ইসলামে রাজনীতি, রাস্ট্র ব্যাবস্থা এবং বাংলাদেশে এর যৌক্তিকতা

লিখেছেন লিখেছেন এলিট ০৮ মে, ২০১৪, ১০:১৯:০১ সকাল



ইসলামে রাজনীতি আছে কি নেই এবং থাকলে সেটা কেমন, এ সম্পর্কে আমাদের সবারই কম বেশী ধারনা আছে। ইসলামে রাজনীতি রয়েছে এটা বেশীর ভাগ লোকই স্বীকার করে। তাছাড়া দেশে ৩০টিরও বেশী ইসলামিক রাজনৈতিক দল রয়েছে। এর থাকে অনেকেই বুঝতে পারছে যে ইসলামে রাজনীতির রয়েছে। ওদিকে আমাদের সবচেয়ে বেশী ভুল ধারনা হল ইসলামিক রাস্ট্র ব্যাবস্থা নিয়ে। অপপ্রচারের কারনে, ইসলামিক রাস্ট্র ব্যাবস্থা বলতে আমরা বুঝি, যে ব্যাবস্থায় নারীকে বোরখা বন্দী করে রাখা হয়, কম সম্পত্তি দেওয়া হয়। চুরি করলে হাত কেটে দেওয়া হয়। যেনা করলে প্রকাশ্যে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়, ইত্যাদি। হটাত শুনলে তো এগুলো বর্বরোচিত মনে হয়। তাই সাধারন মানুষ অনেকেই মুসলমান হয়েও, ভয়ে ইসলামিক ব্যাবস্থা সমর্থন করে না। আসুন দেখে নেই ইসলামের রাজনীতি, শাশন ব্যাবস্থা এবং এটা বাংলাদেশে কতটুকু কার্যকর।

ইসলামে রাজনীতি আছে কিনা সেটা বোঝার জন্য একটি বিষয় বোঝাই যথেস্ট। সেটা হল, ইসলাম অনুসরন ও প্রচারের জন্য সাহাবীরা মার খেয়েছেন। এমনকি রাসুল (সা) নিজেও মার খেয়েছেন। রাসুল (সাঃ) মক্কাবাসী এর কাছে নতুন ধর্ম ইসলাম প্রচার করলেন। যার মানার সে মানবে, যার ভালো লাগে না সে মানবে না। ব্যাপারটা তো এখানেই মিটে যায়। তা না করে, যে ইসলাম গ্রহন করেছে তাকে মক্কার কাফেরেরা কেন শারীরিক নির্যাতন করেছে? ইসলাম গ্রহনের অপরাধে সেই সময় অনেককে জীবনও দিতে হয়েছে। মানুষ ইসলাম গ্রহন করলে কাফেরদের কি সমস্যা? শুধু রাসুল (সা) ও তার অনুসারী নয়, তার আগেও, আল্লাহর ধর্ম প্রচার করা সব নবী ও তার আনুসারীরা এমন নির্যাতন সহ্য করেছে। অবিশ্বাসীরা যুগে যুগে এই নির্যাতন কেন করেছে?

মক্কাবাসীদের এক ধরনের শাশন ব্যাবস্থা প্রচলিত ছিল। সেই ব্যাবস্থায় অবশ্যই কিছু নিয়ম নীতি ছিল। এই শাশন ব্যাবস্থায় কাফের নেতারা ছিল ক্ষমতাশীন। তারা ছিল রাস্ট্রনেতা। রাসুল (সা) হটাত করে নতুন এক জীবন ব্যাবস্থা (ইসলাম) নিয়ে হাজির হলেন। এই ব্যাবস্থার আওতায় এক এক জন করে সবাই যদি চলে আসে তাহলে পুরো দেশটা থেকে প্রচলিত রীতি নীতি ও শাশন ব্যাবস্থা বিলুপ্ত হবে। সেই সাথে প্রচলিত রাস্ট্রনেতা ক্ষমতা হারাবে । হ্যা, এই ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্যই কাফের এর দল মুসলিমদের উপরে অত্যাচার করেছে, যাতে মুসলিম এর সংখা কমে। আল্লাহর রহমতে এসব অত্যাচারে কাজ হয়নি। ইসলাম নিঃশেষ করার জন্য ৩ গুন বেশী সৈন্য নিয়েও প্রথম যুদ্ধে (বদর) কাফের বাহীনি পরাজিত হয়। এর পরে এক একটি যুদ্ধ হয় আর মুসলমানেরা আরো শক্তিশালী হয়। শেষ পর্যন্ত মক্কা বিজয় হয়, ইসলাম প্রতিস্টা হয়। ক্ষমতাশীন নেতারা ক্ষমতা হারায়। রাসুল (সা) হন নতুন রাস্ট্রনেতা। এভাবে ক্ষমতা হারাতে চায়নি কাফেরেরা। এ কারনেই তারা প্রথমে অত্যাচার করে ইসলামকে দমিয়ে রাখতে চেয়েছিল।

ইসলাম হল পরিপুর্ন জীবন ব্যাবস্থা। যেটা শুধু ব্যাক্তিগত জীবনেই সীমাবদ্ধ নয়। এটা একটা সমাজ ব্যাবস্থা, রাস্ট্র ব্যাবস্থা। ইসলাম কার্যকর হলে তখন এমনিতেই আগের শাশন ব্যাবস্থা ও শাশক অকার্যকর হয়ে পড়ে, ক্ষমতা হারায়। এ কারনেই শাশক গোস্টি সব সময় ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ইসলাম এর বিরোধীতার করে। বর্তমানেও তাই হয়। শাশক গোস্টি নিজের ক্ষমতা ধরে রাখতে ইসলাম পন্থীদের চাপের মধ্যে রাখে। ইসলামকে নিঃশেষ করে ফেলার চেস্টা করে। আমরা মুখে যতই আদর্শের কথা বলি না কেন ক্ষমতা দখলের লডাই এর নাম “রাজনীতি”। এই লড়াইয়ে মুসলমানেরা না থাকলে তো তারা নিজেরা নিঃশেষ হয়ে যাবে। মুসলমানদের রাজনীতিতে থাকতে হবে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য।

ভুল বোঝার আগেই একটি ব্যাপার স্পস্ট করতে চাই। সেটা হল। ইসলাম প্রতিস্টা মানে গদি দখল নয়। ইসলাম প্রতিস্টা হল সবাইকে মুসলমান বানানো। রাসুল (স) সবাইকে মুসলমান বানানোর মিশনে নেমেছিলেন। কিন্তু এতে ক্ষমতাশীন নেতাদের বাড়া ভাতে ছাই পড়ে যায়। সেসব ক্ষমতাশীনদের কাছে থেকে ইসলামকে রক্ষা করার জন্য গদী দখল ছাড়া আর কোন উপায় ছিল না। আমাদেরকেও প্রথমে সবাইকে মুসলমান বানাতে হবে, নিজে মুসলমান হতে হবে, ইসলামের নিয়ম কানুন মানতে হবে, ইসলামের পথে চলতে হবে। এই পথ চলতে চলতেই এক সময় গদি দখল হয়ে যাবে। কিন্তু আমার যদি প্রথম উদ্দেশ্যই থাকে গদি দখল করার - তাহলে সেটা সঠিক ইসলামিক পদ্ধতি নয়।

এ তো গেল ইসলামে রাজনীতির কথা। এখন আসি ইসলামিক রাস্ট্র ব্যাবস্থার কথা। ইসলামিক রাস্ট্রে নাকি বর্বর শাশন ব্যাবস্থা। হাত পা কেটে দেওয়া হয়, প্রকাশ্যে শিরোচ্ছেদ করা হয়, ইত্যাদি। হ্যা, এই ধরনের পদ্ধতি ইসলাম আমাদেরকে দিয়েছে। কিন্তু এসব কোন ধরনের রাস্ত্রের জন্য দিয়েছে সেটা কেউ বলে না। এই পদ্ধতি সেই রাস্ট্রের জন্য যেখানে রাস্ট্রনেতা নিজে গমের বস্তা মাথায় নিয়ে অভুক্তের বাড়ি দিয়ে আসেন। রাস্ট্রনেতা টুপী সেলাই করে সংসার চালান। যে দেশের রাস্ট্রনেতা সরকারী মালিকানার একটি ফল নিজের শিশু পুত্রের মুখ থেকে কেড়ে নেন। রাস্ট্রনেতার মাত্র একটি জামা থাকে। ধনী ব্যাক্তিরা বস্তার ভেতরে জাকাতের টাকা ভরে হন্যে হয়ে পথে পথে জাকাত দেবার লোক খুজে বেড়ায়। রাস্ট্রনেতার গায়ে নতুন জামা দেখে , সেই জামার টাকা সে কোথায় পেয়েছে সেই কৈফিয়ত একজন সাধারন মানুষ জানতে চায়। রাস্ট্রনেতা নিজে বিচারক এর দরবারে হাজির হয়ে সামান্য এক জোব্বা (কোট বা শেরওয়ানী) এর মামলায় হেরে যায়। রাস্ট্রনেতা চাকরকে উঠের পিঠে উঠিয়ে নিজে সেই উঠের দড়ি ধরে টেনে নিয়ে যায়।

হ্যা, এমন দেশে ওই রকমের বর্বর শাস্তির ব্যাবস্থা রয়েছে। আপনি নিজেই চিন্তা করে দেখুন উপরে বর্নীত স্বপ্নের মতন দেশে কেউ যদি ডাকাতি, খুন ইত্যাদি অপরাধ করে তবে তো তার শাস্তি অমনই হবে। আমাদের দেশে ইসলামিক আইন চালু হলেও কিন্তু চুরি করলে হাত কেটে দেওয়া চালু করা যাবে না, আপাতত। আগে এটা নিশ্চিত করতে হবে যে সবাই খেয়ে পরে বেচে আছে। চুরি ডাকাতি করতে হয় না। এর পরে না হয় কঠোর শাস্তির ব্যাবস্থা।

প্রসঙ্গত কয়েক বছর আগের একটি ঘটনা মনে পড়ে যায়। আশুলিয়াতে ডাকাত সন্দেহে গনপিটুনীতে ৬ জন ছাত্র হত্যা করা হয়েছিল। এই হত্যার জন্য কারো সাজা হয়েছে এমন শুনিনি। ডাকাতকে পুলিশে ধরিয়ে দিলে ঘুষ দিয়ে তারা আবার বের হয়ে যায়। মানুষ আইনের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। এজন্য কিন্তু গনপিটুনীতে নিহতের কোন বিচার হয় না। ইউরোপ আমেরিকায় যেতে হবে না। দক্ষিন ভারতে, ব্যাঙ্গালোর, মাদ্রাজ ইত্যাদি এলাকাতে এমন ৬ জন হত্যা হলে ওই এলাকার সবারই কয়েক বছরের জেল হোত। মুল হত্যাকারীর হয়ত জাবত জীবন কারাদন্ড হোত। ভারতের নামকরা ফিল্ম তারকারা অস্ত্র মামলা, মদ্যপান করে বেপরোয়া গাড়ী চালানো এমনকি বেয়াইনী ভাবে হরিন শিকার করে জেল এড়াতে পারছে না। যেখানে আইনের শাশন রয়েছে সেখানে গনপিটিনীতে মানুষ মানুষকে হত্যা করে না।

এবার আসি বাংলাদেশে ইসলামিক রাস্ট্রের যৈক্তিকতা। প্রশ্ন - ইসলামিক রাস্ট্র কাদের জন্য? উত্তর - মুসলমানদের জন্য। যদি বলি থাইল্যান্ড, বার্মা, ফিলিপাইন, কোরিয়া এমনকি ভারতে কি ইসলামিক শাশন যৌক্তিক? উত্তর হবে, না। ওসব দেশে অমুসলিম জনবসতি বেশী। তাহলে বাংলাদেশে কেন ইসলামিক শাশন দরকার? কারন, এদেশে ৯০% মুসলমান । আসুন এদেশের মুসলমান কয়জন সেটা দেখে নেই।

অর্ধেক এর বেশী মুসলিমান নামাজ পড়ে না। বিরাট একটা অংশ আছে পীর মাজার ইত্যাদি শিরকে নিমজ্জিত। আরো বড় অংশ আছে তাবিজ ও পাথরে ভাগ্য পরিবর্তন করার ধান্দায়। আর সুধ, ঘুষ, দুর্নীতি, চুরি, ডাকাতি, হত্যা ইত্যাদির কথা নাই বা বললাম। ভালো করে আপনার আশে পাশে দেখুন। বাংলাদেশে মুসলমানের খাতায় নাম আছে এমন লোক সর্বোচ্চ ১০% হবে। আমাদের শুধু নামটি ছাড়া আর কিছুই ইসলামিক নয়। এমন একটি দেশে ইসলামিক শাশন ব্যাবস্থা চালু করা আর থাইল্যান্ডে ইসলামিক শাশন চালু করা একই কথা।

ইসলামে রাজনীতি আছে। সেটা ক্ষমতা দখলের রাজনীতি নয়। বরং ইসলাম টিকিয়ে রাখার ও প্রতিস্টা করার রাজনীতি। ইসলামিক শাশনে অনেক নিস্টুর শাস্তি রয়েছে কিন্তু তার বিপরীতে সুন্দর শাশন ব্যাবস্থা রয়েছে যাতে কেউ অপরাধ না করে। ইসলামিক শাশন বাবস্থা সেই দেশের জন্য যেখানে বেশীরভাগ লোক মুসলমান। আমরা শুধুই নামে মুসলমান। আমাদের প্রথমে দরকার মুসলমান হওয়া, সবাইকে মুসলমান বানানো। এর পরে এই মুসলমানেরা এমনিতেই আল্লাহর আইন প্রতিস্টা করতে চাইবে। সবাই মুসলমান হলে তখন ইসলামিক রাজনীতিকে কেউ ধর্ম ব্যাবসা বলে অপবাদ দিবে না। সবাই মুসলিম হলে দেশে এমনিতেই ইসলাম প্রতিস্টা হয়ে যাবে। গদি এমনিতেই দখল হয়ে যাবে। প্রথমে প্রত্যাককে নিজে মুসলমান হতে হবে এর পরে দেশ এমনিতেই ইসলামিক হবে।

বিষয়: বিবিধ

২০০৫ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

218911
০৮ মে ২০১৪ সকাল ১০:৩৬
আহ জীবন লিখেছেন : লেখা ভালো হয়েছে। ধন্যবাদ।

আরও বিস্তারিত লেখা প্রয়োজন।
মুসলিম অমুসলিম সবারই চিন্তার গভীরে প্রথিত করা যায় এমন ভাবে লেখা দরকার।
আমাদের কল্পনা শক্তিতেও ঘুন ধরেছে।
০৯ মে ২০১৪ সকাল ০৯:০০
167132
এলিট লিখেছেন : আপনাকে ধন্যবাদ - হ্যা, ইচ্ছে ছিল আরো বড় লেখার। কিন্তু পাঠকের ধৈর্যের ব্যাপারটা চিন্তা করে পিছিয়ে গিয়েছি। আরো ভালো লেখার চেস্টা করব। দোয়া করবেন।
০৯ মে ২০১৪ সকাল ০৯:১৮
167140
আহ জীবন লিখেছেন : যত বড়ই হোক। দরকার হলে পর্ব ভিত্তিক। কিন্তু কেউই যাতে বুঝতে কম না পারে।
218915
০৮ মে ২০১৪ সকাল ১০:৪৮
গেরিলা লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
০৯ মে ২০১৪ সকাল ০৯:০১
167134
এলিট লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ
218923
০৮ মে ২০১৪ সকাল ১১:৩৫
দ্য স্লেভ লিখেছেন :
মক্কাবাসীদের এক ধরনের শাশন ব্যাবস্থা প্রচলিত ছিল। সেই ব্যাবস্থায় অবশ্যই কিছু নিয়ম নীতি ছিল। এই শাশন ব্যাবস্থায় কাফের নেতারা ছিল ক্ষমতাশীন। তারা ছিল রাস্ট্রনেতা। রাসুল (সা) হটাত করে নতুন এক জীবন ব্যাবস্থা (ইসলাম) নিয়ে হাজির হলেন। এই ব্যাবস্থার আওতায় এক এক জন করে সবাই যদি চলে আসে তাহলে পুরো দেশটা থেকে প্রচলিত রীতি নীতি ও শাশন ব্যাবস্থা বিলুপ্ত হবে। সেই সাথে প্রচলিত রাস্ট্রনেতা ক্ষমতা হারাবে ।
০৯ মে ২০১৪ সকাল ০৯:০২
167135
এলিট লিখেছেন : আপনাকে ধন্যবাদ - গুরুত্বপুর্ন অংশটি তুলে ধরেছেন
218947
০৮ মে ২০১৪ দুপুর ১২:৪৭
সন্ধাতারা লিখেছেন : অনেক অনেক ভালো লাগলো ধন্যবাদ
০৯ মে ২০১৪ সকাল ০৯:০৩
167136
এলিট লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ
218950
০৮ মে ২০১৪ দুপুর ০১:০১
হতভাগা লিখেছেন : '' প্রথমে প্রত্যাককে নিজে মুসলমান হতে হবে এর পরে দেশ এমনিতেই ইসলামিক হবে।''




আর বাংলাদেশের বাস্তবতা এটাই ।

শার্টের ( ইসলামের ইতিহাসের ছাত্রদের) এই অবস্থা, তাহলে মুখের ( বাংলাদেশী মুসলমান) টা বোঝ !
০৯ মে ২০১৪ সকাল ০৯:০৫
167137
এলিট লিখেছেন : আপনাকে ধন্যবাদ - আমাদের গোড়াতেই গলদ রয়েছে।
218994
০৮ মে ২০১৪ দুপুর ০২:৫৮
েনেসাঁ লিখেছেন : মাশাল্লাহ্। লেখাটি ভাল লাগলো। মহান আল্লাহ্ আমাদের দ্বীনের সঠিক বুঝ করুন। আমীন।
০৯ মে ২০১৪ সকাল ০৯:০৫
167138
এলিট লিখেছেন : আপনাকে ধন্যবাদ - আমীন।
219057
০৮ মে ২০১৪ বিকাল ০৪:৫২
নীল জোছনা লিখেছেন : সুন্দর হয়েছে অনেক ধন্যবাদ
০৯ মে ২০১৪ সকাল ০৯:০৬
167139
এলিট লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File