আওয়ামী ষড়যন্ত্র আর কুটচালে হেরে যাচ্ছে হেফাজত , জামায়াত এবং বিএনপি !

লিখেছেন লিখেছেন আবরার ১৩ মে, ২০১৩, ০৩:৪৮:২৩ দুপুর



ক্ষমতায় থাকা আর যাওয়া । এই যদি হয় আসল ব্যাপার । তাহলে জনগণ নিয়ে খেলা কেন ? হুজুরদের উপর আক্রমন কেন ? হুজুরদের নিয়ে রাজনৈতিক গেম কেন ? কেউ হুজুরদের উপর ক্ষোভে - আক্রোশে ফেটে যাচ্ছেন । কেউ আবার আগলা দরদে চোখের পানি ফেলেছেন । কেউ আন্তর হতে তাদের সম্মান দেখাচ্ছেন । তবে কেউ কেউ '' কুফাবাসীদের মত '' ভালবাসা দিচ্ছেন । ইরাকের কুফা বাসী ঈমাম হোসাইন রাঃ কে প্রান দিয়ে ভাল বাসতেন । কিন্তু কারবালার প্রান্তরে যুদ্ধের ময়দানে কুফাবাসী ভালবাসার প্রমান দেয়নি । ইসলামের দুশমন ইয়াজিদের বিরুদ্ধে ঈমাম হোসাইন রাঃ এর পাশে এসে দাড়ায়নি । ফোরাত নদীর তীরে ইতিহাসে এক কালো অধ্যায় জম্ম নিয়েছিল । কুফাবাসীর ভালবাসা ইসলামের কোন কাজে আসেনি । আমাদের বিরোধী দলকে নির্দ্বিধায় স্বীকার করতে হবে তাদের ভালবাসাও হেফাজতে ইসলামের মহাবিপদে ৬মে রাতে কোন কাজে আসেনি । বিরোধী দল দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন । বিরোধী নেত্রী হেফাজতের পাশে দাঁড়াতে আহবান জানালেন । কিন্তু তার বাস্তবায়ন নেই । এমন সস্তা জনপ্রিয়তা আর সুবিধাবাদী ভেজাল চিন্তা ত্যাগ না করলে সামনে ভয়াবহ পরিনতির অপেক্ষায় থাকতে হবে ।

****** এখানে হুজুরদের কাম নেই ! ************

আমরা বাংলাদেশে হুজুরদের খুব ভালবাসি । সম্মান করি । কিন্তু মুল্যায়ন করি না । আমাদের সামাজিক-সাংস্কৃতিক-অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক এবং রাষ্ট্রীয় অংগে হুজুরদের মানিনা । এখানে হুজুরদের কাম নেই । উনারা কোরাআন তেলাওয়াত করবেন , খতমে কোরাআন , জানাযার ঈমামতি , নামাজের ঈমামতি ,জুম্মার খুতবা , বিবাহ -তালাক ,মিরাস-ওয়ারিসের হিসাব নিকাশ আর হেফজ খানা মাদ্রাসা নিয়ে পরে থাকবেন । তারা কেন রাজপথে আসবেন ? কেন সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলবেন ? কেন ইসলাম বিদ্ধেষীদের শাস্তি চাইবেন ? কেন অবাধে বিচরনকারী নারীর বিরুদ্ধে যাবেন ? কেন সংবিধানে আল্লাহর প্রতি আস্থার দাবী করবেন ? কেন ধর্মহীন শিক্ষানীতির বিরোধী হবেন ? কেন মাহমুদুর রহমানের মুক্তি চাইবেন ? কেন জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি তুলছেন না ? কেন খালেদা জিয়াকে হুজুরদের সহযোগী ভাবছেন ? হুজুররা কেন মসজিদ - মাদ্রাসা ফেলে মিটিং মিছিল , লং মার্চ , অবরোধ শুরু করলেন ? মসজিদ - মাদ্রাসার মত পবিত্র জায়গা ছেড়ে তারা কেন নষ্ট-ভ্রষ্ট-মিথ্যা -নোংরা রাজনীতির মাঠে এলেন ?

এই মাঠে থাকবে হেগেল -প্লুটো-মার্ক্স - লেলিনন - মেকিয়াভেলী-গোয়েবলসের আধিপত্ব । থাকবে ডায়লেকটিভ বস্তুবাদের রাজত্ব আর শয়তানের প্রভুত্ব । এখানে থাকবে বঙ্গ বন্ধুর আদর্শ । প্রগতির ছদ্মাবরনে থাকবে ধর্মহীনতার জোয়ার । এখানে হুজুরদের কাম কি ? তারা ঢাকা শহরে আসে কেন ? তারা এসেছে গাছ কাটতে , রোড ডিভাইডার ভাঙ্গতে , ব্যাংক লুট করতে , গাড়ীতে দোকানে আগুন দিতে ,কোরাআন -হাদীস পুড়তে , পুলিশ-র‍্যাব-বিজিবি মেরে সচিবালয় দখল করতে !

ভাগ্যিস আমাদের সেক্যুলার মিডিয়া একযোগে খুব সুক্ষভাবে '' হুজুরদের তান্ডবের ছবি '' সুন্দরকরে প্রকাশ করেছেন ! বিগত ৫/৫/১৩ তারিখ হতে এই পর্যন্ত প্রিন্ট এবং ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়া জাতিকে এমন দৃশ্য দেখাতে থাকলেন । মনে হচ্ছে হুজুররা যেন রাজধানী ধবংস করতে এসেছেন ! অর্থ মন্ত্রী দিল্লী গিয়ে জানান দিলেন - হেফাজতে ইসলাম বরবাদ ইসলাম । কিন্তু কতিপয় জারয মিডিয়া ধবংসযজ্ঞের ছবি দিল আথচ তান্ডব সৃষ্টিকারীদের ছবি দিতে পারেনি । তাতে দেশের মানুষ ভালভাবেই বুঝতে পেরেছেন ।সকল অপকর্মের হোতা কারা তা বুঝতে খুব কষ্ট হয়নি ।

******* সরকারের তৈরী ব্লুপ্রিন্ট পাটনার মিডিয়া *******

৫/৫/১৩ তারিখে দেশের আলেম ওলামা দ্বীনদার মুসল্লী সহ লক্ষ লক্ষ মানুষ ঢাকার ৬টি প্রবেশ পথ অবরোধ করলেন । দাবী নাস্তিকদের শাস্তি নিশ্চিত করা । সাথে আনলেন তসবী -জায়নামাজ । মুখে আল্লাহু আল্লাহু যিকির , নারায়ে তাকভীর শ্লোগান , নাস্তিকের ফাঁসী চাই ধবনি । পথে পথে বাধার সম্মুখীন হলেন । কোথায়ও জ্বালাও পোড়াও নেই । ভাংচুর নেই । কোন আক্রমনের ছবি মিডিয়া দেখাতে পারেনি । তারা বায়তুল মোকাররামের উত্তর গেটে সমাবেশ করতে চাইলেন । সরকার শাপলা চত্তরে অনুমতি দিলেন । তারা শাপলা চত্তরের দিকে আসতে থাকলেন । আওয়ামী লীগ অফিস এলাকায় একটি মিছিলে যুবলীগ , ছাত্রলীগ , স্বচ্ছাসেবক লীগ অতর্কিত হামলা চালায় । প্রকাশ্য দিবালোকে পিটিয়ে পিটিয়ে তারা আলেম হত্যা করে । পল্টনে একটি মিছিল পুলিশ ঠেকায় । সুচনা হলো সংঘাত । শত শত হেফাজত কর্মী গুলি বিদ্ধ হল । নিহত হল ৮জন হেফাজত কর্মী । যারা তান্ডব চালালো তারাই আহত হল এবং মারা গেল । অক্ষত থাকলেন যাদের উপর তান্ডব চালানো হল সেই সব গুন্ডা পুলিশ আর আওয়ামী ক্যাডার গুলো । এই হুজুরদের তান্ডব সৃষ্টিকারী জংগীহিসাবে দেশ এবং বিশ্ববাসীকে দেখাতে হবে । তাই পরিকল্পিত হামলা । তৈরী হল ব্লুফীল্ম । আওয়ামী ক্যাডার বাহিনী গাড়ি -বইর দোকানে আগুন জ্বালায় । নিজেরা ছবি তৈরী করে প্রকাশ করল । তাতে নিজেরাই ধরা খেল ।

