শিশু হত্যা ও নারী ধর্ষণ-কারীদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে; ভারতের আন্ত:নদী সংযোগ বাতিল করতে হবে -পীর সাহেব চরমোনাই
লিখেছেন লিখেছেন এম এম নুর হোসাইন মিয়াজী ০৮ আগস্ট, ২০১৫, ০৯:৫৯:৩২ সকাল
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতী সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম (পীর সাহেব চরমোনাই) বলেছেন, রাজনীতি দেশ ও জনগণের কল্যাণের জন্য। অথচ চলমান রাজনীতি হলো খুন-গুম, হত্যা, নারী নির্যাতন ও গণধর্ষণ। হাল-জামানা আইয়্যামে জাহিলিয়াতকেও হার মানিয়েছে। এখন মায়ের পেটেও শিশু নিরাপদ নয়। শিশুদেরকে গাছে ও পিলারে বেধে এমনিক মলদ্বারে হাওয়া দিয়ে মারার মতো ঘটনা জাহিলী যুগেও হয়নি। বর্তমান সমাজে মানুষ বসবাসের উপযুক্ততা হারিয়েছে।
পীর সাহেব চরমোনাই অত্যন্ত আফসোসের সাথে বলেন, শিশুরা নিস্পাপ। এই নিস্পাপ শিশুদেরকে আশঙ্কাজনকহারে নির্যাতন করে হত্যা করছে। নারীদের গণধর্ষণ করছে। নৌকা, বাসে, নারী কর্মচারী-কর্মজীবীদের গণধর্ষণ করছে। শিশু ও নারী নির্যাতন মহামারীর মতো ছড়িয়ে পড়ছে। শিশু নির্যাতনে বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষকে উদ্বিগ্ন করে তুলছে। এধরণের কর্মকাণ্ড বন্ধ না করতে পারলে সরকারকে পদত্যাগের দাবি জানান।
শুক্রবার (৭ আগস্ট) বিকালে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে রাজধানীর পুরানা পল্টনস্থ হাউজবিল্ডিং চত্ত্বরে শিশু হত্যাকারী ও নারী ধর্ষণকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি এবং ভারতের আন্ত:নদী সংযোগ প্রকল্প বাতিলের দাবিতে অনুষ্ঠিত বিশাল গণমিছিল পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
পীর সাহেব চরমোনাই ভারতের আন্ত:নদী সংযোগ প্রকল্প প্রসঙ্গে বলেন, আন্তর্জাতিক পানি আইন লঙ্ঘন করে বাংলাদেশকে স্থায়ী মরুভূমিতে পরিণত করার জন্য ভারত বাংলাদেশকে এক তরফাভাবে আন্ত:নদী সংযোগ মহাপ্রকল্প হাতে নিয়েছে। ভারত বাংলাদেশকে বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করার জন্যে আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্ঘ করে একের পর এক বাংলাদেশের সাথে এই অন্যায় আচরণ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে ফারাক্কা বাঁধ চালুর কথা বলা হলেও আজ পর্যন্ত পরীক্ষা শেষ হয়নি। ফলে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ৬ কোটি মানুষকে এর খেসারত দিতে হবে। বর্তমান সরকারের আমলে গঙ্গা পানি চুক্তি করা হলেও গ্যারান্টি ক্লজ না থাকায় বাংলাদেশ চুক্তি অনুযায়ী পানি পাচ্ছে না এবং বাংলাদেশ মরুভূমিতে পরিণত হচ্ছে। প্রমত্তা পদ্মা এখন ধু ধু বালুচরে পরিণত হয়েছে। অন্যদিকে বর্ষার সময় ফারাক্কা গেট খুলে দেওয়ার কারণে বাংলাদেশ প্রতি বছরই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।আমরা টিপাইমুখ বাধ রক্ষার জন্য লংমার্চ করেছি প্রয়োজনে আন্ত:নদী সংযোগ প্রকল্প বাতিলেও লংমার্চ করা হবে।
পীর সাহেব বলেন, সম্প্রতি ভারতের সেচমন্ত্রী এ প্রকল্পের ৩টি নদী সংযোগ কার্যক্রম চালুর ঘোষণা দিয়েছে। ভাটির দেশ হিসেবে বাংলাদেশের সঙ্গে কোনোরুপ আলোচনা না করে এ ধরণের প্রকল্প চালু সম্পূর্ণ বেআইনী ও আন্তর্জাতিক পানি আইনের লঙ্ঘন। এ প্রকল্প চালু করলে বাংলাদেশ যেমন ক্ষতিগ্রস্থ হবে সঙ্গে সঙ্গে প্রাকৃতিক পরিবেশও মারাত্মভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। তাই ভারতকে অবিলম্বে আন্ত:নদী সংযোগ প্রকল্প বাতিল করতে হবে। প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক আদালতে ভারতের এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে মামলা করতে হবে।
ইউনুছ আহমাদ বলেন, এভাবে একের পর এক শিশুদেরকে মানুষরুপী হায়েনারা যেভাবে নৃশংস পন্থায় হত্যা করেছে তাতে গোটা জাতি উদ্বিগ্ন, লজ্জিত ও আতঙ্কগ্রস্ত এবং ক্ষুব্ধ। এ সমস্ত নৃশংস ঘটনার সাথে বহুলাংশে সরকার দলীয় লোকজনই জড়িত। ফলে নৃশংস হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার পরে যথাযথ আইনী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। ভারতের আন্ত:নদী সংযোগ রুখে দিতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দিন বলেন, নিষ্পাপ ফুলের মতো শিশুদেরকে মানুষরুপী হায়েনারা যেভাবে নৃশংস পন্থায় হত্যা করেছে তা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। সরকারের মন্ত্রী ও নেতাদের হম্বিতম্বির মধ্যে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যাচ্ছে। যে সমস্ত পাশবিক কর্মকাণ্ড চলছে তার বিচারের জন্য সরকারের কোনো পদক্ষেপই জনগণের দৃষ্টি গোচর হচ্ছে না। এ কারণেই সর্বশেষ নৃশংসতার করুন শিকার হয়ে খুলনায় রাকিবের মতো একজন নিষ্পাপ শিশু দুনিয়া থেকে দুঃখজনকভাবে বিদায় নিয়েছে। জাতি হিসেবে আমরা এর দায় এড়াতে পারি না। বিশেষ করে সরকারের কাছে জাতি জানতে চায়, বাংলাদেশের পিতা-মাতারা কবে এ হুমকি এবং আতঙ্ক থেকে মুক্তি পাবে? তিনি বলেন, ভারতের অন্যায় আচরণের বিরুদ্ধে বিশেষ করে ভারতের পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো দেশপ্রেমিক ঈমানদার জনতার ঈমানী দায়িত্ব।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, মাওলানা আতাউর রহমান আরেফী, আলহাজ্ব আব্দুর রহমান, মহানগর সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আলতাফ হোসেন, অধ্যাপক ফজলুল হক মৃধা, মু. মোশাররফ হোসেন, প্রচার সম্পাদক মাওলানা এইচ এম সাইফুল ইসলাম, শ্রমিক নেতা হারুন অর রশিদ, ঈমান উদ্দিন, ছাত্রনেতা শেখ নূর নবী, রিয়াদ শাখার সভাপতি মুফতী জহিরুল ইসলাম, ডা. কামরুজ্জামান, মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, এডভোকেট সর্দার মোঃ মানিক মিয়া, মাওলানা বাছির উদ্দিন মাহমুদ, পল্লী কবি মুফাজ্জল হোসেন, নান্নু মুন্সি, নাযীর আহমদ শিবলী প্রমুখ।
বিষয়: বিবিধ
১১৭২ বার পঠিত, ২১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সাহাবারা রা.হুজুর সা,ওয়াজ করার সময় ছিল্লা-ছিল্লি করে কান্না-কাটি করেছেন এরকম হাদিস অবশ্যই আছে।
রাসূলের ওয়াজের সময় তার সাহাবীরা চিল্লা চিল্লি বা কান্নাকাটি করে থাকলে তারও তো একটা রেশ ক্বুরআনে থাকার কথা ।
বরং তারা আল্লাহর রাসূলকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করেছেন (এমনকি ইহুদী মুনাফেকরাও) এবং এ প্রেক্ষিতে কোন কোন সময় আল্লাহ আয়াতও নাজিল করেছেন।
কান্নাকাটি করেছেন ৩ জন লোক যারা জিহাদে যাবার জন্য সওয়ারী হিসেবে উট চেয়েছিলেন রাসূলের কাছে , তা না পেয়ে তারা কান্না করেছিলেন।
ত্যানা তো আপনি প্যাচান।অনেক বড় পন্ডিত !!!একটি হাদিসের কথা বললাম আর আপনি অহেতুক কতগুলি ত্যানা প্যাচালেন।
রেফারেন্স অবশ্যই দিবো।মুনাফিকি করার স্বভাব আমাদের নাই।অপেক্ষায় থাকেন............ত্যানা তো আপনি প্যাচান।অনেক বড় পন্ডিত !!!একটি হাদিসের কথা বললাম আর আপনি অহেতুক কতগুলি ত্যানা প্যাচালেন।
রেফারেন্স অবশ্যই দিবো।মুনাফিকি করার স্বভাব আমাদের নাই।অপেক্ষায় থাকেন............
পীরের মুরিদ হিসেবে সফল হবেন
দেইখেন এই ভয়ে না উনি নিজেই বাঁশ বাওয়া শুরু করে দেয়!
মন্তব্য করতে লগইন করুন