ভোটের রাজনীতি কি বাংলাদেশের মূল সংকট ?
লিখেছেন লিখেছেন আবরার ১৯ জানুয়ারি, ২০১৪, ০৩:২০:২১ দুপুর
গণতন্ত্রের চর্চা বাংলাদেশে নেই । আছে শুধু ভোট যুদ্ধ । এখন তাও অনুপস্থিত । ধনী- বুর্জুয়ারাই তাদের মত করে এই গণতন্ত্র নিয়ন্ত্রন করে । সেটা আবার ২পরিবারে বন্দী রেখেই সুবিদাবাদী গ্রুপ ভোগ করে । জনগনের পছন্দ এখানে গুরুত্বহীন ।এদের ধারনা > মুর্খ্য পাবলিক গণতন্ত্রের কি বুঝে ? তারা যা বুঝে তাহা ৫ জানুয়ারীতে বুঝিয়ে দিয়েছে । তারা নীরবেই এই '' মৃত গণতন্ত্র '' প্রত্যাখ্যান করেছে । যারা এই '' মৃত গণতন্ত্র '' নিয়ে খেলেন তারা বুঝতে যত দেরী করবেন তত বেশী সংকটে পরবেন ।
''গণতন্ত্র '' হত্যাকারী কারা ?
=========================
*** চতুর্থ - পঞ্চদশ সংশোধনি গণতন্ত্র হত্যার ছুড়ি ।
** ১৯৭৫ সালে গণতন্ত্রের সংগ্রামী নেতা শেখ মুজিবুর রহমানই আওয়ামী লীগ সহ সকল দল বিলুপ্ত ঘোষনা করে '' বাকশাল '' গঠনের ভিতর দিয়ে ১ম গণতন্ত্রের কবর দেন । [ ৪র্থ সংশোধনী ]
** ১৯৮২ সালে এরশাদ সে কবরে গাছ লাগান । উপরে আস্তর দেন ।
** ২০০৭ সালে জেনারেল মঈনুদ্দিন-ফখরুদ্দিন কবরে গণতন্ত্রের হাড়্গুলো গুড়া করে বিদায় নেন ।
** পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে কবর ঢুকেন এবং ২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারীতে শেখ হাসিনা কবরে খুলি-হাড়ের গুড়া গলো একদম গুম করে দিলেন ।
মুলত এই সংকটের পিছনে সক্রিয় ভুমিকা কাদের ? তারা হলেন মস্কোপন্থী কম্যুনিষ্ট ব্লক । আপনি পিছনে তাকান । ১৯৭১ সালের আগেই এই অঞ্চলে কম্যুনিষ্ট ২ভাগে বিভক্ত ছিল । পিকিং এবং মস্কোপন্থী হিসাবেই তাদের পরিচিতি ছিল । সাম্যবাদী দল নোয়াখালীর তোহা ছিলেন পিকিং এবং মনি সিং ছিলেন মস্কোপন্থী । পিকিং পন্থীরা জামায়াতে ইসলামীর মতই অখন্ড পাকিস্তানের পক্ষে ছিল । কারন চীন চায়নি পাকিস্তান ভেংগে তার একটি অংশ ভারতের করদ রাজ্যে পরিনত হোক । শেখ মুজিব মৃত্যুর পর চীন বাংলাদেশের স্বীকৃতি দেয় । এই দেশের চীনপন্থী বামরা আস্তে আস্তে বিএনপিতে বিলিন হয়ে যায় । আর বিএনপিও পশ্চিম হতে পুর্বমুখী ছিল বরাবর । চীন বাংলাদেশের ভাল বন্ধু । তারা সব সময় ভারতের প্রভাব মুক্ত স্বাধীন বাংলাদেশই চায় । ভারত-চীন সীমান্ত সংকট এবং নানাবিধ কারনে চীন-ভারত বিরোধ লেগে আছ । ভুরাজনৈতিক-অর্থনৈতিক দিক হতে বাংলাদেশকে চীন গুরুত্বের সাথেই বিবেচনায় রাখে ।
মস্কো-ভারত-ইসরাইল যৌথভাবেই পাকিস্তান ভাংগার মুখ্যভুমিকা নেয় । মরহুম তাজউদ্দিন সাহেব মস্কো পন্থী ছিলেন । ১৯৭২ সালের সংবিধানে '' সমাজতন্ত্র ''এবং '' সেক্যুলারিজম '' তাদের সুবাদে প্রবেশ করে । আমাদের মস্কোপন্থীরা মার্ক্সজিমের পরিবর্তে লেলিনবাদে বিশ্বাসী । যারা গণতন্ত্রই মানে না । তারা শেখ মুজিবের ঘাড়ে চরে '' বাকশাল '' কায়েম করে । সব দল নিষিদ্ধ হয়ে যায় । ৪ পত্রিকা রেখে বাকীগুলো বন্ধ করে দেয় । এখন সে মস্কো-ভারত-ইসরাইলী ভুত শেখ হাসিনাকে কবজা করে ফেলেছে । তাদের ফাঁদে পা দিয়ে শেখ হাসিনা একটি ভোটারবিহীন [৯ কোটি ভোটারের সাড়ে আট কোটি ভোটার ভোটাধিকার বঞ্চিত ] নির্বাচনের মুখোমুখী হলেন । মুলত অঘোষিত '' বাকশালই '' প্রতিষ্ঠা করলেন । সে মস্কো-ভারত-ইসরাইলের সহযোগিতা নিয়েই শেখ হাসিনা এগিয়ে যাচ্ছেন ।
বাংলাদেশের সংকট নিয়ে উদ্বিগ্ন বৃটেন । ৫তারিখের ভুয়া নির্বাচন বাতিল করে দ্রুত সকল দলের অংশগ্রহনমুলক গ্রহনযোগ্য নির্বাচন চায় তারাও । এই নির্বাচন নিয়ে তারা পার্লামেন্টে প্রস্তাব পাশ করে হতাশা ব্যক্ত করেছে । জাতিসংঘ , আমেরিকা , ইউরোপীয় ইউনিয়ন , কমনওয়েলথ হতাশা-উদ্বেগের কথা জানিয়েছে ।
http://www.amardeshonline.com/pages/details/2014/01/17/232483#.UthMLPstk9Q
ইউরোপিয় পারলামেন্টে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের তাগিদ দিয়ে প্রস্তাব । ৫ তারিখের নির্বাচনে তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে । এটা হলো বিশ্বের একমাত্র ক্ষমতাধর পার্লামেন্ট ।
http://www.amardeshonline.com/pages/details/2014/01/17/232485#.UthOX_stk9Q
আমেরিকার সিনেটেও একই ধরনের প্রস্তাব পাস হয়েছে ।
*****মুল সংকট নির্বাচন মার্কা গণতন্ত্র *******
দলের ভিতরেই গণতন্ত্রের চর্চা নেই । দেশের মানুষকে কি উপহার দিবেন ? দেশের সাধারন মানুষ দেখেছে গণতন্ত্র মানি শুধু ভোট । প্রতি ৫বছর পর পর পাবলিক এর স্বাদ নেয় । তবে এবার তাও জোটেনি । এখানে ওয়েষ্টার্ন ডেমক্রেসি দল-নেতাদের কাছে জিম্মী । পারিবারিক সিন্ধুকে তালামারা থাকে । জনতার ম্যান্ডেট দরকার হয় না । সংসদ সদস্য পদ হিসাবে ভাগাভাগি হয় । রাজনৈতিক ক্যারিয়ার লাগেনা । চাপাবাজ-ধণী- ব্যবসায়ী- দুর্নীতিবাজ - গডফাদার-চামচাদের জন্যে উম্মুক্ত । দেশপ্রম-জনসেবা নিস্প্রয়োজন ।
জাতীয় সংসদ হোল '' রাবার স্ট্যাম '' । কেউ বলেন '' মাছের বাজার '' । কেউ বলেন '' শুয়রের খোয়াড় '' । কেউ বলেন '' গালিগালাজ শিল্প '' । একটি লাভজনক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান । আল্প সময়ে কোটি কোটি টাকা-সম্পদের মালিক হতে পারেন । স্বামী-স্ত্রী - মামু-ভাইগ্নার পার্লামেন্ট । গণতন্ত্রের ফুটন্ত '' বিষবৃক্ষ >যাক্কুম ফল ।
গণতন্ত্র নামক বৃক্ষটি এখানে বিকাশিত হয়নি । একটি বৃক্ষ বেচা থাকা এবং বিকশিত হতে যে শর্ত-ধাপ অতিক্রম করতে হয় । তাহা বাধাগ্রস্ত হলে বৃক্ষ মারা যায় । মাটি , পানি , বায়ু এবং আলো-তাপ এর একটির অভাব হলে বৃক্ষ বাচে না । তেমনি জনমত , সুশাসন , সহিঞ্চুতা , সমঝোতা , চিন্তা-মতামতের স্বাধীনতা , স্বাধীন বিচারব্যবস্থা , মেধা-সততা-অভিজ্ঞতা ,জাতীয় ঐক্য প্রভৃতি মৌলিক বিষয়াবলী উপেক্ষিত হলে গণতন্ত্রের স্থান দখল করে ফ্যাসিজম-চরম স্বৈরতান্ত্রিক একদলীয় অপশাসন । এই জাতীয় সরকার দেশ-জাতির জন্যে ভয়ংকর দানবে পরিনত হয় । নির্বাচনের পুর্বে এই শাসক দল গুলো মুখরোচক-আকাশ কুসুম স্বপ্ন দেখিয়ে পাবলিকে করে বিভ্রান্ত । ক্লান্ত-শ্রান্ত-বিয়োগান্ত-জড়াগ্রস্ত দিক ভ্রান্ত পাবলিক তাদের কাছে পরাস্ত-জিম্মী ।
এই জিম্মী দশা হতে পাবলিক মুক্তি চায় । তারা অন্য-বস্র-শিক্ষা-চিকিতসা-বাসস্থানের গ্যারান্টি চায় । চায় জীবনের নিরাপত্তা । চায় তার ভোটের অধিকার । চায় সুশাসন । চায় ন্যায় বিচারের নিশ্চয়তা । অধিনতার দাসখত তারা চায় না । হিংষ-বিদ্বেষ-সংঘাত-সংঘর্ষ-বিভাজনের নোংরা পলিট্রিক্স তারা এক মুহুর্তের জন্যেও চায় না ।
বিষয়: বিবিধ
১৭৩৪ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
বাংলাদেশ এখন এক নির্মম-বর্বর জমিদারের লাঠি-গুলি-লগি-বৈঠা-চাপাতি শাসনের শান্তিপূর্ণ পরগনার নাম!
মন্তব্য করতে লগইন করুন