লোকদেখানো বায়বীয় আহবানে সাড়া মিলবে না
লিখেছেন লিখেছেন আবরার ০৩ মে, ২০১৩, ০৬:২৬:৪২ সন্ধ্যা
মাননিয় বিরোধী দলীয় আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আহবানে সাড়া দিয়ে হরতাল প্রত্যাহার করেছেন । ক্ষমতার দ্বন্দ্ব কলহের রাজনীতিতে এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন । উদারতা এবং প্রজ্ঞার স্বাক্ষর রাখলেন । দেশ এবং দেশের মানুষের স্বার্থ দেখেছেন । জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে যোগদান করে তিনি সহযোগীতার হস্ত প্রসারিত করেছিলেন । সেদিন জাতি আশার আলো দেখেছিল । মানুষ ভাবছিল এবার সরকারী দল -বিরোধী দল সংঘাত হিংষা বিভেদ প্রতিশোধ নেয়ার বাসনা ছেড়ে পারস্পরিক সুসম্পর্ক গড়ে তুলবে । দেশ এগিয়ে যাবে । তৈরী হবে জাতীয় ঐক্য ।
কিন্তু তা হয়নি ।সরকারের পক্ষ হতে বিরোধীদেরকে আস্থায় নিতে দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি ।
সরকার সম্প্রতি ৩ টি সুযোগ হাত ছাড়া করেছে ।
১] প্রেসিডেন্টের মৃত্যুতে শোকবেদনা জানাতে বিরোধী নেত্রী সকল প্রোগ্রাম বাতিল করে বঙ্গ ভবনে ছুটে যান । সেখানে উপস্থিত আস্থায়ী রাষ্ট্রপতি , প্রধানমন্ত্রী , মন্ত্রী বা প্রটকল কর্মকর্তা কেউ সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সাথে সামান্য সোজন্যবোধ দেখাননি । বিষয়টি খুবই দুঃখজনক এবং লজ্জাস্কর । সরকার পক্ষ সংলাপে আন্তরিক হলে এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে এক ধাপ এগিয়ে যেতেন ।
২] প্রেসিডেন্ট এবং স্পীকার নির্বাচনে বিরোধী পক্ষকে আস্থায় নেয়ার উদ্যোগ নিতে পারতেন । তাদের মতামত নিতে সমস্যা থাকার কথা নয় । রাষ্ট্রের এমন গুরুত্বপুর্ণ বিষয় তাদের সহযোগীতা চাইতেন । তাতে লাভ সরকারের হত ।
৩] জাতীয় জীবনের ভয়ংকর ইতিহাস - সাভার ট্রাজেডি । এই সংকটে বিরোধী দলকে সাথে নিয়ে আনাস্থার জায়গাটা মেরামত করতে পারতেন । সম্মেলিত সিদ্ধান্তের আলোকে উদ্ধার কাজ পরিচালনা করতেন । সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগের তীর ছোড়া বন্ধ হয়ে যেত ।
সংলাপের পরিবেশ তৈরীর জন্য এই গুরুত্বপুর্ণ বিষয় গুলো আমলে নেয়া হয়নি । তাই বলে আশার আলো একদম নিভে যায়নি । প্রধানমন্ত্রীর আহবানে সাড়া দিয়ে বিরোধী নেত্রী ২/৫/১৩ তারিখের হরতাল প্রত্যাহার করেছেন । তিনি লিখিত এক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রীকে নির্দলীয় তত্ত্ববোধায়ক সরকার গঠনে পদক্ষেপ নেয়ার আহবান জানান । ২/৫/১৩ তারিখে প্রধানমন্ত্রী সংলাপে বসতে রাজি হলেন । মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফ সাহেব ২/১ দিনের ভিতর আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিকে জানাবার কথা বললেন । সেই সাথে তিনি তত্ত্ববোধায়ক সরকার গঠন হবে না বলে জানিয়ে দিলেন । মুল বিষয় প্রত্যাখান করে সংলাপ নাটক আয়োজনে ফলাফল শুণ্য । আতিতের কোন সংলাপ শুভ ফল দিতে পারেনি । তারপরও দেশের মানুষ আশা ছাড়েনি । এই ক্ষেত্রে ২ নেত্রীর আন্তরিকতায় ঘাটতি দেখতে চায়না । সাধারণ মানুষ তাদের রাজনৈতিক মার প্যাচ বুঝে না । তাই বলে আম জনতাকে বোকা ভাবা ঠিক হবে না । তারা এখন অনেক স্বচেতন । অভিজ্ঞজন বলেছেন , সরকার সংলাপকে রাজনৈতিক গেম বা কৌশল হিসাবে নিয়েছে ।
তার বড় কারন ---
১] ৪/৫/১৩ তারিখে ১৮ দলের শো ডাউন এবং পরদিন ৫ই মে হেফাজতের ঢাকা অবরোধ । একই সাথে ২ দিনের বড় ধরনের কর্ম সুচী নিয়ে দেশজুড়ে উদ্বেগ-উতকন্ঠা বিরাজ করছে । '' বড় আকৃতির রাজনৈতিক ট্রাজেডি '' ঘটে গেলে অর্থাৎ মখার '' খাম্মা ধাক্কা '' সুত্র ফলে গেলে কেমন হবে ? এমন টেনশনে ঘুম হারাম ।
২] ২নেত্রীকে জাতিসংঘের মহাসচিব চিঠি দিয়েছেন । ৭/৫/১৩ তারিখে জাতিসংঘ টীম আসছে । বাইরে সরকার ব্যাপকভাবে প্রশ্নবানে বিদ্ধ । খুব শীঘ্র জাতিসংঘ মহাসচিব আসতে পারেন ।
৩] সাভার ট্রাজেডিতে সরকারের বড় ধরনের ধবস নেমেছে । চারিদিকে কালবৈশাখীর ঝড় বইছে । ঝর থামাতে দরকার নতুন নতুন কৌশল ।
বিরোধি নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা -হামলা দিয়ে জেলে রেখে সংলাপ হতে পারে না । তত্ত্বাবোধায়ক সরকার বিধান দাবি উপেখিত সংলাপে কোন লাভ নেই । শুধুমাত্র সময় ক্ষেপন করা হবে । লোক দেখানো সংলাপ নিষ্প্রয়োজন । সংলাপ হতে হবে সুনির্ধারিত এজেন্ডার ভিত্তিতে ।
বিষয়: বিবিধ
১৪৭৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন