সম্মানীত দুই ম্যাডাম কি ভাবছেন ? '' আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি '' না '' ! আমি '' গণভবন '' বেশী ভালবাসি !
লিখেছেন লিখেছেন আবরার ২৭ জুলাই, ২০১৩, ০৪:২২:০৭ বিকাল
বাংলার মাটি , দুর্জয় ঘাটি । গাঁও -গ্রামের মানুষগুলো এখানে বড়ই খাঁটি । নেই অনেকের ভিটা-মাটি । তবুও নেই কান্না কাটি । মাটির ঘরে নেই শীতল পাটি । পথে -ঘাটে যতসব কাঁদা -মাটি । ঝড় -তুফান , রোদ -বৃষ্টি নিত্যদিনের সহপাটি । চাইনিজ-বিরানী-ব্রুস্ট -পিজাতে নেই তুষ্টি । তৃপ্তি তাদের ডাল-ভাত , শাক-লতা-পাতা চুনপুটি । নেই শহুরে কাটাকাটি -ফাটাফাটি । মিলেমিশে আছে সব বেটাবেটি । অপছন্দ রাজনীতির ঘাঁটাঘাঁটি । জীবন তাদের খুবই পরিপাটি ।
এই নিখাত নির্ভেজাল গ্রামবাসী মন উজার করে গায় '' আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি '' । কালা-ধলা , ধনী-গরীব একঘাটে গোছল -ওজু ,একই মসজিদে-ঈদগাহে নামাজ পড়তে আসি । পাড়া-পড়শী থাকি পাশা-পাশি । নেই হিংষা -বিদ্বেষ ,রেষারেষি । নদী-নালা , খাল-বিল , গাছ-গাছালি যেমনি পাশা-পাশি আমরাও তেমনি কাছাকাছি । আমরা গাঁও গ্রামের পল্লীবাসি । দুই ম্যাডামকে ভাল বাসি । এখন আমরা বিভক্ত হয়ে গেছি । ঘরে-বাড়ীতে-সমাজে --গ্রামে সবখানে ভাগাভাগীতে ব্যস্ত হয়ে পরেছি । আমরা সুস্পষ্টভাবেই দেখতে পাচ্ছি ----
সমুদ্রে ভয়াল সাইক্লোন সৃষ্টি হয়েছে । কেন্দ্রবিন্দুতে দুই ম্যাডাম রয়েছে । ক্ষমতাধর ম্যাডামদের হাতে সাইক্লোন রিমোর্ট আছে । মহাবিপদ সংকেত চতুর্দিকে ছড়িয়ে পরেছে । '' ইসি '' সকল সাইক্লোন সেল্টার ভাঙ্গার আয়োজন করেছে ! রেড ক্রিসেন্ট সাইরেন বাজাচ্ছে । '' ডিসি '' এসপি '' নতুন বাঁশি নিয়ে '' কন্ট্রল রুমে '' অবস্থান নিয়েছে । দলীয় ক্যাডার গুলো রামদা-বস্তা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পরেছে । দেশপ্রেমিক -ত্যাগীনেতারা গোমট অন্ধকার দেখতে পাচ্ছে । তারা পাতি নেতা এবং ম্যাডামদের ভয়ে চোখ মুখ বন্ধ করে নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে । টাইগার গুলো দুরে বসে তামাসা দেখছে । ঐদিকে সাইক্লোনের কেন্দ্রবিন্দুতে ঝড়ের গতিবেগ বৃদ্ধি পাচ্ছে । সৃষ্ট ঝড়টি প্রচন্ড শক্তি অর্জন করতে যাচ্ছে ।
যে কোন সময় সাইক্লোনটি প্রচন্ড বেগে দেশের সকল এলাকায় আঘাত হানতে পারে । বিরাট ধবংস যজ্ঞ হতে পারে । এই সামুদ্রিক ঝড়ে শহর বাসি রক্ষা পেতে পারে । এই ঝড় আম পাবলিকের বেশী ক্ষতি করে । শহরের মানুষ গুলো চালাকি করে বেঁচে যেতে পারে । তারা থাকে বড় বড় পাকা ঘরে । ঝড়-তুফান আসে শুধু গরীবের তরে । তাদের নিরীহ কাচা ঘরে । সাজানো বাগানে আর ক্ষেত-খামারে । তারাই জ্বলে পুড়ে মরে । তাদেরই হাস-মুরগী -গরু-ছাগল মরে কাতারে কাতারে ।
আম পাবলিক দেখতে আছে দুই ম্যাডাম বসে আছেন ঝড়ের কেন্দ্র বিন্দুতে বহাল তবিয়তে । ঝড় সৃষ্টি , গতি বৃদ্ধি ,চারিদিকে ছড়িয়ে দেয়ার মাল-মশল্লা তাদের হাতে । দুই রিমোর্ট দুইজনার সাথে । পাল্টাপাল্টি চলেছে দিনে রাতে । একজন বসে আছেন ঘোড়ার পিঠে , লাগাম ধরেছেন শক্ত হাতে । ঘোড়ার সাথে নিজেকে বেঁধেছেন মোটা রশিতে । চলেছে ঘোড়া রেশা ধবনিতে । ঝড়ের প্রচন্ড তান্ডব দেখে ঘোড়া চলেছে পাগলের মত দিক বেদিক লাফাতে লাফাতে । যাচ্ছে ঘোড়া পানিতে ডুবতে - মরতে । তবুও সাহসী ম্যাডাম বসে আছেন চাবুক হাতে । গায়ের জোরে ২ হাতে চাবুক মেরে মেরে ডুবন্ত ঘোড়া চান উঠাতে ।
আর এক ম্যাডাম আছেন পাল্কিতে । ঝড়ের তান্ডবে সমুদ্রের উত্তাল ঢেউ ধেয়ে আসছে নদীতে । প্রচন্ড ঝড় সৃষ্টির মাল মশল্লা আছে তার হাতে । বিপরীত ঝড়ের গতিবেগ চান থামাতে । ডুবন্ত ঘোড়া চান তুলতে । আগের ম্যাডাম চান না নামতে । আছেন এখন বড় মসিবতে । ঘোর অন্ধকারে বসে ভাবছেন সোয়ারীতে । কত সময় দরকার ঐ ম্যাডামকে নামাতে ? নাছর বান্দা ম্যাডামেরে কেউ পারেনা থামাতে । পাল্কিতে বসে পারবেন না ম্যাডামেরে নামাতে ।
যদি পারেন পাল্কির দরজা ভাংতে , যদি পারেন মাটিতে হাটতে ,জনতার কাতারে চলতে , জনতার ভাষা যদি পারেন বুঝতে , যদি পারেন জনতার হাত ধরতে - আস্থায় আসতে , তাদের সাড়িতে পারেন বসতে তাইলে দেখতে পাবেন ,ডুবন্ত ঘোড়া একলাফে সামনে খাড়া , হাটু গেরে বসে যাবে স্বেচ্ছায় পিঠে নিতে ।
ক্ষমতার মোহ ত্যাগ করুন । জনতার আমানত জনতাকে ফেরত দিন । ক্ষমতা বদলের পথ সহজ করুন । '' গণভবন '' হতে জেলখানার দুরত্ব বেশী নয় । এই কথা ভুল নয় । ম্যাডামদের কি সেই কথা স্মরন হয় ? ইতিহাস কয় , কোন ক্ষমতা লোভীর ক্ষমা নয় । কোরআন কি কয় ?
'' বল , হে আল্লাহ , সমস্ত রাজ্য-সাম্রাজ্যের মালিক !
তুমি যাকে চাও রাজ্য দান কর ,
আর যার নিকট হতে ইচ্ছা কেড়ে নাও ।
যাকে চাও সম্মান দান কর ,
আর যাকে চাও অপমানিত-লাঞ্চিত কর ।
সকল প্রকার মংগল -কল্যান তোমারই ইখতিয়ারে রয়েছে ,
নিশ্চয়ই তুমি সর্বশক্তিমান ।''
[ সুরা আল ইমরান -২৬ ]
বিষয়: বিবিধ
১২৮৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন