গ্রীন সিগন্যালঃ নীল নকশার নির্বাচন---এরশাদ হবেন বিরোধী দলীয় প্রধান !!!
লিখেছেন লিখেছেন আবরার ০১ জুলাই, ২০১৩, ১০:১৪:৪৩ রাত
রাজনৈতিক ময়দানে ডিগবাজীতে এরশাদ চ্যাম্পিয়ান । গণতন্ত্র হত্যাকারী এই স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পরিক্ষীত সাথী । এরশাদের কোন কাজেই '' আনহেপী '' নন নেত্রী । শেখ হাসিনার দুরদিনে '' ভাই '' হিসাবে পাশে আছেন এবং থাকবেন । মহাজোট ছাড়ার ঘোষনা একদম ফালতু । সেদিন প্রধান মন্ত্রীর সাথে দেখা করার ২ দিন আগে ভারতীয় হাই কমিশনার এরশাদ সাহেবের সাথে দেখা করে সব কিছু ফাইনাল করে দিয়েছেন । এরশাদ দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করবেন । বিএনপি-জামায়াতকে মাইনাস করেই এই নির্বাচন হবে । কিছু ভান্ডারী-মাজারী এবং একজন পীর সাহেবের নেতৃত্বে একটি '' ইসলামী ফ্রন্ট '' হবে । এরশাদ সাহেব এবং বাহাউদ্দিন সাহেব [ইনকিলাব ] এই দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন একটি '' গ্রীন সিগন্যাল '' এর আলোকে । এরশাদ সাহেবের বক্তব্য এবং সম্প্রতি ইনকিলাবের ভুমিকা সেই ইঙ্গিত দিচ্ছে । কিছুদিন আগে ইত্তেফাক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এবং এরশাদ সাহেব বৈঠক করেছেন । একই কেন্দ্রবিন্দুতে একই বৃত্তের ধোয়াটে ঘুর্ণন চলেছে ।
এরশাদ সাহেবের বগলে ইট আর মুখে শেখ ফরিদ । তার কথা -কাজে কোন মিল নেই । বিগত ৬/৭ বছর এরশাদ নিরাপদে আছেন । দৃশ্য-অদৃশ্যভাবে তিনি বড় ধরনের সুবিধা ভোগ করেছেন । '' ইউনিয়ন ব্যাংক '' একটি উদাহারন । সংবিধানের ৭ম সংশোধনী বাতিলের পর তার শাস্তি অনিবার্য ছিল । শেখ হাসিনার শুভ দৃষ্টির বদৌলতে সাময়িকভাবে রক্ষা পেয়েছেন । অবৈধ সামরিক কর্মের অপরাধে তাকে পুনরায় লালঘরে যেতে হবে । এমন ভয় থেকে তিনি মুক্ত হতে পারেন নি । শেষ বয়সে এসে আর জেল খাটতে চান না । রাষ্ট্রপতি হওয়ার স্বপ্ন এখন আর দেখেন না । এখন তিনি বৃদ্ধ বয়সে বিরোধী দলীয় প্রধান হওয়ার স্বপ্নে বিভোর । সম্ভবত ছোট খাটো ৪/৫ টা দল নিয়ে একটি আলাদা জোট গঠন করতে চান । এই জন্যে সরকার বিরোধী বক্তব্য নিয়ে মাঠে অভিনয় শুরু করেছেন ।
রাজনীতির মঞ্চে এই অবিশ্বস্থ বন্ধু আওয়ামী লীগের জন্যে লাভজনক হলেও বিএনপির জন্যে অলাভজনক ভাঙ্গা কাঁচের স্তুপ । কখনই এরশাদ বিএনপির বন্ধু হয়নি । বন্দুকের নলের মুখে বিএনপিকে ক্ষমতা চ্যুত করেছিল । দিল্লীর রাডারের নীচে তার অবস্থান । ভেল্কীবাজী-ডিগবাজী-ভাওতাবাজীতে সুপারম্যান । তার কথা দলীয় লোকেরাই বিশ্বাস করে না । সাধারন মানুষের কোন আস্থা তার উপর নেই । বর্তমানে তার দলে ২টি ধারা স্পষ্ট । কট্টর আওয়ামী বলয় এবং কট্টর আওয়ামী বিরোধী বলয় । ২ বলয়ের চাপে তিনি দিকভ্রান্ত । সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন । অস্পষ্ট তার ভুমিকা । নীল নকশার নির্বাচনে অংশ গ্রহন তার জন্যে বড় ধরনের বিপদ ডেকে আনবে । দলে ভাঙ্গন সৃষ্টি হবে । কাঁচের ঘরের মত তার ক্ষমতার স্বপ্ন টুকরা টুকরা হয়ে যাবে । আওয়ামি লীগের ব্যর্থতা - বিপর্যয় তাকে পুনরায় শ্রীঘরে নিক্ষেপ করবে ।
আম জনতা ধোকাবাজী পছন্দ করে না । স্বচ্ছতা -সততা - আন্তরিকতা এবং দেশপ্রেম মানুষ ভালভাবেই বুঝে । দিনের আলোতে হুজুরদের কাতারে আর রাতে মাজারে বোনের দরবারে ছুটাছুটি গোপন থাকে না । দেশের মানুষ এখন এত বোকা না । তারা এখন অনেক খবর রাখে । অনেক স্বচেতন । রাজনৈতিক ময়দানে যারা চোরাবালিতে পা রাখেন তাদের পতন কেউ ঠেকাতে পারে না । সিদ্ধান্তহীনতা - অদুরদর্শীতা - অস্বচ্ছতা - মুনাফেকী আচরন বড় বড় নেতাকে ডাস্টবিনে নিক্ষেপ করেছে । সেখান হতে ফিরে আসা অসম্ভব । এরশাদ সাহেবকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তিনি কি জনগনের ভালবাসা চান না ঘৃনা-ক্ষোভ নিয়ে রাজনিতির মঞ্চ হতে বিদায় নিবেন ? স্বৈরাচার উপাধি হতে নিজকে মুক্ত করতে পারবেন কি ? সামনে কঠিন পরীক্ষা । এটা তার জিবনের শেষ পর্বের চুড়ান্ত পরীক্ষা । সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হলে অশুভ পরিনতি নিশ্চিত ।
দেশ চলেছে একক নেতৃত্ব - কতৃত্বের খেয়াল খুশি বাস্তবায়নের পথে । রাহবার জানেন না এই পথের শেষ কোথায় । সামনে এক বিশাল ব্লাক হোল । এই অশুভ ভয়ানক পরিনতি হতে দেশ এবং জাতিকে রক্ষা করতে অসীম সাহসী পদক্ষেপ নেয়া ছাড়া উপায় নেই ।
বিষয়: বিবিধ
১৫৯১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন