একসময় জিহাদ শব্দটি শুনলে কাফেররা কাঁপতো আর এখন মুসলমানরাই কাঁপে !

লিখেছেন লিখেছেন উমাইর চৌধুরী ১৬ জানুয়ারি, ২০১৪, ০৬:১৩:১৯ সন্ধ্যা

Sajid প্রায়ই একটা কথা বলে যে আগে 'জিহাদ' শুনলে কাফেররা আঁতকে উঠতো আর এখন মুসলমানরাই লাফ দিয়ে ওঠে । বাতিল কত সুক্ষভাবে এসব জিনিস আমাদের মাথায় ঢুকিয়ে দিয়েছে। নামাজ-রোজার মতই কাফের-জালেমের বিরুদ্ধে জিহাদ যে ফরয সেটা আমরা ভূলে গেছি। আর মুসলমানদের এ দশা আজ এ জন্যই !

ইসলাম অবশ্যই শান্তিময় জীবনব্যবস্থা। তবে আপনি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবেননা যে যুদ্ধ ছাড়া ইসলাম দুনিয়ায় বিস্তার লাভ করেছে। আল্লাহর রাসূল সা. নিজেই কতগুলো যুদ্ধ করেছেন আপনি তো জানেন, আপনি এও জানেন যে কুরআনে কাফেরদেরকে যুদ্ধের সময় গর্দানের গিরায় গিরায় মারার হুকুম আছে। আপনি এ ইতিহাসও শুনেছেন যে খলিফা (রা.) দের আমলে কত যুদ্ধ করতে হয়েছে বাতিলের বিরুদ্ধে, বড় বড় জালেম সাম্রাজ্যকে গুটিকয় মুসলমান পদানত করেছে। তবে হ্যা, মুসলমানরা সবসময়ই শান্তির বাণি আগে দিয়েছে, আগে বলেছে হয় শান্তির পথে আস নতুবা তলোয়ারেই হবে সমাধান।

মনে পড়ে মুহাম্মাদ কাসিমের কথা ? সিন্ধুর রাজা দাহিরের অত্যাচারে অত্যাচারীত এক মুসলমানের ফরিয়াদ পৌছে হাজ্জাজ বিন ইউসুফের কাছে। তিনি তখনি মাত্র যৌবনে পা দেয়া জামাই কাসিমকে সৈন্যদল নিয়ে সিন্ধু অভিযানের হুকুম দিলেন। তারপরের ইতিহাস তো জানেন।

সেই স্পেনের তারিক বিন জিয়াদ-মুসা বিন নুসায়ের কিংবা তাদের উত্তরপুরুষ ইউসুফ বিন তাশফিন তাদের ইতিহাসটাও একটু পড়ে নিয়েন। পড়ে নিয়েন মধ্যএশিযার কুতায়বার ইতিহাস যার অবদানে আজ তাজিকিস্তান-কাজাখস্তান এসব দেশকে আপনি মুসলিম দেশ বলতে পারেন।

মুসলমানদের মাথায় যখনই ঢুকিয়ে দেয়া হলো না তোমরা তো শান্তিকামী সুতরাং তলোয়ার ত্যাগ করো, খালি হাতে তাবলীগী করো এবং কাফেরের মার খেলে জান্নাতে চলে যাও। কিন্তু কোন অস্ত্র ধরার অধিকার তোমার নাই। কারণ তুমি শান্তির ধর্ম ইসলামে আছ !

মায়ানমারে আমার বোনকে ধর্ষণ করা হচ্ছে প্রতিদিন, আমার ভাইকে হত্যা করা হচ্ছে খুচিয়ে খুচিয়ে অথচ দেড় বিলিয়ন মুসলমানের কোন বিকার নাই ! মরুক, জান্নাতে চলে যাবে ! আফসোস ! আজ আমাদের মাঝে কোন কাসিম-কুতায়বা-তাশফিন-তিতুমীর বা তারিক বিন জিয়াদ জন্ম নেয়না। কেনইবা নিবে !

আজ ভোরে ফিলিস্তিনের কিছু পেজে অনেকগুলো ফটো এলবাম দেখছিলাম। গতকাল গাজায় ইসলামী হামাস সরকারের সেনা বাহিনীর একটা বড় মহড়া এবং অনুষ্ঠান হয়েছে। সেখানে নতুন ক্যাডেট এবং কমিশন পাওয়া মুজাহিদদের অভিষেক হয়েছে। ছবিগুলো দেখতে দেখতে আল কুদসে চলে গেছিলাম, যেখানে কোন ইহুদিবাদী সন্ত্রাসীরা থাকবেনা । চলে গেছিলাম আরাকানে।

তো একটা ছবি আমার মনের গভীরে আঘাত হানল। একটা কোরআন,একটা ওয়াকিটকি আর একটা কালাশনিকভ পাশাপাশি রাখা সে ছবিতে। অনেক দামী অর্থ দেয় সে ছবির। https://www.facebook.com/photo.php?fbid=521256067987489&set=pcb.521256101320819&type=1&relevant_count=2&ref=nf ছবিটার নিচে বেশ কজন কমেন্ট করেছেন । কমেন্টগুলো পড়ে বুঝতে পালাম আমাদের অবস্থাটা কোথায় নিয়ে গেছ কাফেররা। সালাহউদ্দিন আইয়ুবী যে আশংকা করতেন সবসময় তারই হুবহু প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে এখন।

আজ গাজায় ফিলিস্তিনের ৮০ ভাগ মানুষ বাস করে, তারা জানে এখানে অবরোধ আছে আছে প্রতিনিয়ত যুদ্ধের-বিমান হামলার বাস্তবতা। তারপরও তারা সিংহের মত বাঁচতে গাজায় এসেছে। হামাসের ইসলামী সরকার তাদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে এবং আলহামদুলিল্লাহ তারা সফল। শহীদী এ কাফেলা যেদিন থেকে কাফেরের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছে সেদিন থেকে কাফেরের জন্য প্রধান আতঙ্ক হয়ে দাড়িয়েছে তারা। এমনকি তাদেরই আওয়ামী সেক্যুলার ভাই ফাতাহর বিরুদ্ধেও তাদেরকে অস্ত্র উচু করতে হয়েছে। আজ হামাস গোটা দুনিয়ার মজলুম মুসলমানদের জন্য এক আশার নাম। ইনশাআল্লাহ তাদের হাত ধরেই দুনিয়াব্যাপী বিপ্লব শুরু হবে।

হামাসকে ঠিকই পশ্চিমারা এবং আম্রিকা সন্ত্রাসী বলে। আমরা কিন্তু বলতে চাইনা ! কেন ? তারা কোরআন আর অস্ত্র একসাথে নিয়ে নেমেছে কেনু ?

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে একসময় ইসলামের বিধিবিধানে অনেক কড়াকড়ি ছিল। জাহাজ বা অনেক গুরুত্বপূর্ণ জিনিসের নামে খালিদ রা. বা ওমর রা. বা আলী রা. দের নাম জুড়ে দেয়া হতো। জিহাদের আয়াত-হাদিসগুলো অঙ্কিত থাকত বিভিন্ন জায়গায় । এখন নাই হয়ত সেটা। কারণ কাফেররা সদা তৎপর ! এই সেনাবাহিনীই কোনদিন কারও কাছে কোরআন পেলে সন্ত্রাসী তকমা দেবেনা এর গ্যারান্টি নাই, যা তুরষ্কে দেখেছি আমরা।

আমার এই স্ট্যাটাসের মানে এই না যে, আমাদের অস্ত্রই প্রধান সমাধান। তবে জিহাদ নামে যে ফরজ কিছু আছে এটা যেন না ভূলে যায়। ইতিহাস যেন না ভূলে যায় আমরা। হতে পারে সময় আর স্থান-প্রেক্ষাপট ভিন্ন। কিন্তু কোরআনের আদেশ কিয়ামত পর্যন্ত বলবৎ। আর কোরআনের আদেশ মেনে বুজে কেউ পদক্ষেপ নিলে আল্লাহ তার সঙ্গী। তার সবচেয়ে প্রকৃষ্ট উদাহরণ এ শতাব্দীর ফিলিস্তিনী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। ফাতাহ শাসিত এলাকায় ১০ টা মুসলমান গ্রেপ্তারে ইজরাইলিদেরে ভাবতে হয়না কিন্তু হামাস সরকারের বর্ডারের দিকে তাকাতে ওদের ১০০ বার ভাবতে হয়।

বিষয়: বিবিধ

১৫৯৫ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

163256
১৬ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৩৮
মাটিরলাঠি লিখেছেন : টঙ্গীতে যাইয়া যদি তাদের কই, জ্বিহাদ ফরজ, তাইলে তারা কি বলবে?
১৬ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৯:১৪
117546
তায়িফ লিখেছেন : তারা আপনাকে ময়দানের লড়াইয়ে শামিল হওয়ার জন্য আগে ঈমান জিন্দা করতে বলবে। তিন চিল্লা দিয়ে ঈমান মজবুত করে জিহাদে ঝাপিয়ে পরতে বলবে। বাংলা ভাইয়ের মত ইসলাম কায়েম করতে গিয়ে জামাতবিএনপির হাতে ধংস হতে বলবে না।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File