আমরা চলেছি কোন পথে ?
লিখেছেন লিখেছেন আবরার ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ০৮:৪১:২৯ রাত
আসলে আমাদের চলার পথ ২টা । একটি শান্তির আর একটি আশান্তির । আমরা যদি হিংষা ,বিদ্বেষ, বিভেদ-বিভাজন ,সংঘাত-সংঘর্ষের মানসিকতা ত্যাগ করতে না পারি তাহলে আশান্তির ভিতর থাকতে হবে । সাথে থাকবে ভয় ভীতি , অস্থিরতা, হতাশা । থাকবে না স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি । চারিদিকে গর্দব-মুর্খ-দুষ্ট-সন্ত্রাসীদের রাজত্ব কায়েম হবে ।অযোগ্যদের হাতে নেতৃত্ব থাকবে । কোন ভদ্র মানুষ এমন পথ কামনা করে না । কোন প্রতিবাদী এমন অবস্থা মেনে নিতে পারে না । এই পরিবেশে কোন আদর্শবাদী ঘুমিয়ে থাকার কথা নয় । ঈমান - বিবেকহীন মানুষ শুধু বোবা - বধির- আন্ধ -কানা হতে পারে ।
আজ আমরা শান্তি - মানবতার আড়ালে শকুনের কালো হিংস্র থাবায় আইন আদালত বিচার হত্যা করে চলেছি । গুটি কতেক দল এক হয়ে '' জাতীয় ঐক্যের '' নামে চালিয়ে দিচ্ছি । নিজ এবং দলের কথাকে দেশের মানুষের কথা বলে প্রচার করছি । জনমত পক্ষে নেয়ার জন্যে মিথ্যা-ধোকাবাজীর আস্রয় নিচ্ছি । ভিন্নমতের মানুষকে নির্মুল করতে আইন হাতে তুলে নিচ্ছি ।
আমাদের কেউ ডান , কেউ বাম । আস্তিক - নাস্তিক । প্রগতিবাদী - প্রতিক্রয়াশীল । সাম্প্রদায়িক - অসাম্প্রদায়িক । স্বাধীনতার পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি । পাকিস্তানের দালাল - ভারতের দালাল । মস্কো-দিল্লী-পিকিং পন্থী । এই বিভাজন কখনও শেষ হবে ? হবে না । মানুষ পৃথিবীতে যত দিন থাকবে কম বেশী বিভাজন থাকবেই । ঘরে ঘরে বিভক্তি আছে । কিন্তু পারিবারিক স্বার্থে অভিভাবকের দায়িত্বে সকলে এক হয়ে যায় । বাড়ীর বৃহত্তর ইসুতে বাড়ীর মুরুব্বীর দায়িত্বে পুরো বাড়ী এক হয় । অনেক ক্ষেত্রে দ্বন্দ্বমান সমাজও বলিষ্ঠ্য নেতৃত্বে এক হয় । কিন্তু আমরা রাষ্ট্রের অভিভাবকের নেতৃত্বে সকলে এক হতে বাঁধা কোথায় ? কোথায় আমাদের ব্যর্থতা ? কেন আজ আমরা রাষ্ট্রীভাবে পৃথিবী হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে পরস্পর হানা হানিতে লিপ্ত হচ্ছি । কেন দেশটাকে কাশ্মীর ,ফিলিস্তিন,আফগানিস্তান, পাকিস্তান ,সিরিয়ার মত ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিচ্ছি ? মুল সমস্যা কোথায় ?
ক্ষমতার মোহ , ভোগ বিলাশ তথা আদর্শহীনতা এবং যোগ্য-বলিষ্ঠ্য নেতৃত্ব শুণ্যতায় গোটা দেশ হাবুডুবু খাচ্ছে । স্বাধীনতার স্থপতি মরহুম শেখ মুজিবের সাহসী পদক্ষেপ এবং শহীদ প্রসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষনা গোটা দেশকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল । প্রেসিডেন্ট শেখ মুজিবুর রহমান ভারতের অনুরোধ উপেক্ষা করে ওয়াইসি সম্মেলনে পাকিস্তান ছুটে যান মুসলিম ভ্রাতৃত্ব সুদৃঢ় করতে । বামদের পরামর্শে তিনি একদলীয় '' বাকশাল '' সরকার গঠন করতে গিয়ে সকল অর্জন ম্লান করে দেন ।
সিপাহী-জনতার গণ অভুথথানে জিয়াউর রহমানের আগমন । ১৯৭৫ সালের ৭ই নভেম্বরের দৈনিক পত্রিকার পাতা খুলে দেখুন । প্রেসিডেণ্ট জিয়ার বড় সফলতা বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ভিতর দিয়ে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা । বিভিন্ন দল এবং মতের নেতাদের সম্মিলন ঘটিয়ে পারস্পরিক আস্থা সৃষ্টি করতে তিনি সক্ষম হয়েছিলেন । সংঘাত-সংঘর্ষের পরিবর্তে আস্থা-সমঝোতা-সহমর্মিতার পথে জাতিকে এগিয়ে নেন । তার আগমনকে যেভাবে গোটা দেশ স্বাগত জানিয়েছিল তা ছিল এক অভুতপুর্ব দৃশ্য । তেমনি তার বিদায় ছিল এক অভুতপুর্ব করুন বেদনায় ভরা কান্নার দৃশ্য । গোটা দেশের মানুষ তার গায়েবানা জানাজা পড়েছে ।
আজ দেশ সৎ সাহসী নেতৃত্বের অভাবে শান্তির পরিবর্তে অশান্তির পথে চলেছে । রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস উস্কে দেয়া হচ্ছে । আইন হাতে তুলে নেয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে । সমাঝোতা -বিশ্বাস-সহযোগিতা -সম্মান -ভালবাসা শিক্ষার বদলে চারিদিকে অশান্তির আগুন জ্বালানোর আয়োজন হচ্ছে । অশান্তির ক্ষেপনাস্র নিয়ে যে বিমান আকাশে ডানা মেলেছে তার নিরাপদ ল্যান্ডিং কোথায় তা কেউ জানে না । তা যে কত বড় ধবংস ডেকে আনবে তা বুঝার লোক কি আমাদের নেই ?
বিষয়: বিবিধ
১০৮৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন