলা গাবাতিন যার অর্থ বাগানের দিকে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File