মাওলানারা সফল হলে আল্লামারা ব্যর্থ কেনো? --------------------------------------- রশীদ জামীল
লিখেছেন লিখেছেন এম এম নুর হোসাইন মিয়াজী ০৬ জুন, ২০১৪, ১০:৫৯:১৯ সকাল
লিখেছিলাম ২০১০ সালে। ফরমায়েশি লেখা। সংশ্লিষ্টরা কঠিন বিপদে পড়েছিলেন। লেখাটি হজমও করতে পারছিলেন না আবার উগলাতেও না। মুখে না বললেও আমি বুঝতে পারছিলাম তাদের মানসিক অবস্থা। তারা মনে মনে বলছিলেন, সেধে কী বিপদই-না ডেকে আনলাম! একটু সংক্ষেপ করে লেখাটি আবার শেয়ার করতে মন চাইলো। আল্লামাদের মূল্যহ্রাস নিয়ে কথা বলেছিলাম। সাড়ে তিন বছরে এদেশে আরো কয়েক হাজার আল্লামা তৈরি হয়ে গেছেন-আলহামদুলিল্লাহ। সুতরাং আল্লামার শানে নুযূলটা আবার আলোচিত হোক, হতেই পারে।
===================
======================
কেউ যখন আমাকে জিজ্ঞেস করে, বাংলাদেশে ইসলামী রাজনীতির ভবিষ্যৎ কেমন? আর আমি যখন প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাবার পথ পাইনা, তখন বলি, ভবিষ্যৎ কেমন বলবার জন্য আগে তো বর্তমানটা দেখা দরকার। এক কাজ করেন, একটি বাতি জ্বালিয়ে আনেন, আগে বর্তমানটা দেখি ...
শুরুটা করা দরকার একটু পেছন থেকে। তা না হলে গলতিগুলো বুঝতে পারা যাবে না। প্রথম কথা হলো, নেতৃত্ব দেবার জন্য খুব বড় আলেম হতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। আলেম সমাজের তিন দিকপাল মাওলানা রশীদ আহমদ গাঙ্গুহী, আশরাফ আলী থানবী এবং কাসিম নানুতবীর নেতার নাম ছিলো হাজী ইমদাদুল্লাহ মুজাহিরে মক্কী। জাদরেল এই তিন আলেমসহ অসংখ্য উলামায়ে কেরামের নেতা, হাজী ইমদাদুল্লাহ বড় আলেম ছিলেন না। পড়ালেখা ছিলো দশম শ্রেণী (কাফিয়া) পর্যন্ত। আজকের দিনে ইসলামী দলগুলোর নেতৃত্বে যে সব উলামায়ে কেরাম আছেন, তাদের একাডেমিক ইলিম হাজি ইমদাদুল উল্লাহ থেকে অনেক বেশি। কিন্তু সম্ভবত সেই জিনিষটি পুরোপুরি নেই, হাজী ইমদাদুল্লাহ গাঙ্গুহী থানবীদের মধ্যে যা ছিলো। এর পরের সিঁড়িতে মাও: হুসাইন আহমদ মাদানীদের সময়েও ইসলামী রাজনীতির সেই পহেলা নাম্বার সবকটি নিয়মিতই পাঠ করা হতো। আজকের দিনে সেই সবকটি আর চর্চিত হচ্ছে না!
এই ফাঁকে আরো একটি প্রসঙ্গ। আমার বুঝার ভুলও হতে পারে। কেউ হয়তো আমাকে ব্যাখ্যা করবেন, আমার ভুল শুধরে দিয়ে লজ্জা দেবেন আমাকে। লজ্জা পাবার জন্য তৈরি থাকব আমি। আজকালকার যুগে আল্লামার মূল্যহ্রাস শুরু হয়েছে! হযরতুল আল্লামের কোনো অভাবই নেই। আমার জানার আগ্রহটি খুবই সিম্পল। আল্লামা কাহাকে বলে? উহা কত প্রকার ও কী কী?
আল্লামার বাংলা হতে পারে মহাজ্ঞানী। এ দাবি নিশ্চই করা হবে না এ যুগের আল্লামা’রা শাহ ওয়ালী উল্লাহ, শাহ আব্দুল আজিজ, গাঙ্গুহী, থানবী, মাদানীদের চেয়ে বড় আলেম। ঘটনা যদি এমন হয়, তাহলে জানতে ইচ্ছে করতেই পারে আল্লামার শুভ জন্মদিনটা করে? আমি আমাদের যে সকল মুরব্বীদের নাম নিলাম, তাদের বা তাদের যুগের আলেমদের নামের সাথে তো কখনো আল্লামা ব্যবহৃত হয় নি। তারা মাওলানাতেই সন্তুষ্ট ছিলেন। অবশ্য একজনের কথা আমরা শুনেছি। বেচারা আল্লামা ছিলেন, তবে আলেম ছিলেন না। তিনি আল্লামা ইকবাল। বাকিদের সৌভাগ্য যে তারা আল্লামা হতে পারেননি!
ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের রূপকার কোনো আল্লামা ছিলেন না, ছিলেন মাওলানা শাহ ওয়ালী উল্লাহ। ইংরেজদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামের ফতোয়া দেয়া শাহ আব্দুল আজিজও ছিলেন মাওলানা, আল্লামা নন। যে প্রতিষ্ঠান নিয়ে চিৎকার করে করে আমরা গলার রগ ছিড়ে ফেলবার পর্যায়ে নিয়ে যাই , সেই দারুল উলুম দেওবন্দের প্রতিষ্ঠাতা কাসেম নানুতবীও আল্লামা হতে পারেন নি, মাওলানাই ছিলেন। যে ফ্যাক্টরি থেকে শত শত কিতাব উৎপাদিত হয়েছে, সেই আশরাফ আলী থানবীও আল্লামা ছিলেন না, মাওলানাতেই ছিলেন সীমাবদ্ধ। মাল্টা বিজয়ী মাদানী কখনো আল্লামা হতে চান নি। অত খাহেশ তাদের ছিলো না। এখন আমি যদি তাদেরচে' বড় কিছু হয়ে যাই, তাহলে আমি আল্লামা, ঠিক আছি। আর যদি না হতে পারি, তো ...এই প্রশ্ন করলে তো আজকাল আবার বেয়াদব বানিয়ে ছেড়ে দেয়া হবে।
আজকাল আমরা আবার আল্লামার দোকান খুলে বসেছি। ভাই যখন বাংলা হেকায়তে সাহাবা আর তাজকিরাতুল আউলিয়া মুখস্থ করে ওয়াজের মাইক্রোফোনে সাড়ে দুই আলিফ লম্বা টান দেন, তখন অতি আবেগে গদ গদ প্রজাতি স্লোগান ধরে, ''
আল্লামা অমুকপুরী---------- জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ!!
------------- এভাবে যদি আল্লামার সাপ্লাই বাড়তে থাকে, কয়েক বছর পরে আর কোনো মাওলানা খুঁজে পাওয়া যাবে না। কারণ, সকলেই আল্লামা বনে বসে থাকবেন।
সেই সঙ্গে ছোট্ট করে বলি, বেয়াদবি হলে আগাম ক্ষমা চেয়ে নিয়ে বলি, আমাদের এযুগের বড় বড় উলামায়ে কেরামের কেউই তো বলে দেননি তাদের নামের সাথে আল্লামা জুড়ে দিতে। তাহলে অনুসারীরা(চাটুকার শব্দটি আর বললাম না) এত আশিকে বে-ফানা কেন? নামের, পদবির চাকচিক্যের পেছনে মেহনত করার তো কোনো মানে হয় না। যাদের জন্য আমরা আল্লামা বলি, আমরা কি জানি তারা এতে খুশি হন না মোটেও। আর কেউ যদি এমন হন, যিনি তাকে আল্লামা বলতে শুনলে খুশি হন, তাহলে আমাকে অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাতে হচ্ছে, আল্লামা তো কি, মাওলানা হবার কোনো যোগ্যতাই তার নেই।
দেশে আলেম সমাজ এবং ইসলামী দলগুলো কোণঠাসা! অথচ সম্পূর্ণ বৈরী পরিবেশে ১৮ শতকের শেষ এবং উনিশ শতকের প্রথম ভাগে আমাদের মুরব্বী আলেম উলামা কীভাবে ইসলাম ও মাতৃভূমির জন্য রাজনীতি করে গেলেন? কিভাবে জয়ী হলেন তারা? কী ছিলো তাদের কাছে যা আজকের আলেমদের কাছে নেই? মাওলানারা পারলে আল্লামাদের তো আরো বেশি পারার কথা। পারছেন না কেন?
প্রশ্নটি অনেক ছিল ধরেই মাথায় নিয়ে ঘুরছিলাম। জবাব পাচ্ছিলাম না। সেটা পেলাম ১৫ এপ্রিল ২০১০। প্রবীণ আলেম, ইউরোপ জমিয়তের ৯ বছরের সভাপতি, বর্তমান ইসলামী রাজনীতির নূরানি চেহারা দেখে ভয়ে রাজনীতি থেকে স্বেচ্ছা নির্বাসনে চলে যাওয়া মাওলানা আসগর হুসাইন সাহেব এর কাছ থেকে। আমার আব্বার বন্ধু ছিলেন বলে আমি তাঁকে চাচা ডাকি।বিশ্বখ্যাত অক্সফোর্ড বিশ্ব-বিদ্যালয় এলাকায় বসবাসরত মাওলানা আসগর সাহেব সোজা-সাপটা কথাবার্তা বলে অভ্যস্ত। ১৫ এপ্রিল ২০১০ সন্ধ্যা সাড়ে ৯.৩০টা থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত অক্সফোর্ডে উনার সাথে বসার সুযোগ হলো আমার। মওকা পেয়ে আমিও ঝেঁকে ধরলাম তাঁকে। তিনিও কথা বললেন খোলামেলা ভাষায়।
আমি তাঁকে প্রশ্ন করলাম, চাচা, রাজনীতি থেকে দূরে চলে গেলেন কেন?
তিনি বললেন, আমাদের আকাবিরীন যে মকসুদে রাজনীতি করতেন, সেটা এখন অনুপস্থিত।
বললাম, কী ছিলো সেটা?
বললেন, একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি। আর কিছু না।
আমি বললাম, আচ্ছা চাচা, বাংলাদেশে ইসলামী রাজনীতির করুণ হালত তো জানেনই। এই দুরবস্থার জন্য মূলত কোন্ কারণটিকে চিহ্নিত করবেন আপনি? অর্থাৎ আমি আসলে জানতে চাচ্ছি, অভাবটা কিসের?
তিনি বললেন, সহবত বা সান্নিধ্যের। ইসলামী রাজনীতির জন্য আল্লাহওয়ালার সান্নিধ্যে যাওয়া, নিজে আল্লাহওয়ালা হওয়া অত:পর নেতাকর্মী ও দেশবাসীকে নিজের সান্নিধ্যে নিয়ে এসে আল্লাহ-ওয়ালা বানানো। এটা ছিলো সবচে জরুরী। আজ কেউ কারো সহবতে নেই। সবাই যার যার হাতে সাড়ে তিন হাত।
আমি বললাম, কুরআন-হাদিস সামনে থাকলে এবং এগুলো বুঝার যোগ্যতা থাকলে সহবত বা সান্নিধ্যের দরকার হবে কেন?
তিনি আমার দিকে ভুরু কুচকে তাকালেন। উদ্দেশ্য আন্দাজ করা, প্রশ্নটি আমি জানার জন্য করছি, নাকি ...। অশ্বত্থ হলেন তিনি। বললেন, ওলি-আউলিয়াদের সংস্পর্শ ও সান্নিধ্য ছাড়া কখনোই সফলতা আসে না। তুমি নিশ্চই ঐ কবিতাটি শুনে থাকবে
এক জামানা সহবতে বা আউলিয়া
বেহতর আজ সদ সালা তো-য়াত্ব বে-রিয়া।
(ওলি আল্লাহদের সংস্পর্শে কিছু মুহূর্ত কাটানো শত বছর নির্ভেজাল ইবাদত থেকেও উত্তম। )
মুফতী মুহাম্মদ শফি (রহ হাকিমুল উম্মত থানবীকে প্রশ্ন করলেন, “হযরত, কবি যে দাবিটি করলেন, এটা কি ঠিক?”
থানবী (রহঃ জবাব দিয়েছিলেন, “পুরা ঠিক নেহি। দর আসল শায়েরনে সহ্বতে আউলিয়াকো কুচ কম কর দিয়া। আসলমে সদ সাল নেহি, লা-কো সাল বুলনা চাহিয়ে থা। কেঁউকে ইবাদত সে জান্নাত মিলতি হে আর সহবতে আউলিয়াসে মালিকে জান্নাত।” সুতরাং বুঝতেই পারছো আল্লাহ-ওয়ালাদের সান্নিধ্য কতবেশি জরুরী? বর্তমানে আল্লাহ-ওয়ালাদের সান্নিধ্যের প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারটিই আমাদের ইসলামী রাজনীতি থেকে উঠে গেছে।
আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, আল্লাহ-ওয়ালাদের খুঁজে পাবো কোথায়? চিনবোই বা কেমন করে?
তিনি আমাকে বললেন, তোমার এই প্রশ্নের জবাব মুফতী শফি সাহেব অনেক আগেই দিয়ে গেছেন। মুফতী শফির এক ছেলের নাম ছিল জকি কায়ফী। থাকতেন লাহোরে। মুফতী সাহেব ছেলেকে চিঠি লিখে উপদেশ দিলেন, “বাবা, সব সময় আল্লাহ-ওয়ালাদের সহবতে থেকো।” ছেলে বললেন, “বাবা, এখানে তো বড় কোনো আলেমই নেই। আমি আল্লাহ-ওয়ালা কোথায় পাবো?”
জবাবে মুফতী শফি ছেলেকে লিখলেন, “বেটা জকি! ইঁহা কয়ী মসজিদ নেহি হায় কিয়া? আগর হায়, তো মসজিদ কা তো কয়ি মওজ্জিন হোগা। ওহি তো আল্লাহ ওয়ালা হে।” এর মানে আল্লাহ-ওয়ালা হওয়ার জন্য বড় আলেম হতে হবে, এখন কোনো কথা নেই।
উপরের অগোছালো কথাগুলো থেকে খুব সহজে যে কথাটি বোঝে নেয়া উচিত তা হল, ইসলামী রাজনীতির সফলতার জন্য ওলি আউলিয়াদের সান্নিধ্যই প্রথম শর্ত, যদি এটা গ্রহণ করে নিই, তাহলে আমাদের ইসলামী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের মধ্যে খুলুসিয়্যতের চর্চাটা শুরু হবে। সেই খুলুসিয়্যত, যা ছাড়া ইসলামী রাজনীতি করার একমাত্র ফায়দাই হলো সময় নষ্ট করা মাত্র।
বাংলাদেশের ইসলামী রাজনীতির পশ্চাদগামিতা নিয়ে বর্ষীয়ান একজন আলেম ও অবসর প্রাপ্ত রাজনীতিকের মন্তব্য আলোচিত হলো। এবারে আমি আমার নিজের কথা বলি। আমার কাছে খুব তীব্রভাবে যে দু’টি জিনিসের অভাব অনুভূত হয়, তা হলো, ভিশন ও লিডারশীপ কোয়ালিটি। ভিশন ছাড়া পরিকল্পনাকে সঠিক পথে এগিয়ে নেয়া যায় না। আবার যোগ্যতা সম্পন্ন নেতৃত্বেরও বিকল্প নেই।
বললে বোধয় অত্যোক্তি হবে না বাংলাদেশের ইসলামী রাজনীতি এবং কওমী মাদরাসা একটি অপরটির অবিচ্ছেদ্য অংশ। অভিন্ন সাবজেক্ট। একটির গায়ে আঁচড় লাগলে ব্যথা অনুভূত হয় অন্যটির শরীরে। হবারই কথা। এদেশে ইসলামী রাজনীতির মূল উপকরণ ধরা হয় কওমী মাদরাসার ছাত্রদের। ইসলামী সংগঠনের আলেম নেতারা সভা ডাকলে পোস্টারিং মাইকিং এর কাজগুলো তো এদেরই করতে হয়। আন্দোলনের ডাক দিলে রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে পুলিশের কাঁদানো গ্যাস ও লাঠিপেটা খেয়ে আন্দোলন সফল করবার জন্য মাঠে তো নামতে হয় এই কওমী মাদরাসা ছাত্রদেরই। এরা হলো রিজার্ভ ফোর্স।
এত ব্যবহার করি আমরা ছেলেগুলোকে, অথচ তাদের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো ভিশন সেট করতে চাই না। আমরা কখনো কি ভেবে দেখেছি এই ছাত্রগুলোর মেধার প্রতি, প্রতিভার প্রতি আমরা সুবিচার করতে পারছি কিনা! তাদের আজকের চাওয়া, আগামীকালের প্রত্যাশা পূরণে কোনো ভাবনা আমাদের আছে কিনা!
যদি না থাকে, আমরা যদি আমাদের ছাত্রদের সামনে তার পছন্দের টপিকটি রাখতে না পারি, আমাদের শিক্ষা সিলেবাসে তাকে যদি সেই জিনিষটি না দিই, যা সে চায়, খুব করে চায়, আর ভাবি, দিন দিন তরক্কী করবো আমরা, যদি ভাবেন কওমী শিক্ষার ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল, ইসলামী দলগুলোর আলেম নেতৃবৃন্দ যদি ভাবেন তার পরেও এই ছেলেরা ইসলামী হুকুমত কায়েমের জন্য আজীবন মাঠে থাকবে, তাহলে এই ধারণা ব্যুমেরাং হতে খুব বেশি দিন লাগবে বলে তো মনে হয় না। আর অতি স্বাভাবিক কারণেই ইতোমধ্যে সেটার আলামতও স্পষ্ট হতে আরম্ভ করেছে।
বাংলাদেশ ছিলো ইসলামী রাজনীতির জন্য চমৎকার একটি উর্বর ভূমি। নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। যে ব্যাখ্যাই দেয়া হোক আর যেভাবেই দেয়া হোক, এদেশের আমজনতার সাথে ইসলামী দলগুলো সম্পর্ক তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে। আর এরচে' বড় ব্যর্থতা হলো, এই ব্যর্থতা নিয়ে কোনো অনুশোচনা পর্যন্ত নেই!
এদেশের ইসলামী রাজনীতির পুরোধা যারা, তাদেরকে পরামর্শ দেবার স্পর্ধা আমার নেই। ইচ্ছাও নেই। তবে আমি যখন আমার মতো কারো সঙ্গে বিষয়টি শেয়ার করি, তখন বলে থাকি, ইতিহাস ও ঐতিহ্য মানুষকে প্রেরণা যোগায়। তার মানে তো এই নয় যে, ঐতিহ্যের দিকে ছুটে চলতে হবে। ঐতিহ্যের দিকে ছুটা মানে তো পেছনের দিকে যাত্রা। ইতিহাসকে, ঐতিহ্যকে স্বরণ করবো, লালন করবো হৃদয়ে, কিন্তু যাত্রা করতে হবে সামনের দিকে। একশ বছর পেছনে নয়, তাকাতে হবে একশ বছর পরের দিকে।
রাজনীতি করতে না জানলেও ইসলামী রাজনীতি নিয়ে আমাদের কথা বলতে হয় কারণ, বাংলাদেশের দ্বিধাবিভক্ত উলামায়ে কেরাম ও খণ্ড বিখণ্ড এক আর এক এগারো বনে বসা ইসলামী দলগুলোর জন্য মাঠ পর্যায়ে জবাবদিহি করতে হয় আমাদের। আমরা রাজনীতি করিনা, তবুও। আমরা নেতা-ফেতা হইনি, হতে চাইনি, তবুও। একটি কমন প্রশ্নের জবাব বারবারই এড়িয়ে দেতে হয় আমাদের। প্রশ্নটি হচ্ছে, একই আকীদা ও বিশ্বাসের অনুসারীদের মধ্যে এতগুলো ইসলামী দল কেনো? আমরা জবাব দিতে পারি না। জবাব আমাদের জানা নেই। এমন কেউ কি আছেন, জবাবটি যার জানা আছে?
বিষয়: বিবিধ
১৭৫১ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ছাত্রদের নিয়ে যে বিষয়টা চিন্তা করার জন্য আবেদন করেছেন তা বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জরুরী বিষয়।
আপনাকে অসংখ্য মোবারকবাদ। প্রিয়তে রাখলাম। জাযাকাল্লাহ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন