মদিনার সনদ অনুযায়ী ঢাকা কিভাবে চলে ?
লিখেছেন লিখেছেন এলিট ২৩ মার্চ, ২০১৪, ০৯:১৭:৫২ সকাল
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ৩৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘মদিনা সনদ ও মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর বিদায় হজের ভাষণের নির্দেশনা অনুসারে দেশ পরিচালনা করা হবে। এই সরকার পবিত্র কোরআন এবং সুন্নাহবিরোধী কোনো আইন পাস করবে না।’
দেশ চলবে মদীনা সনদ অনুযায়ী। এই কথাটা একবার বললে হয়ত মনে হোত যে সেটা একটি কথার কথা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী একাধিকবার বিভিন্ন সমাবেশে এই কথাটা বলেছেন। আমাদের ধর্মভীরু সাধারন জনতা এই “মদিনা সনদ” খাওয়ার জিনিস নাকি মাথায় দেওয়ার জিনিস তা জানে না। কিন্তু কথাটার মধ্যে নবীজির দেশের “মদীনা” রয়েছে। এটা তাহলে ইসলামিক কোন জিনিস হবে বলে বুঝে নেয়। প্রধানমন্ত্রীর মুখে এই ধরনের কথা শুনে মানুষ ভরসা পায়। বাংলাদেশে ইসলামকে আরো সুরক্ষিত মনে করে। কিন্তু মদীনার সনদ দিয়ে ঢাকা কিংবা বাংলাদেশ কিভাবে চলবে এটা কেউ ভেবে দেখে না। যারা জিনিসটা বোঝে তারা বিভিন্ন কায়দায় বা ফায়দায় মুখে কুলুপ এটা বসে রয়েছে।
মদীনা সনদ কি সেটা বলার আগে সংক্ষপে কায়দা ও ফায়দার ব্যাপারটা বলে নিচ্ছি। একদিকে বলা হচ্ছে কোরআন সুন্নাহ বিরোধী কোন আইন পাশ হবে না অন্যদিকে “বিসমিল্লাহ” শব্দটি ঝেটিয়ে বিদায় করেছে। এটা দেখে ভয়ে বা সয়ে সংবাদপত্র ও মিডিয়া চুপ। এটা হল কায়দায় পড়ে মুখে কুলুপ আটা।
সংবিধানে “বিসমিল্লাহ” সংযোগ করার জন্য আওয়ামী বুদ্ধিজীবি, নেতা-কর্মী সহ সাধারন সমর্থকেরা জিয়াউর রহমানকে দোষারোপ করে। বিসমিল্লাহ শব্দটি সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদি। বর্তমানে ওই শব্দটি বাদ দিয়ে দেশকে ধর্ম নিরপেক্ষ বানানো হয়েছে। জামায়াত দলটির নিবন্ধন বাতিল হয়েছে হাইকোর্ট থেকে। এর সবচেয়ে বড় কারন জামায়াতের গঠনতন্ত্রে “আল্লাহ সর্বশক্তিমান” এ কথা বলা আছে। এটা আমাদের দেশের সংবিধান বিরোধী। আমাদের সংবিধানে আছে “জনগন সর্বময় ক্ষমতার উতস”। এভাবে দেশ সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত করা হচ্ছে। ধর্ম নিরপেক্ষ করা হচ্ছে। “বিসমিল্লাহ” শব্দটি ও “আল্লাহ সর্বশক্তিমান” বাক্যটি যেখানে সাম্প্রদায়িক ও সংবিধান বিরোধী হয়ে যায়। সেখানে পুরো “মদীনা সনদ” কতবড় সাম্প্রদায়ীক আর কতবড় সংবিধান বিরোধী হয় সেটা সহজেই অনুমেয়। অথচ এখানে আওয়ামী লীগের বুদ্ধিজীবি, নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা চুপ। এটা হল ফায়দার কারনে মুখে কুলুপ।
মদিনা সনদ কি?
- মুহাম্মাদ (সাঃ), কুরাইশ ও ইয়াসরিবের মু’মিন মুসলমানগণ এবং পরবর্তীকালে যারা তাদের অনুসারী হয়ে তাদের সাথে শরীক হবে ও একসাথে জিহাদে অংশগ্রহণ করবে, তাদের পক্ষ থেকে এটি একটি ঘোষণাপত্র। মদিনা সনদ বলে পরিচিত এই ঘোষনাপত্রে ৬৩ টি বিষয় লিপিবদ্ধ ছিল। পুরো মদিনা সনদ এখানে দেখুন
এখানে লক্ষ্যনীয় বিষয় হল এই সনদ এর বেশীর ভাগ বিষয় আসলে তখনকার মদিনাবাসীর জন্য প্রযোজ্য ছিল। এটা মদীন ও মদীনাবাসী কেন্দ্রিক। ঢাকা বা বাংলাদেশ বাসীর জন্য। পুরো সনদটি পড়ে দেখুন এর বেশীরভাগ পয়েন্টই, আমাদের জন্য অকার্যকর হবে। আর যেগুলো অকার্যকর হবে না সেগুলো আমাদের দেশে এমনিতেই প্রচলিত আছে। আসলে মদিনা সনদ বানানো হয়েছিল ইসলামিক আইন অনুসরন করে করে মদিনা বাসীর জন্য। আমাদের জন্য এমন কিছু বানাতে হলে ইসলামিক আইন মান্য করে ঢাকা সনদ বা বাংলাদেশ সনদ বানাতে হবে। মদিনার জন্য বানানো সনদ আমাদের জন্য অকার্যকর।
এছাড়া এই মদীনা সনদে কোথাও ঘুষ, দুর্নীতি, চাদাবাজী , ছিনতাই, গুম, ক্রস ফায়ার, রিমান্ড ও ডিমান্ড, ভোট চুরি, ব্যালোট বাক্স ছিনতাই, ইত্যাদীর কথা কিছু বলা নেই। কাজেই এই বিষয়গুলির নিস্পত্তি মদিনা সনদ দিয়ে কিভাবে হবে? নাকি এটা বলতে হবে যে, এগুলো যেহেতু মদিনা সনদে নেই কাজেই এগুলো হালাল।
সহজ কথা - যারা “বিসমিল্লাহ” কথাটি সহ্য করতে পারেনা তারা ওই মদিনা সনদের মতন ৬৩ লাইনের সনদ কিভাবে সহ্য করবেন? আসলে এই মদিনা সনদের কথাটা বলে আমাদেরকে আশার আলো দেখানো হয়। দেশ ইসলামিক আইনে চলবে এটা করা তো দুরের কথা বলাটাই সম্ভব না। আবার ৯০% মুসলমানের মন রক্ষা করাও প্রয়োজন। মদিনা সনদ কথাটা বলে একটু বুঝ দিয়ে রাখা আর কি।
বিষয়: রাজনীতি
১৭১৪ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
০ বাংলাদেশের মানুষ মুসলমান নামে , মনে মননে না ।
ঐখানে থাকা কোন ওলামারা কেউ কি বলতে পারলো না যে , সংবিধান থেকে বিসমিল্লাহ উঠিয়ে দেওয়া , সর্বশক্তিমান আল্লাহর উপর বিশ্বাস উঠিয়ে দেওয়া কি মদিনা সনদের সাথে সামন্জস্যপূর্ণ ?
রাসূল (সাঃ) কে কটুক্তি কারীর সাজা জামিন দিয়ে আমেরিকায় / পশ্চিমা দেশে পাঠিয়ে দেওয়া আর নিজের কটুক্তাকারীর সাজা ৭ বছরের জেল !
ক্বুরআনে আল্লাহ বলেই দিয়েছেন যে মুমিনদের কাছে আল্লাহ ও তার রাসূল(সাঃ) তাদের প্রানের চেয়েও অধিক প্রিয় হওয়া উচিত ।
পুজায় গেলে ধানের ফলন হয় গজে চড়ে দুর্গার আগমনে।
সংসদে ব্যস্ত আল্লাহর উপর আস্থা তুলে দেতে!
এযেন ছোট্ট কালে দেখা সেই ভানুমতির খেইলের মত হাচিনা বানুর ভেল্কি।
মন্তব্য করতে লগইন করুন