স্পেনে খৃস্টানরা ধোকা দিয়ে মুসলমানদেরকে মসসিদে ঢুকিয়ে ১লা এপ্রিলে যেভাবে হত্যা করেছিল ঠিক সেই ভাবে আওয়ামী গুন্ডাবাহিনী শাপলা চত্তরে রাতের আধারে আলেম -ওলামাদেরকে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করেছে । এ যেন আর এক কারবালা । রাতে অপারেশনের আগে মিডিয়া তাড়ানো হল । পরে ভোর রাতে ২ ইসলাম পন্থী চ্যানেল বন্ধ করে গণহত্যা চাপা দেয়ার চেষ্টা হল । কালো মেঘের আড়ালে সুর্য্য থাকে তা খুনিরা ভুলে গেলেন । ডিজিটাল যুগে ডিজিটাল কুটচালে সত্য গোপন করবেন । হুজুরদের বেকুব ভাবছেন । দেশের মানুষকে পাগল বানালেন । বিজয়ী হলেন । মনের আনন্দে উল্লাস প্রকাশ করলেন ।

১৮৩১ সালের ৬ ই মে তারিখে বালাকোটে আলেম-ওলামা সহ বিশ হাজার মুজাহীদ শাহাদাত বরন করেছিল । সৈয়দ আহম্মদ ব্রেলভী ছিলেন সেই মুজাহীদ বাহিনীর নেতা । বালাকোর্টের প্রেরনায় উজ্জেবীত ঈমানি চেতনা নিয়েই হেফাজতে ইসলাম শাপলা চত্ত্বরে এসেছিল । শাপলা চত্ত্বর আজ আর এক বালাকোটে পরিনত হল । চেয়ে দেখুন শাপলা চত্ত্বরে তাওহিদী জনতার তাজা রক্তের নীচে আওয়ামি ফ্যাসিবাদী সরকারের নির্মম পরিনতি লিখা হয়ে গেছে ।

*********গণহত্যা চালিয়ে সরকার কি পেলেন ? ********

১] উল্লাস আর আনন্দের হাসি ।

২] হেফাজতে সাময়িক দ্বন্দ্ব কলহ সৃষ্টির সুযোগ ।

৩] হেফাজতের আন্দোলন সাময়িকভাবে স্থগিত এবং স্বস্তির নিঃশ্বাস নেয়ার সুযোগ ।

৪] ইসলাম পন্থী এবং তাদের সহযোগিদের উপর ষ্টীম রোলার চালাবার প্রেরনা ।

৫] সরকার বিরোধী আন্দোলনের গতি সাময়িকভাবে স্থবির করলেন ।

৬] সাথে সাথে সরকার এক ভয়ানক পরিনতি লাভ করতে যাচ্ছেন ।

**** ভোটের রাজনীতিতে মারত্মক বিপর্যয় ।

**** দেশ-বিদেশে ঘৃনিত গণহত্যা কারী মানবতা বিরোধী ফ্যাসিষ্ট হিসাবে স্বীকৃতি ।

**** আওয়ামী লীগ আলেম ওলামা হত্যাকারী ইসলামের দুশমন যা প্রজম্ম হতে প্রজম্ম ঘৃনার সাথে স্বরন করবে ।

**** হেফাজতে ইসলাম প্রচন্ড ঈমানী শক্তি নিয়েই পুনরায় ঝাপিয়ে পরবে ।

**** হেফাজতের সাথে জামায়াত - বিএনপির সম্পর্ক আরো গভীর হবে ।

**** আওয়ামী সরকার কে ইতিহাসের কাঠগড়ায় নয় শুধু তাদের তৈরী মানবতা বিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মুখোমুখী হতে হবে ।

****প্রধানমন্ত্রী , স্বররাষ্ট্র মন্ত্রী , মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফ , র‍্যাব - বিজিবি মহাপরিচালক , আইজি , শাপলা অভিযানের নায়কগণ তাদের দায় এড়াতে পারবেন না ।

কুটচাল ষড়যন্ত্র শুভ ফল দেয় না । সাময়িক চমক সৃষ্টি হয় । নগদ কিছু লাভ পাওয়া যায় । উল্লাস প্রকাশিত হয় । নিউটনের গতি সূত্র ইয়াদ করুন । সকল এ্যাকশনের রিএ্যাকশন এবং তার সুদুরপ্রসারী রেজাল্ট -লাভক্ষতি হিসাব করুন । হেফাজতের জম্ম লগ্ন হতে সরকার হেফাজতকে জামায়াত বিরুধী ভুমিকায় ঠেলে দেয়ার হাজার চেষ্টা করেছেন । সেখানে সরকার ব্যর্থ হয়েছেন । হেফাজতের সকল কর্ম উলটো সরকারকেই বেকায়দায় ফেলেছে । তাই হেফাজত অসহ্য । তাই তাদের উপর মধ্যরাতের ক্রাকডাউন । চরম শিক্ষা । সাভার ট্রাজেডি হতে মানুষের দৃষ্ট আড়াল করার কুটচাল । নাস্তিক ইসলাম বিদ্ধেষীদের প্রতিষ্ঠিত করার গভীর ষড়যন্ত্র । ইসলাম পন্থীদের জংগী রুপ দেয়ার কুচিন্তা । ইসলাম পন্থী এবং ডানপন্থী শিবিরে ভুল বুঝাবুঝি দুরুত্ব সৃষ্টির প্রায়াস ।

হেফাজত -জামায়াত-বিএনপি কে লড়ে চড়ে শক্তভাবে দাড়াতে হবে । ৫-৬ মের ভুল্ভ্রান্তি মুল্যায়ন করা জরুরী । প্রতিপক্ষের আক্রমনের রাজনৈতিক জবাবে কঠোরতা শুধু হরতাল ডেকে ঘরে বসে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা যথেষ্ট নয় । প্রত্যাক জেলা থানায় ইউনিয়নে ইন্টারনেটকে মিডিয়া হিসাবে ছড়িয়ে দেয়া সময়ের দাবী । সরকারের অপকর্মের প্রমান চিত্রের শ্বেতপত্র ঘরে ঘরে পৌছানো দরকার । লাগাতর অবস্থান অবরোধ ধর্মী কর্মসুচী না হলে সরকারের কানে পানি যাবে না । ১৮ দলকে হেফাজতের পাশে দাড়াবার মত করেই দাড়াতে হবে । তাদের নিহত অসহায় গরিব পরিবারে , আহতদের চিকিতসায় , মামলায় আইনি সহযোগিতা সহ সাম্ভাব্য সার্বিক সহযোগীতা করা ১৮ দলের দায়িত্ব । ১৮ দলের পক্ষ হতে গণতদন্ত টীম গঠন করে দ্রুত বাস্তব চিত্রের শ্বেতপত্র প্রকাশ করা খুবই দরকার । উচ্চ আদালতে রীট আবেদন করা যায় । এই ক্ষেত্র বিশিষ্ঠ্য আইনজীবি নিয়ে একটি টীম হতে পারে । ১৮ দলের স্থানীয় উদ্যোগে সকল কাওমী মাদ্রাসায় সফর সংযোগ বৃদ্ধি করা জরুরী । তাদের মনবল ফিরিয়ে আনতে হবে । সরকারের তৈরী ফাঁদে সরকারকে ফেলে দেয়ার দুরদর্শী রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত থাকতে হবে । বুঝতে হবে সরকার এখন আদা লেংড়া । তাদের হাতে পায়ে নিরীহ আলেম সমাজের রক্ত লেপ্টে আছে । এই রক্তের দাগ নিয়ে হাশরের ময়দানে হাজির হতেই হবে । সেখানে কেউ রক্ষা পাবেন না । সেইদিন আল্লাহর হুকুমে শাপলা চত্ত্বর সব প্রকাশ করে দিবে ।[ সেদিন উহা {জমি} নিজের উপর সংঘটিত সমস্ত আবস্থা বলে দিবে , কেননা তোমার রব উহাকে নির্দেশ দিবেন --যিলযাল ৪-৫ ] ।

বিষয়: বিবিধ

১৯০৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File