আজ ওলামায়েকরামই ঐক্যই পারে এই পতণমূখী জাতিকে মুক্তির পথ দেখাতে
লিখেছেন লিখেছেন এম এম নুর হোসাইন মিয়াজী ২৮ মার্চ, ২০১৩, ০৫:৩৭:৪৮ বিকাল
লাখো শহীদের রক্তের বিনিময় অর্জিত এ আমার মাতৃভুমি। কিন্তু কি দেখছি আজ আমি !! এই জন্যই কি অর্জিত এই স্বাধীন মাতৃ ভূমি??? প্রতিদিন পত্রিকা খুললে যে চিত্র চোখের সামনে ভেসে উঠে, তা দেখলে সামন্য বিবেকবান ব্যাক্তিরও চিন্তার কারন হয়ে দাড়ায়।হত্য-খুন ,গুম, ছিনতাই,জুলুম, নির্যাতন,অত্যাচার ,চুরি -ডাকাতি এযেন নিত্যদিনের সঙ্গী আমাদের।মানুষের বাসস্থান,থাকা -খাওয়া, জান-মাল কোন কিছুরই নিরাপাত্তা নেই।
একটি স্বাধীন সার্বভেীমত্ব দেশের এ দশা কেন???? !!
প্রতিবেশি তথাকথিত বন্ধু দেশ সাম্রাজ্যবাদী ভারত প্রতিদিন যেভাবে সীমন্তে হত্যা-লুটত্বরাজ,অত্যচার রাহাজনি চালায় তা দেখে মনে হয় যেন স্বাধীন সার্বভেীমত্ব রাষ্টের উপর কোন ভীনদেশি শকুনের নগ্নহস্তক্ষেপ লেগেই আছে!!!!
ওরা বন্ধু আমাদের? নদীর বুকে তাহলে বাঁধ কেন? কেন ভূমিদখল সীমান্তের? কেন ফসল কেটে নেয়; গরু-মানুষ ধরে নেয়? তুমি দেবে বেড়া, আমরা দেবো পথ, এর নাম বন্ধুত্ব? এরই জন্য স্বাধীনতা? কোথায় তুমি হে স্বাধীনতা?! তাহলে এরপরও তারা আমাদের বন্ধু কেন??!
স্বাধীন সার্বভেীম ৫৬ হাজার বর্গমাইলের এই দেশ আমার মাতৃভূমি। এদেশের ৯৫% মুসলমান।বিভিন্ন ধর্ম-জাতের মানুষ এক সাথে বসবাস করে ভ্রাত্বের বন্ধনে। যার দৃষ্টান্ত পৃথিবীতে বিরল।সংখ্যা গরিষ্ট মুসলিম দেশের সংবিধানে কেন আল্লাহর উপর পূণ্য-আস্থা ও বিশ্বাস রাখা যায় না???! কেন নারী নীতি, শিক্ষা নীতি ইসলাম বিরোধী???! কেন ফতোয়া বিরোধী কালো আইন???! কেন ইসলাম বিরোধী বিবাহ আইন???! কেন কোটি কোটি মুসলমানের হৃদয়ের স্পন্দন,রাহমাতুল্লিল আলামিন হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লামের শানে কুলাঙ্গারদের কটুক্তি??????????!!!!
সংখ্যাগরিষ্ট মুসলিমদেশে কোন জালিমের সাধ্য আল্লাহ ও তার হাবিবের শানে বেয়দবি করার???! কার সাধ্য আল্লাহর দ্বনিকে মিটিয়ে দেওয়ার???! কিন্তু কেন সাহস???!!আজ অবশ্যই আমাদের ভাববার বিষয়???!!!
যত মসজিদ, যত মাদরাসা, যত আলেম, যত ইমাম , যত হাফেজেকুরআন, যত ওলী দরবেশ, যত নামাজী রোজাদার হজ্ব পালনকারী এদেশে বিরাজমান; পৃথিবীর অন্য কোনখানে এমনটি নেই। এ দেশের মত এতো দীনী সমাবেশ অন্যখানে বিরল।
পবিত্র হজের পর পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় এ দেশেরই রাজধানীর বুক চিরে বয়ে যাওয়া তুরাগ নদীর তীরে।পাশাপাশি বরিশালের চরমোনাইর ময়দানেও হয় লাখ লাখ মুসলিমের মিলন মেলায়। চট্রগ্রামের হাটাজারি সহ দেশের প্রত্যন্ত অন্ঞলে আলেম ওলামাদের নাম শুনে জমায়েত হয় হাজার হাজার মুসলমান।
এতসব সত্ত্বেও এ দেশে ইসলামের নেতৃত্ববাহী রাজনৈতিক মহল বরাবরই সেক্যুলার শক্তিগুলোর চেয়ে যথেষ্ট পিছিয়ে এবং ক্রমশই আরো গণবিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। কেন???!!!
স্বাধীনতার পর থেকে এ যাবত অযোগ্য নেতৃত্ব, অপ্রতুল বাস্তবচিন্তা, অদূরদর্শী সিদ্ধান্ত, অপরিকল্পিত কর্মসূচী আর পারষ্পরিক কলহের উপর্যুপরি আত্মঘাতে জর্জরিত হয়ে আছেন তারা।
ইসলাম প্রতিষ্ঠার আবেগাশ্রিত তাড়াহুড়ো মনোভাবের কারণে ইসলামের গুরুত্ব মহত্ব ও সৌন্দর্য গণমানুষের কাছে আগে উপস্থাপন করার পূর্বশর্তের প্রতি ভীষণ অমনযোগ ও ব্যর্থতার প্রমান রেখেছেন তারা।
দেশের প্রায় শতভাগ মানুষ আল্লাহ রাসূল ও জান্নাত জাহান্নামে বিশ্বাসী মুসলিম , তবু যেন অজানা এক ইসলামভীতি তাদের আচ্ছন্ন করে রেখেছে এখনও, এর গভীর কারণ ও রহস্য উদঘাটন করে এর সমাধানে বাস্তব ভূমিকা না রাখতে পারলে শুধু ইসলামী রাজনীতি নামক গদবাধা প্রদর্শনীতে এদেশের ইসলাম ও মুসলমানদের কিছুই আসবে যাবে না।
২০০১ ইং এর আগে এ দেশের ইসলামী নেতৃত্বের ডাকে লাখো জনতা বাবরী মসজিদ অভিমুখে রওয়ানা হতো, নাস্তিক বিরোধী আন্দোলনে সাধারণ মানুষের আবেগ ও ভুমিকা এখনো চোখে ভাসে, শীর্ষ আলেমকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে সরকারের পতনেও মুখ্য অবস্থানে দেখেছি সর্বশ্রেণীর জনতাকে।তারা তাদের জীবকে পরোয়া করেনি। কিন্তু???!!!!
আর এখন আরো মারাত্মক ও ভয়াবহ ধর্মীয় ইস্যুতেও সর্ব সাধারণের নিরবতায় ইসলামী রাজনৈতিক নেতৃত্বের মনে হয় ভাবিত হওয়ার সময় এসেছে। তোড়জোড় করে আয়োজিত কর্মসূচীতে যদি সারাদেশের মাদরাসার ছাত্র উসতাদরাই শুধু মাঠে নামেন; আর সর্বসাধারন যদি একে শুধু হুজুরদের কাজ ভেবে দুরে সরে থাকেন; তাহলে এ অবস্থাকে চরম গণবিচ্ছিন্নতাই বলা যায়।!!!!
সাধারন মানুষ এখন আলেমদের ভূমিকা দেখতে চায়।সঠিক ভাবে আলেমদের নেতৃত্ব। আধা আধি নয় ,তাগুতের সংশ্রবে নয়, কারো লেজুরবৃত্তি হয়ে নয়।আলেমদের ভিতরে একটি শক্তিশালি পাল্টফর্ম দেখতে চায়। কারন তারা আলেমদের কাছে শুনেছে-আল্লাহ তায়ালা এই নারী নেতৃত্বকে হারাম ঘোষনা করেছেন।অভিশপ্ত নারী নেতৃত্ব জাতিকে মুক্তি দিতে পারে না। বাতিলের সংশ্রবে থেকে কখনও ইসলাম কায়েম করা যায় না।!!!
একটি উল্লেখযোগ্য মুসলিম দেশের ইসলামী রাজনীতির জন্যে এটি নতুন করে ভাবার বিষয় বটে। সময় নষ্ট না করে ইসলাম বা ইসলামপ্রেমী মানুষের সমস্যা সংকটের বাস্তব উত্তোরনের জন্য এখনই কিছু একটা ভুমিকা গ্রহন করতে হবে আলেম-ওলামাদের কে। কারন আলেম-ওলামারা হলেন নায়েবে রাসূল ,মুসলিম উম্মাহর মাথা বা বিবেক। তাদের সচেতনতার মাধ্যমে আজ মুক্তি পেতে পারে গোটা জাতি।
আর যদি তা না হয়,আলেম -ওলামারা যদি দু'চারটি এমপি আর মন্ত্রীত্ব লাভের আসায় অথবা দুনিয়ার কিছু স্বার্থ হাসিলের জন্য তাগুতের সাথে আতাত রেখে চলে,তাহলে হয়তো সেদিন দূরে নয় আমাদেরকেও স্পেনের মত করুন ভাগ্য গ্রহন করতে হবে।
আসুন আমরা আমাদের আলেম - ওলামাদের এবং ইসলামী রাজনীতিবিদদের জন্য আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করি।
বিষয়: বিবিধ
১০৯৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন