শ্রেষ্ঠ্য অভিনয় শিল্প '' আওয়ামী লীগ ''

লিখেছেন লিখেছেন আবরার ২০ মে, ২০১৩, ০৭:৩৪:১৭ সন্ধ্যা



রাজনৈতিক ময়দান বলেন আর দেশ পরিচালনার কথাই বলুন । সবখানে তারা সমানে সমান । অভিনয় শিল্পে শ্রেষ্ঠ্যত্যের দাবীদার । তাদের কথা এবং কর্মকান্ডে তা আপনি দেখতে পাবেন । পাকিস্তান আমলে তারা ১৩ মাস গদিতে ছিল । তখন একটা শ্লোগান ছিল '' ১৩ মাসের গদির ফল বলাকা সিনেমা হল '' । ৬০ বছর বয়সী রাজনৈতিক স্বচেতন ব্যক্তিমাত্র তা জানেন । ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালো রাতের পুর্বদিন পর্যন্ত শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার বিষয় নিয়েই ইয়াহিয়া খানে সাথে সংলাপ করেছেন । আওয়ামী অনেক নেতা ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরের পুর্বদিন পর্যন্ত পাক সরকারের অনুগত ছিলেন । পাক সরকারের সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করেছেন । মুজিব পরিবার , মখা আলমগীর তার ভিতর উল্লেখ্য যোগ্য ।

বর্তমানে দেশের সংকট উত্তরনে সংলাপ নাটক শিল্পে শ্রেষ্ট্যতম স্থানে আওয়ামী লীগ । বেগম জিয়া আলোচনার আহবান জানালেন । ১০ টি মুসলিম দেশ উদ্যোগ নিল । দেশের বিশিষ্ঠ্যজন বার বার আবেদেন জানান । ইউরোপিয় ইউনিয়ন , যুক্ত্রাষ্ট্র এবং জাতি সংঘ চেষ্টা চালালো । মাথা আমাদের ব্যাথা বিদেশীদের । লজ্জা -শরম নেই আমাদের । তবুও গভীর অন্ধকারে একটু আলোর চমকানি । সৈয়দ আশরাফ ২/১ দিনের ভিতর বিরোধী দলকে চিঠি দেয়ার ওয়াদা দিলেন । বাম ফাদে পা দিয়ে ওয়াদা ভুলে গেলেন । আরো বেশী হার্ড লাইনে পা বাড়ালেন । অঘোষিতভাবে দেশে জরুরী অবস্থা জারি করলেন । আগাম নির্বাচন করার কথা ভাবছেন । রিফারী বিহীন খেলার মাঠে একাই খেলতে যাচ্ছেন । সংকটকে আরো ঘনীভুত করলেন ।

কুটচাল , ষড়যন্ত্র , কৌশল-অপকৌশলের গ্যারাকলে বিএনপি সিদ্ধান্তহীনতায় ঘুরপাক খাচ্ছে । নেতা গ্রেপ্তারে আছে সীমাহীন নাটকীয়তা । মাঠে সক্রিয় নেতাদের উপর মামালার পর মামলা আর রিমান্ডের পর রিমান্ড চলেছে । অপর দিকে দ্বিতীয় সাড়ির অনেক নেতাকে ছাড় দিয়ে বিএনপিকে সন্দেহের দোলাচালে ফেলেছে । তলে তলে কারো সাথে টেলিফোনে সংযোগ নাটক হচ্ছে । কিছু আমরা গাছের ঢেকি বিরোধী নেত্রীর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত করেছে । বেগম জিয়াকে সংলাপ নাটক দেখাচ্ছে । বিরোধী আন্দোলনের গতি থামিয়ে দেয়াই সংলাপ নাটকের মুল উদ্দেশ্য । '' সংলাপ মুলা '' ঝুলিয়ে আওয়ামী লীগ আরামে আছে । সভাসমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষনা বেরামে কাতর বিরোধীরা এবার গ্রামে যান । হেফাজত ''ফ্লাশ আউট । বিরোধীরা কেপিটাল আউট ।

দেশের সকল নির্বাচনে আওয়ামী লীগের একটা ছক বাধা প্রতারনামুলক কৌশল থাকে । উদ্দেশ্য ক্ষমতায় যাওয়া এবং দলীয় স্বার্থ হাসিল করা ।

***** ১৯৭৯ সাল । সংসদ নির্বাচন । তাতে তাদের অংশগ্রহনের পুর্ব শর্ত ছিল - - সেনাবাহিনী হতে জেনারেল জিয়াকে পদত্যাগ করতে হবে । ১৯৭৪ সালে তাদের পাশ করা ৪র্থ সনহশোধনী বাতিল করতে হবে । জিয়া সরকার কোন দাবী মানে নি । তারা সেই নির্বাচনে অংশ গ্রহন করে । ৩৯ টি আসন পায় ।

***** ১৯৮১ সাল । প্রসিডেন্ট নির্বাচন । আওয়ামী লীগের ৪ দফা মানার চরমপত্র -আল্টমেটাম শেষ সময় ১৬ সেপ্টম্বর । সরকার নির্বাচনের তারিখ পিছানো ছাড়া কোন দাবী মানেনি । কিন্তু তারা ১৯ সেপ্টেম্বরে নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষনা দেয় ।

**** ১৯৮৬ সাল । স্বৈরাচার এরশাদের আমল । আওয়ামী লীগ , বিএনপি , জামায়াত এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে শামিল । এরশাদের পাতানো জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কেউ যাবে না । ২০ মার্চ শেখ হাসিনা বললেন ---যারা স্বৈরাচারের নির্বাচনে অংশ নিবে তারা '' জাতীয় বেঈমান '' হিসাবে চিহ্নিত থাকবে । ১দিন পর শেখ হাসিনা উলটে গেলেন ।২১ মার্চ রাতে সকলকে অবাক করে চমকে দিলেন । নির্বাচনে গেলেন । ৭৬ আসন পেলেন । ১ম বারের মত বিরোধী নেত্রী হলেন । বিএনপিকে ল্যাং মারলেন । এরশাদকে টিকিয়ে রাখলেন ।

***** ১৯৯১ সাল । বিচারপতি শাহাবুদ্দিনের নেতৃত্ব ১ম তত্ত্বাবোধায়ক সরকার । স্মরনকালের স্বচ্ছ নির্বাচন । আওয়ামী মিডিয়ার জরিপ এবং আওয়ামী -বাম প্রোপাগান্ডা আওয়ামী লীগ বিজয় লাভ করবে । বিএনপি পাবে ১৫/২০ আসন । কিন্তু জনগন সকল হিসাব নিকাশ পালটে দিল । ধানের শীষের ভারে নৌকা ডুবে গেল । আওয়ামী লীগ সুক্ষ্ম কারচুপির অভিযোগ তুলল । বিএনপি জামায়াতের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করল ।

****** ১৯৮৭ সাল । এরশাদ বিরোধী আন্দোলন তুঙ্গে । জামায়াতের ১০ জন সংসদ সদস্য পদত্যাগ করায় আন্দোলন আরো বেশী বেগবান হল । শেখ হাসিনা দলের সকল সাংসদের পদ ত্যাগ পত্র নিয়ে নিজের কাছে রাখলেন । জমা না দিয়ে এরশাদ কে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেন । ফলে জেনারেল এরশাদ এক পর্যায় সংসসদের বিলুপ্তি ঘোষনা করে পুনরায় ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার উদ্যোগ গ্রহন করেছিল । ১৯৯০ সাল পর্যন্ত টিকে ছিল ।

*******১৯৯৬ সাল । ক্ষমতায় যেতে বাম , ডান , ইসলাম পন্থীদের নিয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে আন্দোলন করে । জামায়াত এবং জাতীয় পার্টি তাদের বড় সহযোগি । নির্বাচনের পর কাউকে ছাড় দেয়নি । এমন ২জন কে মন্ত্রি বানালেন যারা ছোট দলের বড় নেতা । আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এবং আ স ম রব । বাকীরা কোন পাত্তাই পেলোনা ।

******২০০১ সাল । ৪ দলীয় জোটের নিকট আওয়ামি কৌশল হার মানল । শোচনীয়ভাবে পরাজয় । ম খা আলমগীরের আমলাতন্ত্র কোন কামে আসল না । এবার শুরু হল নতুন কৌশল । জোট সরকারকে যেকোন মুল্যে '' ফেলে '' দেয়ার পরিকল্পনা । জনসমর্থন মিলেনি । জোট সরকার হার মানেনি । তারা মেয়াদ শেষ করে বিদায় নেয় ।

***** ২০০৯ - ২০১৩ সাল । ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ । সেনাসমর্থিত সরকার কিভাবে আওয়ামী লীগ কে ক্ষমতায় বসিয়েছে । তা মরহুম আব্দুল জলিল এবং এরশাদ সাহেব প্রকাশ্যে বলে দিয়েছেন । শেখ হাসিনা বাকশালী চিন্তা চেতনায় ডুবে গেছেন । গণতন্ত্রের ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন । নিজেই উস্কানীমুলক আর আক্রমনাত্মক উক্তি ছুড়ে দিচ্ছেন । জনগনের মুখের ভাষা বুঝার বোধশক্তি হারিয়ে ফেলেছেন । নিজের পায়ে একের পর এক কুড়াল মেরে চলেছেন । অন্যের জন্যে ফাঁদের পর ফাঁদ তৈরী করেছেন । দেশে সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছেন । এই সিদ্ধান্ত অবিবেচক , অদুরদর্শী ,অসাংবিধানিক । তাতে সামনে একটি বড় গর্ত তৈরী হতে যাচ্ছে । সেই ধবংসাত্মক গর্তের দিকে তিনি তার সরকারকে নিয়ে যাচ্ছেন । চোখে শুধু অন্ধকার রিনি ঝিনি দেখবেন । আচমকা গর্তে পড়ে যাবেন । উঠতে খুব কষ্ট হবে । গণতান্ত্রিক সমাজে বিরোধীকে ল্যাংড়া করতে চাইলে নিজেকে আতুড়বানাতে হয় ।

বিষয়: বিবিধ

১৪২৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File