টার্গেট ফিলিস্তিন
লিখেছেন লিখেছেন উমাইর চৌধুরী ০৭ জুন, ২০১৩, ০৫:৪৩:০৮ বিকাল
পবিত্র শবে মিরাজ উপলক্ষে ক্যাম্পাসের ফিলিস্তিনী ছাত্ররা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে, সেখানে যাচ্ছি।
যেহেতু বায়তুল মুকাদ্দাস এর সাথে পবিত্র মিরাজের ইতিহাস ওতোপ্রতোভাবে জড়িত তাই আল কুদস এর নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষগুলোর আজকের তৎপরতা খানিকটা বেশিই ।
কিছুক্ষণ আগে স্টুডেন্ট বাসিজ নেতাদের রুমে এক প্রোগ্রামে ছিলাম। সেখানে গাজার কিছু ভাইও ছিলেন।
ফিলিস্তিন নিয়েই আলোচনা হচ্ছিল।
আমাদের টার্গেট এখন আল-কুদস।
ইমামা খোমেইনী (রহ.) বহু বছর আগে বলেছিলেন যে আমরা ইজরাইলকে খুব তাড়াতাড়ি ধ্বংস করে দিব ইনশাআল্লাহ। তিনি এমন সময় এ কথা বলেছিলেন যখন ইরানে বিপ্লবই হয়নি । ইসলামপন্থীরা নিজেরাই তখন নির্যাতিত হচ্ছে।
আর এখনকার ইরান তো বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তিতে পরিণত হচ্ছে দিন দিন।
ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এর অন্যতম প্রচারণা ইস্যু থাকে কে কত ইজরাইল বিরোধী।
একসময় আরব দেশগুলো সবাই মিলে ইজরাইলের কিছু করতে পারেনি আর এখন হামাস-হিজবুল্লাহ একাই ইজরাইলকে নাকানি-চুবানি খাওয়ায়।
সুতরাং এটা খুব পরিষ্কার যে বিজয় আামদের সন্নিকটে ইনশাআল্লাহ।
গাজী সালাহউদ্দিন আইয়ূবী যখন বায়তুল মুকাদ্দাসের দিকে পা ফেল্লেন তখন তাঁরই মুসলিম ভাই এরা বিভিন্ন আমীর ওমরাহরা পথের কাঁটা হয়ে দাড়ালো।মদ-নারী দিয়ে একএকজন মুসলিম শাসকের মাথা কিনে নিত তখনকার ক্রুসেডাররা। সেই কাঁটা সাফ করতে যেয়ে এক মুসলমানের রক্তে রঞ্জিত হয়েছে আরেক মুসলমানের তলোয়ার।সালাহউদ্দিন প্রতিটা লড়াই শেষে চোখের পানি ফেলতে ফেলতে বলতেন 'হে আল্লাহ আজকে আমার থাকার কথা জেরুজালেমের আশে-পাশে, আমার তলোয়ার লাল হবার কথা ছিল অত্যাচারী-দখলদার ইহুদী-নাসারাদের রক্তে অথচ আজ আমারই ভাই এর রক্তে রঞ্জিত হচ্ছে আমার তলোয়ার' !
এখনও সেই কাহিনীই চলছে। আরবের আমীর-ওমরা-শেখরা মদ-নারী-বিলাসিতায় ডুবে আছে আর অন্যদিকে ধুকে ধুকে মরছে ফিলিস্তিনের ভাই-বোনেরা।
আজকে শিয়া-সুন্নী বিভেদের দেয়াল তুলে দিয়ে দেশে-দেশে মুসলমানদের রক্ত বন্যা বইয়ে দেওয়া হচ্ছে।
শুধু গতমাসে ইরাকেই রেকর্ডসংখ্যক কয়েকশ নিরীহ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে এই বিভেদে।
সিরিয়িায় ঝোপ বুঝে কোপ মেরেছে ইজরাইল। হাজার বছরের প্রাচীন রাজধানী দামেস্ক এখন বিরানভূমি।
মুসলমানদের গর্বের দুই রাজধনী বাগদাদ আর দামেশ্ক দুটোকেই ফাঁকা করে ফেলা হয়েছে।
আরবের বিলাসী রাজা-বাদশারা যারা ফিলিস্তিনে কোনদিন একবাক্স বুলেটও পাঠাইনি তারাই আমেরিকার আদেশে সিরিয়ায় অস্ত্র আর টাকার বন্যা বইয়ে দিয়েছে। সিরিয়া নিয়ে শিয়া-সুন্নি বিভেদ নতুন মাত্রা পেয়েছে।
ওদিকে ইজরাইল তো ব্যাপক আনন্দিত । আনন্দের চোটে কয়েকদিন সিরিয়াতে বোমাও ফেলে গেছে সন্ত্রাসী ইহুবাদীরা।
গাজার মানুষগুলোর অপেক্ষা আর শেষ হয়না। তারা তৃষিত নয়নে চেয়ে আছে মুসলিম বিশ্বের দিকে। মুরসী ক্ষমতায় আসার দিন আনন্দ মিছিল হয়েছিল গাজায়, কিন্তু সেই আনন্দের খুব অল্পই এখন আছে সেখানে। এফজেপি পার্টির কিছু ঘোষনা তাদেরকে আশাহত করেছে এবং এখন পর্যন্ত ফিলিস্তিনের জন্য তারা কার্যকরী কোন উদ্যোগ নিতে পারেনি। হয়ত নিবে, এখন ভেতরটা গুছিয়ে নিচ্ছে । আমরা সেদিনেরই অপেক্ষায়।ইজরাইলের সাথে করা ক্যাম্প ডেভিড চুক্তি বাতিলের জন্য মিশরকে ইরান বলছে বারবার। এই চুক্তির কারনেই ইরান মিশরের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল কিন্তু এখন মুরসী প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর সে সম্পর্ক আবার স্বাভাবিক। এখন মিশরের নাগরিকদের জন্য বিনা ভিসায় ইরানকে উম্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। তরষ্ককে খুব ভাল পেত ফিলিস্তিনীরা কিন্তু সম্প্রতি ফ্রিডম ফ্লোটিলা ইস্যুতে ইজরাইলকে ক্ষমা করে এরদোগানরা আবার তেলআবিবে রাষ্ট্রদূত পাঠানোর বার্তা দিয়ে ফিলিস্তিনীদের হৃদয়ে পাওয়া জায়গাটা নষ্ট করে দিয়েছেন। তবুও আমরা আশাবাদী। আশা করা যায় খুব দ্রুতই ইসলামপন্থী সরকারগুলোর মধ্যে একটা বোঝাপাড়া হবে এবং আমরা এগুবো আল-কুদসের দিকে ইনশাআল্লাহ।
আল্লাহ আমাদের জীবদ্দশায় একবার মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববীতে এবং একবার আমাদের প্রথম কেবলা বায়তুল মুকাদ্দাসে নামাজ পড়ার তৌফিক দিন। আমীন ।
বিষয়: বিবিধ
২২৭৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন