এ পরাজয় কার?
লিখেছেন লিখেছেন এলিট ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ০৮:১৬:৪৭ সকাল
আমি গত দুই সপ্তাহ এই কথা বলতে বলতে ক্লান্ত যে, শাহবাগের আন্দোলন সাধারন জনগনের আন্দোলন নয়। এই আন্দোলন আওয়ামী লীগ ও তার মিত্র দলের আন্দোলন। আমার এই কথা কেউ বিশ্বাস তো করেই নি বরং আমাকে অনেকে রাজাকার বলে গালি দিয়েছে। সবার মুখে একই কথা, এই আন্দোলন সাধারন মানুষের দাবী। ঠিক আছে, মেনে নিলাম। সাধারন মানুষ শাহবাগে আন্দোলন করছে জামাত-শিবির রাজাকারের বিরুদ্ধে। ওদিকে আবার রাজাকারেরা তো ইসলামকে গালি দেওয়া সোনার ছেলেদের বিরুদ্ধে এক বিশাল বাহিনী জোগাড় করে রুখে দাড়িয়েছে। তারা শাহবাগ আন্দোলন এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করেছে। তো বিষয়টা কি দাড়ালো? সাধারন মানূষের আন্দোলনের বিরুদ্ধে জামাত-শিবির। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। তারা তো রাজাকার, সাধারন মানুষের বিরুদ্ধে তারা তো থাকবেই।
এবার আসছে আসল চমক। শাহবাগের বিরুদ্ধে জামাতের যুদ্ধ ঘোষনা ছিল ২২ ফেব্রুয়ারী। শাহবাগের মানুষের কাছে এটা ছিল জামাতকে হারিয়ে দেওয়ার সুবর্ন এক সুযোগ। এটা নাকি দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ। এই দুই নম্বর মুক্তিযোদ্ধারা তো পারত ৭১ এর মতন আবার স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তিকে পরাজিত করতে। কিন্তু তা তারা করে নি। তারা আগের রাতে তাদের শাহবাগে অবস্থানের সমাপ্তি ঘোষনা করেছে। জানি,শাহবাগের আন্দোলন তো কেয়ামত পর্যন্ত চলবে না। কিন্তু তারা ঠিক যুদ্ধের আগের রাতেই আন্দোলন বন্ধ করেছে। এক কথায় তারা পালিয়েছে। তাহলে দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া সাধারন মানুষ ও দুই নম্বর মুক্তিযোদ্ধারা জামাত-শিবির রাজাকারের ভয়ে পালালো !
এ পরাজয় কার?
আসলে শাহবাগের আন্দোলন সাধারন মানুষের আন্দোলন নয়। এটা ছিল এক রাজনৈতিক সমাবেশ আর অবস্থা বেগতিক দেখে তারা নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছে।
আরো খোলামেলা ভাবে বলতে গেলে, আয়ামী লীগ আন্দোলন শুরু করেছে সমাজতান্ত্রিক দলকে দিয়ে। তাদেরকে লোভ দেখিয়েছে যে, যদি তারা জামাত উচ্ছেদে সহায়তা করে তবে তাদেরকে জামাতের স্থানে বসাবে । আয়ামী লীগ অনেক চেষ্টা করেছে এই আন্দোলনকে দল নিরপেক্ষ দেখানোর জন্য। শেষ পর্যন্ত নিজেরা মাঠে না নেমে আর পারে নি। তা না হলে সমাজতান্ত্রিক দলের কাছে আন্দোলন হাত ছড়া হয়ে যেত। মাঠ দখলের জন্য তারা তথাকথিত অগ্নিকন্যা লাকিকে আহত করেছে। ধর্ম নিরপেক্ষ বিষয়টি প্রতিস্টিত করার জন্য নাস্তিকদের বাহবা দিয়েছে। এছাড়া আরো অনেক চেষ্টা করেছে। উদ্দেশ্য জামাত-শিবির ধংশ করা। কিন্তু কাজ হয়নি। এখন ২০১৩ সাল। ৪০ বছর আগের সেই অবস্থা আর নেই। এখন মিডিয়া ও প্রযুক্তি সব দলের আছে। ভুল বোঝানো এত সহজ নয়।
সব চেষ্টায় ব্যার্থ হয়ে এখন শুরু করেছে আইনের মাধ্যমে জামাত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করার চেষ্টা। তারা বুঝতে পারছে না, এভাবে চেষ্টার পরে চেষ্টা করে তারা জামাতকে দুর্বল নয় বরং আরো শক্তিশালী করছে।
বিষয়: বিবিধ
১১৬৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন