ছাইয়ের মধ্যে পাওয়া মানিক রতন (সত্য ঘটনা - ছবি সহ)
লিখেছেন লিখেছেন এলিট ০৯ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০৭:৫৮:৩৮ সকাল
অনেক সময় আমাদের কাছে অনেক পুরাতন জিনিস অবহেলাতে পড়ে থাকে। তেমনি অবহেলাতেই কিছু জিনিস ছিল ওদের কাছে। এর পরে একদিন তারা আবিস্কার করল যে ওই অবহেলিত বস্তুগুলোর মুল্য কোটি কোটি টাকা। ঘটনাগুলি সবই অন্যান্য দেশ ঘটেছে। এসব লোকের ভাগ্য দেখে প্রায় সবাই মনে করে, ইস - আমার যদি এমন সৌভাগ্য হোত।
সিরামিকের বাটিঃ গ্যারাজ সেল (Garage sale) নামের একটি জিনিস উন্নত বিশ্বে প্রচলিত আছে। কেউ কেউ বাড়ির পুরাতন অব্যাবাহারিত জিনিস পত্র বিক্রির এক আয়োজন করে নিজের বাড়ির গ্যারাজে বা আঙ্গিনায়। পত্রিকায়, ইন্টারনেটে বিজ্ঞাপনও দেয়। নিউ ইয়র্কে এমনই এক গ্যারাজ সেল থেকে একটি পরিবার মাত্র ৩ ডলারে একটি চাইনিজ সিরামিকের বাটি কিনে।
পরবর্তিতে আবিস্কার হয় যে বাটিটি এক হাজার বছর পুরাতন চাইনিজ সং পরিবারের শাশন আমলে তৈরি। এর অসাধারন ঐতিহাসিক মুল্য রয়েছে। এ বছরে নিউ ইওর্কে এক নিলামে ৫ ইঞ্চি চওড়া এই সিরামিকের বাটিটি ২২ লক্ষ ডলারে বিক্রি হয়। এটি এতই দুস্প্রাপ্য একটি সংগ্রহ যে, এমন বাটি বিশ্বে মাত্র দুটি রয়েছে। অপর বাটিটি গত ৬০ বছর ধরে ব্রিটিশ মিউজিয়ামে শোভা পাচ্ছে। ৩ ডলারের বাটি অবশেষে বিক্রয় হল ২২ লক্ষ ডলারে।
পুরাতন বাক্সঃ পুরাতন আমলের কাঠের বাক্সগুলো বেশ ভারী ও শক্ত ছিল। ১৯৭০ সালে এমনই এক কারুকাজ করা (ব্যাবহারিত, পরাতন) কাঠের বাক্স কিনেছিলেন ফ্রান্সে শেল কোম্পানীর এক ইঞ্জিনিয়ার ১৬০ ডলারে। তখনকার দিনে টেলিভিশন বেশ ভারী ছিল। ওই ইঞ্জিনিয়ার ১৬ বছর ধরে সেই বাক্সটিকে টেলিভিশন রাখার টেবিল হিসাবে ব্যাবহার করেছিলেন। চাকুরী থেকে অবসর নেওয়ার উনি অন্য শহরে ভলে আসেন। বাক্সটিকেও সাথে নিয়ে আসেন। এর পরে এই বাক্সটিকে তিনি মদ বিয়ার ইত্যাদি রাখার টেবিল হিসাবে ব্যাবহার করেন।
হটাত একদিন এই বাক্সটি তার এক বন্ধুর নজরে পড়ে। বন্ধুটি জানায় যে বাক্সটির ঐতিহাসিক মুল্য রয়েছে। ইঞ্জিনিয়ার সাহেব তখন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি নিয়ে নিশ্চিত হন। এটি ১৬৪২ সালের ফ্রান্সের প্রধান মন্ত্রী মাজারিন এর ব্যাবহার করা হরিয়ে যাওয়া বাক্স যা বিভিন্ন হাত ঘুরে ইঞ্জিনিয়ার সাহেবের কাছে এসেছে। এই বছর বাক্সটি এক নিলামে ৯৫ লক্ষ ডলারে বিক্রি হয়।
পিতলের কাপঃ জন ওইবার (৭০) এর বাল্যকালে তার দাদা তাকে একটি কাপ দিয়েছিলেন। ওইবার মনে করতেন যে এটি একটা স্বল্প মুল্যের পিতলের কাপ। তার এয়ারগান (পাখি মারার বন্দুক) দিয়ে মাঝে মাঝে তিনি এই কাপে গুলি করে নিশানা অনুশীলন করতেন। হটাত একদিন কি মনে করে তিনি এই কাপটির মুল্য জানতে বিশেষজ্ঞের সরনাপন্ন হলেন। জ়ানা গেল যে এটি ২৩০০ বছর পুরাতন স্বর্নের তৈরি কাপ যা কিনা পারস্য সভ্যতার নিদর্শন। ২০০৮ সালে এক নিলামে কাপট এক লক্ষ ডলারে বিক্রয় হয়।
পুরাতন ফটোঃ রিক নরসিগিয়ান এর শখ হল বিভিন্ন পুরাতন জিনিস সংরহ করা। এর কন্য তিনি বিভিন্ন জায়গায় বিশেষ করে গ্যারাজ সেল খুজে বেড়াতেন। বছর দশেক আগে তিনি একটি পুরাতন বাক্স কিনেন। বিক্রেতা ৭০ ডলার দাবী করলেও তিনি দর কসাকসি করে ৪৫ ডলারে বাক্সটি কিনে বাড়িতে আনেন। বাক্সটির মধ্যে ছিল ৬৫টি গ্লাস নেগেটিভ যা কিনা বিখ্যাত ফটোগ্রাফার আন্সেল এডামস এর তোলা ছবি। এগুলির সর্বোমোট আনুমানিক মুল্য ২০ কোটি ডলার।
আন্সেল এডামসকে আমেরিকার ফটোগ্রাফী এর জনক হিসাবে ধরা হয়। তিনি রাস্ট্রীয় সন্মাননা পান ১৯৪০ সালে। ওই বাক্সে পাওয়া ছবিগুলো ১৯১৯ থেকে ১৯৩০ এর মধ্যে তোলা। বাক্সটি পাওয়ার আগে বিশেষজ্ঞদের ধারনা ছিল যে ওই নেগেটিভগুলি ১৯৩৭ সালে ডার্করুম অগ্নিকান্ডে পুড়ে নস্ট হয়ে গেছে।
কোকা কোলাঃ ২০০৮ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার টনি ম্যারন তার এলাকার এক গ্যারাজ সেল থেকে একটি ডকুমেন্টের বাক্স কিনে মাত্র ৫ ডলারে। ওই কাগজ পত্রে ঘাটতে গিয়ে তিনি পান একটি দলিল যা কিনা ১৯১৭ সালের পালমার উইনিয়ন অয়েল কোম্পানীর ১৬২৫ টি শেয়ার। পরে অনুসন্ধান করে জানা গেল সে এই কোম্পানীটি পরবর্তিতে কোকা কোলার সঙ্গে যুক্ত হয়। আইন অনুসারে টনি বর্তমানে কোকা কোলার যে পরিমানের শেয়ার এর মালিক তার মুল্য হল ১৩ কোটি ডলার। টনি এখন কোকা কোলার সবচেয়ে বড় অপ্রাতিস্টানিক শেয়ার হোল্ডার।
বিষয়: বিবিধ
২০২১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন