আসুন পবিত্র রমজানে মসজিদে শিশুদের সাথে ব্যবহারে সৌন্দর্যের পরিচয় দিই

লিখেছেন লিখেছেন উমাইর চৌধুরী ০৮ জুলাই, ২০১৪, ০৭:৪১:২১ সকাল



মসজিদে সাধারণত রমজানে প্রচুর পিচ্চি-পাচ্চা আসে। বাচ্চারা সাধারণত উচ্ছল প্রকৃতির হয়, একটু চঞ্চলতা বেশীই করে। ওযু করতে যেয়ে পানি ছিটানো কিংবা মসজিদে লুকোচুরি খেলা, দৌড় প্রতিযোগীতা এসবে তারা খুব মজা পায়। মসজিদে ইফতারির প্রোগ্রামে তাদের উপস্থিতি দেখার মত। আমাদের মাঝেই একদল মানুষ মসজিদে বাচ্চাদের দেখলেই তেড়ে যান। আপনার এই দৃষ্টিভঙ্গি সেই শিশুটার উপরে দীর্ঘস্থায়ী খারাপ প্রভাব তৈরী করতে পারে। যেমন আমিই ছোটকালে বেশ কবার এরকম হওয়াতে মসজিদেই যেতে চাইতামনা রাগ করে ।

তারাবী বা যে কোন নামাজে তাদেরকে পাশে পাশে নিয়ে দাড়ান, আলাদা আলাদাভাবে দাড়ালে দুষ্টুমি করতে পারবেনা, মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করে বুঝিয়ে দেন যে মসজিদে হাসাহাসি-দুষ্টুমি করলে মসজিদের পবিত্রতা এবং মুসল্লিদের মনোযোগ নষ্ট করে। ইফতারিতে তাদেরকে ছোট প্লেট বা প্যাকেট না দিয়ে সবাই যেটা খাচ্ছে সেটাই দেন। একটা ছোট প্যাকেটের কারনে সে হয়তো সারা জীবন ছোট মানসিকতা লালন করবে। আপনার এলাকাতেই হয়তো এমন কেউ আছে বাদাম বিক্রি করে কিংবা হোটেলে কাজ করে। আপনি প্রতিদিন একজনকে নিয়ে চেষ্টা করেন বাসায় ইফতারি করতে। আপনার মূল্যায়ন আর ভালবাসায় সেও মানুষকে ভালবাসতে শিখবে, শ্রদ্ধা করতে শিখবে। আপনার ইফতারে আসবে জান্নাতি অনুভূতি। আর সবকিছুর উপরে আল্লাহর সন্তুষ্টি তো আছেই।

আল্লাহর রাসূল সা. শিশুদেরকে প্রচন্ড ভালবাসতেন। নিষ্পাপ বাচ্চা-কাচ্চা দেখলেই সালাম দিয়ে কুশল জিজ্ঞেস করতেন তিনি। হাসান-হোসেন রা. তার পিঠে উঠে থাকত সিজদার সময় এমনও হাদিসে এসেছে। সুতরাং ছোটদের কাছ থেকে শুধু সালাম আশা করবেননা, বরং সালাম দিবেন আগে আগে তাদেরকে। যে আগে সালাম দেয় সে অহংকার থেকে বাঁচতে পারে। মসজিদে মাঝে মাঝে পিচ্চিদের নিয়ে সমাবেশ করতে পারেন, যেমন কোরআন তেলাওয়াতের সমাবেশ কিংবা কোরআন-হাদিসের গল্প শোনার সমাবেশ। সমাবেশ শেষে চমৎকার কিছু পুরষ্কার দিতে পারেন সেটা চকোলেটের বক্স বা ঝলমলে রংগিন কোন বই। এজন্য আপনাকে সর্বপ্রথম বাচ্চাদের সারিতে মিশতে হবে তাদের মত করে।

আপনার-আমার শিশুদের প্রতি ছোট ছোট সুন্দর আচরণ-দৃষ্টিভঙ্গিই পারে বদলে দিতে এই দূষণে ভরা সমাজ, পরবর্তী প্রজন্মকে আলোর পথে এনে গড়ে তোলার দায়িত্ব আমাদেরই।



ছবি: গত রমজানে গাজার একটি মসজিদ থেকে তোলা

বিষয়: বিবিধ

৩৮৭৪ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

242780
০৮ জুলাই ২০১৪ সকাল ০৭:৫৫
সন্ধাতারা লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ খুব ভালো লাগলো
০৮ জুলাই ২০১৪ সকাল ১০:৫৯
188557
উমাইর চৌধুরী লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ Happy
242790
০৮ জুলাই ২০১৪ সকাল ০৮:৩৩
চোরাবালি লিখেছেন : হ্যাঁ মসজিদে অনেকেই আছেন যারা আসবেন দেরি করে আর ভেতরে জায়গা না পেয়ে বলবেন বাচ্চাদের বের করে দিতে বাহিরে।
০৮ জুলাই ২০১৪ সকাল ১০:৫৯
188556
উমাইর চৌধুরী লিখেছেন : হু ঠিক, তাদেরকে বুঝানোর চেষ্টা করব আমরা সবসময়।
242830
০৮ জুলাই ২০১৪ দুপুর ১২:৪২
প্রবাসী আশরাফ লিখেছেন : পিচ্চি-পাচ্চাদের যারা ভালবাসেনা তাদেরকে জড় পদার্থ মনে হয়। পিচ্চি-পাচ্চাদের ভালবাসা-আদর দিয়ে যা করাতে পারবেন তা হয়তো ধমক দিয়েও করাতে পারবেন কিন্তু দুই পারার মধ্যে বিস্তর ফারাক। ঐ কচি মনেই শ্রদ্ধা-ঘৃণার স্মৃষ্টি হবে বড়দের ব্যাবহারের উপর ভিত্তি করে। তাই পিচ্চি-পাচ্চাদের ঝেটিয়ে নয় বুঝিয়ে বলতে হবে।
242921
০৮ জুলাই ২০১৪ বিকাল ০৫:৪০
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : এই নিয়ে প্রতি জুমাতেই আমার সাথে কারো না কার কথাকাটাকাটি হয়ে যায়। রমজান মাসে এই আচরন বেশি করেন দেখেছি তারাই অন্য সময় যাদের মসজিদের আশেপাশে দেখা যায়না। এই নিয়ে একটি পোষ্ট দিয়েছিলাম ঠিক গত রমজানের কিছু পরে। শিশুদের বাসায়ও ইফতারির সময় আলাদা করে রাখা হয় অনেক সময়। অনেকে একজন শিশুর উপস্থিতিতে খুব বিরক্ত বোধ করেন ইফতারিতে। এই মানসিকতা কিন্তু শিশুটিকে রোজা ও ইফতারির প্রতি বিরুপ করে তুলবে।
http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/3609/sabuj1981/30044

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File