মসজিদ অপসারণের ইসলাম বিরোধী সিদ্ধান্ত বাতিল করুন -অধ্যাপক এটিএম হেমায়েত উদ্দিন
লিখেছেন লিখেছেন এম এম নুর হোসাইন মিয়াজী ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০২:২৯:৫৮ দুপুর
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর সভাপতি অধ্যাপক মাওলানা এটিএম হেমায়েত কেরাণীগঞ্জে ভেঙ্গে ফেলা মসজিদ অবিলম্বে পুনঃনির্মাণ, মসজিদ অপসারণের সিদ্ধান্ত বাতিল এবং নির্ধারিত স্থানে কোরবানীর নামে মুসলমানদেরকে ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ এবাদত-বন্দেগীকে বাধাগ্রস্ত করার সিদ্ধান্ত বাতিল করতে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন৷
তিনি বলেন, সরকারী নানা প্রতিষ্ঠান, সংস্থার জমিতে এবং সরকারি খাস জমিতে নির্মিত মসজিদ কখনোই উচ্ছেদ করা যায় না ৷ স্থানান্তরে ক্ষেত্রেও রয়েছে কঠোর বিধিনিষেধ৷ যে স্থানে একবার মসজিদ হয়ে যায় কেয়ামত পর্যন্ত সেটি মসজিদ হিসেবেই গণ্য হবে৷ এ প্রসঙ্গে কুরআনে আল্লাহ বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর মসজিদসমূহে তার নাম উচ্চারণ করতে বাধা দেয় এবং সেগুলোকে উজাড় করতে চেষ্টা করে, তার চাইতে বড় যালেম আর কে? (সূরা বাকারাহ, ১১৪) অন্য আয়াতে আল্লাহ এরশাদ করেন ‘নি:সন্দেহে তারাই আল্লাহর মসজিদ আবাদ করেবে, যারা ঈমান এনেছে আল্লাহর প্রতি ও শেষ দিনের প্রতি এবং কায়েম করেছে নামাজ।’ সূরা তওবা-১৮
তিনি অবিলম্বে কেরাণীগঞ্জে ভেঙ্গে ফেলা মসজিদ পুনঃনির্মাণ এবং মসজিদ অপসারণের ইসলাম বিরোধী সিদ্ধান্ত বাতিলে সরকারের প্রতি উদাত্ত আহবান জানান ৷
তিনি হযরত ইবরাহীম আঃ ও হযরত ইসমাঈল (আঃ) এর কঠিন আত্মত্যাগের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্যলাভের কুরবানীর স্মৃতি মুসলিম জাতিগোষ্ঠীকে বারবার স্মরণ করিয়ে দেয়৷ কিন্তু কুরবানীকে ভোগান্তি এবং খুশিমনে কোরবানীর আগ্রহকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে নিরুৎসাহিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে, নির্দিষ্টস্থানে কুরবানী করার এবং রাজধানীতে কুরবানীর হাট বন্ধ করার সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ৷ অথচ যুগের পর যুগ ধরে যে নগরী অব্যবস্থাপনা, অপরিকল্পনা এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অযোগ্যতার দরুণ যানজট, খানাখন্দ, জলাবদ্ধতা ও ডাস্টবিনের নোংরা শহরে পরিণত হয়েছে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগরীর মজলিসে আমেলার সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আলতাফ হোসেন ও মাওলানা এবিএম জাকারিয়া, সেক্রেটারী মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, অধ্যাপক ফজলুল হক মৃধা, মু. মোশাররফ হোসেন, প্রচার সম্পাদক মাওলানা এইচএম সাইফুল ইসলাম, মাওলানা নজরুল ইসলাম, মাওলানা বাছির উদ্দিন মাহমুদ, মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক, মাওলানা নাযির আহমদ শিবলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, আলহাজ্ব ইসমাঈল হোসেন প্রমুখ।
বিষয়: বিবিধ
১২৪৬ বার পঠিত, ১১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আর জমি যেহুতু আল্লাহর এই জমির যে কোন যায়গা মসজিদ নির্মানের অধিকার অবশ্যই আছে।
হাজার হাজার একর জমি দখল করে জালিমের তাদের প্রাসাদ তৈরি করে রেখেছে ,তাতে মাথা ব্্যাথা নাই ,মাত্র ২-৪ কাটা জমির উপরে মসজিদ শয়তানের গায়ে জ্বালাপোড়া শুরু করে দিয়েছে।
জালিমেরা সাবধান ।আমরা ছেড়ে দিব না।
আসলে সরকারী সম্পত্তিতে, খাস জমিতে মসজিদ নির্মাণ করা যায় না, যদি না সেই জমি চিরস্থায়ী ওয়াকফ করে না দেওয়া হয়। কাউকে এই সম্পত্তি কিনে আল্লাহর মসজিদের জন্য ওয়াকফ করা বাধ্যতামূলক।
অনুমতি ছাড়া কারো জমিতে মসজিদ বানিয়ে নামাজ পড়লে সে নামাজ কবুল হবেনা। কেননা গ্রহণ করার পদ্ধতি হারাম হয়েছে।
ওমর (রাঃ) আমলে মসিজদে হারামের সম্প্রসারণ দরকার হয়ে পড়ে। পাশে ছিল মানুষের বাড়ী ঘর। তাদেরকে বলা মাত্রই কোন অর্থ কড়ি নেওয়া ছাড়াই নিজেদের বাড়ী-ঘর ছেড়ে দেয়। ওমর (রাঃ) সেই প্রদান গ্রহন করতে অস্বীকার করেন। সবাইকে তিনি পাই পাই করে অর্থ পরিশোধ করেছিলেন। ধনীরা অর্থ নিতে না চাইলে, তিনি তাদের কে ব্যাপার খানা বুঝিয়ে, পরিমান মত অর্থ তাদের দিয়ে দেন। আজো মসজিদে হারামের সম্প্রসারনের দরকার হলে, সরকার মানুষের দাবীর চেয়ে অনেক বেশী অর্থ দিয়ে তা কিনে ওয়াকফ করে দেন।
এসব উদাহরণ এ কারণে দিলাম, আসলে পরিপূর্ন ওয়াকফ না হওয়া পর্যন্ত সেই স্থানকে স্থায়ি মসজিদ বলা যায়না। আল্লাহ এমনিতেই পুরো দুনিয়াকে সেজদার জন্য পবিত্র করেছেন, সে হিসেবে নামাজ কবুল হবে। তবে জায়গার মালীক যদি ওয়াকফ না করে এবং স্থানের দাবী করে বসে তাহলে তা অবশ্যই ছেড়ে দিতে হবে।
সেক্ষেত্রে মানুষটিকে বুঝিয়ে, পরকালের লোভ লাগিয়ে (অবশ্যই ভয় দেখিয়ে নয়) স্থানটি ওয়াকফ করে নেওয়া সকলের জন্য জরুরি।
যাই হোক, দেশে তো বর্তমানে মতলবি কাজ-কারবার শুরু হয়েছে। বাবার নামে, জাতির পিতার নামে গুলিস্থান থেকে কবরস্থান সবই দখলে যাচ্ছে। তারা যে মসজিদের জায়গা দখল করবে না, হলফ করে বলা যায় না। তাই এসব রক্ষা করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে এবং সময় থাকতে শহরের সকল মসজিদ গুলোকে ওয়াকফের আওতায় আনার জন্য চেষ্টা করতে হবে। কেননা সামনের দিন যা আসছে, তা আরও খারাপ হতে পারে। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
এ ছাড়াও হাজার হাজার একর জমি দখল করে বিভিন্ন অবৈধ স্হপনা করে লুট পাট করে খায় সেগুলির প্রতি কোন মাথা ব্যাথা না হয়ে মসজিদ নিয়ে মাথা ব্যাথা কেন???
আসলে কাজটিতো ইসলামী রাষ্ট্রেরই করা উচিত, অর্থাৎ এই দায়িত্ব রাষ্ট্রকেই পালন করতে হয়। এই দায়িত্ব পালন করার জন্য রাষ্ট্রে একটি আইন আছে। সরকার ওয়াকফ সম্পত্তি দেখা শোনা ও রক্ষণাবেক্ষনের দায়িত্ব দিয়েছে জেলা প্রশাসকের উপর! তিনিই এর প্রকৃত মুয়াওয়াল্লী। অর্থাৎ আপনি যদি আপনার ব্যক্তি মালীকাধীন কোন কিছু ওয়াকফ করেন, সাথে সাথেই তার অভিভাবক হয়ে যান ডিসি মহোদয়। এটা ব্রিটিশের বানানো আইন। এখন ডিসি যদি ইসলাম বিদ্ধেষী কিংবা ইসলামের প্রতি অনাগ্রহী হয়, তাহলে তো এসবের বারোটা বাজবেই। এখন হচ্ছেও তাই। ডিসির হাতে এমন ক্ষমতা আছে, তিনি ওয়াকফ সম্পত্তি যে কাউকে ভোগ করতে দিতে পারে, সেখান থেকে কাউকে মুহূর্তে কাউকে উচ্ছেদ করতে পারে।
দৃষ্টান্ত হিসেবে দুটো উদাহরণ দিলাম।
১। হুগলীর জমিদার হাজি মুহাম্মদ মুহসীন তার নিজের জমিদারী এবং তাঁর বোন মুন্নুজানের জমিদারীর সমুদয় সম্পদ ইসলামী শিক্ষার জন্য ওয়াকফ করে যান। চট্রগ্রাম কলেজ, মুহসিন কলেজ, প্যারেড ময়দান সহ বিশাল স্থান তিনি ইসলামী শিক্ষার জন্য নিজের পকেটের টাকায় ওয়াকফ করে দেন। সেই সম্পদ ব্রিটিশ ডিসির ক্ষমতা বলে আজ সাধারণ মানুষের সম্পদে পরিনত হয়েছে। সারা ভারতে ছড়িয়ে ছিঠিয়ে থাকা সমুদয় সম্পদ এভাবে কুক্ষিগত করে। এখানে ডিসির বদ মতলব কাজ করেছিল।
২। চট্টগ্রাম জামে মসজিদ প্রতিষ্ঠিত হয়ছিল ষোড়শ শতাব্দিতে। আন্দরকিল্লার বিশাল অংশ, মুসলিম হল এসব সেই মসজিদের জায়গা ছিল। এগুলো শত বছরে মানুষের দখলে চলে যায়। এরশাদের নিজের প্রথম পার্টি জনদলের তথা জাতীয় পার্টির বিশাল অফিস ছিল এই এলাকায়। এরশাদের আমলে ওমর ফারুখ চট্টগ্রামের ডিসি ছিলেন। চার শত বছর ধরে বেহাত হওয়া জায়গা মসজিদকে ফিরিয়ে দিতে তিনি আদেশ দেন। সবাই আদালত থেকে ষ্ট্রে অর্ডার আনেন, খোদ জাতীয় পার্টি প্রেসিডেন্টের লিখিত কাগজ আনেন। ডিসি ওমর ফারুখ স্ট্রে অর্ডার গুলো হাতে নিয়ে, তাদের সামনেই ছিড়ে টুকরা টুকরা করে, বুলডোজার দিয়ে একদিনে মধ্যেই পুরো চট্ট্রগাম থেকে ওয়াকফ সম্পত্তি উদ্ধার করেন। এটা তদানিন্তন কালের এক বিশ্ময়কর ঘটনা ছিল। প্রেসিডেন্টের আদেশ অমান্য করেই মসজিদের জায়গা উদ্ধার করেছে। বর্তমানের চট্ট্রগাম জামে মসজিদের বিশালায়তন ডিসি ওমর ফারুখের হাতেই হয়েছিল। এই ব্যক্তির লক্ষ্য উদ্দেশ্য ভাল ছিল বলেই, এই কাজটি সম্ভব হয়েছিল।
সর্বোপরি মানুষকে সচেতন হতে হবে। সরকার চাইলে এই কাজ শুধুমাত্র আইনের মাধ্যমেই করে ফেলতে পারবে। বর্তমানে যারা সরকারে আছে, তাদের হৃদয়ে ইসলামের প্রতি কতটুকু সহানুভূতি আছে, সে সন্দেহ সবাই করতে পারে। তবে মুসলমানেরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদ করলে একদিনের মাঝেই সব সমাধা হয়ে যাবে। আর বাংলাদেশের মুসলমানের আপাতত ঐক্যবদ্ধ হবার কোন সম্ভাবনা নাই।
কেননা বাংলাদেশে আলেমে দ্বীন বেশী,
তার চেয়েও বেশী, কে কার নেতৃত্ব মানবে সেই ধরনের হীনমন্যতা। অনেক ধন্যবাদ।
জানিনা এরপর কি টাগের্ট।
হাজার হাজার একর জমি দখল করে বিভিন্ন অবৈধ স্হপনা করে লুট পাট করে খায় সেগুলির প্রতি কোন মাথা ব্যাথা না হয়ে মসজিদ নিয়ে মাথা ব্যাথা কেন???
এ ছাড়াও হাজার হাজার একর জমি দখল করে বিভিন্ন অবৈধ স্হপনা করে লুট পাট করে খায় সেগুলির প্রতি কোন মাথা ব্যাথা না হয়ে মসজিদ নিয়ে মাথা ব্যাথা কেন???
মন্তব্য করতে লগইন করুন