ইসলামে গনতন্ত্র আছে কিনা সেটা জানার জন্য গনতন্ত্র চেনাই যথেস্ট

লিখেছেন লিখেছেন এলিট ২৩ এপ্রিল, ২০১৪, ০৫:৩২:৩২ সকাল



ইদানিং একটা নতুন প্রশ্ন শোনা যাচ্ছে। প্রশ্নটা এমন -

আমি শুনেছি ইসলামে নাকি গনতন্ত্র হারাম। আবার এও শুনেছি ইসলামে নাকি গনতন্ত্র আছে। এর কোনটা সত্যি?


ইসলাম নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন আগে পরে শোনা গেছে। এসব প্রশ্নের বেশীর ভাগই শত বছর আগের। কিন্তু গনতন্ত্র নিয়ে এই প্রশ্নটি একেবারে নতুন। ৩০ বছর আগেও এই প্রশ্নটি কারো মাথায় আসেনি। এখন মাথায় আসার কারন হল ইন্টারনেটের যুগে বই পত্র, তথ্য ইত্যাদি অনেক সহজলভ্য হয়ে গেছে। সবাই পড়তে ও লিখতে শিখে গেছে। কেউ বলছে গনতন্ত্র হারাম। ইসলামে গনতন্ত্র নেই। কেউ বলছে যে, খোদ ইসলামিক রাস্ট্রেই তো গনতন্ত্র চলছে। ইসলামিক রাস্ট্রে মজলিসে শুরা থাকে যারা এক ধরনের ভোট এর মাধ্যমে সরকার প্রধান (খালিফা) নির্বাচন করেন। এটাই তো গনতন্ত্র। তাহলে ইসলামে গনতন্ত্র হারাম হলো কিভাবে?

মুল কথা হল। ইসলামিক রাস্ট্রেই সীমিত হলেও, ভোটের ব্যাবস্থা আছে। এমনকি ইসলামের নিয়ম কানুনের বেলাতেও কোরআন, হাদিসে সুস্পস্ট কোন সমাধান খুজে না পাওয়া গেলে ইসলামিক পন্ডিতদের সংখাগরিস্ট মতামত (ভোট) এর ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এটাকে ইজমা-কিয়াস বলে। তারাবীর নামাজ যে ২০ রাকায়াত পড়তে হবে সেটা ওই ইজমা এর মাধ্যমে এসেছে। এখানেও তো গনতন্ত্র হয়ে যাচ্ছে। তাহলে গনতন্ত্র হারাম হল কিভাবে?

একটা উদাহরন মনে পড়ছে। এক বন্ধু আর এক বন্ধুকে বলছে, জানিস, রবীন্দ্রনাথ ফুটবল খেলোয়ার ছিলেন। অপর বন্ধু তো কিছুইতেই মানবে না। তখন প্রথম বন্ধুটি বলল, শোন রবীন্দ্রনাথের গান “বল দাও, মোরে বল দাও”। রবীন্দ্রনাথ ওই গানে কিন্তু ফুটবল চাননি। তিনি বল (শক্তি) চেয়েছিলেন। কিন্তু ওই বোকা বন্ধুটি বিষয়টি বুঝতে পারল না। আমাদের অবস্থাও হয়ছে ওই বোকা বন্ধুর মতন। আমরা ইসলাম ও গনতন্ত্র এই দুটি বিষয়েই ভুল বুঝে বসে রয়েছি। ইসলাম না জানলেও গনতন্ত্র বলে মুখে ফেনা তোলা এই জাতির তো অন্তত গনতন্ত্র জানা উচিত। আমরা সেটাও জানিনা। এবার মুল বিষয়ে আসি।

ভোট দিয়ে সরকার প্রধান নির্বাচন করাটা গনতন্ত্র নয়। ভোট হল সরকার প্রধান নির্বাচন করার পদ্ধতি মাত্র। ভোট, গনতন্ত্র নয়। তাহলে গনতন্ত্র কাকে বলে? গনতন্ত্র হল এমন এক রাস্ট্র পদ্ধতি যেখানে রাস্ট্রের মালিক (সমান অংশিদার) দেশের জনগন। সহজ করে বলছি - গনতন্ত্র মানে হল দেশের মালিক দেশের সবাই। আমরা সবাই রাজা

একটি দেশে কোন তন্ত্র চলে তা নির্ভর করে ওই দেশের মালিক কে , তার উপরে। রাজতন্ত্র হল, দেশের মালিক রাজামশাই। পুরো দেশটিই তার সম্পত্তি। এজন্যই তার মৃত্যুর পরে তার ছেলে উত্তরাধিকার সুত্রে বাবার সম্পত্তি অর্থাত দেশের মালিক হয়। সেই হয় নতুন রাজা। ভোটের দরকার নেই। গনতন্ত্রে দেশের মালিক হলো জনগন। সবাই মিলে দেশ চালানো সম্ভব নয়। তাই ভোট দিয়ে নিজেদের মধ্য থেকে রাস্ট্র প্রধান নির্বাচন করে। ভোট হলো রাস্ট্র প্রধান নির্বাচন করার পদ্ধতি। দেশের মালিক সব সময়ই জনগন। ইসলামিক শাশন ব্যাবস্থায় দেশের মালিক আল্লাহ। আল্লাহ নিজে এসে তো দেশ শাশন করেন না। তাই একজনকে খালিফা (প্রতিনিধি) নির্বাচন করা হয়। সেই খালিফা হয় রাস্ট্রপ্রধান।

রাজতন্ত্র - রাজা দেশের মালিক - নিজেই রাস্ট্র প্রধান হয়।

গনতন্ত্র - জনগন দেশের মালিক - নির্বাচিত ব্যাক্তি রাস্ট্র প্রধান হয়।

ইসলামিক শাশন - আল্লাহ দেশের মালিক - মনোনিত ব্যাক্তি রাস্ট্র প্রধান হয়।

কোন পদ্ধতিতে রাস্ট্র প্রধান নির্বাচন বা মনোনয়ন হবে সেটা অনেক পরের কথা। প্রথম কথা হল দেশের মালিক কে। এই মালিকের উপরেই নির্ভর করে এটা কোন তন্ত্র। ইসলামিক রাস্ট্রে দেশের মালিক আল্লাহ, জনগন নয়। অর্থাৎ গনতন্ত্রের প্রথম বিষয়টিই ইসলাম অগ্রাহ্য করছে। গনতন্ত্র ও ইসলামিক তন্ত্র , এ দুটো সম্পুর্ন ভিন্ন দুই জিনিস। এর পরেও কেউ যদি বলে যে ইসলামে গনতন্ত্র আছে তার মানে সে ইসলাম তো চেনেই না, সেই সাথে গনতন্ত্রও চেনে না।

বিষয়: বিবিধ

১৫৯৫ বার পঠিত, ১৮ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

212079
২৩ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ০৬:৩০
সালাম আজাদী লিখেছেন : বৃটেনে কি তন্ত্র?
২৩ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:২০
160445
ঈগল লিখেছেন : বৃটেনে রাজা রানীর অস্তিত্ব আছে বলে গণতন্ত্র জায়েজ হয়ে গেল!! সহজ, কথা, যারা আল্লাহর আইনকে প্রতিস্থাপন (কোন বিশেষ কারণে বাস্তবায়ন করতে না পারা ভিন্ন কথা) করবে তারাই মুশরিক। গণতান্ত্রিক সিস্টেমে মানুষেরা আইন তৈরির ক্ষমতা নিজের হাতে নিয়েছে। এবং তারা আল্লাহর আইনের স্থলে নতুন নতুন আইনকে প্রতি স্থাপন করেছে।
212085
২৩ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ০৭:০২
এলিট লিখেছেন : ভালো প্রশ্ন করেছেন। ব্রিটেনে তো দেখা যায় দেশের মালিক রাজপরিবার। আবার ওখানে পার্লামেন্টও আছে। এটা রাজতন্ত্র নাকি গনতন্ত্র ?
আসলে ব্রিটেনে গনতন্ত্র শুরু হয় ১৭০৭ সাল থেকে। আমেরিকার জন্মের আগে থেকেই ব্রিটেনে গনতন্ত্র চলছে। ভারতবর্ষের মানুষকে চাবুক মেরে শাশন করলেও ওই সময়ে ব্রিটেনে গনতন্ত্র চালু ছিল। এখনো ব্রিটেনে শাশনে চলে এমন অনেক দেশ রয়েছে। অন্য দেশে গনতন্ত্র দিলে তো তারা আর শাশন করতে পারবে না। তাই ঐতিহ্য এর দোহাই দিয়ে রাজপরিবার টিকিয়ে রেখেছে অন্য দেশ শাশন করার জন্য । রাজপরিবারকে ওদেরকে দেশের মালিক বললেও আসলে তাদের কোন ক্ষমতাই নেই। ব্রিটেনে দেশের আসল মালিক জনগন। ওটা গনতান্ত্রিক দেশ। ওরা বিশ্ব শাশন করেছে তো তাই ওদের কায়দাটা একটু ব্যাতিক্রম হয়েছে।
২৩ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০৩:৫৯
160534
সালাম আজাদী লিখেছেন : তাহলে মিশ্রণ? নাকি ফেইক, আমরা তো দেখি আমাদের এখানের রাণীর যথেষ্ঠ শক্তি। জনগণ তাদের যা মেনে চলে, প্রধান মন্ত্রীকেও ঐ রকম সম্মান দেয়না।
212104
২৩ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ০৮:৩৮
হতভাগা লিখেছেন : জনগনই সকল ক্ষমতার উতস ( নাউজুবিল্লাহ):

এটা সোজা হিসেবে এবং এক কথায় - শির্‌ক

২৩ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:১৬
160442
ঈগল লিখেছেন : তাহলে গণতন্ত্র পরিত্যাগ করছেন না কেন?
২৩ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১১:৪৪
160473
হতভাগা লিখেছেন : ভোট দেব না যতক্ষন না সঠিক পরিবর্তন আসে
212109
২৩ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ০৮:৫১
আহ জীবন লিখেছেন : বাকি বিষয় গুলোর ব্যাখ্যা দিন দয়া করে।
উপকৃত হবো।
212110
২৩ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ০৮:৫১
খুঁজে পিরি স্বাধীনতা লিখেছেন : আমরা আল্লাহকে যে কোন নামে ডেকে থাকি।মুসলমানরা রব,প্রভু,খোদা,মালিক নামে ডাকি। হিন্দুরা তাদের সৃষ্টকর্তাকে ভগবান,দেবতা নামে ডাকে।খ্রিস্টানরা গড,যীশু নামে ডাকে। তবে একেকজনের ডাকার উদ্দেশ্য একেক রকম। গনতন্ত্র আব্রাহাম লিংকন তার নিজস্ব থিউরী থেকে আবিস্কার করেননি। এটা কুরআন থেকেই নিয়েছেন। রাসুল (সা) ও খিলাফাতে রাশেদার শাসনকাল পর্যালোচনা করেছেন। খিলাফাত শাসনব্যবস্হা ছিলো-একজন খলিফা থাকবে,মজলিশে সুরা থাকবে। মজলিশে সুরার সিদ্ধান্তে খলিফা নির্বাচিত হবেন। মজলিশে সুরার সিদ্ধান্তই সমস্ত জনগনের সিদ্ধান্ত হিসেবে গৃহীত হবে। আব্রাহাম লিংকন কি করেছেন? একজন রাষ্ট্রপতি থাকবে,নির্বাচন কমিশন থাকবে আর জনগন ভোট দিবে। শুধু নিজের একটা থিউরী ঢুকিয়ে দিয়েছেন-জনগন সকল ক্ষমতার উৎস। আর এর নাম দিয়েছেন ডেমোক্রেসী। আমরা ইসলামিস্টরা এটাকে হারাম বলি এবং এটা পুরোপুরি মানিনা। এক আল্লাহ ছাড়া আর কেউ ক্ষমতার উৎস হতে পারেনা। তাই ইসলামী কোন দলের সংবিধানে জনগন সকল ক্ষমতার উৎস কথাটি উল্লেখ নেই। প্রথমে আল্লাহকে বিভিন্ন নামে ডাকার কারনগুলো এই কারনে উল্লেখ করলাম যে,আপনি যদি আল্লাহ নাম বাদ দিয়ে অন্যদের দেয়া অসংখ্য নামে ডাকতে পারেন,তাহলে গনতন্ত্রের একটা অংশকে ফেলে দিয়ে আমরা কেনো এটাকে খিলাফত বলতে পারবোনা। বিশ্বের যত শ্রেষ্ঠ কিছু আবিস্কার হয়েছে,সবকিছু কুরআন ও রাসুল (সা) এর যুগ থেকেই গ্রহন করা হয়েছে।এবং কুরআন-হাদীস চুরি করে নতুন কিছু সৃষ্টি করার মাধ্যমে বিধর্মীরা বিশ্বের নেতৃত্ব দিচ্ছে। আর আমরা বসে বসে শুধু কুরআন-হাদীস চোখ বন্ধ করে পড়ে যাই। Day Dreaming Day Dreaming Day Dreaming Day Dreaming Day Dreaming Day Dreaming Day Dreaming Day Dreaming Day Dreaming এর থেকে কিছু জানার চেষ্টাও করিনা ও কোনকিছু শিখার চেষ্টা করিনা। তাই আজ মুসলিমরা বিশ্বে অসহায়ের মত মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। Give Up Give Up Day Dreaming Day Dreaming Day Dreaming Day Dreaming Day Dreaming
২৪ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:৪৩
160842
দ্য স্লেভ লিখেছেন : গণতন্ত্রের জন্ম আড়াই হাজার বছর পূর্বে। এটা সুন্নাহ অনুসরণ করে কাফিররা তৈরী করেনি। গণতন্ত্র যুগে যুগে মডিফাই করা হয়েছে। এর মূল বিষয়বস্তুর প্রত্যেকটির সাথে ইসলামের মৌলিক দ্বন্দ রয়েছে। আর তাদের তন্ত্র নেওয়ার প্রয়োজনটাই বা কি ? ইসলাম নিজেই সকল বিষয়ে স্বয়ংসম্পুর্ণ ফলে কারো বিধানের সাথে এর সমন্বয় সাধন করার প্রয়োহন পড়েনা।
212135
২৩ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:২১
ঈগল লিখেছেন : জাযাকাল্লাহ খয়রান।
212153
২৩ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১১:২৯
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : কিন্তু তাহলে সরকার পরিচালক নিযুক্ত হবেন কি করে?
পোপ নির্বাচনের যে পদ্ধতি আছে তাতে ভোট দেয়ার আগে কার্ডিনাল রা দির্ঘসময় প্রার্থনা করেন এবং দাবি করা হয় যে তারা হলি গাইডেন্স এর ভিত্তিতে পোপ নির্বাচন করেন্। ইসলামে কিন্তু খলিফারা এভাবে কোন হলি গাইডেন্স এর মাধ্যমে নির্বাচিত হননি। নির্বাচন ইসলামে হারাম কিভাবে তা বুঝতে পারছিনা। গনতন্ত্র ইসলামি পদ্ধতি নয় কিন্তু ইসলামে কিভাবে নেতৃত্ব নির্বাচিত হবে।
২৪ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:৪৭
160843
দ্য স্লেভ লিখেছেন : এই লেখাটিতে তিনি বলেননি যে নির্বাচন হারাম বা ,তা ইসলামে নেই। বলা হয়েছে নির্বাচন বা ভোট মানেই গণতন্ত্র নয়। নেতা নির্বাচনে ভোট হতে পারে। গণতন্ত্রের প্রত্যেকটি মৌলিক বিষয়ের ক্ষেত্রে ইসলামের সাথে চরম সংঘর্ষ রয়েছে। আর গণতন্ত্রকে ইসলামের আলোকে মডিফাই করার প্রয়োজন পড়েনা,যেহেতু ইসলাম নিজেই তার পদ্ধতির,বিধানের ক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পুর্ণ
212250
২৩ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০৩:৪৫
সূর্যের পাশে হারিকেন লিখেছেন : ধন্যবাদ।
212326
২৩ এপ্রিল ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৪৫
সঠিক ইসলাম লিখেছেন : আদর্শ হিসেবে গনতন্ত্র, আদর্শ হিসেবে ইসলামের সাথে যায় না; কিন্তু গনতন্ত্রে থাকা কোন কোন কাজ ইসলামের সাথে মিলতে পারে যা ব্যবহারে কোন দোষ নেই, কারন সেটি ইসলামেরও কাজ।

ব্যাখ্যাঃ একজন কাফেরও ভাত খায়, একজন মুমিন ব্যক্তিও ভাত খায়, তাতে তো সবাই মুসলিম বা সবাই কাফের হয়ে যায়না। ইসলামের সাথে গনতন্ত্রের সাদৃশ্য থাকলেই তা গনতান্ত্রিক হয়ে যায় না। আবার গনতন্ত্রের সাথে ইসলামের টুকটাক মিল খুজে পেলেই তা ইসলামীক হয়ে যায়না। এদুটোর মধ্যে মৌলিক বিষয়েই তো বিস্তর ফারাক! এই হল প্রথম কথা।

গনতন্ত্রের দুটি রূপ। একটি হচ্ছে পন্থা এবং অন্যটি হচ্ছে আদর্শ। গনতন্ত্রকে পন্থা হিসেবে গ্রহন করতে কোনই সমস্যা নেই। কিন্তু আদর্শিক ভাবে গনতন্ত্র ইসলামের সাথে সাংঘার্ষিক। ইসলাম শাস্বত এবং এর মৌলিক বিষয়গুলি অপরিবর্তনীয় কিন্তু গনতন্ত্রে মৌলিক বিষয়ও অধিকাংশের মতের ভিত্তিতে পরিবর্তনীয়। এখন আদর্শ আর পন্থা এর মধ্যে কিভাবে পার্থক্য করবেন। একটা ছোট্ট উদাহরণ দেই..
জাহেলি যুগে মক্কায় একটা পন্থা প্রচলিত ছিল। কেউ যদি কোন ঘোষনা জনসম্মুখে দিতে চাইত তখন বাজার বা হাটে চলে যেত এবং চিৎকার করে লোকদের ডাকত আর পরনের কাপড় খুলে মাথার উপর নাড়তে থাকত। মুহাম্মদ সা. এরকম হাটে যেয়ে লোকদের ইসলামের দাওয়াত দেয়ার জন্য ডাকতে লাগলেন এবং মাথার উপরে কাপড় নাড়তে লাগলেন। কিন্তু তিনি পরনের কাপড় নয় বরং অন্য একটি কাপড় নাড়তে লাগলেন। এখানেই আদর্শ এবং পন্থার মৌলিক পার্থক্য বিদ্যমান।

যেকোন জীবন ব্যবস্থার সাথে ইসলামের সাদৃশ্য খুজে পাওয়া অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু তাই বলে ইসলাম গনতান্ত্রিক বা অন্য কোন কিছু হয়ে যায় না। বরং খুবই সুস্পষ্ট পার্থক্য বিদ্যমান আছে। ইসলামের সাথে যা সাংঘার্ষিক নয় তা মেনে নিতে ইসলাম বাধা দেয় না। গনতান্ত্রিক পদ্ধতি অবলম্বন করে কোন সিদ্ধান্তে উপনীত হলে তা যদি ইসলামের সাথে সাংঘার্ষিক হয় তবে তা বাতিল বলে বিবেচিত হবে।

আল্লাহর রসূলের হাদীস অনুযায়ী ৩ জন ব্যক্তি একজায়গায় থাকলেও তাদের মধ্যে থেকে একজনকে আমীর বানাতে হবে। এখন আপনি কিভাবে আমীর বানাবেন? যদি গনতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচন করেন তবে সমস্যা কোথায়? এটা যে সবসময় ভোটাভুটি হতে হবে এরকম কোন কথা নেই বরং একজন প্রস্তাব করলে অন্যরা সবাই যদি মত দেয় তবে তিনি দায়িত্বশীল বা আমীর হিসেবে বিবেচিত হবেন।

ইসলামী শক্তি রাস্ট্রীয় পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পূর্বশর্ত দুইটা মৌলিক কাজ! একটা হচ্ছে ইসলামের পক্ষে জনসমর্থন এবং যোগ্য নেতৃত্ব ও কর্মী বাহিনী গঠন। যে পদ্ধতিতেই আপনি ইসলাম প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেন না কেন এদুটি কাজ ব্যতিরেকে পারবেন না। এবং এটি আল্লাহর রাসূলের সুন্নাত। বর্তমান দুনিয়ায় নেতৃত্বের পরিবর্তন ঘটে গনতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচন পদ্ধতির মাধ্যমে। কিন্তু শুধু জনসমর্থন কোন কাজে দিবে না। কেননা বাতিল শক্তি নির্বাচন পদ্ধতির মাধ্যমে ইসলামী শক্তি ক্ষমতায় আসতে চাইলে যেনতেন উপায়ে ঠেকিয়ে দিবে। নির্বাচন পদ্ধতি একটা কৌশল হতে পারে কিন্তু এটি হয়তো শেষ কথা নয়। বরং উল্লেখিত দুটি মৌলিক কাজ সমান্তরালে আঞ্জাম দিতে হবে। এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী শুরার পরামর্শে কাজ করতে হবে। জয়-পরাজয়ের ব্যাপারে আল্লাহর উপর ভরসা করতে হবে।
২৪ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:৫০
160844
দ্য স্লেভ লিখেছেন : যেকোন জীবন ব্যবস্থার সাথে ইসলামের সাদৃশ্য খুজে পাওয়া অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু তাই বলে ইসলাম গনতান্ত্রিক বা অন্য কোন কিছু হয়ে যায় না। বরং খুবই সুস্পষ্ট পার্থক্য বিদ্যমান আছে।....সহমত
১০
212531
২৪ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:৫১
দ্য স্লেভ লিখেছেন : আপনার লেখা ভাল লেগেছে। ধন্যবাদ। কয়েকটা কমেন্টের উত্তর দিলাম,তার জন্যে দু:খিত
২৫ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ০৬:৫৫
161194
এলিট লিখেছেন : আপনি অত্যান্ত মনোযোগ দিয়ে আমার লেখা পড়েছেন এবং সবচেয়ে ভালো বুঝেছেন। যার ফলে অন্যের মন্তব্যের জবাবও দিতে পেরেছেন। আপনি দুঃখ প্রকাশ করছেন কেন? বরং, এই কস্টটুকু করার জন্য, আমি আপনার কাছে কৃতজ্ঞ। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File