হেফাজতের সমাবেশে আহত নারী সাংবাদিক - ঘটনার আড়ালে

লিখেছেন লিখেছেন এলিট ০৮ এপ্রিল, ২০১৩, ০৩:০৮:২৬ রাত



হেফাজতে ইসলামের এত বড় জনজাগরন দেখে আতঙ্কে ভুগছে আওয়ামী লীগ, শাহবাগী ও সমমনা মিডিয়া। এত লোক বাংলাদেশের ইতিহাসে আগে কখনো দেখা যায়নি। যদি যোগাযোগ ব্যাবস্থা বন্ধ না করা হত তাহলে হয়ত এর তিনগুন লোকসমাবেশ হত। ওদিকে শাহবাগে মাত্র কয়েকশ লোক সমাবেশ করছে। যদিও তাদের নেতাদের লাফালাফির কমতি নেই। এই কয়েকশ লোকের শাহবাগ সমাবেশে প্রকাশ্য হুমকি দিয়েছে হেফাজতে ইসলামের এই লক্ষ লোকের সমাবেশকে। বলেছে সবাইকে লাঠি হাতে এদের প্রতিহত করতে। কয়েকশ লোক প্রতিহত করবে কয়েক লক্ষ লোককে - এ থেকেই বোঝা যায় - ওরা শুধু আওয়াজ দিতে পারে।

এছাড়া শাহবাগ প্রেমী অনেকেই চেস্টা করছে এই নিভু নিভু প্রদীপকে জ্বালিয়ে রাখতে। তারা বিভিন্ন ভাবে চেস্টা করছে যেন শাহবাগীদের মনোবল হারিয়ে না যায়। এজন্য তারা হেফাজত নিয়ে বাজে কথা বলছে, কুতসা রটাচ্ছে। কথিত অনলাইন এক্টিভিস্টরা ৬ এপ্রিলের দিনে ফেসবুকে "মন ভাল নেই" স্টাটাস দিয়েছেন। সাংবাদিক ফারুক হেফাজতের বিরোধী রচনা লিখেছেন- সন্দেহ প্রকাশ করেছেন হেফাজতের টিকে থাকার ব্যাপারে। কথিত অনলাইন এক্টিভিস্ট, সুপ্রীতি ধর ফেসবুকে স্টাটাস দিয়েছেন "মতিঝিলে সাদা বান্দর দেখেছি, তাও আবার অনেকগুলো"। একটি জাতীয় দৈনিকের বার্তা সম্পাদক ফেসবুকে একটি ছবি আপলোড করেছে, ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে, হেফাজত কর্মীদের দিকে একটি শিশু ইটের টুকরো ছুড়ে মারছে। একই পত্রিকার রিপোর্টার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ নাকি আফগান বা ইরাক হয়ে যাচ্ছে। এমনি হাজারো চেস্টা।

এর মধ্যে সবচেয়ে প্রচার হওয়া খবর হল, নারী সাংবাদিককে হেফাজত কর্মীরা আহত করেছে। আওয়ামী পন্থী মিডিয়া, ব্লগ, ফেসবুক পেজ - সবখানে এই কথা নিয়ে আলোচনা সমালোচনা আর যথারীতি হুজুরদের গালাগালি। অপ্রিয় হলেও একটি সত্য বলতে হচ্ছে এখানে। কুকুর আসলে মুগুরের ভাষা বোঝে। মতিঝিলে লক্ষ লোকের শান্তিপুর্ন সমাবশ আর দাবী উপস্থাপন দেখে ওরা হাসে। উদাহরন হিসাবে বলতে হয়, ভারতে একবার হাইকোর্টের মাধ্যমে কোরআন নিষিদ্ধ করার আওয়াজ উঠেছিল। তখন দিল্লী মসজিদের ইমাম বলেছিলেন "যে বিচারপতি কোরআন নিষিদ্ধের রায় দিবে, আমি তাকে আমার পায়ের নিচে চাপ দিয়ে ধরে তার জিভ টেনে ছিড়ে ফেলব"। ভারত সরকার ও হাইকোর্ট এই ভাষা বুঝেছিল। ভারতের মদদপুস্ট আমাদের আওয়ামী লীগ ও শাহবাগীরাও ঠিক একই ভাষা বোঝে। আর তাই তারা এই ভাষায় কথা বলে। হেফাজতের সমাবেশের দিন ইমরান শাহবাগে বলেছে "হেফাজতের রক্ত নিয়েই তবে আমরা শান্ত হব"। এর উত্তরে যদি হেফাজতে ইসলাম মঞ্চ থেকে বলা হত "এত বড় সাহস - তোর জিভ টেনে ছিড়ে ফেলব"। তখন সবাই এটা বুঝত। কোন সাংবাদিক তখন বাজে মন্তব্য করার সাহস পেত না। ইমরান কোন বাহানা দেখিয়ে কয়েকদিন আড়ালে থাকত। এটা না করে হেফাজতীরা করেছে শান্তিপুর্ন সমাবেশ আর দাবী উপস্থাপন। এতে মিডিয়া এমন অপপ্রচার করার সাহস পেয়েছে।

নাদিয়া শারমিন নামক এই নারী সাংবাদিককে (তাদের সংবাদ মতে) নাকি ৫-৬ বার আছাড় দেওয়া হয়েছে। আর তাকে মেরেছে নাকি ৫০-৬০ জন লোক। কারো কোন কথা শুনতে হবে না, তাদের দেওয়া ছবিটি দেখুন। স্যালাইন দিয়ে রাখা আছে - এটা দেখেই তাকে অসুস্থ মনে হচ্ছে। এবার, স্যালাইন বাদ দিয়ে দেখুন, তাকে দেখে কি কোনভাবে আহত মনে হচ্ছে? বড়জোর তাকে দেখে মনে হচ্ছে তিনি মনে কস্ট পেয়েছেন, কিন্তু আহত মনে হচ্ছে না। ৫০-৬০ জন লাগবে না, একজন পুরুষ কষে ওই মহিলাকে একটা চড় লাগালাই তার সুন্দর চেহারাটা বদলে যাবে।



অন্য ঘটনায় আহতদের কিছু ছবি দেখুন - নাদিয়ার মত নয়।

খবরে এসেছে, তাকে যখন মারা হয়েছে, তখন তিনি একা ছিলেন না। সাথে আরো সাংবাদিক ও ছিল। তাদের উপরেও চড়াও হয়েছে হেফাজতীরা। এত বড় সাংবাদিক, তারা এই মারামারির ছবি, অন্তত মারের পরের ছবিও তো দেখাতে পারল না। এখন ঘুরিয়ে ফিরিয়ে হাসপাতালের ছবি দেখায়। প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, [ নাদিয়া শারমিন ওখানে ছবি তুলছিলেন। হেফাজতের কর্মীরা তাকে বলে "এতদিন আমাদের সংবাদ প্রচার করেন নি এখন কেন এসেছেন, আপনি চলে যান" । নাদিয়া বলেন "এটা আমার কাজ"। এভাবেই কথা কাটাকাটি শুরু হয় এবং বিষয়টা শালিনতার বাইরে চলে যাচ্ছিল। তাই তখন নাদিয়াকে হেফাজতের চিকিতসার জন্য আনা ড্যাবের মাইক্রোবাসে করে ওখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।

এই ঘটনাকে হলুদ মিডিয়া কিভাবে প্রচার করছে। নাদিয়া নিজেই তাদের একজন। হতে পারে তিনি এই ছুতোয় অনেকদিন হাসপাতালে থেকে গেলেন - শাহবাগ আন্দোলন চাঙ্গা করার প্রয়াসে। এই সমস্ত বুদ্ধির খেলা আওয়ামী লীগ ও হলুদ মিডিয়া ও শাহবাগ (একই রসুনের পশ্চাতদেশ) খেলেই যাবে। ভদ্রতার সঙ্গে আন্দোলন, সমাবেশ বা দাবী জানালে সাধারন জনগন কিছুই পাবে না। আওয়ামী লীগ মুখে বলে গনতন্ত্র, কিন্তু করে এক দলীয় তন্ত্র। তাদের বিরুদ্ধে কাউকে সহ্যই করতে পারে না। তাদের মোকাবেলার একটাই উপায় - সেটা হল শক্তি প্রয়োগ। তাদের মোকাবেলায় মুগুরের কোন বিকল্প নেই।

বিষয়: বিবিধ

১৬২৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File