বিএনপি - জামায়াত- হেফাজতের দুরত্ব কমে আসায় আতংকিত ১৪ দল এবং তথাকথিত সুশীল সমাজ ।
লিখেছেন লিখেছেন আবরার ১৮ জুন, ২০১৩, ০৪:০১:২৪ বিকাল
মহাজোটের নীল আকাশে এক সাথে তাদের ৪ '' তারা '' খসে পড়েছে । তাতে আকাশ কিছুটা ঝাপসা হয়েছে । তা নিয়ে তাদের মাথা ব্যথা খুব বেশী নেই । আসল ব্যথা '' বিএনপি - জামায়াত - হেফাজত '' এর দুরুত্ব কমে আসা । ১৬ - ১৭ জুনে প্রকাশিত দৈনিক গুলোর প্রতিবেদন ,সম্পাদকীয়-উপসম্পাদকীয় কলামে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে যে , স্থানীয় -জাতীয় নির্বাচনে ইসলাম পন্থীরা বড় ফ্যাক্টর জয় -পরাজয় নির্ধারনে । এটি একটি প্রমানিত সত্য । ৪ সিটি নির্বাচনে তা প্রমানিত হয়েছে ।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দলের ঝাপসা মুখমন্ডলে কৃত্রিম হাসি ফুটাবার চেষ্টা করেছেন । তিনি জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছেন --এই বিজয় সরকারের এই বিজয় গণতন্ত্রের । সাথে প্রধানমন্ত্রী এক বাক্যবানে গোটা দেশ ঝাপসা করে দিলেন । তিনি বলেছেন --
**** '' তত্ত্বাবোধায়ক চাইলে নির্বাচনই হবে না ।''
******এর আগে বলেছেন -- '' ২৫ অক্টোবর সংসদ ভেঙ্গে দেয়া হবে '' ।
সরকার প্রধানের বক্তব্য । এই বক্তব্য নিয়ে বিরোধী মহল এবং বিশিষ্ট্য ব্যক্তিদের ভিতর ঝড় বইছে । কেউ বলেছেন গণতন্ত্রের জন্যে অশ্বনিসংকেত । কেউ বলেছেন আপত্তিজনক । কেউ বলেছেন সংবিধান বিরোধী । আসলে প্রধানমন্ত্রীর ২ টি বক্তব্য পুরাপুরি সাংঘর্ষিক , অসাংবিধানিক এবং অগণতান্ত্রিক -ফ্যাসিবাদী মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ । আমাদের প্রশ্ন জাগে ----
১] আর একটি নির্বাচন সম্পন্ন করার পুর্বে সংসদ ভাঙ্গার পথ সংবিধানে রেখেছেন কি ? প্রধানমন্ত্রী সংসদ ভাংগার ক্ষমতা আছে কি ? তিনি রাষ্ট্রপতিকে অনুরোধ করতে পারবেন কি ? ভেংগে দেয়ার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতিকে দেয়া হয়েছে কি ?
২] সংসদ ভেংগে গেলে কেউ কি নির্বাচিত প্রতিনিধি থাকে ? তখন তো সবাই অসাংবিধানিক হয়ে যাবেন । দলীয় সরকারের সুযোগ কোথায় ? সংসদ ভাংগার পর অনির্বাচিতদের দ্বারা সরকার গঠন ছাড়া কোন রাস্তা খোলা আছ কি ? চলতি সংসদের মেয়াদ পুর্ন হবে জানুয়ারী ৩য় সপ্তাহে ২০১৪ । প্রধানমন্ত্রী ৩ মাস আগে সংসদ ভাংতে চান কেন ? নিশ্চয়ই একটি আগাম নির্বাচনের লক্ষ্যে ?
৩] কিন্তু এখন বলেছেন --তত্ত্বাবোধায়ক চাইলে নির্বাচনই হবে না । সরকার প্রধানের এমন বক্তব্যের অধিকার আছে কি ? যেখানে দেশের ৯০ ভাগ মানুষ তত্ত্বাবোধায়ক বিধান চায় । সেখানে এই বক্তব্য কেন ? তিনি কি পাবলিকেরে হুমকি দিচ্ছেন ? তা হলে কি তিনি বর্তমান সংসদকেই চলমান রেখেই ক্ষমতা স্থায়ীভাবে পাকাপোক্ত করতে ষড়যন্ত্রের ছক এঁকেছেন ? একটি সংসদ জীবিত রেখেই আর একটি সংসদ নির্বাচনের কুটচাল ব্যর্থ হলে সংবিধানের দোহাই দিয়ে প্রধানমন্ত্রীত্ব টিকিয়ে রাখতে চান ?
৪ সিটি নির্বাচনে পাবলিক প্রধানমন্ত্রীকে '' না '' বলেছে । পাবলিক তাদের মনের কথা এবং মুখের ভাষা ব্যালটের ভিতর দিয়ে প্রকাশ করেছে । কয়েকটি পত্রিকা দেখুন ---
***** দৈনিক ইত্তেফাক । ১৭/৬/১৩ ।*****
পদ্মাসেতু দুর্নীতি , শেয়ার বাজার ধস , বিরোধী দলের প্রতি অসহিঞ্চু আচরন , ছাত্র-যুব লীগের অপকর্ম , হেফাজতের প্রতি নির্মম অভিযান , বিরোধী দলের ঐক্য ইত্যাদি তাদের বিপর্যয়ের কারন হিসাবে চিহ্নত করেছে ।
http://www.ittefaq.com.bd/index.php?ref=MjBfMDZfMTdfMTNfMV8xXzFfNDkyODQ=
****** দৈনিক মানব জমিন *****
ক্ষমতাসীনদের প্রতি জনগনের অনাস্থা ।
http://www.mzamin.com/details.php?nid=NTg4MDk=&ty=MA==&s=MzY=&c=MQ==
আলেমদের গুলি করে হত্যার জবাব জনগন দিয়ে দিয়েছে সিটি নির্বাচনে ।
http://www.mzamin.com/details.php?nid=NTg4ODg=&ty=MA==&s=MTk=&c=MQ==
***** দৈনিক ইনকিলাব ******
মানুষ ইসলাম পন্থীদের উপর দমন - পীড়ন ভাল্ভাবে নেয়নি
http://www.dailyinqilab.com/details_news.php?id=115087&&%20page_id=%205
******দৈনিক জনকন্ঠ *****
বিব্রত-হতবাক-হতাশ আওয়ামী লীগ ।
http://www.dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=15&dd=2013-06-17&ni=139304
*******দৈনিক যুগান্তর *****
পালটে যাচ্ছে জোট ও ভোটের রাজনীতি ।
http://www.jugantor.com/first-page/2013/06/17/5728
প্রায় সকল পত্রিকা এই পরাজয়ের কারন নিয়ে লিখছে । রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমত প্রকাশিত হয়েছে । আওয়ামী বলয় প্রার্থীদের হেবী ওয়েট বলে সেইভ সাইডে যেতে চান । আওয়ামী দুঃশাসন -ফ্যাসিবাদী আচরনে ভরাডুবি হয়েছে তা মানতে চাইছেন না । বিরোধী পক্ষ দমনে হার্ড লাইন এবং ইসলাম পন্থীদের উপর ক্রাক ডাউন --গণহত্যা এবং ব্যাপক দুর্নীতি তাদের পতনের মুল কারন । তা বুঝতে ভুল করলে আরো চড়া মুল্য দিতে হবে আওয়ামী লীগ কে । বর্হিবিশ্বে জামায়াত - হেফাজতকে জঙ্গি হিসাবে চিহ্নত করতে গিয়ে চরম রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস করে নির্বিচারে নিরীহ মানুষ হত্যা করেছে , রিমান্ডের নামে মাহমুদুর রহমান , হেফাজত নেতা আল্লাহমা বাবুনগরী , মেধাবী ছাত্র নেতা শিবির শভাপতি দেলোয়ার হোসেন কে চরম নির্যাতন করে পংগু করে দিয়েছে । তাদের সহযোগী মিডিয়া ব্যাপক প্রোপাগান্ড চালায় সরকারের পক্ষে । তা আজ হিতে বিপরীত ফলাফল এনে দিয়েছে । ১৪ দলের কর্মকান্ড বিএনপি-জামায়াত-হেফাজতের দুরত্ব কমিয়ে দিয়েছে । তারা এখন দৃঢ় ঐক্য গড়তে স্বক্ষম হয়েছে ।
এখন আওয়ামী লীগকে আর একটি শাহাবাগ বানাতে হবে । হেফাজত-জামায়াতের উপর আর একটি বড় ধরনের --গণহত্যার - আয়োজন করতে হবে ! না হলে জাতীয় নির্বাচনে তারা বড় '' ফেক্টর '' হয়ে দাঁড়াবে । তবে বন্ধুরা মনে রাখুন এই ফেক্টর নির্মুলে যত হার্ড লাইনে যাবেন তত বেশী শক্তিশালী ফেক্টরে পরিনত হবে । সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসলে হাঁস যেমন দিকভ্রান্ত হয় তেমনি আওয়ামী সুশীল গলো ভ্রান্ত-ক্লান্ত - আতংকিত হয়ে পড়েছে । শত চেষ্টা করেও বিএনপি-জামায়াত-হেফাজতে অনৈক্য সৃষ্টি করা যায়নি । আজ দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকেই বাংলাদেশের একমাত্র জংগীবাদী -সন্ত্রাসী -খুনী দল হিসাবে মনে করে । মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আর কত আলেম-ওলামা-নিরীহ মানুষ হত্যা করতে চান ? শাপলা চত্ত্বরের শহীদের রক্তের মাটিতে আপনার দলের পতনের বীজ বপন করেছেন । চার সিটিতে সে বীজের ভ্রুণ মাটি ভেদ করে প্রকাশিত হয়েছে । দয়া করে উলটা পথে হাটা বন্ধ করুন । জনগনের মনের কথা এবং মুখের ভাষা বুঝার চেষ্টা করুন । দেয়ালের লিখা পড়ুন । সুনাম সুখ্যাতি নিয়ে বেচে থাকুন । দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ভাবুন । দল নয় -দেশের মানুষ কি চায় তা বিবেচনায় নিন ।
বিষয়: বিবিধ
১২৮৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন