******************************************************************************* এ দু’রাকায়াতই তার জীবনের প্রথম ও শেষ নামায! *******************************************************************************
লিখেছেন লিখেছেন এম এম নুর হোসাইন মিয়াজী ১১ আগস্ট, ২০১৫, ১০:৩৪:২২ সকাল
খালিদ ইবনুল ওয়ালিদ রাদিয়াল্লাহু আনহুর ব্যক্তিত্ব রোমান বাহিনীকে কতটুকু প্রভাবিত করেছিল বিভিন্ন ঘটনার মাধ্যমে তা অনুধাবন করা যায়। ইয়ারমূকের যুদ্ধ তখন চলছে। যুদ্ধের এক পর্যায়ে রোমান বাহিনীর এক কমান্ডার, নাম ‘জারজাহ’ নিজ ছাউনী থেকে বেরিয়ে এল। তার উদ্দেশ্য খালিদের সাথে সরাসরি কথা বলা। খালিদ তাকে সময় ও সুযোগ দিলেন।
জারজাহ বললো : “খালিদ আমাকে একটি সত্যি কথা বলুন, মিথ্যা বলবেন না। স্বাধীন ও সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি মিথ্যা বলেন না। আল্লাহ কি আকাশ থেকে আপনাদের নবীকে এমন কোন তরবারি দান করেছেন যা তিনি আপনাকে দিয়েছেন এবং সেই তরবারি যাদের বিরুদ্ধেই উত্তোলিত হয়েছে, তারা পরাজিত হয়েছে?
খালিদ : না।
জারজাহ : তাহলে আপনাকে ‘সাইফুল্লাহ’ — আল্লাহর তরবারি বলা হয় কেন?
খালিদ : আল্লাহ আমাদের মাঝে তার রাসূল পাঠালেন। আমদের কেউ তাকে বিশ্বাস করলো, কেউ করলো না। প্রথমে আমি ছিলাম শেষোক্ত দলে। অতঃপর আল্লাহ আমার অন্তর ঘুরিয়ে দেন। আমি তাঁর রসূলের ওপর ঈমান এনে তার হাতে বাইয়াত গ্রহণ করি। রসূল (সা) আমার জন্য দু’আ করেন। আমাকে তিনি বলেনঃ তুমি আল্লাহর একটি তরবারি। এভাবে আমি হলাম ‘সাইফুল্লাহ’।
জারজাহ : কিসের দিকে আপনারা আহবান জানান?
খালিদ : আল্লাহর একত্ব ও ইসলামের দিকে।
জারজাহ : আজ যে ব্যক্তি ইসলামে প্রবেশ করবে সেও কি আপনাদের মতই সওয়াব ও প্রতিদান পাবে?
খালিদ : হ্যাঁ, বরং তার থেকেও বেশি।
জারজাহ : কীভাবে? আপনারা তো এগিয়ে আছেন।
খালিদ : আমরা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে উঠেছি, বসেছি। আমরা দেখেছি তাঁর মু’জিযা ও অলৌকিক কর্মকান্ড। যা কিছু আমরা দেখেছি, তা কেউ দেখলে, যা শুনেছি তা কেউ শুনলে, অবশ্যই তার উচিত সহজেই ইসলাম গ্রহণ করা। আর আপনারা যারা তাকে দেখেননি, তার কথা শুনেননি, তারপরেও অদৃশ্যের প্রতি ঈমান এনেছেন, তাদের প্রতিদান অধিকতর শ্রেষ্ঠ। যদি আপনারা নিষ্ঠার সাথে আল্লাহর উপর ঈমান আনেন।”
জারজাহ অশ্ব হাঁকিয়ে খালিদের পাশে এসে দাঁড়িয়ে বললেনঃ খালিদ, আমাকে ইসলাম শিক্ষা দিন।
জারজাহ ইসলাম গ্রহণ করে দু’রাকায়াত নামায আদায় করলেন। এ দু’রাকায়াতই তার জীবনের প্রথম ও শেষ নামায। তারপর এ নও মুসলিম-রোমান শাহাদাতের বাসনা নিয়ে মুসলিম বাহিনীর সাথে চললেন রোমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে। আল্লাহ পাক তার বাসনা পূর্ণ করলেন। তিনি শহীদ হলেন। (রিজালুন হাওলার রাসূল -২৯৯-৩০১)
[সূত্র – আসহাবে রাসূলের জীবনকথা (২)]
বিষয়: বিবিধ
৮৮৬ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ভালো লাগলো।
মন্তব্য করতে লগইন করুন