কেয়ারর্টেকার মঞ্চ-জনতার মঞ্চ কি আবার ও দেখতে পাব?

লিখেছেন লিখেছেন পত্রিকার পাতা থেকে ১০ অক্টোবর, ২০১৩, ০৬:২১:৩৫ সন্ধ্যা

রাজনীতিতে শেষ কথা বলতে কিছু নেই। আজ বন্ধু তো কাল শত্রু। নিজেদের স্বার্থ হাসিল করার জন্য রাজনীতিবিদরা সবকিছু করতে পারে। মাঠে ময়দানে দলীয় কর্মীদেরকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে। বিনিময়ে পাতি নেতা-কর্মীরা কিছু সুবিধা আদায় করে। আর বড় বড় লিডাররা কোটি কোটি টাকার মালিক হয়। রাজনীতিবিদদের ছেলে-মেয়েরা উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশে পাড়ি দেয়। তাদেরকে রাজনীতি থেকে দুরে সরিয়ে রাখা হয়। কোন এক সময় তারাও বিদেশ থেকে এসে বিনা পরিশ্রমে বাবার আসন দখল করে। এটাই আমাদের রাজনীতি।

আশির দশকে এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে আওয়ামীলীগ-বিএনপি-জামাতসহ ছোট ছোট দলগুলো একত্রে মাঠে-ময়দানে থেকে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে এরশাদ সরকারকে পতন ঘটিয়েছিল। সেই কথা আমরা সবাই জানি। পরবর্তীতে তত্তাবধায়ক সরকার গঠন করে নির্বাচন দেয়া হয় সেই নির্বাচনে বিএনপি জয় লাভ করে সরকার গঠন করে। বিএনপি ক্ষমতায় এসে তত্বাবধায়ক সরকারের কথা ভুলে গিয়ে সরাসরি নির্বাচন দিতে চাইলে আওয়ামীলীগ-জামাত বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। ১৯৯৬ সালের সেই আন্দোলনে আওয়ামীলীগ জনতার মঞ্চ আর জামাত কেয়ারর্টেকার মঞ্চ স্থাপন করে দিনের পর দিন রাজপথ কাঁপিয়েছিল। জামাত নেতাদের সাথে আওয়ামীলীগ নেতাদের বহুবার বৈঠক হয়েছিল। তখন কে যুদ্ধাপরাধী, কে রাজাকার, কে মুক্তিযোদ্ধা কোন প্রশ্ন ছিল না। বিনা সংকোচে শত্রু-মিত্র একত্রিত হয়েছিল। সেই সময়ে দেশের স্বার্থে গনতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে আওয়ামীলীগ ও জামাতের নেতা কর্মীরা সকল প্রকার ভেদাভেদ ভূলে গিয়ে আন্দোলন করেছিল। সেই সময়ে চট্টগ্রামের রাজনীতির দৃশ্য আমার এখনো মনে পড়ে। লালদীঘির ময়দানে জামাতের কেয়ারর্টেকার মঞ্চ আর নিউমার্কেটের সামনে আওয়ামীলীগের জনতার মঞ্চ ছিল। আওয়ামীলীগ ও জামাতের দুই মঞ্চে হাজার হাজার নেতা-কর্মী রাত-দিন ব্যস্ত ছিল। সাধারন জনগন ও তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে সেই আন্দোলেন শরীক হয়েছিল। আওয়ামীল-জামাত ও জনগনের বিপুল সমর্থন দেখে বিএনপি সরকার কেয়ারর্টেকার সরকারের হাতে ক্ষমতা স্থানান্তর করতে বাধ্য হয়েছিল। তারপর ইলেকশন----পরবর্তী নির্বাচন গুলোও কেয়ারর্টেকার সরকারের মাধ্যমে অনুষ্টিত হয়েছিল। বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকার সেই সময়ের আন্দোলনের কথা ভুলে গিয়ে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। অন্য দিকে বিরোধী দল বিনএনপি-জামাত জোট তত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে নির্বাচনে অংশগ্রহন করার জন্য সরকারী দলকে চাপ সৃষ্টি করে যাচ্ছে। আগামীতে ও কি জনতার মঞ্চ-কেয়ারটেকার মঞ্চের মত নতুন কিছু দেখতে পাব? ১৮ দলীয় জোট কি পারবে জনগনকে সাথে নিয়ে অধিকার আদায় করতে ? দেশকে বাকশাল মুক্ত করতে?

অতীতের মত আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে ও পরে বহু নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার হবে। রাজপথে আন্দোলন করতে গিয়ে আহত-নিহত হতে হবে। অনেক মায়ের বুক খালি হবে। অনেক স্ত্রী বিধবা হবে। অনেক সন্তান পিতৃহারা হবে। আগামী ২৫ অক্টোবর কি হয় একমাত্র আল্লাহই জানে--

বিষয়: বিবিধ

১২০৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File