২৭শে মে, সোহরাওয়ার্দীর মহা সমাবেশে মুফতি ফয়জুল করীম, দামাত বারকাতহুমের জ্বালাময়ী ভাষণ (ভিডিও সহ)
লিখেছেন লিখেছেন এম এম নুর হোসাইন মিয়াজী ৩০ মে, ২০১৬, ১০:২৮:৫৭ সকাল
ﻭﻻ ﺗﻬﻨﻮﺍ ﻭﻻ ﺗﺤﺰﻧﻮﺍ ﻭﺃﻧﺘﻢ ﺍﻷﻋﻠﻮﻥ ﺇﻥ ﻛﻨﺘﻢ ﻣﺆﻣﻨﻴﻦ
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কর্তৃক আয়োজিত জনসমুদ্রে সম্মানিত সভাপতি জাতির সেরেতাজ হযরত মাওলানা রেজাউল করিম পীর সাহেব চরমোনাই দামাত বারকাতহুম, দিগার উলামায়ে কিরাম, ইসলাম প্রিয় ভায়েরা আমার,
আজকের সমাবেশ কেন, ইতিমধ্যেই আপনারা জেনেছেন। শিক্ষানীতি ২০১০ প্রস্তাবিত শিক্ষা আইন ২০১৬ এর ভিত্তিতে এই বাংলাদেশ থেকে চিরতরে ইসলামকে মিটিয়ে দেয়ার গভীর ষড়যন্ত্র চলতেছে।
আপনারা অনেকেই ভাবেন, এ দেশ থেকে কিভাবে ইসলামকে বিদায় দিবে; আমরা শতকরা বিরানব্বই ভাগ মুসলমান?
এটা ভাবার কোনো অবকাশ নেই। স্পেনে সাড়ে নয়শত বছর মুসলমানদের শাসন ছিল কিন্তু আশি দশকের আগে সেখানে একটি মাসজিদও ছিল না। সৌদি সরকার নিজ অর্থায়নে একটি মাসজিদ স্থাপন করে। বুখারা, তাসকন্দ, সমরকন্দ, উজবেকিস্তান, তাজাকিস্তান- যেই দেশগুলো ছিল রাশিয়ার অঙ্গপ্রদেশ, যেখানে ইমাম বুখারীর (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) জন্ম, সেই দেশগুলোতে দীর্ঘ বাহাত্তর বছর পর্যন্ত একটি কুরআন তিলাওয়াত করার সুযোগ মুসলমান পায়নি। কোনো দোকান, লাইব্রেরিতে কুরআন শরীফ বিক্রি হত না। ইরাক ছিল হযরত আলীর খেলাফতের রাজধানী। সেখানে তাতারীরা দখল করে দশ লক্ষ মুসলমানের মাথা দিয়ে মিনার তৈরি করে।
আপনি জানেন? তুর্কিস্তানে মুসলমানের খেলাফতকাল ছিল সাড়ে ৭০০ বছর। সেখানে কামাল আতাতুর্কের মত এক নাস্তিক রাষ্ট্রপ্রধান হয়েছিল।
বর্তমানে এমন শিক্ষানীতি প্রতিষ্ঠিত করার পায়তারা আওয়ামী সরকার করছে, যাতে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত একজন মুসলমান বাচ্চাকে কুরআন শিক্ষা দেয়ার ব্যবস্থা রাখা হয় নাই। কালেমা শিক্ষা দেয়ার ব্যবস্থা করা হয় নাই।
আপনারা জানেন, এই বাংলাদেশ কোনো খৃস্টানদের দেশ নয়। আপনারা জানেন, এই বাংলাদেশ কোনো ইয়াহুদীদের দেশ নয়।
আজকে আমি আওয়ামী সরকারকে বলতে চাই, আপানার এই সিলেবাসে "সেতুটা দুলছে" - এর মধ্যে '৪৭ এ দেশ ভাগকে অবজ্ঞা করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, যদি ৪৭ এ দেশ ভাগ না হতো, তাহলে এই লাল সবুজ পতাকা আমরা কোনোদিন দেখতে পেতাম না। ৪৭ এ দেশ পৃথকআন্দোলনে কোনো খ্রিষ্টান ছিল না, কোনো ধুতিওয়ালা ছিল না, কোনো নাস্তিক ছিল না। দেশ ভাগের আন্দোলন করেছে একমাত্র মুসলমান। অই সময়ে যদি পাকিস্তান নামি কোনো ভূখণ্ড যদি না পেতাম, তাহলে একাত্তরে বাংলাদেশ কোনোদিন স্বাধীন হতো না।
আমার জ্ঞানী মানুষেরা, আপনাদের বুঝতে হবে, '৪৭ এ আজকের বাংলাদেশ নামি ভূখণ্ড যদি ভারতের সাথে এক থাকত আর জম্মু, কাশ্মীর, পাঞ্জাব কে পাকিস্তানের সাথে মিলিয়ে দেয়া হতো, তাহলে কিয়ামত পর্যন্ত আমরা আন্দোলন করতে পারতাম কিন্তু বাংলাদেশ নামে কোনো স্বাধীন দেশ পেতাম না।
সেই সময় সবচেয়ে বেশি বিরোধিতা করেছিল হিন্দুরা। শুধু তাই নয়,
যখন বাংলাদেশে ১৯১১ সালে লর্ড এসেছিল। নবাব সলিমুল্লাহ প্রস্তাব দিয়েছিলেন ঢাকাতে একটি ইউনিভার্সিটি স্থাপনের জন্য। কিন্তু বিরোধিতা করেছিল রবি ঠাকুর। যেন মুসলমানের সন্তান উচ্চশিক্ষিত না হয়। শুধু মাত্র হিন্দুদের বিরোধিতার জন্যই ১৯১১ সালে এই দেশে ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠা হয় নাই।
এই ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯২১ সালে।নবাব সলিমুল্লাহর প্রস্তাবে। কোনো হিন্দু, কোনো নাস্তিকের প্রস্তাবে নয়।
এই ইউনিভার্সিটি, মুসলমানের ইউনিভার্সিটি। এখানে কোনো নাস্তিক থাকতে পারবে না। এই ইউনিভার্সিটি কোনো বেইমানের ইউনিভার্সিটি নয়। এই ইউনিভার্সিটি, নবাব সলিমুল্লাহর নিজের জমিতে স্থাপিত ইউনিভার্সিটি।
এটা নাস্তিকদের জায়গা না, মুসলমানদের জায়গা।
উৎখাত করুন ওদেরকে।
শুধু তাই না, আজকের এই সিলেবাসে বলেছে, দেবদেবীর নামে কুরবানি করলে তা খাওয়া বৈধ হবে। এটা শেখ হাসিনার জন্য বৈধ হতে পারে; কোনো মুসলমানের জন্য বৈধ হবে না।
" লাল গরুটা" এই গল্পে গরুকে জবাই করা ত্রুটিপূর্ণ কাজ হিসেবে প্রমাণ করা হয়েছে। আমি মনে করি এটা হিন্দু ধর্ম হতে পারে, মুসলমানের না।
এই গল্পটা যারা সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত করেছে, তারা মুসলমানের সন্তান না। তাদের পূর্ব পুরুষ হিন্দু হতে পারে। নাস্তিক হতে পারে।
যেই সিলেবাসে নবী আলাইহিস সালাতু ওয়াসসালামদের জীবনী থাকবে না, আবু বকর (রাঃ), উমার (রাঃ) , উসমান(রাঃ), আলীর (রাঃ) জীবনী থাকবে না, মহান মানুষদের জীবনী থাকবে না, এরকম বই বাংলাদেশে পড়ানো হবে না ইনশাআল্লাহ।
এটা পড়াতে দেয়া হবে না।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ শান্তিপূর্ণ ধারাবাহিক আন্দোলনে বিশ্বাসী। যদি আপনারা ভাঙচুর চান, আমরা করতে পারি, কিন্তু এখনো করবো না। আপনারা যদি হরতাল চান, দিতে পারি। কিন্তু এখনো দেবো না। অবরোধ চান, তাহলে তাও দিতে সক্ষম । কিন্তু দেবো না। সোজা আঙুলে ঘী না উঠলে আঙুলকে বাকা করতে পারি আমরা। যদি সামান্য হুংকারে আপনারা দুর্বল না হোন, এক কোটির হুংকার দেয়ার ক্ষমতা আমরা রাখি।
প্রিয় ভায়েরা আমার
আজকে আমি বাংলাদেশের সরকারকে বলে দিতে চাই, মুসলমানদের ইতিহাস, বদরের ইতিহাস। মুসলমানদের ইতিহাস, অহুদের ইতিহাস। মুসলমানদের ইতিহাস, খন্দকের ইতিহাস। মুসলমানদের ইতিহাস, রক্ত দেয়ার ইতিহাস। মুসলমানদের ইতিহাস, জীবন দেয়ার ইতিহাস। মুসলমানদের ইতিহাস, দুনিয়ার বুকে বিজয়ী হবার ইতিহাস।
মুসলমানের ইতিহাস, কারাবরণের ইতিহাস
আওয়ামীলীগ সরকার, আমরা অনেক আগেই হুশিয়ার করে দিয়েছিলাম। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ শুধু রাজনীতি করে না, তারা ইবাদাত করে।আমরা এখানে ইবাদাতের ময়দানে এসেছি। আমি বিশ্বাস করি,
ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﻫﺮﻳﺮﺓ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻗﺎﻝ : ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ : ﻣﺜﻞ ﺍﻟﻤﺠﺎﻫﺪ ﻓﻲ ﺳﺒﻴﻞ ﺍﻟﻠﻪ ﻛﻤﺜﻞ ﺍﻟﺼﺎﺋﻢ ﺍﻟﻘﺎﺋﻢ ﺍﻟﻘﺎﻧﺖ ﺑﺂﻳﺎﺕ ﺍﻟﻠﻪ ، ﻻ ﻳﻔﺘﺮ ﻣﻦ ﺻﻴﺎﻡ ﻭﻻ ﺻﻼﺓ ﺣﺘﻰ ﻳﺮﺟﻊ ﺍﻟﻤﺠﺎﻫﺪ ﻓﻲ ﺳﺒﻴﻞ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ " ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ
আমি বিশ্বাস করি, ঘর থেকে বের হইছি, এখানে আসছি, ঘরে ফেরার আগ পর্যন্ত আমাদের প্রত্যেকটা সময় আমাদের আমলনামায় নেকি লেখা হতে থাকবে ইনশাআল্লাহ।
মুসলমান, তাদের বুকে বুলেট লাগে। পিঠে লাগে না।
মুসলমান মায়াজ মুয়াইয়াজের গোষ্ঠী। মুসলমান হযরত উমারের গোষ্ঠী। মুসলমান হযরত আলীর গোষ্ঠী।
শাহজালালের গোষ্ঠী, শাহ ইয়ামেনের গোষ্ঠী। হযরত ফজলুল করীমের গোষ্ঠী, এসহাকের গোষ্ঠী।
ওদেরকে উৎখাত করা হবে ইনশাআল্লাহ।
প্রিয় ভায়েরা আমার,
আপনাদের মনে আছে? ২০১১ সালে ঘোষাণা দিয়েছিলাম, আস্তিক এবং নাস্তিকদের লড়াই শুরু হয়ে গেছে।
মনে আছে তো?
এই লড়াইয়ে কে জিতবে? নাস্তিকরা হঠবে নাকি মুসলমানরা হঠবে?
না মুসলমানরা হঠার গোষ্ঠী না।
মুসলমানরা থাকবে নাস্তিকরা ভেগে যাবে। যদি পারো আগে আগে ভেগে যাও এদেশ ছেড়ে। ভাগবার সময় না পেলে তোমাদের রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হবে, ভারতের বর্ডার বন্ধ করে দেয়া হবে।
আমি আওয়ামী সরকারকে বলতে চাই, আপনার যদি সুমতি বোধহয়
যা লিখেছেন এই সিলেবাসে। সহ্য হয়না। মন চায় না দুনিয়াতে বেচে থাকার মত সময় থাকুক। মন চায় রক্ত দিয়ে আন্দোলন করতে করতে আল্লাহর দরবারে হাজির হই। আল্লাহ কে বলি, এই জাতির মুসলমানিত্ব ঠিক রাখার জন্য কমপক্ষে আমার ধমনী হতে এক ফোটা রক্ত হলেও তোমার পথে ব্যয় করেছি।
আমি শেখ হাসিনাকে বলব,
আপনি পাঠ্যবইতে কি উপহার দিয়েছেন জাতিকে?
এই জনতা ক্ষিপ্ত হলে, ভারত আপনাকে রক্ষা করতে পারবে না, রাশিয়া-আমেরিকা আপনাকে রক্ষা করতে পারবে না, আপনার পুলিশবাহিনী আপনাকে রক্ষা করতে পারবে না, আপনার কামান বুলেট উৎখাত করা হবে, গনআন্দোলন করা হবে, আপনাদের উৎখাত করা হবে, ইসলাম বিজয় হবে ইনশাআল্লাহ।
উৎখাত করা হবে। উৎখাত করা হবে।উৎখাত করা হবে। ইসলাম বিজয় হবে ইনশাআল্লাহ।
শেখ হাসিনা, আওয়ামী সরকার, আপনি আজকে সোহরাওয়ার্দীর অবস্থা দেখেন
এই দৃশ্য দেখেন, এই জনতা ক্ষিপ্ত হলে যে কোনো বাধ ভেঙে এর বিচার হবে ইনশাআল্লাহ।
আসুন, যেই সময়ে আমাদের ডাক দেয়া হবে সেই ডাকে উপস্থিত হহতে আমরা রাজী আছি তো? ইনশাআল্লাহ
আমরা মরতে চাই, শহীদ হতে চাই রক্ত দিতে চাই, ইসলামকে বিজয় করতে চাই।
প্রিয় ভায়েরা আমার, মুসলিম জনতা,
কলিজার মধ্যে অনেক আগুন। সহ্য হয়না।
আর বিএনপি? আমরা অনেক আগেই বলেছিলাম, বিএনপি হলো মুনাফিক শক্তি, বিএনপি মুনাফিক শক্তি, বিএনপি মুনাফিক শক্তি।
তারা নাস্তিক শ্যামল কান্তিকে চায়, কিন্তু মসজিদের মুয়াজ্জিন শহিদ হয়েছে তাকে দেখার সুযোগ বিএনপির নাই। আজানের বিরুদ্ধে কটূক্তি হয়, বিএনপি কথা বলতে পারে না। বিএনপিকে বাংলাদেশে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসতে দেয়া হবে না। এই মুনাফিককে ক্ষমতায় আসতে দেয়া হবেনা। ইসলাম ক্ষমতায় আসবে, কোনো মুনাফিক আসবে না।
আল্লাহপাক আমাকে এবং আমাদের সবাইকে কবুল করে নেন।
https://www.youtube.com/watch?v=NMFQZ-FGg6c&feature=youtu.be
বিষয়: বিবিধ
২২২২ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ভালো লাগল
রমাদানের প্রস্তুতি নিয়ে চলছে ব্লগ আয়োজন। ২ জুন সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে ৬ পর্বের ব্লগ আয়োজনের ১ম পর্ব। অংশ নিতে পারেন আপনিও। নিজে জানুন, অন্যকে জানান। বিস্তারিত জানতে-
Click this link
মন্তব্য করতে লগইন করুন