ইসলাম বিদ্বেষিদের যেভাবে সায়েস্তা করবেন
লিখেছেন লিখেছেন এলিট ১৯ মার্চ, ২০১৪, ১০:৩১:৩৫ রাত
সারা দেশে ইসলাম বিরোধী লেখালেখি করে মাত্র হাতে গোনা কয়েকজন। বিভিন্ন বাংলা ব্লগেও এদের সংখা খুবই অল্প। নাস্তিক সমর্থিত ব্লগ বলে খ্যাত অন্যন্য বিভিন্ন বাংলা ব্লগে অনেক লেখকই ইনিয়ে বিনিয়ে এটা জানিয়ে দেয় যে তারা ইসলাম পছন্দ করে না। কিন্তু সাহস করে এ নিয়ে সরাসরি ইসলামকে অবমাননা করার মতন ব্লগার ২০ জনও নেই। আমি নিজে অমন একটি ব্লগে ইসলামিক কিছু লেখা পোস্ট করেছি। সব সময় দেখেছি যে, ৪-৫ জন মার্কা মারা লোক আছে। ওরাই এই লেখাগুলে পড়ে ইসলাম সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করে। অনেকে আবার গালাগালি দিয়ে বংশ পরিচয় নিশ্চিত করে। বাকী ব্লগারদের মন্তব্য যদি ইসলাম সমর্থিত নাও হয় , তবুও সেটা ভদ্রতার ও রুচীবোধের সীমাকে লঙ্ঘন করে না।
ইসলাম সমর্থিত ব্লগ হিসাবে পরিচিত এই টুডে ব্লগেও এমন মাত্র ২-৩ জন আছে। এরাই বিভিন্ন নামে একাধিক একাউন্ট খুলে ইসলামের বদনাম করে - ক্লান্তিহীনভাবে করতেই থাকে। এরা ইসলাম সমর্থিত কোন লেখা দেখলেই ইসলামকে অবমাননাকর মন্তব্য করে। মোট কথা, এমন লোক এই বাংলা ব্লগিং জগতে আছে সর্বোচ্চ ৫০ জন। ওদিকে ইসলাম সমর্থিত লেখালেখি করে এমন লোক আছে কয়েক শত। আর এসব লেখা নিয়মিত পড়ে বাহবা দেয় এমন লোক আছে কয়েক হাজার। এই হাজার লোক মিলেও হাতে গোনা কয়েক জনের সাথে সেভাবে পেরে উঠছে না। এর কারন একটাই, আমারা ওদেরকে পাত্তা দিচ্ছি। আমি নিজেও প্রথম দিকে ওদের লেখার উত্তর দিতাম। পরে বাস্তব অভিজ্ঞতায় ঠেকে শিখেছি , কিভাবে ওদের সায়েস্তা করতে হয়। সেটাই আজ আপনাদের বলব।
সম্প্রতি আমি নীরব বিজ্ঞান - পর্ব ২ লেখাটি পোস্ট করি। এটা যারা কস্ট করে পড়েছেন এবং যারা মন্তব্য করেছেন তাদের সবাইকে আমার আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। লেখাটি পোস্ট করার সাথে সাথে ওখানে ইসলাম বিরোধী মন্তব্য করে এমনই এক মার্কা মারা ইসলাম বিদ্বেষী। এর পরেও সে মনে করে যে এটা যথেস্ট হয়নি। তাই সে মোট তিনটি মন্তব্য করেছে। জানি তাকে উত্তর দিলে আমার সময় নস্ট ছাড়া আর কোন কাজ হবে না। তাই আমি সেগুলোর উত্তর দেবার চেস্টা না করে, সরাসরি মুছে দিয়েছি। ব্যাস, সে তো গেল ক্ষেপে। এত কস্ট করে ইসলামের নামে বাজে কথা লিখেছে আর সেটা মানুষ দেখতে পারবে না। তখন বুদ্ধি করে সে ওই মন্তব্যগুলো দিয়ে নিজেই একটি পোস্ট লিখেছে। আমার সমালোচনা তো করেছেই। তার আশা ছিল যে ওটা পড়ে আমার গায়ে জ্বলা করবে এবং আমি তার কোন উত্তর দিব। কিন্তু সেটা আমি করিনি। আমার লেখাতে তার মতব্য মুছে দিয়েছি। এই ঘটনা নিয়ে তার লেখাতেও আমি ক্কোন উত্তর (মন্তব্য) দেইনি। আমি তাকে পাত্তাই দেইনি। সে এখন কি করবে? বাধ্য হয়ে চুপ করে বসে আছে। এই কাজটা যদি আমরা সবাই করতে পারি তবে ওরা লেজ গুটিয়ে ফেলবে। স্বভাব বসত হয়ত অন্যখানে গিয়ে ন্যাদাবে, তবে এখানে আর নয়।
আপনি যেটা করবেন
১। এমন লেখকদেরকে চিনে রাখুন। এরা সব সময় বাজে কথা লিখে যা দেখে আপনার গা জ্বালা করতে বাধ্য। তাই এদের লেখা এড়িয়ে চলুন। পড়বেনই না।
২। এদের লেখার প্রথম অংশ দেখেই এড়িয়ে যান। ভেতরে ঢুকে পুরো লেখাটি দেখতে যাবেন না। কারন আপনি এটা করলে “লেখাটি পড়েছেন ৪৪ জন” সংখাটি বেড়ে গিয়ে “লেখাটি পড়েছেন ৪৫ জন” হয়ে যাবে। এভাবে সংখাটা বেড়ে গেলে ওদের উতসাহ আরো বাড়বে। ওদের লেখা এড়িয়ে চললে দেখা যাবে যে ওদের লেখা ২০ জনও পড়েনি। তখন ওই আবর্জনা আর লিখবে না।
৩। যদি লেখাটি পড়েও ফেলেন, ভুলেও ওদের পোস্টে কোন মন্তব্য করবেন না। গায়ে যত জ্বালা করুক না কেন। মন্তব্য ওদের উতসাহ আরো বাড়িয়ে দেয়। তাছাড়া আপনার মন্তব্যের উত্তরে ওরা আরো বাজে কথা বলে।
৪। ওদের লেখা বিষয়টির ব্যাখ্যা বা উত্তর যদি ইসলামপন্থীদের জানাতে চান তাহলে নিজেই একটা পোস্ট লিখুন। অবশ্যই ওদের নাম উল্লেখ করে ওদের বিখ্যাত বানাবেন না। আপনার লেখায় বলতে পারেন - সেদিন এক ইসলাম বিদ্বেষীর লেখায় এই জিনিস দেখেছি, আমি এর উত্তর এভাবে দিচ্ছি। এটা করলে আপনার জ্বালা মিটবে। ইসলামের প্রতি দায়ীত্ব পালন করা হবে। ওই আবর্জনাকে বিখ্যাত বানানোটাও বন্ধ হবে। এক ঢিলে তিন পাখি।
প্রসঙ্গত বলে রাখি যে আমি এক দিন আগেও কাবা ঘর ও সাফা মারওয়া পাহাড় নিয়ে একটি ইসলাম বিরোধী লেখার উত্তর দিয়েছি এবং লেখাতে সেই ব্লগারের নামও উল্লেখ করেছি। এই ক্ষেত্রে ব্যাতিক্রমের কারনও আছে। উনার অন্যান্য লেখা পড়ে বোঝা যায় যে উনি ইসলাম বিদ্বেষী নন। উনি ইসলাম পন্থী । নিজের নামে সমালোচনা দেখে উনি লজ্জায় পড়ে যাবেন এনং ভবিশ্যতে ইসলাম নিয়ে লেখার সময় বুঝে শুনে লিখবেন। সেই সাথে অন্য ইসলামপন্থী ব্লগারও সতর্ক হবেন। ইসলাম বিদ্বেষীদের এই লজ্জাটা নেই।
ইসলাম বিদ্বেষীরা কি লেখে ও কোথায় পায়?
ওরা ইসলামের নামে যা লিখে তা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রশ্ন আঙ্গিকে হয়। এর সাথে মাঝে মাঝে কোনআন ও হাদিসের রেফারেন্সও থাকে। এগুলো বেশীর ভাগই শয়তানি প্রশ্ন । এই প্রশ্নগুলো ওরা উত্তর জানার জন্য করেনা। ওরা ইসলামকে অবমাননা করতে চায়। সেই সাথে আপনাকে দেখিয়ে দিতে চায় - দেখেছ, ইসলাম এমন ত্রুটিপুর্ন ধর্ম, আর তুমি এটার অনুসারী। মোটেই ভাববেন না যে এই সমস্ত প্রশ্ন তাদের মাথা থেকে আসে। ওদের মাথায় এতখানি ঘিলুই নেই। এসব প্রশ্ন ওরা সংগ্ররহ করে। দেখবেন এই প্রশ্নগুলিই ঘুরে ফিরে আসে। সব মিলিয়ে ৩০টির বেশী প্রশ্ন নেই। প্রশ্নগুলির কারিগর আসলে মুলত ইসলাম বিদ্বেষী ইহিদীরা। ওরা কোরআন ও হাদিস পড়ে আমাদের চেয়েও ভাল বোঝে। বুঝেই এই ফাইজলামীগুলো করে। অনেক বুদ্ধি করে এমন ধাধার মতন প্রশ্ন তৈরি করে যেটা শুনলে সাধারনত মানুষ উত্তর খুজে পায় না।
আপনি এর উত্তর কোথায় পাবেন?
ওরা যেখানে প্রশ্নগুলি পায়, আপনি সেখানেই এসবের উত্তর পাবেন। হ্যা, ইন্টারনেটে। গুগলে সার্চ দিলে এগুলো সব পাওয়া যায়। ইসলাম বিদ্বেষীরা যেমন প্রশ্ন বানিয়েছে, ইসলামপন্থীরাও তেমন উত্তর বানিয়ে রেখেছে। যদিও এগুলো বেশীর ভাগই ইংরেজী ভাষায় লেখা।
আপনার সাহায্য প্রয়োজন।
বাংলাতে এমন ধরনের প্রশ্ন উত্তরের তেমন কোন ওয়েব সাইট নেই। আমি এটা মেনে নিতে পারছি না যে মাত্র ৩০ টি প্রশ্ন ব্যাবহার করে বাংলা ভাষাবাসী মুসলমানদেরকে ওরা হয়রান করে চলেছে। এসবের উত্তর ইন্টারনেটে রয়েছে কিন্তু বাংলায় নেই দেখে আমরা দাতভাঙ্গা জবাব দিতে পারছি না। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আমি বাংলায় এমন প্রশ্ন উত্তরের একটি ওয়েব সাইট বানাব, ইনশাল্লাহ। যেখানে ইসলামিক প্রশ্ন উত্তর বা মাসলা- মাসায়েল বা সমাধান ইত্যাদি থাকবে না। ওখানে থাকবে ইসলাম বিদ্বেষীদের সব শয়তানী প্রশ্নের উত্তর। এতে আপনাদের সহযোগীতা প্রয়োজন। না, অন্য কোন সহযোগীতা নয়। আপনি এমন কোন শয়তানী প্রশ্ন পেলে আমাকে তা সরবরাহ করবেন, উত্তর আমিই বের করে নেব। আর ওই ওয়েব সাইট এর কথা আশে পাশে সবাইকে বলে পরিচিত করে তুলবেন। এতে ব্যাবসায়ীক কোন উদ্দেশ্য নেই। আমরা সবাই এক হলেই এটা করতে পারি। আপনারা পাশে থাকলে বিস্তারিত যথাসময়ে জানিয়ে দিব। কেউ সাথে না থাকলেও একলা চলব। আগামী মাসে কাজ শুরু করব ইনশাল্লাহ।
বিষয়: বিবিধ
১৭১০ বার পঠিত, ২৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
Thanks.
আপনার লেখাটা খূ দারুণ হয়েছে- সচেতন হইলাম- ধন্যবাদ-
যাযাকাল্লাহু খাইরান।
ধন্যবাদ।
আমি আসলে ঐসমস্ত ফালতু (ব্লগারদের) কাছে সময় ব্যয় করি না।
তাদেরকে গুরুত্ব দিলে ওরা আরো উতসাহ পেয়ে যায়।
পোষ্টটি আমি নিজে পড়ে আমার প্রিয়দেরকে আমান্ত্রন জানিয়েছি।
আমার কিছু প্রশ্ন আছে যেটা আপনাকে আমি করবো ইনশাআল্লাহ।
সাধারণ কোন নাস্তিকের কথা বলছি না, ইসলাম বিদ্বেষী ধূর্ত নাস্তিক শয়তানদের কথাই বলছি আমি- এসব ইবলিশদের ব্যাপারে আমি বেশ কয়েকটি ব্লগ পোষ্ট করেছিলাম সবাইকে সতর্ক হওয়ার উদ্দেশ্য। আপনার ইচ্ছে হলে আমার ব্লগগুলোতে একবার ভিজিট করতে পারেন।
অনেক ধন্যবাদ...
মন্তব্য করতে লগইন করুন